আবারও বিদেশ ভ্রমণের প্রস্তাব
এ সময়ে অপচয় বন্ধ করা বেশি জরুরি
দেশে কৃচ্ছ্রসাধনের নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সার্বিক অর্থনৈতিক সংকটের কারণেই এ উদ্যোগ। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, কৃচ্ছ্রসাধনের পরিবর্তে সরকারি পর্যায়ে বিদেশ ভ্রমণের প্রস্তাব আসছে একের পর এক। পরিকল্পনা কমিশনে বিদেশ ভ্রমণের প্রস্তাবের স্তূপ জমেছে যেন। সর্বশেষ মাশরুম চাষ শিখতে বিদেশে যেতে চাচ্ছেন ৩০ কর্মকর্তা।
‘মাশরুম চাষ সম্প্রসারণের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন ও দারিদ্র্য হ্রাসকরণ’ শীর্ষক প্রকল্পে এমন প্রস্তাব এসেছে। অনুমোদন পেলেই প্রকল্পের আওতায় শুরু হবে সফরের আয়োজন। এ জন্য ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে ১ কোটি ২০ লাখ টাকা। প্রত্যেকের পেছনে খরচ হবে ৪ লাখ টাকা। শুধু তাই নয়, দেশের ভেতরেও প্রায় ১১ ধরনের প্রশিক্ষণের জন্য চাওয়া হয়েছে ১৯ কোটি ৩ লাখ টাকা।
বলা বাহুল্য, কৃচ্ছ্রসাধনের বর্তমান সময়ে এ ধরনের বিদেশ ভ্রমণ কোনোভাবেই কাম্য নয়। পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান অবশ্য বলেছেন, প্রকল্পের যে কোনো অপচয় বন্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যদের। একেবারেই প্রয়োজন না হলে যেন বিদেশ সফরের সুপারিশ না করা হয়। তিনি আরও বলেছেন, আগের তুলনায় এমন অতিরিক্ত ব্যয় প্রস্তাব অনেকটাই কমে গেছে, তবে একেবারে বন্ধ হয়নি। আমাদের কথা হলো, প্রশিক্ষণের নামে বিদেশ ভ্রমণের প্রস্তাব কমে এসেছে, কথাটা সন্তোষজনক নয়। এই কমে আসাটার মানে কতটা কমে আসা?
মাশরুম চাষ শিখতে বিদেশে প্রশিক্ষণ নেওয়ার আদৌ প্রয়োজন আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখতে হবে। আমাদের মনে আছে, ‘পুকুর ও খাল উন্নয়ন’বিষয়ক প্রশিক্ষণ ছাড়াও ঘাসচাষ ও ঘাসকাটা শিখতে বিদেশ যাওয়ার ছক সাজানো হয়েছিল একবার। বিষয়টি নিয়ে সে সময় জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়াও লক্ষ করা গিয়েছিল। সে সময় আরও কথা উঠেছিল, এ ধরনের প্রশিক্ষণের নামে বিদেশ সফরের প্রস্তাব যেন আর করা না হয়। কিন্তু এসব কথা যে কোনো গুরুত্ব পায়নি, একের পর এক বিদেশ সফরের প্রস্তাব তারই প্রমাণ বহন করছে।
দেশে প্রকল্প গ্রহণ থেকে শুরু করে বাস্তবায়নের নানা পর্যায়ে বিভিন্ন ধরনের দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। রয়েছে নানা ধরনের ফন্দি-ফিকির। অপ্রয়োজনে বিদেশ সফর সেই ফন্দি-ফিকিরেরই একটি অংশ। আমরা মনে করি, বিদেশ ভ্রমণ কতটা ফলপ্রসূ হবে এবং এতে সরকারি তহবিলের অপচয় হবে কিনা, প্রকল্প গ্রহণের আগেই এসবের মূল্যায়ন হওয়া উচিত। সরকার বর্তমানে অপ্রয়োজনীয় ও বিলাসী ব্যয় সংকোচনের পথে হাঁটছে। এ সময় অতি প্রয়োজন ছাড়া যাতে সরকারিভাবে কেউ বা কোনো দল বিদেশ ভ্রমণে যেতে না পারে, সে ব্যাপারে কঠোর অবস্থান নিতে হবে।
আবারও বিদেশ ভ্রমণের প্রস্তাব
এ সময়ে অপচয় বন্ধ করা বেশি জরুরি
সম্পাদকীয়
১১ আগস্ট ২০২২, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
দেশে কৃচ্ছ্রসাধনের নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সার্বিক অর্থনৈতিক সংকটের কারণেই এ উদ্যোগ। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, কৃচ্ছ্রসাধনের পরিবর্তে সরকারি পর্যায়ে বিদেশ ভ্রমণের প্রস্তাব আসছে একের পর এক। পরিকল্পনা কমিশনে বিদেশ ভ্রমণের প্রস্তাবের স্তূপ জমেছে যেন। সর্বশেষ মাশরুম চাষ শিখতে বিদেশে যেতে চাচ্ছেন ৩০ কর্মকর্তা।
‘মাশরুম চাষ সম্প্রসারণের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন ও দারিদ্র্য হ্রাসকরণ’ শীর্ষক প্রকল্পে এমন প্রস্তাব এসেছে। অনুমোদন পেলেই প্রকল্পের আওতায় শুরু হবে সফরের আয়োজন। এ জন্য ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে ১ কোটি ২০ লাখ টাকা। প্রত্যেকের পেছনে খরচ হবে ৪ লাখ টাকা। শুধু তাই নয়, দেশের ভেতরেও প্রায় ১১ ধরনের প্রশিক্ষণের জন্য চাওয়া হয়েছে ১৯ কোটি ৩ লাখ টাকা।
বলা বাহুল্য, কৃচ্ছ্রসাধনের বর্তমান সময়ে এ ধরনের বিদেশ ভ্রমণ কোনোভাবেই কাম্য নয়। পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান অবশ্য বলেছেন, প্রকল্পের যে কোনো অপচয় বন্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যদের। একেবারেই প্রয়োজন না হলে যেন বিদেশ সফরের সুপারিশ না করা হয়। তিনি আরও বলেছেন, আগের তুলনায় এমন অতিরিক্ত ব্যয় প্রস্তাব অনেকটাই কমে গেছে, তবে একেবারে বন্ধ হয়নি। আমাদের কথা হলো, প্রশিক্ষণের নামে বিদেশ ভ্রমণের প্রস্তাব কমে এসেছে, কথাটা সন্তোষজনক নয়। এই কমে আসাটার মানে কতটা কমে আসা?
মাশরুম চাষ শিখতে বিদেশে প্রশিক্ষণ নেওয়ার আদৌ প্রয়োজন আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখতে হবে। আমাদের মনে আছে, ‘পুকুর ও খাল উন্নয়ন’বিষয়ক প্রশিক্ষণ ছাড়াও ঘাসচাষ ও ঘাসকাটা শিখতে বিদেশ যাওয়ার ছক সাজানো হয়েছিল একবার। বিষয়টি নিয়ে সে সময় জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়াও লক্ষ করা গিয়েছিল। সে সময় আরও কথা উঠেছিল, এ ধরনের প্রশিক্ষণের নামে বিদেশ সফরের প্রস্তাব যেন আর করা না হয়। কিন্তু এসব কথা যে কোনো গুরুত্ব পায়নি, একের পর এক বিদেশ সফরের প্রস্তাব তারই প্রমাণ বহন করছে।
দেশে প্রকল্প গ্রহণ থেকে শুরু করে বাস্তবায়নের নানা পর্যায়ে বিভিন্ন ধরনের দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। রয়েছে নানা ধরনের ফন্দি-ফিকির। অপ্রয়োজনে বিদেশ সফর সেই ফন্দি-ফিকিরেরই একটি অংশ। আমরা মনে করি, বিদেশ ভ্রমণ কতটা ফলপ্রসূ হবে এবং এতে সরকারি তহবিলের অপচয় হবে কিনা, প্রকল্প গ্রহণের আগেই এসবের মূল্যায়ন হওয়া উচিত। সরকার বর্তমানে অপ্রয়োজনীয় ও বিলাসী ব্যয় সংকোচনের পথে হাঁটছে। এ সময় অতি প্রয়োজন ছাড়া যাতে সরকারিভাবে কেউ বা কোনো দল বিদেশ ভ্রমণে যেতে না পারে, সে ব্যাপারে কঠোর অবস্থান নিতে হবে।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by The Daily Jugantor © 2023