ঋণখেলাপিদের আরও ছাড়!
jugantor
ঋণখেলাপিদের আরও ছাড়!
অর্থনীতিতে ঝুঁকি আরও বাড়বে

  সম্পাদকীয়  

০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০:০০  |  প্রিন্ট সংস্করণ

আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত বাস্তবায়ন করতে গিয়ে বড় ঋণখেলাপিদের আবারও ছাড় দেওয়ার বিষয়টি উদ্বেগজনক। কিছু খেলাপি ঋণ অবলোপনও করা হবে।

সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংক এক সার্কুলারের মাধ্যমে কৃষি, কুটির, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত খেলাপি ঋণ মামলা ছাড়াই অবলোপন করার সুযোগ দিয়েছে। ফলে এখন এ নিয়মের আওতায় ঋণ অবলোপন করেও খেলাপি ঋণ কমানোর সুযোগ তৈরি হয়েছে।

এছাড়া আদায় বাড়িয়ে খেলাপি ঋণ কমানোর জন্যও নেওয়া হচ্ছে বেশকিছু কৌশল। ব্যাংক খাতে ঋণ আদায়ে যেভাবে ছাড় দেওয়া হচ্ছে, তাতে এখন খেলাপি ঋণ আদায় করা কঠিন হতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এমন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া ঠিক হবে না, যাতে ঋণ ফেরত দেওয়ার সংস্কৃতি নষ্ট হয়। যেহেতু দেশের সার্বিক অর্থনীতি চাপের মধ্যে রয়েছে, সেহেতু ঋণখেলাপিদের আর কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া অনুচিত। খেলাপি ঋণ কিছুটা ছোঁয়াচে রোগের মতোই।

এ বিষয়েও কর্তৃপক্ষকে বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে। বস্তুত ঋণ আদায়ে ব্যাংকাররা তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করছেন না বলেই খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে চলেছে। খেলাপি ঋণের পরিমাণ বাড়তে থাকায় বর্তমানে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অবস্থা খুবই নাজুক হয়ে পড়েছে। ব্যাংকের প্রতি মানুষের আস্থা অটুট রাখার স্বার্থে খেলাপি ঋণের সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসা জরুরি।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক মাত্র ২ শতাংশ অর্থ জমা দিয়ে খেলাপি থেকে বের হওয়ার যে সুযোগ দিচ্ছে, এটাকে অন্যায্য ব্যবস্থা বলে মন্তব্য করেছেন অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রেহমান সোবহান। অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদের মতে, রাজনৈতিক সদিচ্ছা ছাড়া খেলাপি ঋণ কমবে না।

বস্তুত বছরের পর বছর দেশে ঋণখেলাপিদের নানারকম ছাড় দেওয়ার কারণেই পরিস্থিতি এতটা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ব্যাংকে সুশাসনের অভাবে মন্দ ঋণের পাশাপাশি অর্থ পাচারও বাড়ছে। খেলাপি ঋণ শুধু ব্যাংক খাতে নয়, দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতেই ঝুঁকি তৈরি করেছে।

বাস্তব পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে আমরা জোরের সঙ্গে বলতে চাই-ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে শৈথিল্য প্রদর্শনের কোনো সুযোগ নেই। দেশে ব্যাংক খাতের বড় সমস্যা দুর্নীতি। দুর্নীতি রোধে এ খাতে স্বচ্ছতা ও সুশাসন নিশ্চিত করা জরুরি। শৃঙ্খলা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা গেলে এ খাতে অপরাধ করে পার পাওয়ার সুযোগ কমে আসবে।

সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের সদিচ্ছা ও কঠোর ব্যবস্থা ছাড়া খেলাপি ঋণ আদায়ে বড় ধরনের সুখবর পাওয়া যাবে বলে মনে হয় না।

ঋণখেলাপিদের আরও ছাড়!

অর্থনীতিতে ঝুঁকি আরও বাড়বে
 সম্পাদকীয় 
০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১২:০০ এএম  |  প্রিন্ট সংস্করণ

আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত বাস্তবায়ন করতে গিয়ে বড় ঋণখেলাপিদের আবারও ছাড় দেওয়ার বিষয়টি উদ্বেগজনক। কিছু খেলাপি ঋণ অবলোপনও করা হবে।

সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংক এক সার্কুলারের মাধ্যমে কৃষি, কুটির, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত খেলাপি ঋণ মামলা ছাড়াই অবলোপন করার সুযোগ দিয়েছে। ফলে এখন এ নিয়মের আওতায় ঋণ অবলোপন করেও খেলাপি ঋণ কমানোর সুযোগ তৈরি হয়েছে।

এছাড়া আদায় বাড়িয়ে খেলাপি ঋণ কমানোর জন্যও নেওয়া হচ্ছে বেশকিছু কৌশল। ব্যাংক খাতে ঋণ আদায়ে যেভাবে ছাড় দেওয়া হচ্ছে, তাতে এখন খেলাপি ঋণ আদায় করা কঠিন হতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এমন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া ঠিক হবে না, যাতে ঋণ ফেরত দেওয়ার সংস্কৃতি নষ্ট হয়। যেহেতু দেশের সার্বিক অর্থনীতি চাপের মধ্যে রয়েছে, সেহেতু ঋণখেলাপিদের আর কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া অনুচিত। খেলাপি ঋণ কিছুটা ছোঁয়াচে রোগের মতোই।

এ বিষয়েও কর্তৃপক্ষকে বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে। বস্তুত ঋণ আদায়ে ব্যাংকাররা তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করছেন না বলেই খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে চলেছে। খেলাপি ঋণের পরিমাণ বাড়তে থাকায় বর্তমানে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অবস্থা খুবই নাজুক হয়ে পড়েছে। ব্যাংকের প্রতি মানুষের আস্থা অটুট রাখার স্বার্থে খেলাপি ঋণের সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসা জরুরি।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক মাত্র ২ শতাংশ অর্থ জমা দিয়ে খেলাপি থেকে বের হওয়ার যে সুযোগ দিচ্ছে, এটাকে অন্যায্য ব্যবস্থা বলে মন্তব্য করেছেন অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রেহমান সোবহান। অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদের মতে, রাজনৈতিক সদিচ্ছা ছাড়া খেলাপি ঋণ কমবে না।

বস্তুত বছরের পর বছর দেশে ঋণখেলাপিদের নানারকম ছাড় দেওয়ার কারণেই পরিস্থিতি এতটা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ব্যাংকে সুশাসনের অভাবে মন্দ ঋণের পাশাপাশি অর্থ পাচারও বাড়ছে। খেলাপি ঋণ শুধু ব্যাংক খাতে নয়, দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতেই ঝুঁকি তৈরি করেছে।

বাস্তব পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে আমরা জোরের সঙ্গে বলতে চাই-ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে শৈথিল্য প্রদর্শনের কোনো সুযোগ নেই। দেশে ব্যাংক খাতের বড় সমস্যা দুর্নীতি। দুর্নীতি রোধে এ খাতে স্বচ্ছতা ও সুশাসন নিশ্চিত করা জরুরি। শৃঙ্খলা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা গেলে এ খাতে অপরাধ করে পার পাওয়ার সুযোগ কমে আসবে।

সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের সদিচ্ছা ও কঠোর ব্যবস্থা ছাড়া খেলাপি ঋণ আদায়ে বড় ধরনের সুখবর পাওয়া যাবে বলে মনে হয় না।

 

যুগান্তর ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন