শরীয়তপুরে পরিবহণ সিন্ডিকেট
যাত্রীসাধারণের দেখভাল করবে কে?
সম্পাদকীয়
৩০ জুন ২০২২, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানীর যোগাযোগ সহজ হয়ে যাবে, এমনটা আশা করা হলেও শরীয়তপুরবাসীর দুর্ভোগ কমেনি, বরং বেড়েছে
। পদ্মা সেতুর সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। সেখানে গড়ে উঠেছে এমন এক পরিবহণ সিন্ডিকেট, যা সাধারণ মানুষের যাতায়াতকে নির্বিঘ্ন হতে দিচ্ছে না।
এই সিন্ডিকেট জেলা মালিক গ্রুপের ‘শরীয়তপুর সুপার সার্ভিস’ পরিবহণের নিয়ন্ত্রণ হাতে তুলে নিয়ে চলতে দিচ্ছে না অন্য কোনো কোম্পানির বাস। অন্যরা বাস নামালে তাতে বাধা দেওয়া হচ্ছে, বাস থেকে নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে যাত্রী।
এমনকি সরকারি বাস সার্ভিস বিআরটিসির বাসও চলতে দেওয়া হচ্ছে না। এরই মধ্যে বিআরটিসি বাসে দুই দফা ভাঙচুর হয়েছে এবং বাস থেকে যাত্রীদের নামিয়ে দেওয়া হয়েছে। সিন্ডিকেটটি আরেকটি বড় অন্যায় করছে।
সরকার ঢাকা-শরীয়তপুর বাসভাড়া নির্ধারণ করে দিয়েছে ২১৯ টাকা, অথচ সিন্ডিকেট পরিচালিত শরীয়তপুর সুপার সার্ভিস যাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করছে ২৫০ থেকে ২৬০ টাকা। বস্তুত শরীয়তপুরবাসী চলাচলের ক্ষেত্রে পড়েছেন মহাদুর্ভোগে। একদিকে বাস সংকট ও ফোর লেন না হওয়া, অন্যদিকে রাস্তাঘাটের বেহাল দশা, এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে জেলা বাস মালিক গ্রুপের স্বেচ্ছাচারিতা।
শরীয়তপুরে জেলা বাস মালিক গ্রুপের এই স্বেচ্ছাচারিতা রুখবে কে? জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এ বিষয়ে একটি সভা হয়েছে। কিন্তু এই সভায় যে সিদ্ধান্ত হয়েছে, তা সন্তোষজনক নয়। সিদ্ধান্ত হয়েছে নড়িয়া, গোসাইরহাট ও ভেদরগঞ্জ থেকে বিআরটিসির ছয়টি বাস চলবে; কিন্তু শরীয়তপুর সদর থেকে কোনো যাত্রী নেওয়া যাবে না! কথা হচ্ছে, এ কেমন সিদ্ধান্ত?
পদ্মা ট্রাভেলস লিমিটেডের চেয়ারম্যান বলেছেন, জেলা বাস মালিক গ্রুপের লোকজন আমাদের বাস জেলা শহরে চলতে দিচ্ছে না, তাই আমরা জাজিরা দিয়ে ঢাকায় বাস চালানোর চেষ্টা করছি। ওদিকে শরীয়তপুর পরিবহণের লাইনম্যান মহসিন বলছেন, তাদের সব কাগজপত্র ঠিক থাকার পরও বাস মালিক গ্রুপ তাদের বাস চালাতে দিচ্ছে না। এ এক বড় অরাজকতা।
এই অরাজকতা থেকে শরীয়তপুরের পরিবহণ খাতকে মুক্ত করতে হবে। শরীয়তপুরবাসী তাদের পছন্দ অনুযায়ী যে কোনো পরিবহণে চলাচল করবে-এটা তাদের স্বাধীনতা। একটি নির্দিষ্ট পরিবহণে চলাচল করতে তাদের বাধ্য করা চরম স্বেচ্ছাচারিতার নামান্তর। আমরা শরীয়তপুরের পরিবহণ সিন্ডিকেটের কবল থেকে সাধারণ মানুষ ও অন্যান্য পরিবহণকে মুক্ত করতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
শরীয়তপুরে পরিবহণ সিন্ডিকেট
যাত্রীসাধারণের দেখভাল করবে কে?
পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানীর যোগাযোগ সহজ হয়ে যাবে, এমনটা আশা করা হলেও শরীয়তপুরবাসীর দুর্ভোগ কমেনি, বরং বেড়েছে
। পদ্মা সেতুর সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। সেখানে গড়ে উঠেছে এমন এক পরিবহণ সিন্ডিকেট, যা সাধারণ মানুষের যাতায়াতকে নির্বিঘ্ন হতে দিচ্ছে না।
এই সিন্ডিকেট জেলা মালিক গ্রুপের ‘শরীয়তপুর সুপার সার্ভিস’ পরিবহণের নিয়ন্ত্রণ হাতে তুলে নিয়ে চলতে দিচ্ছে না অন্য কোনো কোম্পানির বাস। অন্যরা বাস নামালে তাতে বাধা দেওয়া হচ্ছে, বাস থেকে নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে যাত্রী।
এমনকি সরকারি বাস সার্ভিস বিআরটিসির বাসও চলতে দেওয়া হচ্ছে না। এরই মধ্যে বিআরটিসি বাসে দুই দফা ভাঙচুর হয়েছে এবং বাস থেকে যাত্রীদের নামিয়ে দেওয়া হয়েছে। সিন্ডিকেটটি আরেকটি বড় অন্যায় করছে।
সরকার ঢাকা-শরীয়তপুর বাসভাড়া নির্ধারণ করে দিয়েছে ২১৯ টাকা, অথচ সিন্ডিকেট পরিচালিত শরীয়তপুর সুপার সার্ভিস যাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করছে ২৫০ থেকে ২৬০ টাকা। বস্তুত শরীয়তপুরবাসী চলাচলের ক্ষেত্রে পড়েছেন মহাদুর্ভোগে। একদিকে বাস সংকট ও ফোর লেন না হওয়া, অন্যদিকে রাস্তাঘাটের বেহাল দশা, এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে জেলা বাস মালিক গ্রুপের স্বেচ্ছাচারিতা।
শরীয়তপুরে জেলা বাস মালিক গ্রুপের এই স্বেচ্ছাচারিতা রুখবে কে? জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এ বিষয়ে একটি সভা হয়েছে। কিন্তু এই সভায় যে সিদ্ধান্ত হয়েছে, তা সন্তোষজনক নয়। সিদ্ধান্ত হয়েছে নড়িয়া, গোসাইরহাট ও ভেদরগঞ্জ থেকে বিআরটিসির ছয়টি বাস চলবে; কিন্তু শরীয়তপুর সদর থেকে কোনো যাত্রী নেওয়া যাবে না! কথা হচ্ছে, এ কেমন সিদ্ধান্ত?
পদ্মা ট্রাভেলস লিমিটেডের চেয়ারম্যান বলেছেন, জেলা বাস মালিক গ্রুপের লোকজন আমাদের বাস জেলা শহরে চলতে দিচ্ছে না, তাই আমরা জাজিরা দিয়ে ঢাকায় বাস চালানোর চেষ্টা করছি। ওদিকে শরীয়তপুর পরিবহণের লাইনম্যান মহসিন বলছেন, তাদের সব কাগজপত্র ঠিক থাকার পরও বাস মালিক গ্রুপ তাদের বাস চালাতে দিচ্ছে না। এ এক বড় অরাজকতা।
এই অরাজকতা থেকে শরীয়তপুরের পরিবহণ খাতকে মুক্ত করতে হবে। শরীয়তপুরবাসী তাদের পছন্দ অনুযায়ী যে কোনো পরিবহণে চলাচল করবে-এটা তাদের স্বাধীনতা। একটি নির্দিষ্ট পরিবহণে চলাচল করতে তাদের বাধ্য করা চরম স্বেচ্ছাচারিতার নামান্তর। আমরা শরীয়তপুরের পরিবহণ সিন্ডিকেটের কবল থেকে সাধারণ মানুষ ও অন্যান্য পরিবহণকে মুক্ত করতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।