বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণায় অনীহা, পরিবেশ সৃষ্টির জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে
সম্পাদকীয়
২৬ মার্চ ২০২৩, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নতুন জ্ঞান সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এটি প্রত্যাশিত হলেও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় নতুন গবেষণা হচ্ছে না। অভিযোগ আছে, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গবেষণার জন্য কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় বরাদ্দ পাওয়া যায় না।
অথচ গতকাল যুগান্তরে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ইউজিসি দেশের ৪৯টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে গবেষণা খাতে যে বরাদ্দ প্রদান করেছিল, তা খরচ হয়নি। বছর শেষে বাকি টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে। গবেষণায় বরাদ্দ বাড়ানো হলেও ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বরাদ্দকৃত অর্থের বড় অংশ ব্যয় করতে পারেনি।
এ অবস্থার মধ্যে চলতি অর্থবছরে বরাদ্দ আরও বাড়ানো হয়েছে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পাঠদানের পাশাপাশি গবেষণা করতে হয়। সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক গবেষণার জন্য যথেষ্ট সময় পান কিনা, তাও এক প্রশ্ন। গবেষকদের অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর পাশাপাশি গবেষণার পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। অনেক দেশে গবেষকরা নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করছেন। আমাদের দেশের গবেষকদেরও উচিত তেমন দৃষ্টান্ত স্থাপন করা। দেশ ও মানবজাতির জন্য বড় অবদান রাখার বিষয়ে যদি গবেষকদের দৃঢ় প্রত্যয় না থাকে, তাহলে অবকাঠামোগত যত সুবিধাই প্রদান করা হোক, কাঙ্ক্ষিত সুফল পাওয়া যাবে না।
আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য আমাদের দেশের গবেষকদের সেই মানের গবেষণা করতে হবে, যেখানে বিজ্ঞান বা মানববিদ্যার ব্যবধান থাকবে না। সেই মানের জ্ঞানচর্চা করতে হবে, যে জ্ঞান মানবজাতির জন্য কোনো অকল্যাণ বয়ে আনবে না। এ জন্য দরকার বিশেষায়িত একটি বিশ্ববিদ্যালয়, যেখানে শুধুই উচ্চতর গবেষণার চর্চা হবে। আমরা যদি নতুন জ্ঞান সৃষ্টির প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকতে চাই, তাহলে শুধু গবেষণা হবে তেমন বিশ্ববিদ্যালয় সৃষ্টির বিকল্প নেই। দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সরকারি বরাদ্দের পাশাপাশি বেসরকারি পর্যায়ের বরাদ্দ যাতে বাড়ে, সে জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে। দেশের গবেষকদের নতুন জ্ঞান সৃষ্টির মধ্য দিয়ে বেসরকারি খাতকে আকৃষ্ট করতে হবে। সর্বস্তরে শিক্ষার মান বাড়ানোর পদক্ষেপ নিতে হবে। যদি শিক্ষার্থীদের শিক্ষার ভিত মজবুত করা না যায়, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে যতই বরাদ্দ বাড়ানো হোক, কাঙ্ক্ষিত মানের গবেষক পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ। সর্বস্তরে জ্ঞানচর্চার যথাযথ পরিবেশ সৃষ্টি করা না গেলে বরাদ্দ বাড়ানো হলেও নতুন জ্ঞান সৃষ্টির প্রতিযোগিতায় আমরা সামনের সারিতে থাকতে পারব কিনা, সে বিষয়ে সন্দেহ থেকেই যায়।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণায় অনীহা, পরিবেশ সৃষ্টির জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে
দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নতুন জ্ঞান সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এটি প্রত্যাশিত হলেও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় নতুন গবেষণা হচ্ছে না। অভিযোগ আছে, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গবেষণার জন্য কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় বরাদ্দ পাওয়া যায় না।
অথচ গতকাল যুগান্তরে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ইউজিসি দেশের ৪৯টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে গবেষণা খাতে যে বরাদ্দ প্রদান করেছিল, তা খরচ হয়নি। বছর শেষে বাকি টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে। গবেষণায় বরাদ্দ বাড়ানো হলেও ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বরাদ্দকৃত অর্থের বড় অংশ ব্যয় করতে পারেনি।
এ অবস্থার মধ্যে চলতি অর্থবছরে বরাদ্দ আরও বাড়ানো হয়েছে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পাঠদানের পাশাপাশি গবেষণা করতে হয়। সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক গবেষণার জন্য যথেষ্ট সময় পান কিনা, তাও এক প্রশ্ন। গবেষকদের অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর পাশাপাশি গবেষণার পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। অনেক দেশে গবেষকরা নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করছেন। আমাদের দেশের গবেষকদেরও উচিত তেমন দৃষ্টান্ত স্থাপন করা। দেশ ও মানবজাতির জন্য বড় অবদান রাখার বিষয়ে যদি গবেষকদের দৃঢ় প্রত্যয় না থাকে, তাহলে অবকাঠামোগত যত সুবিধাই প্রদান করা হোক, কাঙ্ক্ষিত সুফল পাওয়া যাবে না।
আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য আমাদের দেশের গবেষকদের সেই মানের গবেষণা করতে হবে, যেখানে বিজ্ঞান বা মানববিদ্যার ব্যবধান থাকবে না। সেই মানের জ্ঞানচর্চা করতে হবে, যে জ্ঞান মানবজাতির জন্য কোনো অকল্যাণ বয়ে আনবে না। এ জন্য দরকার বিশেষায়িত একটি বিশ্ববিদ্যালয়, যেখানে শুধুই উচ্চতর গবেষণার চর্চা হবে। আমরা যদি নতুন জ্ঞান সৃষ্টির প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকতে চাই, তাহলে শুধু গবেষণা হবে তেমন বিশ্ববিদ্যালয় সৃষ্টির বিকল্প নেই। দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সরকারি বরাদ্দের পাশাপাশি বেসরকারি পর্যায়ের বরাদ্দ যাতে বাড়ে, সে জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে। দেশের গবেষকদের নতুন জ্ঞান সৃষ্টির মধ্য দিয়ে বেসরকারি খাতকে আকৃষ্ট করতে হবে। সর্বস্তরে শিক্ষার মান বাড়ানোর পদক্ষেপ নিতে হবে। যদি শিক্ষার্থীদের শিক্ষার ভিত মজবুত করা না যায়, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে যতই বরাদ্দ বাড়ানো হোক, কাঙ্ক্ষিত মানের গবেষক পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ। সর্বস্তরে জ্ঞানচর্চার যথাযথ পরিবেশ সৃষ্টি করা না গেলে বরাদ্দ বাড়ানো হলেও নতুন জ্ঞান সৃষ্টির প্রতিযোগিতায় আমরা সামনের সারিতে থাকতে পারব কিনা, সে বিষয়ে সন্দেহ থেকেই যায়।