মানব পাচার চক্রের প্রতারণা
এ পুরনো ব্যাধির প্রতিকার কী?
১৭ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
দেশে আদম ব্যবসায়ী চক্রের প্রতারণার বিষয়টি বহুল আলোচিত। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কিছু প্রতারককে আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হলেও এসব চক্রের বহু সদস্য থেকে যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে। মানব পাচার চক্রের খপ্পরে পড়ে কিভাবে তরুণরা সর্বস্ব হারাচ্ছেন তা রোববার যুগান্তরে প্রকাশিত এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। সম্প্রতি ইউরোপের বিভিন্ন দেশে যাওয়ার বিষয়ে তরুণদের আগ্রহ বেড়েছে। এ আগ্রহকে পুঁজি করে ইউরোপের ভুয়া ভিসা, ওয়ার্ক পারমিট ইত্যাদি দেখিয়ে তরুণদের কৌশলে ফাঁদে ফেলছে একটি চক্র। এরপর নানা কৌশলে তরুণদের সর্বস্ব লুটে নিচ্ছে আন্তর্জাতিক ওই মানব পাচার চক্র। প্রথমে দেশে কয়েক দফা তরুণদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়। পরে তাদের পাঠানো হয় ভারতে। বলা হয়, সেখান থেকে তাদের ইউরোপ পাঠানো হবে। এরপর সেখানেও ধাপে ধাপে তাদের কাছ থেকে বিপুল অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নেওয়া হয়। পাসপোর্ট কেড়ে নিয়ে তরুণদের হোটেলে জিম্মি করে রাখা হয়; টাকা না দিলে চলতে থাকে নির্যাতন। সম্প্রতি ভারত থেকে পালিয়ে দেশে ফিরেছেন মানব পাচার চক্রের ফাঁদে পা দেওয়া ৯ তরুণ। এদের মধ্যে দুজন মানব পাচারকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। জানা গেছে, মানব পাচার চক্রের কয়েকজন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
মানব পাচার চক্রে বিভিন্ন দেশের নাগরিক যুক্ত থাকে। তাই এ চক্রের সব সদস্যকে দ্রুত আইনের আওতায় আনার কাজটি কঠিন। যেহেতু আন্তর্জাতিক চক্রের সদস্যরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে, সেহেতু পাচার চক্রের সব সদস্যকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা সম্ভব না হলে এদের খপ্পরে পড়ে দেশের বহু তরুণ সর্বস্ব হারাবেন, এমন আশঙ্কা থেকেই যায়। জানা গেছে, বর্তমানে ভারতের বিভিন্ন শহরে এখনো বহু বাংলাদেশি তরুণ জিম্মি রয়েছেন। এদের যাতে দ্রুত উদ্ধার করা যায় সে জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। আদম ব্যবসায়ী চক্রের প্রতারণার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা অব্যাহত থাকলেও প্রতারকদের বিরুদ্ধে জোরালো অভিযান অব্যাহত থাকার বিষয়টি দৃশ্যমান নয়। এ কারণেই আন্তর্জাতিক চক্রের সদস্যরা নানা কৌশলে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। প্রতারণা করে যাতে কেউ পার পেতে না পরে সেজন্য জোরালো অভিযান অব্যাহত রাখা দরকার। মানব পাচার চক্রের সদস্যদের বেপরোয়া হয়ে ওঠার রহস্যও উদ্ঘাটন করা জরুরি। এসব বিষয়ে দেশের মানুষকে সচেতন করার পদক্ষেপ নিতে হবে। দেশে কর্মসংস্থানের সংকট দূর না হলে এ ধরনের সমস্যা ভয়াবহ আকার ধারণ করার আশঙ্কা থেকেই যায়।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
মানব পাচার চক্রের প্রতারণা
এ পুরনো ব্যাধির প্রতিকার কী?
দেশে আদম ব্যবসায়ী চক্রের প্রতারণার বিষয়টি বহুল আলোচিত। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কিছু প্রতারককে আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হলেও এসব চক্রের বহু সদস্য থেকে যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে। মানব পাচার চক্রের খপ্পরে পড়ে কিভাবে তরুণরা সর্বস্ব হারাচ্ছেন তা রোববার যুগান্তরে প্রকাশিত এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। সম্প্রতি ইউরোপের বিভিন্ন দেশে যাওয়ার বিষয়ে তরুণদের আগ্রহ বেড়েছে। এ আগ্রহকে পুঁজি করে ইউরোপের ভুয়া ভিসা, ওয়ার্ক পারমিট ইত্যাদি দেখিয়ে তরুণদের কৌশলে ফাঁদে ফেলছে একটি চক্র। এরপর নানা কৌশলে তরুণদের সর্বস্ব লুটে নিচ্ছে আন্তর্জাতিক ওই মানব পাচার চক্র। প্রথমে দেশে কয়েক দফা তরুণদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়। পরে তাদের পাঠানো হয় ভারতে। বলা হয়, সেখান থেকে তাদের ইউরোপ পাঠানো হবে। এরপর সেখানেও ধাপে ধাপে তাদের কাছ থেকে বিপুল অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নেওয়া হয়। পাসপোর্ট কেড়ে নিয়ে তরুণদের হোটেলে জিম্মি করে রাখা হয়; টাকা না দিলে চলতে থাকে নির্যাতন। সম্প্রতি ভারত থেকে পালিয়ে দেশে ফিরেছেন মানব পাচার চক্রের ফাঁদে পা দেওয়া ৯ তরুণ। এদের মধ্যে দুজন মানব পাচারকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। জানা গেছে, মানব পাচার চক্রের কয়েকজন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
মানব পাচার চক্রে বিভিন্ন দেশের নাগরিক যুক্ত থাকে। তাই এ চক্রের সব সদস্যকে দ্রুত আইনের আওতায় আনার কাজটি কঠিন। যেহেতু আন্তর্জাতিক চক্রের সদস্যরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে, সেহেতু পাচার চক্রের সব সদস্যকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা সম্ভব না হলে এদের খপ্পরে পড়ে দেশের বহু তরুণ সর্বস্ব হারাবেন, এমন আশঙ্কা থেকেই যায়। জানা গেছে, বর্তমানে ভারতের বিভিন্ন শহরে এখনো বহু বাংলাদেশি তরুণ জিম্মি রয়েছেন। এদের যাতে দ্রুত উদ্ধার করা যায় সে জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। আদম ব্যবসায়ী চক্রের প্রতারণার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা অব্যাহত থাকলেও প্রতারকদের বিরুদ্ধে জোরালো অভিযান অব্যাহত থাকার বিষয়টি দৃশ্যমান নয়। এ কারণেই আন্তর্জাতিক চক্রের সদস্যরা নানা কৌশলে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। প্রতারণা করে যাতে কেউ পার পেতে না পরে সেজন্য জোরালো অভিযান অব্যাহত রাখা দরকার। মানব পাচার চক্রের সদস্যদের বেপরোয়া হয়ে ওঠার রহস্যও উদ্ঘাটন করা জরুরি। এসব বিষয়ে দেশের মানুষকে সচেতন করার পদক্ষেপ নিতে হবে। দেশে কর্মসংস্থানের সংকট দূর না হলে এ ধরনের সমস্যা ভয়াবহ আকার ধারণ করার আশঙ্কা থেকেই যায়।