করোনার টিকা প্রয়োগ শুরু: সার্বজনীন করা প্রয়োজন
সম্পাদকীয়
২৩ জানুয়ারি ২০২১, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
দেশে শিগগির বহুল প্রতীক্ষিত করোনাভাইরাসের টিকা প্রদান কার্যক্রম শুরু হচ্ছে-এটি একটি বড় সুখবর। ভারতের পক্ষ থেকে উপহার হিসাবে ২০ লাখ ডোজ টিকা বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার এই টিকা হাতে আসায় দ্রুতই দেশে টিকাদান শুরু করতে যাচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগ। বন্ধুত্বপূর্ণ এ সহযোগিতার জন্য ভারতের সরকার ও দেশটির জনগণকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। বাণিজ্যিক চুক্তি অনুযায়ী এ মাসের শেষের দিকে ৫০ লাখ ডোজ টিকা আসার কথা রয়েছে। এরপর প্রতিমাসে ৫০ লাখ করে টিকা আসবে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে এ টিকার ট্রায়াল রান করার কথাও রয়েছে। করোনাভাইরাসের টিকা সংরক্ষণে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়, এটি বহুল আলোচিত। এ কাজে যাতে কানো রকম ত্র“টি না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। ত্রিপক্ষীয় চুক্তির অংশ হিসাবে ক্রয় করা টিকার প্রথম চালানও শিগগির এসে পৌঁছার কথা রয়েছে। সব মিলিয়ে আগামী অল্প কিছুদিন পরই দেশের স্বাস্থ্য খাতে এক বিশাল কর্মযজ্ঞ শুরু হবে। এ কাজের সঠিক ব্যবস্থাপনায় যাতে কোনো রকম ত্র“টি না হয়, তা নিশ্চিত করতে যথাযথ প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে হবে।
প্রথমদিকে চিকিৎসক, শিক্ষক, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, পুলিশ, মুক্তিযোদ্ধা, সামরিক সদস্যসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নির্দিষ্ট সংখ্যক ব্যক্তিকে টিকা দেওয়া হলেও আগামী অল্প কিছুদিনের মধ্যেই সারা দেশে একযোগে টিকাদান কার্যক্রম শুরু করার কথা রয়েছে। ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা আমাদের দেশে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল না হওয়ায় গণটিকাদান কার্যক্রম শুরু করার আগে যে ধরনের পদ্ধতি ও সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়, তাতে যেন কোনো ত্র“টি না হয়-তা নিশ্চিত করতে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। জানা গেছে, টিকা প্রদানের পর সংশ্লিষ্টদের পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। যদি
কোনো সমস্যা লক্ষ করা না যায়, তাহলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রকোটল অনুযায়ী পরবর্তী সময়ে যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করে সারা দেশে একযোগে টিকাদান কার্যক্রম শুরু করা হবে।
বিভিন্ন দেশে করোনার টিকা কার্যক্রম শুরু করার পর কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার খবর পাওয়া গেছে । এ বিষয়ক বিস্তারিত তথ্য দেশবাসীকে জানানোর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া না হলে কোনো ব্যক্তি বা মহল গুজব ছড়িয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করতে পারে। বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত, আঠারো বছরের নিচে, অন্তঃসত্ত্বা-এ রকম আরও কিছু ব্যক্তিকে কেন করোনার টিকা প্রদানের বাইরে রাখতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, তা দেশবাসীকে জানানোর পদক্ষেপও নিতে হবে। এসব খবর ইতোমধ্যে গণমাধ্যমে বারবার প্রচারিত হওয়া সত্ত্বেও অনেকের কাছেই তা দেরিতে পৌঁছাতে পারে। কোনো ব্যক্তিকে টিকা প্রদানের আগে সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্যকর্মীদের বিশেষভাবে খোঁজখবর নিতে হবে-যাকে টিকা প্রদান করা হচ্ছে তার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার আশঙ্কা আছে কি না। এ-বিষয়ক কাজগুলো সঠিকভাবে নজরদারি করা যে বেশ জটিল, তা বলাই বাহুল্য। যেহেতু কর্তৃপক্ষ ব্যতিক্রমী একটি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে যাচ্ছে, সেহেতু এ কাজে ব্যাপক প্রস্তুতি থাকা প্রয়োজন। অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনসহ এ-বিষয়ক অন্যান্য কার্যক্রমে যাতে কোনো ধরনের অনিয়ম বা দুর্নীতির ঘটনা না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। টিকা প্রদানের মধ্য দিয়ে দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমে আসবে-এটাই সবার প্রত্যাশা।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৪০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
করোনার টিকা প্রয়োগ শুরু: সার্বজনীন করা প্রয়োজন
দেশে শিগগির বহুল প্রতীক্ষিত করোনাভাইরাসের টিকা প্রদান কার্যক্রম শুরু হচ্ছে-এটি একটি বড় সুখবর। ভারতের পক্ষ থেকে উপহার হিসাবে ২০ লাখ ডোজ টিকা বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার এই টিকা হাতে আসায় দ্রুতই দেশে টিকাদান শুরু করতে যাচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগ। বন্ধুত্বপূর্ণ এ সহযোগিতার জন্য ভারতের সরকার ও দেশটির জনগণকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। বাণিজ্যিক চুক্তি অনুযায়ী এ মাসের শেষের দিকে ৫০ লাখ ডোজ টিকা আসার কথা রয়েছে। এরপর প্রতিমাসে ৫০ লাখ করে টিকা আসবে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে এ টিকার ট্রায়াল রান করার কথাও রয়েছে। করোনাভাইরাসের টিকা সংরক্ষণে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়, এটি বহুল আলোচিত। এ কাজে যাতে কানো রকম ত্র“টি না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। ত্রিপক্ষীয় চুক্তির অংশ হিসাবে ক্রয় করা টিকার প্রথম চালানও শিগগির এসে পৌঁছার কথা রয়েছে। সব মিলিয়ে আগামী অল্প কিছুদিন পরই দেশের স্বাস্থ্য খাতে এক বিশাল কর্মযজ্ঞ শুরু হবে। এ কাজের সঠিক ব্যবস্থাপনায় যাতে কোনো রকম ত্র“টি না হয়, তা নিশ্চিত করতে যথাযথ প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে হবে।
প্রথমদিকে চিকিৎসক, শিক্ষক, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, পুলিশ, মুক্তিযোদ্ধা, সামরিক সদস্যসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নির্দিষ্ট সংখ্যক ব্যক্তিকে টিকা দেওয়া হলেও আগামী অল্প কিছুদিনের মধ্যেই সারা দেশে একযোগে টিকাদান কার্যক্রম শুরু করার কথা রয়েছে। ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা আমাদের দেশে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল না হওয়ায় গণটিকাদান কার্যক্রম শুরু করার আগে যে ধরনের পদ্ধতি ও সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়, তাতে যেন কোনো ত্র“টি না হয়-তা নিশ্চিত করতে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। জানা গেছে, টিকা প্রদানের পর সংশ্লিষ্টদের পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। যদি
কোনো সমস্যা লক্ষ করা না যায়, তাহলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রকোটল অনুযায়ী পরবর্তী সময়ে যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করে সারা দেশে একযোগে টিকাদান কার্যক্রম শুরু করা হবে।
বিভিন্ন দেশে করোনার টিকা কার্যক্রম শুরু করার পর কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার খবর পাওয়া গেছে । এ বিষয়ক বিস্তারিত তথ্য দেশবাসীকে জানানোর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া না হলে কোনো ব্যক্তি বা মহল গুজব ছড়িয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করতে পারে। বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত, আঠারো বছরের নিচে, অন্তঃসত্ত্বা-এ রকম আরও কিছু ব্যক্তিকে কেন করোনার টিকা প্রদানের বাইরে রাখতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, তা দেশবাসীকে জানানোর পদক্ষেপও নিতে হবে। এসব খবর ইতোমধ্যে গণমাধ্যমে বারবার প্রচারিত হওয়া সত্ত্বেও অনেকের কাছেই তা দেরিতে পৌঁছাতে পারে। কোনো ব্যক্তিকে টিকা প্রদানের আগে সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্যকর্মীদের বিশেষভাবে খোঁজখবর নিতে হবে-যাকে টিকা প্রদান করা হচ্ছে তার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার আশঙ্কা আছে কি না। এ-বিষয়ক কাজগুলো সঠিকভাবে নজরদারি করা যে বেশ জটিল, তা বলাই বাহুল্য। যেহেতু কর্তৃপক্ষ ব্যতিক্রমী একটি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে যাচ্ছে, সেহেতু এ কাজে ব্যাপক প্রস্তুতি থাকা প্রয়োজন। অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনসহ এ-বিষয়ক অন্যান্য কার্যক্রমে যাতে কোনো ধরনের অনিয়ম বা দুর্নীতির ঘটনা না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। টিকা প্রদানের মধ্য দিয়ে দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমে আসবে-এটাই সবার প্রত্যাশা।