তুরাগের তীর ভরাট করে স্থাপনা
jugantor
তুরাগের তীর ভরাট করে স্থাপনা
নদ-নদীগুলো দখল ও দূষণমুক্ত হবে কবে?

  সম্পাদকীয়  

২৭ মার্চ ২০২৩, ০০:০০:০০  |  প্রিন্ট সংস্করণ

রাজধানীর রূপনগর থানাধীন তুরাগ নদীর তীরে বালু ফেলে ভরাট করার পাশাপাশি পাকা দেওয়াল ও স্টিল অবকাঠামোর ছাউনি দেওয়ার সংবাদ উদ্বেগজনক। সম্প্রতি এসব স্থাপনা উচ্ছেদ করতে গিয়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহণ কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) কর্মকর্তারা হামলার মুখে পড়েছেন, যা অনভিপ্রেত। সরকারের আগের মেয়াদে রাজধানীর চারপাশে গুরুত্বপূর্ণ চার নদী-বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, বালু ও তুরাগ দখলমুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছিলেন সরকারের তৎকালীন দুই মন্ত্রী। শুধু তাই নয়, দখলদাররা যত প্রভাবশালীই হোক; তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার কথাও বলেছিলেন তারা। দুঃখজনক হলো, তাদের এ উদ্যোগ ঘোষণার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। মন্ত্রীদ্বয়ের ঘোষণা অনুযায়ী কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলে দখল ও দূষণে জর্জরিত গুরুত্বপূর্ণ এ চার নদীর প্রবহমানতায় নতুন প্রাণের সঞ্চার হতো, এতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে শুধু এ চার নদীই নয়, দেশের অন্যান্য নদ-নদী দখল করে বাড়ি, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, আবাসিক প্লট, ইটভাটা ইত্যাদি গড়ে উঠেছে, যা শক্তহাতে দমন করা প্রয়োজন।

আশার কথা, নদী রক্ষা কমিশন ইতোমধ্যে সারা দেশের ৪৯ হাজার ১৬২ জন নদী ও খাল দখলদারের তালিকা ওয়েবাসাইটে প্রকাশের পর নিয়ম অনুযায়ী এদের উচ্ছেদ করার কথাও বলা হয়েছে। নদী রক্ষা কমিশন যদি এ কাজে সফল হয়, তাহলে অনেক বড় একটি কাজ সম্পন্ন হবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে আমাদের অভিজ্ঞতা বলে-উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনার পর কিছুদিন যেতে না যেতেই আবারও তা দখল হওয়ার ঘটনা ঘটে থাকে। সরকার অবশ্য এ অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে উচ্ছেদের পর ফের দখল ঠেকাতে নদীতীরে বনায়নসহ অন্যান্য প্রকল্প হাতে নিয়েছে। একইসঙ্গে অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থাও গ্রহণ করা উচিত। যত বড় প্রভাবশালীই হোক না কেন; আইন অনুযায়ী শাস্তি নিশ্চিত করা হলে ভবিষ্যতে নদী দখল ও দূষণ রোধসহ পরিবেশ রক্ষায় তা ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে, তা বলাই বাহুল্য। বাংলাদেশকে বলা হয় নদীমাতৃক দেশ। জালের মতো সারা দেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা অসংখ্য খরস্রোতা নদী আজ জীর্ণ-শীর্ণ অথবা মরণাপন্ন অবস্থায় উপনীত হয়েছে। অনেক নদী মানচিত্র থেকে হারিয়েও গেছে। এজন্য দায়ী আমাদের অবিবেচনাপ্রসূত কর্মকাণ্ড ও অদূরদর্শিতা। দেশের নদ-নদীগুলোকে অবশ্যই মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করতে হবে। রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ চার নদীর একটি তুরাগসহ দেশের অন্য নদ-নদীগুলো দখল ও দূষণমুক্ত করে সেখানে নবপ্রাণের সঞ্চারণ ঘটাতে সরকার কার্যকর পদক্ষেপ নেবে, এটাই প্রত্যাশা।

তুরাগের তীর ভরাট করে স্থাপনা

নদ-নদীগুলো দখল ও দূষণমুক্ত হবে কবে?
 সম্পাদকীয় 
২৭ মার্চ ২০২৩, ১২:০০ এএম  |  প্রিন্ট সংস্করণ

রাজধানীর রূপনগর থানাধীন তুরাগ নদীর তীরে বালু ফেলে ভরাট করার পাশাপাশি পাকা দেওয়াল ও স্টিল অবকাঠামোর ছাউনি দেওয়ার সংবাদ উদ্বেগজনক। সম্প্রতি এসব স্থাপনা উচ্ছেদ করতে গিয়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহণ কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) কর্মকর্তারা হামলার মুখে পড়েছেন, যা অনভিপ্রেত। সরকারের আগের মেয়াদে রাজধানীর চারপাশে গুরুত্বপূর্ণ চার নদী-বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, বালু ও তুরাগ দখলমুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছিলেন সরকারের তৎকালীন দুই মন্ত্রী। শুধু তাই নয়, দখলদাররা যত প্রভাবশালীই হোক; তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার কথাও বলেছিলেন তারা। দুঃখজনক হলো, তাদের এ উদ্যোগ ঘোষণার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। মন্ত্রীদ্বয়ের ঘোষণা অনুযায়ী কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলে দখল ও দূষণে জর্জরিত গুরুত্বপূর্ণ এ চার নদীর প্রবহমানতায় নতুন প্রাণের সঞ্চার হতো, এতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে শুধু এ চার নদীই নয়, দেশের অন্যান্য নদ-নদী দখল করে বাড়ি, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, আবাসিক প্লট, ইটভাটা ইত্যাদি গড়ে উঠেছে, যা শক্তহাতে দমন করা প্রয়োজন।

আশার কথা, নদী রক্ষা কমিশন ইতোমধ্যে সারা দেশের ৪৯ হাজার ১৬২ জন নদী ও খাল দখলদারের তালিকা ওয়েবাসাইটে প্রকাশের পর নিয়ম অনুযায়ী এদের উচ্ছেদ করার কথাও বলা হয়েছে। নদী রক্ষা কমিশন যদি এ কাজে সফল হয়, তাহলে অনেক বড় একটি কাজ সম্পন্ন হবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে আমাদের অভিজ্ঞতা বলে-উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনার পর কিছুদিন যেতে না যেতেই আবারও তা দখল হওয়ার ঘটনা ঘটে থাকে। সরকার অবশ্য এ অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে উচ্ছেদের পর ফের দখল ঠেকাতে নদীতীরে বনায়নসহ অন্যান্য প্রকল্প হাতে নিয়েছে। একইসঙ্গে অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থাও গ্রহণ করা উচিত। যত বড় প্রভাবশালীই হোক না কেন; আইন অনুযায়ী শাস্তি নিশ্চিত করা হলে ভবিষ্যতে নদী দখল ও দূষণ রোধসহ পরিবেশ রক্ষায় তা ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে, তা বলাই বাহুল্য। বাংলাদেশকে বলা হয় নদীমাতৃক দেশ। জালের মতো সারা দেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা অসংখ্য খরস্রোতা নদী আজ জীর্ণ-শীর্ণ অথবা মরণাপন্ন অবস্থায় উপনীত হয়েছে। অনেক নদী মানচিত্র থেকে হারিয়েও গেছে। এজন্য দায়ী আমাদের অবিবেচনাপ্রসূত কর্মকাণ্ড ও অদূরদর্শিতা। দেশের নদ-নদীগুলোকে অবশ্যই মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করতে হবে। রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ চার নদীর একটি তুরাগসহ দেশের অন্য নদ-নদীগুলো দখল ও দূষণমুক্ত করে সেখানে নবপ্রাণের সঞ্চারণ ঘটাতে সরকার কার্যকর পদক্ষেপ নেবে, এটাই প্রত্যাশা।

যুগান্তর ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন