শিক্ষক সংকট
জাতীয় শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় দেশের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগে এক ধরনের শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং তুলনামূলক বেশি যোগ্য প্রার্থীর শিক্ষক হিসাবে নিয়োগপ্রাপ্তির সুযোগ বেড়েছে। কিন্তু এরপরও সারা দেশের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বর্তমানে শূন্য পদের সংখ্যা ৬৮ হাজারের বেশি।
এতে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রম কতটা ব্যাহত হচ্ছে, তা সহজেই অনুমেয়। এদিকে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চাকরিপ্রত্যাশী যোগ্য প্রার্থী রয়েছেন দেড় লাখের মতো। কিন্তু তারপরও ৫২ শতাংশের বেশি পদে কাউকে নিয়োগের সুপারিশ করতে পারেনি এনটিআরসিএ। সম্প্রতি এসব শূন্য পদে নিয়োগের জন্য দরখাস্ত আহ্বান করে সংস্থাটি।
১২ মার্চ ওই আবেদনের ফল প্রকাশের পর বহু চাকরিপ্রত্যাশী হতাশ হয়েছেন। কারণ পুনরায় যখন এনটিআরসিএ শূন্য পদে নিয়োগের লক্ষ্যে দরখাস্ত আহ্বান করবে, তখন বয়সজনিত কারণে অনেকে আবেদনের সুযোগ পাবেন না। এদিকে নিয়োগপ্রত্যাশী কয়েকজনের দাবি, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে তারা বঞ্চিত হয়েছেন।
জানা যায়, ইংরেজি বিষয়ে প্রায় সাড়ে ৮ হাজার পদ শূন্য থাকলেও আবেদন পড়েছে ৪ হাজারের মতো। অপর্যাপ্ত আবেদনের কারণে এমন আরও বহু শিক্ষক পদ শূন্য রয়েছে। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যান্ত্রিক ত্রুটি থাকলে তা সারানোর মাধ্যমে এ প্রক্রিয়ার ধীরগতি অনেকটাই কাটানো সম্ভব। কিন্তু এরপরও অন্য কী কারণে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ার ধীরগতি কাটানো সম্ভব হচ্ছে না, তা চিহ্নিত করে সমস্যার সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। দেখা গেছে, ইংরেজি ও বিজ্ঞানের মতো বিষয়েও শূন্য পদের বিপরীতে আবেদনের সংখ্যা কম।
এতে স্পষ্ট, মেধাবীদের অনেকে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চাকরিকে আকর্ষণীয় হিসাবে বিবেচনা করছেন না। শিক্ষকতাকে মেধাবীরা যাতে আকর্ষণীয় হিসাবে বিবেচনা করেন, তেমন পদক্ষেপ নিতে হবে। সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও বিপুলসংখ্যক শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। সেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শূন্য পদে নিয়োগের ক্ষেত্রেও ধীরগতি কাটানোর পদক্ষেপ নিতে হবে।
দেশে প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষক সংকটের বিষয়টিও বহুল আলোচিত। সেই সংকট দূর করার পদক্ষেপও নিতে হবে। সব পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চাকরিকে আরও আকর্ষণীয় করতে হবে। কারণ বেশি মেধাবীরা শিক্ষকতা পেশায় আগ্রহী না হলে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়ানো হলেও এ খাতের লক্ষ্য অর্জনে অনিশ্চয়তা দেখা দিতে পারে।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
শিক্ষক সংকট
নিয়োগে ধীরগতি কাটাতে হবে
জাতীয় শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় দেশের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগে এক ধরনের শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং তুলনামূলক বেশি যোগ্য প্রার্থীর শিক্ষক হিসাবে নিয়োগপ্রাপ্তির সুযোগ বেড়েছে। কিন্তু এরপরও সারা দেশের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বর্তমানে শূন্য পদের সংখ্যা ৬৮ হাজারের বেশি।
এতে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রম কতটা ব্যাহত হচ্ছে, তা সহজেই অনুমেয়। এদিকে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চাকরিপ্রত্যাশী যোগ্য প্রার্থী রয়েছেন দেড় লাখের মতো। কিন্তু তারপরও ৫২ শতাংশের বেশি পদে কাউকে নিয়োগের সুপারিশ করতে পারেনি এনটিআরসিএ। সম্প্রতি এসব শূন্য পদে নিয়োগের জন্য দরখাস্ত আহ্বান করে সংস্থাটি।
১২ মার্চ ওই আবেদনের ফল প্রকাশের পর বহু চাকরিপ্রত্যাশী হতাশ হয়েছেন। কারণ পুনরায় যখন এনটিআরসিএ শূন্য পদে নিয়োগের লক্ষ্যে দরখাস্ত আহ্বান করবে, তখন বয়সজনিত কারণে অনেকে আবেদনের সুযোগ পাবেন না। এদিকে নিয়োগপ্রত্যাশী কয়েকজনের দাবি, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে তারা বঞ্চিত হয়েছেন।
জানা যায়, ইংরেজি বিষয়ে প্রায় সাড়ে ৮ হাজার পদ শূন্য থাকলেও আবেদন পড়েছে ৪ হাজারের মতো। অপর্যাপ্ত আবেদনের কারণে এমন আরও বহু শিক্ষক পদ শূন্য রয়েছে। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যান্ত্রিক ত্রুটি থাকলে তা সারানোর মাধ্যমে এ প্রক্রিয়ার ধীরগতি অনেকটাই কাটানো সম্ভব। কিন্তু এরপরও অন্য কী কারণে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ার ধীরগতি কাটানো সম্ভব হচ্ছে না, তা চিহ্নিত করে সমস্যার সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। দেখা গেছে, ইংরেজি ও বিজ্ঞানের মতো বিষয়েও শূন্য পদের বিপরীতে আবেদনের সংখ্যা কম।
এতে স্পষ্ট, মেধাবীদের অনেকে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চাকরিকে আকর্ষণীয় হিসাবে বিবেচনা করছেন না। শিক্ষকতাকে মেধাবীরা যাতে আকর্ষণীয় হিসাবে বিবেচনা করেন, তেমন পদক্ষেপ নিতে হবে। সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও বিপুলসংখ্যক শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। সেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শূন্য পদে নিয়োগের ক্ষেত্রেও ধীরগতি কাটানোর পদক্ষেপ নিতে হবে।
দেশে প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষক সংকটের বিষয়টিও বহুল আলোচিত। সেই সংকট দূর করার পদক্ষেপও নিতে হবে। সব পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চাকরিকে আরও আকর্ষণীয় করতে হবে। কারণ বেশি মেধাবীরা শিক্ষকতা পেশায় আগ্রহী না হলে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়ানো হলেও এ খাতের লক্ষ্য অর্জনে অনিশ্চয়তা দেখা দিতে পারে।