ধুলাময় রাজধানী: নিয়ন্ত্রণে গৃহীত ব্যবস্থা কি যথেষ্ট?
সম্পাদকীয়
২৮ নভেম্বর ২০২০, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
শুষ্ক মৌসুম শুরু হয়েছে, আর তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে রাজধানী ঢাকায় ধুলার পরিমাণ বেড়েছে আশঙ্কাজনকভাবে। পরিস্থিতি এখন এতটাই খারাপ যে, ঢাকার কোনো কোনো রাস্তায় যান চলাচল কঠিন হয়ে পড়েছে। পথচারীদেরও কষ্ট হচ্ছে পথ চলতে। ধুলার কারণে সব বয়সী মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন কাশি, শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগব্যাধিতে।
রাজধানীতে ধুলার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ ঘটিয়েছে কয়েকটি মেগা প্রজেক্টসহ নানা ধরনের নির্মাণকাজ। করোনার কারণে প্রথমদিকে এসব কাজে ভাটা পড়লেও বর্তমানে বেশ জোরেশোরেই চলছে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড। মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, বিআরটি, ওয়াসা, পানি সরবরাহ লাইন, ড্রেনেজ প্রভৃতি নির্মাণকাজ বাতাসে ধুলার পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়েছে।
অন্যদিকে পলিথিন-কাগজ-প্লাস্টিক ইত্যাদি পোড়ানোর কারণেও হচ্ছে বায়ুদূষণ। ধুলা ও বায়ুদূষণ এতটাই বেড়েছে যে, হাজারীবাগের এক ভুক্তভোগী যুগান্তরকে বলেছেন, ধুলাবালির মধ্যে চলাচল করতে করতে তার শ্বাসকষ্ট হয়ে গেছে, এভাবে চলতে থাকলে তিনি অকালেই প্রাণ হারাবেন এবং তাই চেষ্টা করছেন মফস্বলে বদলি হতে।
শুধু হাজারীবাগ নয়; রাজধানীর মিরপুর, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, বাংলামোটর, শাহবাগ, প্রেস ক্লাব, পল্টন, মতিঝিলসহ অনেক এলাকা ধুলোময় হয়ে আছে।
প্রশ্ন হচ্ছে, ধুলো থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার কোনো চেষ্টা কি পরিলক্ষিত হচ্ছে? দায়িত্বটা আসলে দুই সিটি কর্পোরেশন ও প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলোর। দুই সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে স্বল্প পরিসরে গাড়িতে করে পানি ছিটানোর তৎপরতা দেখা যাচ্ছে বটে, তবে তাতে তেমন কোনো সুফল মিলছে না।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা বলছেন, তারা বিদ্যমান সক্ষমতা দিয়ে ধুলা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন। বর্তমানে উত্তর সিটি কর্পোরেশন ১০টি ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন ৮টি গাড়িতে পানি ছিটাচ্ছে। বলা বাহুল্য, এই সংখ্যা নিতান্তই কম। খুব দ্রুতই গাড়ির সংখ্যা বাড়ানোর ব্যাপক প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া রাজধানীতে চলমান প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলোর দায়িত্ব হচ্ছে ধুলা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
রাজধানীতে ধুলাবালির পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার আরেকটি বড় কারণ মাটি খোঁড়াখুঁড়ি। গ্যাস, পানি, স্যুয়ারেজসহ নানা কারণে সড়ক খনন করা হয়। খননের মাটি সড়কের ওপর স্তূপ করে রাখার কারণে ধুলাবালির সৃষ্টি হচ্ছে। দালানকোঠা অথবা অন্যান্য অবকাঠামোর নির্মাণ সামগ্রী খোলা ট্রাক ও অন্যান্য বাহনে পরিবহন করা হয়। এতেও বাতাসে ধুলা ছড়ায়। আমরা মনে করি, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলো দায়িত্বশীল হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। সবাই নিজ নিজ ক্ষেত্রে ধুলা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলে পরিস্থিতির উন্নতি হতে বাধ্য।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৪০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
ধুলাময় রাজধানী: নিয়ন্ত্রণে গৃহীত ব্যবস্থা কি যথেষ্ট?
শুষ্ক মৌসুম শুরু হয়েছে, আর তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে রাজধানী ঢাকায় ধুলার পরিমাণ বেড়েছে আশঙ্কাজনকভাবে। পরিস্থিতি এখন এতটাই খারাপ যে, ঢাকার কোনো কোনো রাস্তায় যান চলাচল কঠিন হয়ে পড়েছে। পথচারীদেরও কষ্ট হচ্ছে পথ চলতে। ধুলার কারণে সব বয়সী মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন কাশি, শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগব্যাধিতে।
রাজধানীতে ধুলার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ ঘটিয়েছে কয়েকটি মেগা প্রজেক্টসহ নানা ধরনের নির্মাণকাজ। করোনার কারণে প্রথমদিকে এসব কাজে ভাটা পড়লেও বর্তমানে বেশ জোরেশোরেই চলছে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড। মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, বিআরটি, ওয়াসা, পানি সরবরাহ লাইন, ড্রেনেজ প্রভৃতি নির্মাণকাজ বাতাসে ধুলার পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়েছে।
অন্যদিকে পলিথিন-কাগজ-প্লাস্টিক ইত্যাদি পোড়ানোর কারণেও হচ্ছে বায়ুদূষণ। ধুলা ও বায়ুদূষণ এতটাই বেড়েছে যে, হাজারীবাগের এক ভুক্তভোগী যুগান্তরকে বলেছেন, ধুলাবালির মধ্যে চলাচল করতে করতে তার শ্বাসকষ্ট হয়ে গেছে, এভাবে চলতে থাকলে তিনি অকালেই প্রাণ হারাবেন এবং তাই চেষ্টা করছেন মফস্বলে বদলি হতে।
শুধু হাজারীবাগ নয়; রাজধানীর মিরপুর, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, বাংলামোটর, শাহবাগ, প্রেস ক্লাব, পল্টন, মতিঝিলসহ অনেক এলাকা ধুলোময় হয়ে আছে।
প্রশ্ন হচ্ছে, ধুলো থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার কোনো চেষ্টা কি পরিলক্ষিত হচ্ছে? দায়িত্বটা আসলে দুই সিটি কর্পোরেশন ও প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলোর। দুই সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে স্বল্প পরিসরে গাড়িতে করে পানি ছিটানোর তৎপরতা দেখা যাচ্ছে বটে, তবে তাতে তেমন কোনো সুফল মিলছে না।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা বলছেন, তারা বিদ্যমান সক্ষমতা দিয়ে ধুলা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন। বর্তমানে উত্তর সিটি কর্পোরেশন ১০টি ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন ৮টি গাড়িতে পানি ছিটাচ্ছে। বলা বাহুল্য, এই সংখ্যা নিতান্তই কম। খুব দ্রুতই গাড়ির সংখ্যা বাড়ানোর ব্যাপক প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া রাজধানীতে চলমান প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলোর দায়িত্ব হচ্ছে ধুলা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
রাজধানীতে ধুলাবালির পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার আরেকটি বড় কারণ মাটি খোঁড়াখুঁড়ি। গ্যাস, পানি, স্যুয়ারেজসহ নানা কারণে সড়ক খনন করা হয়। খননের মাটি সড়কের ওপর স্তূপ করে রাখার কারণে ধুলাবালির সৃষ্টি হচ্ছে। দালানকোঠা অথবা অন্যান্য অবকাঠামোর নির্মাণ সামগ্রী খোলা ট্রাক ও অন্যান্য বাহনে পরিবহন করা হয়। এতেও বাতাসে ধুলা ছড়ায়। আমরা মনে করি, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলো দায়িত্বশীল হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। সবাই নিজ নিজ ক্ষেত্রে ধুলা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলে পরিস্থিতির উন্নতি হতে বাধ্য।