প্রগতিতে অনিয়মের অভিযোগ: সুষ্ঠু তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হোক
সম্পাদকীয়
২৪ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
রাষ্ট্রায়ত্ত একমাত্র গাড়ি সংযোজনকারী প্রতিষ্ঠান প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের (পিআইএল) বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। গতকাল যুগান্তরে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিয়োগে অস্বচ্ছতা, টেন্ডার ছাড়া মালামাল কেনা, অনুমোদনহীন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়া, প্রকল্পের কাজ না করেই অর্থব্যয়, সরকারি তেল ব্যবহারে অনিয়মসহ নানা অভিযোগ রয়েছে এ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। যুগান্তরের অনুসন্ধানে জানা যায়, বেশ কয়েকটি খাতে প্রতিষ্ঠানটির এমডির ব্যয় নিয়ে আপত্তি তুলেছে সরকারের বাণিজ্যিক অডিট অধিদপ্তর। আরও উদ্বেগের বিষয় হলো, সরকারের ঊর্ধ্বতন পর্যায়ে এসব অভিযোগ বিভিন্ন সময়ে লিখিতভাবে জানানো হলেও আজ পর্যন্ত নেওয়া হয়নি কোনো দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা। ফলে একরকম নির্বিঘ্নেই চলছে সব অনিয়ম। বিষয়টি অত্যন্ত পরিতাপের। এদিকে অবিলম্বে সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের দৃষ্টি দেওয়া উচিত বলে মনে করি আমরা।
বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশনের (বিএসইসি) প্রতিষ্ঠান প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড তথা পিআইএলের অনেক সুনাম ছিল অতীতে। একসময় দেশের প্রায় সব বিলাসবহুল বাস সংযোজিত হতো এ প্রতিষ্ঠানে। বস্তুত দূরপাল্লার বাস বলতেই ছিল ‘প্রগতির বাস’। আরও ছোট-বড় নানা আকৃতির গাড়ি সংযোজিত হতো এ প্রতিষ্ঠানে। আজও সংযোজিত হয় কিছু গাড়ি। তবে প্রতিষ্ঠানটির সেই সুনাম আজ আর শোনা যায় না। ফলে প্রগতি নামটি আজ যেন বিস্মৃত হতে চলেছে। দুর্ভাগ্যের বিষয়, এটি এখন পরিণত হয়েছে লোকসানি প্রতিষ্ঠানে। মনে রাখা দরকার, দুর্নীতি যে কোনো প্রতিষ্ঠানকে পুরোপুরি ধ্বংসও করে দিতে পারে। আমরা মনে করি, প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের বিরুদ্ধে যেসব অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, সেগুলোর সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া দরকার। প্রয়োজনে দুর্নীতি দমন কমিশনও (দুদক) এ দায়িত্ব পালন করতে পারে। তবে এককভাবে দুদকের পক্ষে সব দুর্নীতি নির্মূল করা সম্ভব হবে না, কিছুটা প্রতিরোধ করা যাবে হয়তো। কোনো প্রতিষ্ঠানকে দুর্নীতিমুক্ত করতে হলে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হয়। এজন্য সবার আগে প্রয়োজন রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও অঙ্গীকার। বলা বাহুল্য, দুর্নীতির ক্ষেত্রে দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি না হলে দুর্নীতি না কমে বরং উৎসাহিত হয়। কাজেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের কোনো বিকল্প নেই। দুর্নীতিবাজ যত ক্ষমতাবানই হোক, তাকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রগতিতে অনিয়মের অভিযোগ: সুষ্ঠু তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হোক
রাষ্ট্রায়ত্ত একমাত্র গাড়ি সংযোজনকারী প্রতিষ্ঠান প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের (পিআইএল) বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। গতকাল যুগান্তরে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিয়োগে অস্বচ্ছতা, টেন্ডার ছাড়া মালামাল কেনা, অনুমোদনহীন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়া, প্রকল্পের কাজ না করেই অর্থব্যয়, সরকারি তেল ব্যবহারে অনিয়মসহ নানা অভিযোগ রয়েছে এ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। যুগান্তরের অনুসন্ধানে জানা যায়, বেশ কয়েকটি খাতে প্রতিষ্ঠানটির এমডির ব্যয় নিয়ে আপত্তি তুলেছে সরকারের বাণিজ্যিক অডিট অধিদপ্তর। আরও উদ্বেগের বিষয় হলো, সরকারের ঊর্ধ্বতন পর্যায়ে এসব অভিযোগ বিভিন্ন সময়ে লিখিতভাবে জানানো হলেও আজ পর্যন্ত নেওয়া হয়নি কোনো দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা। ফলে একরকম নির্বিঘ্নেই চলছে সব অনিয়ম। বিষয়টি অত্যন্ত পরিতাপের। এদিকে অবিলম্বে সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের দৃষ্টি দেওয়া উচিত বলে মনে করি আমরা।
বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশনের (বিএসইসি) প্রতিষ্ঠান প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড তথা পিআইএলের অনেক সুনাম ছিল অতীতে। একসময় দেশের প্রায় সব বিলাসবহুল বাস সংযোজিত হতো এ প্রতিষ্ঠানে। বস্তুত দূরপাল্লার বাস বলতেই ছিল ‘প্রগতির বাস’। আরও ছোট-বড় নানা আকৃতির গাড়ি সংযোজিত হতো এ প্রতিষ্ঠানে। আজও সংযোজিত হয় কিছু গাড়ি। তবে প্রতিষ্ঠানটির সেই সুনাম আজ আর শোনা যায় না। ফলে প্রগতি নামটি আজ যেন বিস্মৃত হতে চলেছে। দুর্ভাগ্যের বিষয়, এটি এখন পরিণত হয়েছে লোকসানি প্রতিষ্ঠানে। মনে রাখা দরকার, দুর্নীতি যে কোনো প্রতিষ্ঠানকে পুরোপুরি ধ্বংসও করে দিতে পারে। আমরা মনে করি, প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের বিরুদ্ধে যেসব অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, সেগুলোর সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া দরকার। প্রয়োজনে দুর্নীতি দমন কমিশনও (দুদক) এ দায়িত্ব পালন করতে পারে। তবে এককভাবে দুদকের পক্ষে সব দুর্নীতি নির্মূল করা সম্ভব হবে না, কিছুটা প্রতিরোধ করা যাবে হয়তো। কোনো প্রতিষ্ঠানকে দুর্নীতিমুক্ত করতে হলে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হয়। এজন্য সবার আগে প্রয়োজন রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও অঙ্গীকার। বলা বাহুল্য, দুর্নীতির ক্ষেত্রে দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি না হলে দুর্নীতি না কমে বরং উৎসাহিত হয়। কাজেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের কোনো বিকল্প নেই। দুর্নীতিবাজ যত ক্ষমতাবানই হোক, তাকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।