অবৈধ অস্ত্রের জাল লাইসেন্স, অপরাধীচক্রের মূলোৎপাটন জরুরি
সম্পাদকীয়
১৯ মার্চ ২০২৩, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
দেশে অবৈধভাবে আগ্নেয়াস্ত্র প্রবেশের বিষয়ে একটি গোয়েন্দা সংস্থাকর্তৃক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ১৩ মার্চ থেকে সারা দেশে অভিযান শুরুর পর চক্রের মূলহোতা নড়াইলের পলাশ শেখ সম্প্রতি র্যাবের জালে ধরা পড়েছে।
জানা যায়, এসএসসি পাশ পলাশ শেখ সিকিউরিটি গার্ডের চাকরিরত অবস্থায় ২০১৫ সালে এক ব্যক্তির সঙ্গে পরিচয় হলে ওই ব্যক্তির পরামর্শে ভুয়া লাইসেন্সে একটি অবৈধ বন্দুক কেনে। লাইসেন্সসহ বন্দুক থাকায় বেশি বেতনে একটি বেসরকারি ব্যাংকে সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি শুরুর পর বিশ্বস্ত ৫-৬ জনকে নিয়ে দল গঠন করে সীমান্তের ওপার থেকে অবৈধপথে অস্ত্র এনে ভুয়া লাইসেন্স দিয়ে বিক্রির কাজে নামে। বস্তুত দেশে অস্ত্রের লাইসেন্স পাওয়া বেশ কঠিন ও জটিল হওয়ার সুযোগ কাজে লাগিয়ে জাল লাইসেন্স তৈরি করে অবৈধ অস্ত্র বিক্রি এবং সেই অস্ত্রের বৈধতা দিয়ে যাচ্ছিল চক্রটি।
সূত্রমতে, সারা দেশে প্রায় ১ লাখ ৯০ হাজার ৩১২টি অস্ত্রের নিবন্ধন দেওয়া থাকলেও মাত্র ৪৩ হাজার ৩১২টি অস্ত্রের হালনাগাদ তথ্য রয়েছে পুলিশের কাছে। বাকিগুলোর কোনো হালনাগাদ তথ্য নেই। অবশ্য ২০২১ সাল থেকে সিআইডি বৈধ অস্ত্রের তথ্য সংরক্ষণের বিষয়ে একটি ডেটাবেজ তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। এটি সম্পন্ন হলে কার কাছে কী ধরনের অস্ত্র আছে, তা জানা যেমন সহজ হবে, তেমনই অবৈধ অস্ত্র ও জাল লাইসেন্সের বিষয়টিও স্পষ্ট হবে বলে আমাদের বিশ্বাস। এতে অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
দেশে গুম-খুন, অপহরণ, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসের মাত্রা বৃদ্ধির পেছনে অবৈধ অস্ত্রের ভূমিকা রয়েছে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। এটি জঙ্গিবাদকেও উৎসাহ জোগায়। দেশে জঙ্গি তৎপরতা রোধ করতে হলে অবৈধ অস্ত্র ও বিস্ফোরকের ব্যবহার রোধ করা জরুরি। এছাড়া দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোয় তৎপর রয়েছে বেশ কয়েকটি চরমপন্থি সংগঠন। তাদের ক্ষমতার উৎসও অবৈধ অস্ত্র। অবৈধ অস্ত্রের সঙ্গে মাদক ও স্বর্ণ পাচারের একটা সম্পর্ক রয়েছে বলেও খবর রয়েছে, যার পেছনে আছে দেশি-বিদেশি পাচারকারী মাফিয়াচক্র। মোট কথা, জঙ্গি দমন, চাঁদাবাজি, নৈরাজ্য ও মাদকের বিস্তার রোধসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড নির্মূলে অবৈধ অস্ত্র ও বিস্ফোরকের চোরাচালান ও ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। এ লক্ষ্যে মূলোৎপাটন করতে হবে জাল লাইসেন্স তৈরির চক্রের।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
অবৈধ অস্ত্রের জাল লাইসেন্স, অপরাধীচক্রের মূলোৎপাটন জরুরি
দেশে অবৈধভাবে আগ্নেয়াস্ত্র প্রবেশের বিষয়ে একটি গোয়েন্দা সংস্থাকর্তৃক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ১৩ মার্চ থেকে সারা দেশে অভিযান শুরুর পর চক্রের মূলহোতা নড়াইলের পলাশ শেখ সম্প্রতি র্যাবের জালে ধরা পড়েছে।
জানা যায়, এসএসসি পাশ পলাশ শেখ সিকিউরিটি গার্ডের চাকরিরত অবস্থায় ২০১৫ সালে এক ব্যক্তির সঙ্গে পরিচয় হলে ওই ব্যক্তির পরামর্শে ভুয়া লাইসেন্সে একটি অবৈধ বন্দুক কেনে। লাইসেন্সসহ বন্দুক থাকায় বেশি বেতনে একটি বেসরকারি ব্যাংকে সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি শুরুর পর বিশ্বস্ত ৫-৬ জনকে নিয়ে দল গঠন করে সীমান্তের ওপার থেকে অবৈধপথে অস্ত্র এনে ভুয়া লাইসেন্স দিয়ে বিক্রির কাজে নামে। বস্তুত দেশে অস্ত্রের লাইসেন্স পাওয়া বেশ কঠিন ও জটিল হওয়ার সুযোগ কাজে লাগিয়ে জাল লাইসেন্স তৈরি করে অবৈধ অস্ত্র বিক্রি এবং সেই অস্ত্রের বৈধতা দিয়ে যাচ্ছিল চক্রটি।
সূত্রমতে, সারা দেশে প্রায় ১ লাখ ৯০ হাজার ৩১২টি অস্ত্রের নিবন্ধন দেওয়া থাকলেও মাত্র ৪৩ হাজার ৩১২টি অস্ত্রের হালনাগাদ তথ্য রয়েছে পুলিশের কাছে। বাকিগুলোর কোনো হালনাগাদ তথ্য নেই। অবশ্য ২০২১ সাল থেকে সিআইডি বৈধ অস্ত্রের তথ্য সংরক্ষণের বিষয়ে একটি ডেটাবেজ তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। এটি সম্পন্ন হলে কার কাছে কী ধরনের অস্ত্র আছে, তা জানা যেমন সহজ হবে, তেমনই অবৈধ অস্ত্র ও জাল লাইসেন্সের বিষয়টিও স্পষ্ট হবে বলে আমাদের বিশ্বাস। এতে অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
দেশে গুম-খুন, অপহরণ, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসের মাত্রা বৃদ্ধির পেছনে অবৈধ অস্ত্রের ভূমিকা রয়েছে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। এটি জঙ্গিবাদকেও উৎসাহ জোগায়। দেশে জঙ্গি তৎপরতা রোধ করতে হলে অবৈধ অস্ত্র ও বিস্ফোরকের ব্যবহার রোধ করা জরুরি। এছাড়া দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোয় তৎপর রয়েছে বেশ কয়েকটি চরমপন্থি সংগঠন। তাদের ক্ষমতার উৎসও অবৈধ অস্ত্র। অবৈধ অস্ত্রের সঙ্গে মাদক ও স্বর্ণ পাচারের একটা সম্পর্ক রয়েছে বলেও খবর রয়েছে, যার পেছনে আছে দেশি-বিদেশি পাচারকারী মাফিয়াচক্র। মোট কথা, জঙ্গি দমন, চাঁদাবাজি, নৈরাজ্য ও মাদকের বিস্তার রোধসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড নির্মূলে অবৈধ অস্ত্র ও বিস্ফোরকের চোরাচালান ও ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। এ লক্ষ্যে মূলোৎপাটন করতে হবে জাল লাইসেন্স তৈরির চক্রের।