টঙ্গী-জয়দেবপুর রেলপথ: ড্রেন ভেঙে পড়ার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন
সম্পাদকীয়
১৭ মে ২০২২, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
প্রকল্পের কাজ শেষ না হতেই ঢাকা-টঙ্গী চতুর্থ রেললাইন ও টঙ্গী-জয়দেবপুর রুটে ডাবল রেললাইন প্রকল্পের বিভিন্ন স্থানে পানি নিষ্কাশনের জন্য রেললাইনের পাশে নির্মিত ড্রেন ভেঙে পড়ার বিষয়টি উদ্বেগজনক। উদ্বোধনের আগেই ড্রেন ভেঙে পড়ার পাশাপাশি সেখানকার মাটি সরে যাওয়ার ঘটনায় এটাই প্রমাণ হয় যে, এ প্রকল্পে অতি নিম্নমানের কাজ হচ্ছে।
বস্তুত নির্মাণকাজে মানহীন সামগ্রী ব্যবহার ও দায়সারা গোছের কাজ করার নজির এটি, যা কোনোমতেই মেনে নেওয়া যায় না। আশঙ্কার বিষয় হলো, ড্রেন ভেঙে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের পথ রুদ্ধ হওয়ায় রেললাইনের পাশের মাটি ধসে পড়ছে এবং এতে আশপাশের বাড়িঘর ধসে পড়াসহ মূল সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। এছাড়া প্রকল্পের কাজ অত্যন্ত ঢিমেতালে চলায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে স্থানীয়দের।
টঙ্গী থেকে জয়দেবপুর স্টেশন পর্যন্ত ১৬-১৭ কিলোমিটার ডুয়েলগেজ রেলপথ ছাড়াও এ প্রকল্পে একইসঙ্গে ঢাকা-টঙ্গী সেকশনে তৃতীয় ও চতুর্থ ডুয়েলগেজ রেললাইন নির্মাণের কাজ চলছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে কম সময়ে বেশিসংখ্যক যাত্রী পরিবহণ করা সম্ভব হবে। গাজীপুর থেকে অনেকে ট্রেনে ঢাকায় এসে অফিস ও ব্যবসা-বাণিজ্যসহ দৈনন্দিন কাজ সম্পন্ন করতে পারবেন। এর ফলে রাজধানীর ওপর চাপ কমবে, যা বলাই বাহুল্য। জনগুরুত্বপূর্ণ বৃহৎ এ প্রকল্পের এমন দৈন্যদশা কেন, এ প্রশ্নের উত্তর খোঁজা জরুরি। প্রকল্পের কাজে ঠিকাদারের গাফিলতিসহ সংশ্লিষ্টদের দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
রেলের উন্নয়ন প্রকল্পের দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা ও ধীরগতির অভিযোগ তুলে গত বছর ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করে দায়ীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছিল রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। পাশাপাশি রেলের উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ স্থানীয় সংসদ-সদস্যদের দ্বারা তদারকির প্রস্তাবসহ তা বাস্তবায়ন ও বিভিন্ন সরঞ্জাম সংগ্রহের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কোনো দেশের ওপর নির্ভর না করে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্বাচন, রেলওয়ে কল্যাণ ট্রাস্টের প্রকল্প গ্রহণের আগে সম্ভাব্যতা যাচাই করে লাভজনক প্রকল্প গ্রহণ, রেলওয়ের স্ক্র্যাপ পরিমাপের ক্ষেত্রে স্কেল ব্যবহার এবং ক্যারেজ (পুরোনো বগি) মেরামতের ক্ষেত্রে মানসম্মত স্টিল ও অন্যান্য সামগ্রী ব্যবহার ইত্যাদি পরামর্শ দিয়েছিল সংসদীয় কমিটি।
বলার অপেক্ষা রাখে না, এসব প্রস্তাব ও সুপারিশ ছিল সময়োচিত। প্রশ্ন হলো, সুপারিশগুলো কি আদৌ আমলে নেওয়া হয়েছিল? ঢাকা-টঙ্গী চতুর্থ রেললাইন ও টঙ্গী-জয়দেবপুর রুটে ডাবল রেললাইন প্রকল্পের কাজে ধীরগতি, অব্যবস্থাপনা ও নিম্নমানের কাজ দেখে তো তা মনে হয় না।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
টঙ্গী-জয়দেবপুর রেলপথ: ড্রেন ভেঙে পড়ার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন
প্রকল্পের কাজ শেষ না হতেই ঢাকা-টঙ্গী চতুর্থ রেললাইন ও টঙ্গী-জয়দেবপুর রুটে ডাবল রেললাইন প্রকল্পের বিভিন্ন স্থানে পানি নিষ্কাশনের জন্য রেললাইনের পাশে নির্মিত ড্রেন ভেঙে পড়ার বিষয়টি উদ্বেগজনক। উদ্বোধনের আগেই ড্রেন ভেঙে পড়ার পাশাপাশি সেখানকার মাটি সরে যাওয়ার ঘটনায় এটাই প্রমাণ হয় যে, এ প্রকল্পে অতি নিম্নমানের কাজ হচ্ছে।
বস্তুত নির্মাণকাজে মানহীন সামগ্রী ব্যবহার ও দায়সারা গোছের কাজ করার নজির এটি, যা কোনোমতেই মেনে নেওয়া যায় না। আশঙ্কার বিষয় হলো, ড্রেন ভেঙে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের পথ রুদ্ধ হওয়ায় রেললাইনের পাশের মাটি ধসে পড়ছে এবং এতে আশপাশের বাড়িঘর ধসে পড়াসহ মূল সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। এছাড়া প্রকল্পের কাজ অত্যন্ত ঢিমেতালে চলায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে স্থানীয়দের।
টঙ্গী থেকে জয়দেবপুর স্টেশন পর্যন্ত ১৬-১৭ কিলোমিটার ডুয়েলগেজ রেলপথ ছাড়াও এ প্রকল্পে একইসঙ্গে ঢাকা-টঙ্গী সেকশনে তৃতীয় ও চতুর্থ ডুয়েলগেজ রেললাইন নির্মাণের কাজ চলছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে কম সময়ে বেশিসংখ্যক যাত্রী পরিবহণ করা সম্ভব হবে। গাজীপুর থেকে অনেকে ট্রেনে ঢাকায় এসে অফিস ও ব্যবসা-বাণিজ্যসহ দৈনন্দিন কাজ সম্পন্ন করতে পারবেন। এর ফলে রাজধানীর ওপর চাপ কমবে, যা বলাই বাহুল্য। জনগুরুত্বপূর্ণ বৃহৎ এ প্রকল্পের এমন দৈন্যদশা কেন, এ প্রশ্নের উত্তর খোঁজা জরুরি। প্রকল্পের কাজে ঠিকাদারের গাফিলতিসহ সংশ্লিষ্টদের দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
রেলের উন্নয়ন প্রকল্পের দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা ও ধীরগতির অভিযোগ তুলে গত বছর ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করে দায়ীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছিল রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। পাশাপাশি রেলের উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ স্থানীয় সংসদ-সদস্যদের দ্বারা তদারকির প্রস্তাবসহ তা বাস্তবায়ন ও বিভিন্ন সরঞ্জাম সংগ্রহের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কোনো দেশের ওপর নির্ভর না করে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্বাচন, রেলওয়ে কল্যাণ ট্রাস্টের প্রকল্প গ্রহণের আগে সম্ভাব্যতা যাচাই করে লাভজনক প্রকল্প গ্রহণ, রেলওয়ের স্ক্র্যাপ পরিমাপের ক্ষেত্রে স্কেল ব্যবহার এবং ক্যারেজ (পুরোনো বগি) মেরামতের ক্ষেত্রে মানসম্মত স্টিল ও অন্যান্য সামগ্রী ব্যবহার ইত্যাদি পরামর্শ দিয়েছিল সংসদীয় কমিটি।
বলার অপেক্ষা রাখে না, এসব প্রস্তাব ও সুপারিশ ছিল সময়োচিত। প্রশ্ন হলো, সুপারিশগুলো কি আদৌ আমলে নেওয়া হয়েছিল? ঢাকা-টঙ্গী চতুর্থ রেললাইন ও টঙ্গী-জয়দেবপুর রুটে ডাবল রেললাইন প্রকল্পের কাজে ধীরগতি, অব্যবস্থাপনা ও নিম্নমানের কাজ দেখে তো তা মনে হয় না।