প্রকল্পে ধীরগতি
নির্ধারিত সময়ে বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে
সম্পাদকীয়.
০৯ মার্চ ২০২৩, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এটি ইতিবাচক হলেও প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বিপরীত চিত্র লক্ষ করা যায়।
প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রায় প্রতিটি স্তরে দুর্বল পরিকল্পনা, অদক্ষতা ও দায়িত্বে অবহেলার কারণেই এমনটি ঘটছে। জানা যায়, মন্ত্রণালয়, সংস্থা ও প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্বহীনতায় নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েছে তিন শতাধিক উন্নয়ন প্রকল্প।
২০২২ সালের ডিসেম্বরে এসব প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়। কিন্তু দায়িত্বপ্রাপ্তদের উদাসীনতার কারণে সময় বাড়ানো হয়নি। শেষ হয়েছে এমন প্রকল্পের ব্যাপারে ঘোষণাও দেওয়া হয়নি। ফলে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) সংশোধনের সময় প্রকল্পগুলোর অনুকূলে অর্থছাড় বা ব্যয় বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
১ মার্চ অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে এ নির্দেশ দেওয়া হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, বছরের পর বছর শৃঙ্খলা-পরিপন্থি কাজ চললেও সংশ্লিষ্টদের জবাবদিহির আওতায় আনার বা শাস্তি দেওয়ার নজির না থাকায় এ ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে।
প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতির নেপথ্যের কারণগুলো বারবার আলোচনায় এলেও সেসবের সমাধান হচ্ছে না। কোনো প্রকল্পের কাজ চলছে ১৩, কোনোটি ১২, কোনোটি ১১, কোনোটি ১০ বছর ধরে। গড়ে এসব প্রকল্প দুই থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে বাস্তবায়নের কথা ছিল। প্রকল্পের ধীরগতির কারণে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্তদের যথাযথ শাস্তির আওতায় আনা হলে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে এমন বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হতো না। অতীতে একনেক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় বাড়ানো নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করলেও প্রকল্প বাস্তবায়নে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি লক্ষ করা যাচ্ছে না। কোনো প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হলেই ব্যয় বাড়ে; একই সঙ্গে বাড়ে জনদুর্ভোগ। ইতঃপূর্বে পরিকল্পনা কমিশনের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) প্রকল্পভিত্তিক মূল্যায়নে উল্লেখ করা হয়েছে, বারবার প্রকল্প সংশোধন ও মেয়াদ বাড়ানোর ফলে অনেক ক্ষেত্রে কাজের গুণগত মান বজায় রাখা সম্ভব হয়নি। উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে বছরের পর বছর একই অভিযোগ উঠছে। এসব সমস্যা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই-বাছাই ও বিশ্লেষণ করে নির্ধারিত সময়সীমায় প্রকল্প বাস্তবায়নের কৌশল নির্ধারণে গুরুত্ব আরোপ করতে হবে। দুর্নীতি, অদক্ষতা, দায়িত্বহীনতার বৃত্ত থেকে বের হতে হবে। সরষের ভেতর ভূত থাকলে তা তাড়ানোর পদক্ষেপ নিতে হবে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির অভাব থাকলে সমস্যার সমাধানে যত উদ্যোগই নেওয়া হোক না কেন, তাতে কাঙ্ক্ষিত সুফলপ্রাপ্তিতে অনিশ্চয়তা দেখা দিতে পারে।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রকল্পে ধীরগতি
নির্ধারিত সময়ে বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে
বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এটি ইতিবাচক হলেও প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বিপরীত চিত্র লক্ষ করা যায়।
প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রায় প্রতিটি স্তরে দুর্বল পরিকল্পনা, অদক্ষতা ও দায়িত্বে অবহেলার কারণেই এমনটি ঘটছে। জানা যায়, মন্ত্রণালয়, সংস্থা ও প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্বহীনতায় নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েছে তিন শতাধিক উন্নয়ন প্রকল্প।
২০২২ সালের ডিসেম্বরে এসব প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়। কিন্তু দায়িত্বপ্রাপ্তদের উদাসীনতার কারণে সময় বাড়ানো হয়নি। শেষ হয়েছে এমন প্রকল্পের ব্যাপারে ঘোষণাও দেওয়া হয়নি। ফলে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) সংশোধনের সময় প্রকল্পগুলোর অনুকূলে অর্থছাড় বা ব্যয় বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
১ মার্চ অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে এ নির্দেশ দেওয়া হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, বছরের পর বছর শৃঙ্খলা-পরিপন্থি কাজ চললেও সংশ্লিষ্টদের জবাবদিহির আওতায় আনার বা শাস্তি দেওয়ার নজির না থাকায় এ ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে।
প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতির নেপথ্যের কারণগুলো বারবার আলোচনায় এলেও সেসবের সমাধান হচ্ছে না। কোনো প্রকল্পের কাজ চলছে ১৩, কোনোটি ১২, কোনোটি ১১, কোনোটি ১০ বছর ধরে। গড়ে এসব প্রকল্প দুই থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে বাস্তবায়নের কথা ছিল। প্রকল্পের ধীরগতির কারণে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্তদের যথাযথ শাস্তির আওতায় আনা হলে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে এমন বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হতো না। অতীতে একনেক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় বাড়ানো নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করলেও প্রকল্প বাস্তবায়নে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি লক্ষ করা যাচ্ছে না। কোনো প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হলেই ব্যয় বাড়ে; একই সঙ্গে বাড়ে জনদুর্ভোগ। ইতঃপূর্বে পরিকল্পনা কমিশনের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) প্রকল্পভিত্তিক মূল্যায়নে উল্লেখ করা হয়েছে, বারবার প্রকল্প সংশোধন ও মেয়াদ বাড়ানোর ফলে অনেক ক্ষেত্রে কাজের গুণগত মান বজায় রাখা সম্ভব হয়নি। উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে বছরের পর বছর একই অভিযোগ উঠছে। এসব সমস্যা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই-বাছাই ও বিশ্লেষণ করে নির্ধারিত সময়সীমায় প্রকল্প বাস্তবায়নের কৌশল নির্ধারণে গুরুত্ব আরোপ করতে হবে। দুর্নীতি, অদক্ষতা, দায়িত্বহীনতার বৃত্ত থেকে বের হতে হবে। সরষের ভেতর ভূত থাকলে তা তাড়ানোর পদক্ষেপ নিতে হবে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির অভাব থাকলে সমস্যার সমাধানে যত উদ্যোগই নেওয়া হোক না কেন, তাতে কাঙ্ক্ষিত সুফলপ্রাপ্তিতে অনিশ্চয়তা দেখা দিতে পারে।