এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ
বাড়তি টাকা আদায় করা হচ্ছে কোন যুক্তিতে?
সম্পাদকীয়
০৯ এপ্রিল ২০২১, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের একটি বড় অংশের কর্তৃপক্ষের মধ্যে ন্যূনতম মানবিকতা অথবা শুভবুদ্ধি নেই বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে। দেশে চলছে করোনাকাল।
অনেকেই চাকরি হারিয়েছেন, অনেকের আয় কমে গেছে। উপরন্তু দেশে এখন চলমান রয়েছে নানা ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ। এই যখন বাস্তবতা, তখন অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষার ফরম পূরণের জন্য বোর্ড নির্ধারিত ফি-এর অতিরিক্ত টাকা আদায় করছে।
বোর্ড কর্তৃপক্ষ অতিরিক্ত ফি আদায় না করার ব্যাপারে কড়াকড়ি নির্দেশনা জারি করলেও এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ তা মানছে না। কোচিং, মডেল টেস্ট, অনলাইনসহ নানা খাতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে দু-তিন হাজার টাকা আদায় করা হচ্ছে।
উল্লেখ করা যেতে পারে, করোনা মহামারির কারণে এক বছর স্কুল ও মাদ্রাসায় কোনো ক্লাস হয়নি, অথচ অনেক ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বেতন ঠিকই আদায় করা হয়েছে। টেস্ট পরীক্ষা বাতিল করা হলেও অনেক প্রতিষ্ঠান এর ফি আদায় করছে।
অভিভাবকরা পড়েছেন বিপাকে। তারা একরকম জিম্মি হয়ে পড়েছেন। অতিরিক্ত ফি আদায় করার বিষয়টিতে উচ্চবাচ্য করলে সন্তানের ক্ষতি হতে পারে ভেবে তারা মুখ বুঁজে সব সহ্য করছেন।
অভিভাবকরা বলছেন, কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান কোচিং ও মডেল টেস্ট ফি নিচ্ছে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাদের সন্তানদের কোচিং করানো হবে কিনা অথবা মডেল টেস্ট নেওয়া হবে কিনা, তা নিশ্চিত নয়। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তারা কী করবেন ভেবে পাচ্ছেন না। অভিভাবকদের অনেকেই বাধ্য হয়ে ঋণ করছেন বা বিক্রি করছেন স্বর্ণালঙ্কার।
আমাদের প্রশ্ন, এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষের কাণ্ডজ্ঞান বলতে কি কিছুই নেই? পুরো জাতি এক ভয়াবহ সময় অতিক্রম করছে। করোনা আঘাত হেনেছে মানুষের জীবন-জীবিকার ওপর।
এমন অবস্থায় স্বল্প ও সীমিত আয়ের অভিভাবকরা কীভাবে বোর্ড ফি’র অতিরিক্ত টাকা জোগাড় করবেন, এই চিন্তা কি তাদের মাথায় আসে না? সবচেয়ে বড় কথা, গত এক বছর স্কুল-মাদ্রাসা বন্ধ ছিল, প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়া বলতে কিছুই হয়নি। এ অবস্থায় বেতন ও অন্যান্য ফি আদায় করা অযৌক্তিক।
সরকারের উচিত অতিরিক্ত ফি আদায়ের বিষয়টি খতিয়ে দেখা এবং এ ব্যাপারে আদায়কারী কর্তৃপক্ষগুলোর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া। আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক অবশ্য বলেছেন, ফরম পূরণ ফি ছাড়া কোনো খাতেই একটি টাকাও নেওয়া যাবে না।
এ ব্যাপারে কোনো প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেলে তদন্তসাপেক্ষে তাদের সব কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হবে। এরপর টাকা ফেরত দেওয়া হলে ওই প্রতিষ্ঠান পুনঃকার্যক্রম চালাতে পারবে। আমরা আশা করব, তার এ কথার বাস্তব প্রতিফলন ঘটবে।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৪০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ
বাড়তি টাকা আদায় করা হচ্ছে কোন যুক্তিতে?
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের একটি বড় অংশের কর্তৃপক্ষের মধ্যে ন্যূনতম মানবিকতা অথবা শুভবুদ্ধি নেই বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে। দেশে চলছে করোনাকাল।
অনেকেই চাকরি হারিয়েছেন, অনেকের আয় কমে গেছে। উপরন্তু দেশে এখন চলমান রয়েছে নানা ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ। এই যখন বাস্তবতা, তখন অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষার ফরম পূরণের জন্য বোর্ড নির্ধারিত ফি-এর অতিরিক্ত টাকা আদায় করছে।
বোর্ড কর্তৃপক্ষ অতিরিক্ত ফি আদায় না করার ব্যাপারে কড়াকড়ি নির্দেশনা জারি করলেও এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ তা মানছে না। কোচিং, মডেল টেস্ট, অনলাইনসহ নানা খাতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে দু-তিন হাজার টাকা আদায় করা হচ্ছে।
উল্লেখ করা যেতে পারে, করোনা মহামারির কারণে এক বছর স্কুল ও মাদ্রাসায় কোনো ক্লাস হয়নি, অথচ অনেক ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বেতন ঠিকই আদায় করা হয়েছে। টেস্ট পরীক্ষা বাতিল করা হলেও অনেক প্রতিষ্ঠান এর ফি আদায় করছে।
অভিভাবকরা পড়েছেন বিপাকে। তারা একরকম জিম্মি হয়ে পড়েছেন। অতিরিক্ত ফি আদায় করার বিষয়টিতে উচ্চবাচ্য করলে সন্তানের ক্ষতি হতে পারে ভেবে তারা মুখ বুঁজে সব সহ্য করছেন।
অভিভাবকরা বলছেন, কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান কোচিং ও মডেল টেস্ট ফি নিচ্ছে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাদের সন্তানদের কোচিং করানো হবে কিনা অথবা মডেল টেস্ট নেওয়া হবে কিনা, তা নিশ্চিত নয়। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তারা কী করবেন ভেবে পাচ্ছেন না। অভিভাবকদের অনেকেই বাধ্য হয়ে ঋণ করছেন বা বিক্রি করছেন স্বর্ণালঙ্কার।
আমাদের প্রশ্ন, এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষের কাণ্ডজ্ঞান বলতে কি কিছুই নেই? পুরো জাতি এক ভয়াবহ সময় অতিক্রম করছে। করোনা আঘাত হেনেছে মানুষের জীবন-জীবিকার ওপর।
এমন অবস্থায় স্বল্প ও সীমিত আয়ের অভিভাবকরা কীভাবে বোর্ড ফি’র অতিরিক্ত টাকা জোগাড় করবেন, এই চিন্তা কি তাদের মাথায় আসে না? সবচেয়ে বড় কথা, গত এক বছর স্কুল-মাদ্রাসা বন্ধ ছিল, প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়া বলতে কিছুই হয়নি। এ অবস্থায় বেতন ও অন্যান্য ফি আদায় করা অযৌক্তিক।
সরকারের উচিত অতিরিক্ত ফি আদায়ের বিষয়টি খতিয়ে দেখা এবং এ ব্যাপারে আদায়কারী কর্তৃপক্ষগুলোর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া। আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক অবশ্য বলেছেন, ফরম পূরণ ফি ছাড়া কোনো খাতেই একটি টাকাও নেওয়া যাবে না।
এ ব্যাপারে কোনো প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেলে তদন্তসাপেক্ষে তাদের সব কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হবে। এরপর টাকা ফেরত দেওয়া হলে ওই প্রতিষ্ঠান পুনঃকার্যক্রম চালাতে পারবে। আমরা আশা করব, তার এ কথার বাস্তব প্রতিফলন ঘটবে।