বিজনেস সামিটের সুপারিশ
বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে
সম্পাদকীয়
১৬ মার্চ ২০২৩, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
সদ্যসমাপ্ত বাংলাদেশ বিজনেস সামিটে অংশ নেওয়া অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা ও বিশেষজ্ঞরা বিনিয়োগের ক্ষেত্রে যেসব প্রতিবন্ধকতা শনাক্ত করেছেন, সেসবের সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।
এ সামিট নিয়ে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে যে উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ করা গেছে, তা ধরে রাখার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। আমাদের দেশে শ্রম ও বিভিন্ন পরিষেবা সুলভে পাওয়া যায়।
আমাদের বিশ্বাস, এ দেশে বিনিয়োগের সুবিধাগুলো সম্পর্কে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা অবগত। তারপরও বিগত বছরগুলোয় বাংলাদেশে প্রত্যাশিত মাত্রায় কেন বিদেশি বিনিয়োগ আসছে না, তা খতিয়ে দেখা দরকার। সামিটে উঠে আসা বিনিয়োগের সমস্যাগুলো দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারী উভয়ের ক্ষেত্রে সমান হলেও স্থানীয় বিনিয়োগকারীরাই দেশের উন্নয়নের মূল চালিকাশক্তি। তাদের সমস্যাগুলোর সমাধান করলে বেসরকারি বিনিয়োগ আরও বাড়বে। আর এটি আগামী দিনে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশে ব্যবসার পরিবেশ এখনো অনুকূল নয়। এ কারণে নতুন শিল্পদ্যোক্তারা বিনিয়োগে উৎসাহবোধ করেন না। সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়ার পরও দেশে কেন ব্যবসার পরিবেশের উন্নতি হচ্ছে না, তা খতিয়ে দেখতে হবে। সাধারণভাবে বলা যায়, দুর্নীতি ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দেশে সহজে ব্যবসা করার ক্ষেত্রে বড় বাধা। আমরা আশা করব, এক্ষেত্রে সব প্রতিবন্ধকতা দূর করা হবে।
বিদেশি বিনিয়োগকারীরা কোনো দেশে বিনিয়োগের আগে বিশ্বব্যাংকের ‘ইজ ডুয়িং বিজনেস’কে গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। বিশ্বব্যাংকের এ বিষয়ক সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বাংলাদেশ অতীতের তুলনায় এগিয়ে থাকলেও সার্বিক বিবেচনায় একে বড় ধরনের অগ্রগতি বলা যায় না। গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডির এক জরিপে বলা হয়েছে, ২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে দেশে ব্যবসার পরিবেশের অবনতি হয়েছে। ব্যবসার প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণে সিপিডির জরিপে কিছু পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সুপারিশগুলো আমলে নেওয়া দরকার। দেশে বিনিয়োগের বাধা হিসাবে দুর্নীতি ও অদক্ষ আমলাতন্ত্রের বিষয়টি বহুল আলোচিত। উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের পর ২০২৬ সাল থেকে রপ্তানির ক্ষেত্রে বিদ্যমান শুল্ক সুবিধা আর থাকবে না। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার কৌশল খুঁজে বের করতে হবে। এছাড়া রপ্তানির ক্ষেত্রে প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে টিকে থাকার কৌশলও খুঁজে বের করতে হবে। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা কোনো দেশে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সে দেশের অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগ পরিবেশ এবং স্থানীয় বিনিয়োগকারীদের সার্বিক অবস্থাও বিবেচনায় নেন। কাজেই বিনিয়োগের আকর্ষণীয় পরিবেশ সৃষ্টির বিকল্প নেই। এ লক্ষ্যে বর্তমান উদ্যোক্তাদের পাশাপাশি আগামী দিনের সম্ভাব্য উদ্যোক্তাদের বিষয়টিও বিবেচনায় রাখতে হবে।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
বিজনেস সামিটের সুপারিশ
বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে
সদ্যসমাপ্ত বাংলাদেশ বিজনেস সামিটে অংশ নেওয়া অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা ও বিশেষজ্ঞরা বিনিয়োগের ক্ষেত্রে যেসব প্রতিবন্ধকতা শনাক্ত করেছেন, সেসবের সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।
এ সামিট নিয়ে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে যে উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ করা গেছে, তা ধরে রাখার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। আমাদের দেশে শ্রম ও বিভিন্ন পরিষেবা সুলভে পাওয়া যায়।
আমাদের বিশ্বাস, এ দেশে বিনিয়োগের সুবিধাগুলো সম্পর্কে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা অবগত। তারপরও বিগত বছরগুলোয় বাংলাদেশে প্রত্যাশিত মাত্রায় কেন বিদেশি বিনিয়োগ আসছে না, তা খতিয়ে দেখা দরকার। সামিটে উঠে আসা বিনিয়োগের সমস্যাগুলো দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারী উভয়ের ক্ষেত্রে সমান হলেও স্থানীয় বিনিয়োগকারীরাই দেশের উন্নয়নের মূল চালিকাশক্তি। তাদের সমস্যাগুলোর সমাধান করলে বেসরকারি বিনিয়োগ আরও বাড়বে। আর এটি আগামী দিনে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশে ব্যবসার পরিবেশ এখনো অনুকূল নয়। এ কারণে নতুন শিল্পদ্যোক্তারা বিনিয়োগে উৎসাহবোধ করেন না। সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়ার পরও দেশে কেন ব্যবসার পরিবেশের উন্নতি হচ্ছে না, তা খতিয়ে দেখতে হবে। সাধারণভাবে বলা যায়, দুর্নীতি ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দেশে সহজে ব্যবসা করার ক্ষেত্রে বড় বাধা। আমরা আশা করব, এক্ষেত্রে সব প্রতিবন্ধকতা দূর করা হবে।
বিদেশি বিনিয়োগকারীরা কোনো দেশে বিনিয়োগের আগে বিশ্বব্যাংকের ‘ইজ ডুয়িং বিজনেস’কে গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। বিশ্বব্যাংকের এ বিষয়ক সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বাংলাদেশ অতীতের তুলনায় এগিয়ে থাকলেও সার্বিক বিবেচনায় একে বড় ধরনের অগ্রগতি বলা যায় না। গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডির এক জরিপে বলা হয়েছে, ২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে দেশে ব্যবসার পরিবেশের অবনতি হয়েছে। ব্যবসার প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণে সিপিডির জরিপে কিছু পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সুপারিশগুলো আমলে নেওয়া দরকার। দেশে বিনিয়োগের বাধা হিসাবে দুর্নীতি ও অদক্ষ আমলাতন্ত্রের বিষয়টি বহুল আলোচিত। উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের পর ২০২৬ সাল থেকে রপ্তানির ক্ষেত্রে বিদ্যমান শুল্ক সুবিধা আর থাকবে না। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার কৌশল খুঁজে বের করতে হবে। এছাড়া রপ্তানির ক্ষেত্রে প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে টিকে থাকার কৌশলও খুঁজে বের করতে হবে। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা কোনো দেশে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সে দেশের অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগ পরিবেশ এবং স্থানীয় বিনিয়োগকারীদের সার্বিক অবস্থাও বিবেচনায় নেন। কাজেই বিনিয়োগের আকর্ষণীয় পরিবেশ সৃষ্টির বিকল্প নেই। এ লক্ষ্যে বর্তমান উদ্যোক্তাদের পাশাপাশি আগামী দিনের সম্ভাব্য উদ্যোক্তাদের বিষয়টিও বিবেচনায় রাখতে হবে।