কূটনীতিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ
শিষ্টাচার সম্পর্কিত কঠোর নির্দেশনা প্রয়োজন
সম্পাদকীয়
০৪ আগস্ট ২০২২, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
ইন্দোনেশিয়ায় একজন বাংলাদেশি কূটনীতিকের বাসা থেকে মাদকদ্রব্য উদ্ধার এবং তাকে ফিরিয়ে আনার ঘটনা শুধু সরকারের জন্যই বিব্রতকর নয়, এটি দেশের ভাবমূর্তির জন্যও ক্ষতিকর।
উল্লেখ্য, জাকার্তায় বাংলাদেশ দূতাবাসের উপপ্রধান কাজী আনারকলির বাসায় নিষিদ্ধ ঘোষিত মাদক মারিজুয়ানা রাখার অভিযোগ উঠেছে। ইন্দোনেশিয়ার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নাইজেরিয়ার নাগরিকের সঙ্গে মারিজুয়ানাসহ আনারকলিকে কয়েক ঘণ্টা আটকে রাখে।
এরপর বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের অনুরোধে আনারকলিকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে ইন্দোনেশিয়ার তরফ থেকে ফেরত পাঠানোর অনুরোধের পর তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেছেন, বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
জানা গেছে, কূটনৈতিক দায়িত্ব থেকে কাজী আনারকলিকে ফেরত আনার ঘটনা এবারই প্রথম নয়। এর আগে বাসায় গৃহকর্মী নিখোঁজের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের লসঅ্যাঞ্জেলেস থেকে তাকে ফেরত আনা হয়েছিল। প্রসঙ্গত, বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশি কূটনীতিকদের বা তাদের পরিবারের সদস্যদের নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের ঘটনা আগেও ঘটেছে। অবশ্য দেশে ফিরিয়ে এনে শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে। তবে প্রশ্ন হলো, একজন কূটনীতিককে কূটনৈতিক ভব্যতা ও শিষ্টাচার সম্পর্কিত নির্দেশনা ও প্রশিক্ষণ সহকারেই কোনো দায়িত্ব দিয়ে বিদেশে পাঠানো হয়; তারপরও কোনো কোনো কূটনীতিকের আচরণে এর ব্যত্যয় ঘটছে কেন? ভুলে গেলে চলবে না, একজন কূটনীতিক বিদেশে নিজ দেশ ও সরকারের প্রতিনিধিত্ব করেন। তার বিরুদ্ধে যে কোনো ধরনের অনিয়ম বা অভিযোগ দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে। সংশ্লিষ্ট দূতাবাসের দৈনন্দিন কাজকর্মও ব্যাহত হয়। এছাড়া বিদেশে তদন্ত কমিটি পাঠানোসহ নানা প্রক্রিয়ায় কর্মকর্তাদের মূল্যবান সময়ের পাশাপাশি রাষ্ট্রের মোটা অঙ্কের অর্থেরও অপচয় হয়। কাজেই কূটনীতিকদের আরও কঠোরভাবে নির্দেশনা ও প্রশিক্ষণ দিয়ে বিদেশে পাঠানো উচিত বলে মনে করি আমরা। কূটনীতিকদের কাজ দেশের ভাবমূর্তি বাড়ানো। মিশন চালাতে সরকারের ব্যয়ের পরিপ্রেক্ষিতে আয় বাড়ানো। কিন্তু সেসব না করে তারা ক্ষুদ্র স্বার্থরক্ষা এবং নানা অপকর্মের কারণে বিতর্কিত হয়ে দেশের বোঝা হয়ে উঠছেন। এটা চলতে পারে না। এ ধরনের কূটনীতিকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার বিকল্প নেই।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
কূটনীতিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ
শিষ্টাচার সম্পর্কিত কঠোর নির্দেশনা প্রয়োজন
ইন্দোনেশিয়ায় একজন বাংলাদেশি কূটনীতিকের বাসা থেকে মাদকদ্রব্য উদ্ধার এবং তাকে ফিরিয়ে আনার ঘটনা শুধু সরকারের জন্যই বিব্রতকর নয়, এটি দেশের ভাবমূর্তির জন্যও ক্ষতিকর।
উল্লেখ্য, জাকার্তায় বাংলাদেশ দূতাবাসের উপপ্রধান কাজী আনারকলির বাসায় নিষিদ্ধ ঘোষিত মাদক মারিজুয়ানা রাখার অভিযোগ উঠেছে। ইন্দোনেশিয়ার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নাইজেরিয়ার নাগরিকের সঙ্গে মারিজুয়ানাসহ আনারকলিকে কয়েক ঘণ্টা আটকে রাখে।
এরপর বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের অনুরোধে আনারকলিকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে ইন্দোনেশিয়ার তরফ থেকে ফেরত পাঠানোর অনুরোধের পর তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেছেন, বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
জানা গেছে, কূটনৈতিক দায়িত্ব থেকে কাজী আনারকলিকে ফেরত আনার ঘটনা এবারই প্রথম নয়। এর আগে বাসায় গৃহকর্মী নিখোঁজের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের লসঅ্যাঞ্জেলেস থেকে তাকে ফেরত আনা হয়েছিল। প্রসঙ্গত, বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশি কূটনীতিকদের বা তাদের পরিবারের সদস্যদের নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের ঘটনা আগেও ঘটেছে। অবশ্য দেশে ফিরিয়ে এনে শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে। তবে প্রশ্ন হলো, একজন কূটনীতিককে কূটনৈতিক ভব্যতা ও শিষ্টাচার সম্পর্কিত নির্দেশনা ও প্রশিক্ষণ সহকারেই কোনো দায়িত্ব দিয়ে বিদেশে পাঠানো হয়; তারপরও কোনো কোনো কূটনীতিকের আচরণে এর ব্যত্যয় ঘটছে কেন? ভুলে গেলে চলবে না, একজন কূটনীতিক বিদেশে নিজ দেশ ও সরকারের প্রতিনিধিত্ব করেন। তার বিরুদ্ধে যে কোনো ধরনের অনিয়ম বা অভিযোগ দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে। সংশ্লিষ্ট দূতাবাসের দৈনন্দিন কাজকর্মও ব্যাহত হয়। এছাড়া বিদেশে তদন্ত কমিটি পাঠানোসহ নানা প্রক্রিয়ায় কর্মকর্তাদের মূল্যবান সময়ের পাশাপাশি রাষ্ট্রের মোটা অঙ্কের অর্থেরও অপচয় হয়। কাজেই কূটনীতিকদের আরও কঠোরভাবে নির্দেশনা ও প্রশিক্ষণ দিয়ে বিদেশে পাঠানো উচিত বলে মনে করি আমরা। কূটনীতিকদের কাজ দেশের ভাবমূর্তি বাড়ানো। মিশন চালাতে সরকারের ব্যয়ের পরিপ্রেক্ষিতে আয় বাড়ানো। কিন্তু সেসব না করে তারা ক্ষুদ্র স্বার্থরক্ষা এবং নানা অপকর্মের কারণে বিতর্কিত হয়ে দেশের বোঝা হয়ে উঠছেন। এটা চলতে পারে না। এ ধরনের কূটনীতিকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার বিকল্প নেই।