স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে ফার্মাসিস্ট সংকট
জনবলের এ সংকট দূর করতে হবে
দেশে স্বাস্থ্যসেবাসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে জনবল সংকটের বিষয়টি বহুল আলোচিত। ফলে রোগীর সামগ্রিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা অনিরাপদ হয়ে উঠছে। দেশের সর্বত্র ওষুধপ্রাপ্তি সুলভ করার পাশাপাশি এর নিরাপদ ব্যবহারও নিশ্চিত করা দরকার। বিশ্বমানের অনেক ওষুধ দেশে তৈরি হওয়া সত্ত্বেও এর সঠিক প্রয়োগ হচ্ছে না। সংশ্লিষ্ট জনবল সংকটে রোগীর ওপর ওষুধের ভুল প্রয়োগের আশঙ্কাও বাড়ছে। ফলে ঝুঁকিতে পড়ছে রোগীর সামগ্রিক সুরক্ষা। জানা যায়, দেশে ৩৭টি সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং টারশিয়ারি ও বিশেষায়িতসহ ৫ শতাধিক সরকারি হাসপাতাল আছে; যেখানে সেবা নিতে আসা রোগীদের ওষুধ বিতরণে অন্তত ২ হাজার গ্র্যাজুয়েট (স্নাতক) ফার্মাসিস্ট দরকার। প্রতিষ্ঠানগুলোয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক সৃষ্ট ৫২টি গ্র্যাজুয়েট ফার্মাসিস্টের পদের বিপরীতে মাত্র ছয়জন কাজ করছেন। সারা দেশের অন্যান্য সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ১২ হাজার ডিপ্লোমা ফার্মাসিস্ট দরকার; যেখানে ৩ হাজার ২৮৬ জন ডিপ্লোমা ফার্মাসিস্ট রোগীর ওষুধ বণ্টনের দায়িত্ব পালন করছেন। আলোচিত সংকটে সবচেয়ে ঝুঁকিতে রয়েছে গ্রামীণ জনপদের মানুষ।
অনেক ফার্মাসিস্টের অভিযোগ, দেশে প্রতিবছর সাড়ে তিন থেকে চার হাজার গ্র্যাজুয়েট ফার্মাসিস্ট বের হলেও তাদের ৮০ ভাগ সরাসরি ওষুধ উৎপাদনে কাজ করছেন। কাঙ্ক্ষিত পদে কাজের সুযোগ না পাওয়ায় প্রতি মাসে দেশ ছাড়ছেন অনেক ফার্মাসিস্ট। চিকিৎসাসেবার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হতে না পারায় রোগীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। ফার্মাসিস্টদের ওষুধ বিক্রি ও কাউন্সেলিংয়ে কাজে লাগাতে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর ৬০০-এর বেশি মডেল ফার্মেসির লাইসেন্স দিয়েছে। কিন্তু নজরদারির অভাবে বহু ফার্মেসিতে গ্র্যাজুয়েট ফার্মাসিস্ট কর্মরত আছেন খাতা-কলমে। সারা দেশে বৈধ-অবৈধ লক্ষাধিক ফার্মেসিতে ডিপ্লোমাধারী এবং কোর্স সম্পন্ন করা ব্যক্তিরা চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই ওষুধ বিক্রি করছেন।
জানা যায়, ২০১৯ সালে সরকারি হাসপাতালের ফার্মেসিতে একজন এবং প্রতি ৫০ শয্যার বিপরীতে একজন করে ফার্মাসিস্ট নিয়োগের জন্য প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের গড়িমসিতে এ পদক্ষেপ বাস্তবায়নে দেরি হচ্ছে। বস্তুত ওষুধের দোকান থেকে হাসপাতাল-দক্ষ গ্র্যাজুয়েট ফার্মাসিস্ট কোথাও নেই। ফলে ওষুধের অযৌক্তিক ব্যবহার বাড়ছে। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় রোগীদের অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুঝুঁকি বাড়ছে। এখন অবস্থা এমন হয়েছে যে, মুদি দোকান আর ওষুধের দোকানের মধ্যে মানুষ পার্থক্য করতে পারছে না। এসব সংকট নিরসনে তদারকি জোরদার করতে হবে। দেশের সর্বত্র রোগীর সামগ্রিক স্বাস্থ্যসুরক্ষা নিশ্চিত করতে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে।
স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে ফার্মাসিস্ট সংকট
জনবলের এ সংকট দূর করতে হবে
সম্পাদকীয়
২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
দেশে স্বাস্থ্যসেবাসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে জনবল সংকটের বিষয়টি বহুল আলোচিত। ফলে রোগীর সামগ্রিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা অনিরাপদ হয়ে উঠছে। দেশের সর্বত্র ওষুধপ্রাপ্তি সুলভ করার পাশাপাশি এর নিরাপদ ব্যবহারও নিশ্চিত করা দরকার। বিশ্বমানের অনেক ওষুধ দেশে তৈরি হওয়া সত্ত্বেও এর সঠিক প্রয়োগ হচ্ছে না। সংশ্লিষ্ট জনবল সংকটে রোগীর ওপর ওষুধের ভুল প্রয়োগের আশঙ্কাও বাড়ছে। ফলে ঝুঁকিতে পড়ছে রোগীর সামগ্রিক সুরক্ষা। জানা যায়, দেশে ৩৭টি সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং টারশিয়ারি ও বিশেষায়িতসহ ৫ শতাধিক সরকারি হাসপাতাল আছে; যেখানে সেবা নিতে আসা রোগীদের ওষুধ বিতরণে অন্তত ২ হাজার গ্র্যাজুয়েট (স্নাতক) ফার্মাসিস্ট দরকার। প্রতিষ্ঠানগুলোয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক সৃষ্ট ৫২টি গ্র্যাজুয়েট ফার্মাসিস্টের পদের বিপরীতে মাত্র ছয়জন কাজ করছেন। সারা দেশের অন্যান্য সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ১২ হাজার ডিপ্লোমা ফার্মাসিস্ট দরকার; যেখানে ৩ হাজার ২৮৬ জন ডিপ্লোমা ফার্মাসিস্ট রোগীর ওষুধ বণ্টনের দায়িত্ব পালন করছেন। আলোচিত সংকটে সবচেয়ে ঝুঁকিতে রয়েছে গ্রামীণ জনপদের মানুষ।
অনেক ফার্মাসিস্টের অভিযোগ, দেশে প্রতিবছর সাড়ে তিন থেকে চার হাজার গ্র্যাজুয়েট ফার্মাসিস্ট বের হলেও তাদের ৮০ ভাগ সরাসরি ওষুধ উৎপাদনে কাজ করছেন। কাঙ্ক্ষিত পদে কাজের সুযোগ না পাওয়ায় প্রতি মাসে দেশ ছাড়ছেন অনেক ফার্মাসিস্ট। চিকিৎসাসেবার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হতে না পারায় রোগীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। ফার্মাসিস্টদের ওষুধ বিক্রি ও কাউন্সেলিংয়ে কাজে লাগাতে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর ৬০০-এর বেশি মডেল ফার্মেসির লাইসেন্স দিয়েছে। কিন্তু নজরদারির অভাবে বহু ফার্মেসিতে গ্র্যাজুয়েট ফার্মাসিস্ট কর্মরত আছেন খাতা-কলমে। সারা দেশে বৈধ-অবৈধ লক্ষাধিক ফার্মেসিতে ডিপ্লোমাধারী এবং কোর্স সম্পন্ন করা ব্যক্তিরা চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই ওষুধ বিক্রি করছেন।
জানা যায়, ২০১৯ সালে সরকারি হাসপাতালের ফার্মেসিতে একজন এবং প্রতি ৫০ শয্যার বিপরীতে একজন করে ফার্মাসিস্ট নিয়োগের জন্য প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের গড়িমসিতে এ পদক্ষেপ বাস্তবায়নে দেরি হচ্ছে। বস্তুত ওষুধের দোকান থেকে হাসপাতাল-দক্ষ গ্র্যাজুয়েট ফার্মাসিস্ট কোথাও নেই। ফলে ওষুধের অযৌক্তিক ব্যবহার বাড়ছে। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় রোগীদের অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুঝুঁকি বাড়ছে। এখন অবস্থা এমন হয়েছে যে, মুদি দোকান আর ওষুধের দোকানের মধ্যে মানুষ পার্থক্য করতে পারছে না। এসব সংকট নিরসনে তদারকি জোরদার করতে হবে। দেশের সর্বত্র রোগীর সামগ্রিক স্বাস্থ্যসুরক্ষা নিশ্চিত করতে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by The Daily Jugantor © 2023