বাড়ছে করোনার প্রকোপ
স্বাস্থ্যবিধির ওপর কড়াকড়ি আরোপের সময় এসেছে
সম্পাদকীয়
২৭ জুন ২০২২, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
কিছুদিন স্বস্তিতে কাটলেও হঠাৎ করোনার প্রকোপ বৃদ্ধির মূল কারণ মানুষের উদাসীনতা। ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত ১৫ শতাংশ ছাড়িয়ে যাওয়ার তথ্য থেকেই স্পষ্ট পরিস্থিতি কোন্দিকে যাচ্ছে। ২০ জুনের আগে টানা ২০ দিন দেশে করোনায় কেউ মারা যায়নি। ২০ জুন করোনায় একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এরপর থেকে কয়েকদিন করোনায় একজন করে মৃত্যু হয়েছে। এরপর একদিনে তিনজনের মৃত্যু হওয়া এবং সহস্রাধিক মানুষের করোনা শনাক্ত হওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এখনই সবাইকে সতর্ক হতে হবে। করোনা মোকাবিলায় কী করণীয়, তা কমবেশি সবারই জানা আছে। এখন দরকার সবাইকে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেওয়া। লক্ষ করা গেছে, কর্তৃপক্ষ কঠোর পদক্ষেপ না নিলে বেশিরভাগ মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে খুব একটা দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেয় না। কাজেই পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করার আগেই কর্তৃপক্ষের উচিত যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া। করোনার প্রকোপ কমে আসায় দেশে বিভিন্ন খাতের ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার জন্য যখন নানা চেষ্টা চলছে, তখন নতুন করে পরিস্থিতির অবনতির বিষয়টি উদ্বেগজনক। দেশে গত কয়েকদিনে শনাক্তের যেসব খবর পাওয়া যাচ্ছে, বাস্তবে এ সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। কারণ অনেকের উপসর্গ থাকলেও পরীক্ষা করাচ্ছেন না। দেশে করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকায় ছয় দফা ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে সরকারের করোনাসংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। কাজেই এখন আমাদের বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে। সবাই সতর্ক থাকলে করোনার নতুন ঢেউ সীমিত রাখা কঠিন কোনো কাজ নয়।
দেশে সংক্রমণ কমে আসায় আবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়; তুলে নেওয়া হয় করোনাকালীন বিধিনিষেধ। করোনার প্রকোপ যাতে না বাড়ে সেজন্য শিক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। এখনো ১২ বছরের নিচের শিশুরা টিকা পায়নি। কাজেই কম বয়সি শিক্ষার্থীদের ঝুঁকিমুক্ত রাখতে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। দেশে এমন এক সময় করোনার প্রকোপ বাড়ছে, যখন ভয়াবহ বন্যার ক্ষতি মোকাবিলায় বিভিন্ন এলাকার মানুষ দিশেহারা। করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্টগুলো মানুষের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে সহজেই ফাঁকি দিতে সক্ষম। ফলে টিকা নেওয়া ব্যক্তিরাও নতুন ভ্যারিয়েন্ট দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছেন। বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, আগামী দিনে নতুন সাব-ভ্যারিয়েন্ট তুলনামূলক বেশি সংক্রমণশীল হবে। কাজেই সংক্রমণ এড়াতে সবাইকে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। করোনার কারণে দেশের প্রধান রপ্তানি খাতগুলোতেও নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে রপ্তানির নতুন বাজার খুঁজতে হবে এবং রপ্তানি খাতে বৈচিত্র্য আনার পদক্ষেপ নিতে হবে। দেশের সব ধরনের উদ্যোক্তা যাতে সংকটময় পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে পারেন, সেজন্য আগে থেকেই যথাযথ প্রস্তুতি নিতে হবে। করোনার নতুন ঢেউ মোকাবিলায় সবাইকে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
বাড়ছে করোনার প্রকোপ
স্বাস্থ্যবিধির ওপর কড়াকড়ি আরোপের সময় এসেছে
কিছুদিন স্বস্তিতে কাটলেও হঠাৎ করোনার প্রকোপ বৃদ্ধির মূল কারণ মানুষের উদাসীনতা। ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত ১৫ শতাংশ ছাড়িয়ে যাওয়ার তথ্য থেকেই স্পষ্ট পরিস্থিতি কোন্দিকে যাচ্ছে। ২০ জুনের আগে টানা ২০ দিন দেশে করোনায় কেউ মারা যায়নি। ২০ জুন করোনায় একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এরপর থেকে কয়েকদিন করোনায় একজন করে মৃত্যু হয়েছে। এরপর একদিনে তিনজনের মৃত্যু হওয়া এবং সহস্রাধিক মানুষের করোনা শনাক্ত হওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এখনই সবাইকে সতর্ক হতে হবে। করোনা মোকাবিলায় কী করণীয়, তা কমবেশি সবারই জানা আছে। এখন দরকার সবাইকে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেওয়া। লক্ষ করা গেছে, কর্তৃপক্ষ কঠোর পদক্ষেপ না নিলে বেশিরভাগ মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে খুব একটা দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেয় না। কাজেই পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করার আগেই কর্তৃপক্ষের উচিত যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া। করোনার প্রকোপ কমে আসায় দেশে বিভিন্ন খাতের ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার জন্য যখন নানা চেষ্টা চলছে, তখন নতুন করে পরিস্থিতির অবনতির বিষয়টি উদ্বেগজনক। দেশে গত কয়েকদিনে শনাক্তের যেসব খবর পাওয়া যাচ্ছে, বাস্তবে এ সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। কারণ অনেকের উপসর্গ থাকলেও পরীক্ষা করাচ্ছেন না। দেশে করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকায় ছয় দফা ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে সরকারের করোনাসংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। কাজেই এখন আমাদের বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে। সবাই সতর্ক থাকলে করোনার নতুন ঢেউ সীমিত রাখা কঠিন কোনো কাজ নয়।
দেশে সংক্রমণ কমে আসায় আবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়; তুলে নেওয়া হয় করোনাকালীন বিধিনিষেধ। করোনার প্রকোপ যাতে না বাড়ে সেজন্য শিক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। এখনো ১২ বছরের নিচের শিশুরা টিকা পায়নি। কাজেই কম বয়সি শিক্ষার্থীদের ঝুঁকিমুক্ত রাখতে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। দেশে এমন এক সময় করোনার প্রকোপ বাড়ছে, যখন ভয়াবহ বন্যার ক্ষতি মোকাবিলায় বিভিন্ন এলাকার মানুষ দিশেহারা। করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্টগুলো মানুষের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে সহজেই ফাঁকি দিতে সক্ষম। ফলে টিকা নেওয়া ব্যক্তিরাও নতুন ভ্যারিয়েন্ট দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছেন। বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, আগামী দিনে নতুন সাব-ভ্যারিয়েন্ট তুলনামূলক বেশি সংক্রমণশীল হবে। কাজেই সংক্রমণ এড়াতে সবাইকে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। করোনার কারণে দেশের প্রধান রপ্তানি খাতগুলোতেও নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে রপ্তানির নতুন বাজার খুঁজতে হবে এবং রপ্তানি খাতে বৈচিত্র্য আনার পদক্ষেপ নিতে হবে। দেশের সব ধরনের উদ্যোক্তা যাতে সংকটময় পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে পারেন, সেজন্য আগে থেকেই যথাযথ প্রস্তুতি নিতে হবে। করোনার নতুন ঢেউ মোকাবিলায় সবাইকে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে।