ইসিতে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ
‘মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক’ কার্যালয়ের চূড়ান্ত অডিট ইনস্পেকশনে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) বড় ধরনের অনিয়মের তথ্য উঠে এসেছে। এ প্রতিবেদনে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ও এর অধীন ১০ কার্যালয় এবং ৩ প্রকল্পে ১৫১ কোটি ৬৫ লাখ ৩১ হাজার টাকার আর্থিক অনিয়ম চিহ্নিত হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদন ছাড়াই বেশি দামে কেনা হয়েছে ২৫৩৫টি ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)। প্রশিক্ষণের নামে নেওয়া হয়েছে বাড়তি ভাতা। প্রাধিকারের বাইরে অতিরিক্ত গাড়ি ব্যবহার করা হয়েছে, নেওয়া হয়েছে জ্বালানি খরচ। প্রতিবেদনে ৫২টি আপত্তি উত্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে গুরুতর আর্থিক অনিয়মসংক্রান্ত আপত্তি ২১টি। পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন ও বিধিমালা যথাযথভাবে অনুসরণ না করার ২৪টি এবং অন্যান্য আর্থিক বিধিবিধান লঙ্ঘনসংক্রান্ত ২২টি আলাদা আপত্তি তোলা হয়েছে। বাকিগুলো আয়কর, ভ্যাট ও খাত পরিবর্তনসংক্রান্ত। নিরীক্ষায় আর্থিক অনিয়মের জন্য দায়ী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। উল্লেখ্য, অনিয়মগুলো সংঘটিত হয়েছে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশনে।
নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক সংস্থা। এই কমিশনে এত বড় অনিয়ম সংঘটিত হওয়ার সংবাদ নিঃসন্দেহে বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নির্বাচন কমিশন সততা ও দক্ষতার সঙ্গে পরিচালিত হয়ে জনগণের প্রতিনিধি নির্বাচনে মূল নিয়ামকের ভূমিকা পালন করবে, এটাই সবার প্রত্যাশা। কিন্তু এই কমিশনের অভ্যন্তরেই যদি অনিয়মের ঘটনা ঘটে, তাহলে স্বভাবতই প্রশ্ন উঠবে-কমিশনের সদস্যরা কীভাবে একটি নিয়মতান্ত্রিক সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করবে। আমরা মনে করি, ‘মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক’ কার্যালয় নির্বাচন কমিশনে সংঘটিত যেসব অনিয়ম চিহ্নিত করেছে, সেগুলো বিস্তৃত তদন্তের আওতায় আসা উচিত। শুধু তাই নয়, অনিয়মগুলোর সঙ্গে যারা জড়িত, তদন্তসাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থাও নেওয়া দরকার। স্মরণ করা যেতে পারে, হুদা কমিশনের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ এনে এর প্রতিকার চেয়েছিলেন দেশের বিশিষ্ট নাগরিকরা। বর্তমান প্রতিবেদনের পর তাদের সেই অভিযোগের যথার্থতা মিলেছে। এখন দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া না হলে নির্বাচন কমিশনের ব্যাপারে জনমনে যে আস্থার সংকট রয়েছে, তা দূর হবে না। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান একই কথা বলেছেন। তিনি বলেন, আর্থিক অভিযোগের অনিয়মগুলো খতিয়ে না দেখলে নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থার সংকট আরও প্রকট হবে। আমাদের শেষ কথা হলো, সাংবিধানিক সংস্থা মানে এই নয় যে, এর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আইনের ঊর্ধ্বে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বিষয়টিতে এগিয়ে আসবে বলে আমাদের বিশ্বাস।
ইসিতে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ
সম্পাদকীয়
০৭ আগস্ট ২০২২, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
‘মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক’ কার্যালয়ের চূড়ান্ত অডিট ইনস্পেকশনে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) বড় ধরনের অনিয়মের তথ্য উঠে এসেছে। এ প্রতিবেদনে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ও এর অধীন ১০ কার্যালয় এবং ৩ প্রকল্পে ১৫১ কোটি ৬৫ লাখ ৩১ হাজার টাকার আর্থিক অনিয়ম চিহ্নিত হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদন ছাড়াই বেশি দামে কেনা হয়েছে ২৫৩৫টি ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)। প্রশিক্ষণের নামে নেওয়া হয়েছে বাড়তি ভাতা। প্রাধিকারের বাইরে অতিরিক্ত গাড়ি ব্যবহার করা হয়েছে, নেওয়া হয়েছে জ্বালানি খরচ। প্রতিবেদনে ৫২টি আপত্তি উত্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে গুরুতর আর্থিক অনিয়মসংক্রান্ত আপত্তি ২১টি। পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন ও বিধিমালা যথাযথভাবে অনুসরণ না করার ২৪টি এবং অন্যান্য আর্থিক বিধিবিধান লঙ্ঘনসংক্রান্ত ২২টি আলাদা আপত্তি তোলা হয়েছে। বাকিগুলো আয়কর, ভ্যাট ও খাত পরিবর্তনসংক্রান্ত। নিরীক্ষায় আর্থিক অনিয়মের জন্য দায়ী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। উল্লেখ্য, অনিয়মগুলো সংঘটিত হয়েছে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশনে।
নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক সংস্থা। এই কমিশনে এত বড় অনিয়ম সংঘটিত হওয়ার সংবাদ নিঃসন্দেহে বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নির্বাচন কমিশন সততা ও দক্ষতার সঙ্গে পরিচালিত হয়ে জনগণের প্রতিনিধি নির্বাচনে মূল নিয়ামকের ভূমিকা পালন করবে, এটাই সবার প্রত্যাশা। কিন্তু এই কমিশনের অভ্যন্তরেই যদি অনিয়মের ঘটনা ঘটে, তাহলে স্বভাবতই প্রশ্ন উঠবে-কমিশনের সদস্যরা কীভাবে একটি নিয়মতান্ত্রিক সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করবে। আমরা মনে করি, ‘মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক’ কার্যালয় নির্বাচন কমিশনে সংঘটিত যেসব অনিয়ম চিহ্নিত করেছে, সেগুলো বিস্তৃত তদন্তের আওতায় আসা উচিত। শুধু তাই নয়, অনিয়মগুলোর সঙ্গে যারা জড়িত, তদন্তসাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থাও নেওয়া দরকার। স্মরণ করা যেতে পারে, হুদা কমিশনের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ এনে এর প্রতিকার চেয়েছিলেন দেশের বিশিষ্ট নাগরিকরা। বর্তমান প্রতিবেদনের পর তাদের সেই অভিযোগের যথার্থতা মিলেছে। এখন দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া না হলে নির্বাচন কমিশনের ব্যাপারে জনমনে যে আস্থার সংকট রয়েছে, তা দূর হবে না। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান একই কথা বলেছেন। তিনি বলেন, আর্থিক অভিযোগের অনিয়মগুলো খতিয়ে না দেখলে নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থার সংকট আরও প্রকট হবে। আমাদের শেষ কথা হলো, সাংবিধানিক সংস্থা মানে এই নয় যে, এর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আইনের ঊর্ধ্বে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বিষয়টিতে এগিয়ে আসবে বলে আমাদের বিশ্বাস।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by The Daily Jugantor © 2023