ব্যক্তিশ্রেণির করদাতা
করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়ানো উচিত
সম্পাদকীয়
২৮ মে ২০২২, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
আগামী অর্থবছরের বাজেটে ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের ক্ষেত্রে আগের নিয়মই বহাল থাকছে বলে জানা গেছে; অর্থাৎ বছরে কারও ৩ লাখ টাকা আয় হলে তাকে আয়কর দিতে হবে।
উল্লেখ্য, সর্বশেষ করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানো হয়েছিল ২০২০-২১ অর্থবছরে। ওই সময় করমুক্ত আয়সীমা আড়াই লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩ লাখ টাকা করা হয়েছিল।
ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের করমুক্ত আয়সীমা না বাড়ানোর পক্ষে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের যুক্তি হচ্ছে, করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়লে বিপুলসংখ্যক জনগোষ্ঠী আয়করের আওতার বাইরে চলে যাবে।
তাদের মতে, মূল্যস্ফীতি বাড়লেও মানুষের আয়ও বেড়েছে। তাই করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানোকে যৌক্তিক মনে করে না প্রতিষ্ঠানটি। যদিও ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের কাছ থেকে খুব সামান্যই আয়কর আদায় হয়ে থাকে।
বলার অপেক্ষা রাখে না, মূল্যস্ফীতি ইতোমধ্যে জনজীবনে বড় ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করেছে। এমনিতেই করোনার কশাঘাতে চাকরিহারা, বেকার ও আয়-রোজগার কমে যাওয়া মানুষ দৈনন্দিন খরচের টাকা জোগাড় করতে হিমশিম খাচ্ছেন; এর মধ্যে মূল্যস্ফীতির চাপে বড় ধরনের ভোগান্তিতে পড়েছে অনেক পরিবার।
অর্থবছরের শুরুতে মূল্যস্ফীতির হার ৫ দশমিক ৩ শতাংশের মধ্যে রাখার ঘোষণা দেওয়া হলেও নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে তা ধরে রাখা যায়নি।
সরকারের তরফ থেকে এর পক্ষে যুক্তি দিতে গিয়ে বলা হয়েছে, বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশেও মূল্যস্ফীতি হচ্ছে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় তা সমন্বয় করতে দেশে জ্বালানি তেলের মূল্য বাড়ানো হয়েছে। এর ফলে পণ্য ও সেবা খাতের ব্যয় বেড়েছে, যা মূল্যস্ফীতির হারে উল্লম্ফন ঘটিয়েছে।
মূল্যস্ফীতি অব্যাহতভাবে বাড়তে থাকায় মানুষের দৈনন্দিন ব্যয়ের আকার যে স্ফীত থেকে স্ফীততর হচ্ছে, তা বলাই বাহুল্য। এর ফলে নির্দিষ্ট আয় ও পেশার মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে গেছে, তাদের কষ্ট ক্রমাগত বেড়ে চলেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে সাধারণ মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।
এ বাস্তবতায় ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের করমুক্ত আয়সীমা না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণযোগ্য নয়। সাধারণ মানুষের সামগ্রিক অবস্থা বিবেচনা করে আসন্ন বাজেটে করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানো হবে, এটাই প্রত্যাশা।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
ব্যক্তিশ্রেণির করদাতা
করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়ানো উচিত
আগামী অর্থবছরের বাজেটে ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের ক্ষেত্রে আগের নিয়মই বহাল থাকছে বলে জানা গেছে; অর্থাৎ বছরে কারও ৩ লাখ টাকা আয় হলে তাকে আয়কর দিতে হবে।
উল্লেখ্য, সর্বশেষ করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানো হয়েছিল ২০২০-২১ অর্থবছরে। ওই সময় করমুক্ত আয়সীমা আড়াই লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩ লাখ টাকা করা হয়েছিল।
ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের করমুক্ত আয়সীমা না বাড়ানোর পক্ষে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের যুক্তি হচ্ছে, করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়লে বিপুলসংখ্যক জনগোষ্ঠী আয়করের আওতার বাইরে চলে যাবে।
তাদের মতে, মূল্যস্ফীতি বাড়লেও মানুষের আয়ও বেড়েছে। তাই করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানোকে যৌক্তিক মনে করে না প্রতিষ্ঠানটি। যদিও ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের কাছ থেকে খুব সামান্যই আয়কর আদায় হয়ে থাকে।
বলার অপেক্ষা রাখে না, মূল্যস্ফীতি ইতোমধ্যে জনজীবনে বড় ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করেছে। এমনিতেই করোনার কশাঘাতে চাকরিহারা, বেকার ও আয়-রোজগার কমে যাওয়া মানুষ দৈনন্দিন খরচের টাকা জোগাড় করতে হিমশিম খাচ্ছেন; এর মধ্যে মূল্যস্ফীতির চাপে বড় ধরনের ভোগান্তিতে পড়েছে অনেক পরিবার।
অর্থবছরের শুরুতে মূল্যস্ফীতির হার ৫ দশমিক ৩ শতাংশের মধ্যে রাখার ঘোষণা দেওয়া হলেও নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে তা ধরে রাখা যায়নি।
সরকারের তরফ থেকে এর পক্ষে যুক্তি দিতে গিয়ে বলা হয়েছে, বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশেও মূল্যস্ফীতি হচ্ছে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় তা সমন্বয় করতে দেশে জ্বালানি তেলের মূল্য বাড়ানো হয়েছে। এর ফলে পণ্য ও সেবা খাতের ব্যয় বেড়েছে, যা মূল্যস্ফীতির হারে উল্লম্ফন ঘটিয়েছে।
মূল্যস্ফীতি অব্যাহতভাবে বাড়তে থাকায় মানুষের দৈনন্দিন ব্যয়ের আকার যে স্ফীত থেকে স্ফীততর হচ্ছে, তা বলাই বাহুল্য। এর ফলে নির্দিষ্ট আয় ও পেশার মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে গেছে, তাদের কষ্ট ক্রমাগত বেড়ে চলেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে সাধারণ মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।
এ বাস্তবতায় ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের করমুক্ত আয়সীমা না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণযোগ্য নয়। সাধারণ মানুষের সামগ্রিক অবস্থা বিবেচনা করে আসন্ন বাজেটে করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানো হবে, এটাই প্রত্যাশা।