বেসরকারি স্কুলে ভর্তি বাণিজ্য
বাড়তি ফি আদায় রোধে কঠোর হতে হবে
সম্পাদকীয়
৩১ মার্চ ২০২৩, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
প্রতিবছরের মতো এবারও রাজধানীর বিভিন্ন বেসরকারি স্কুলের বিরুদ্ধে ভর্তি বাণিজ্যের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গতকাল যুগান্তরে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত এক প্রতিবেদনে রাজধানীর নামি কয়েকটি স্কুলে ভর্তিকালে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ‘গলাকাটা’ ফি আদায়ের তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, মতিঝিলের একটি স্কুলে ভর্তিকালে ইংরেজি ভার্সনের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রথমে ২৪ খাতে ১০ হাজার টাকা করে আদায় করা হয়।
এরপর একই ধরনের কয়েকটি খাতে আবারও অর্থ জমা দেওয়ার জন্য অভিভাবকদের কাছে এসএমএস পাঠিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। শুধু ভর্তি ফি নয়, বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে টিউশন ফিও। একই ধরনের অভিযোগ এসেছে কাকরাইল এলাকার একটি স্কুলের বিরুদ্ধে। খোঁজ নিলে এমন আরও অনেক স্কুলে আড়ালে-আবডালে এ ধরনের ভর্তি বাণিজ্য চলার তথ্য মিলতে পারে।
বস্তুত এটি এক ধরনের দুর্নীতি। স্কুলগুলোর জন্য যে ভর্তি ফি নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার, বিভিন্ন অজুহাতে এর অতিরিক্ত ফি আদায় করা অনৈতিক। যেসব স্কুল সরকারি নির্দেশনা না মেনে এ চর্চা করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক যুগান্তরকে বলেছেন, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যত গণ্ডগোল হচ্ছে, তার মূলে আছে এই অর্থ। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তছরুপের অভিযোগও আছে। অভিভাবক ঐক্য ফোরামের চেয়ারম্যান বলেছেন, রাজধানীর কোনো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটিতে একশ্রেণির দুর্বৃত্ত বসে আছে। তারা নিজেদের অবৈধ আয়ের উৎস হিসাবে প্রতিষ্ঠানগুলোকে বেছে নিয়েছে। বস্তুত এসব বক্তব্য থেকেই বোঝা যায় বেসরকারি স্কুলগুলোতে ভর্তির নামে আসলে কী ঘটছে।
আমরা মনে করি, শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের কাছ থেকে ‘গলাকাটা’ ফি আদায় বন্ধে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আরও তৎপর হওয়া উচিত। স্কুলগুলোতে সরকারি তদারকি আরও জোরদার করা প্রয়োজন। যেসব স্কুল সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে ইতোমধ্যেই বাড়তি ফি আদায় করেছে, তাদের সেই বাড়তি টাকা অভিভাবকদের ফেরত দিতে স্কুলগুলোকে বাধ্য করতে হবে। অভিভাবকদেরও উচিত একজোট হয়ে বাড়তি ফি প্রদানে অস্বীকৃতি জানানো।
নিত্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতিতে অভিভাবকরা সংকটে আছেন। তাদের কাছ থেকে অন্যায়ভাবে বাড়তি ভর্তি ও বাড়তি টিউশন ফি আদায় রোধ করতে হবে কঠোরভাবে।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
বেসরকারি স্কুলে ভর্তি বাণিজ্য
বাড়তি ফি আদায় রোধে কঠোর হতে হবে
প্রতিবছরের মতো এবারও রাজধানীর বিভিন্ন বেসরকারি স্কুলের বিরুদ্ধে ভর্তি বাণিজ্যের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গতকাল যুগান্তরে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত এক প্রতিবেদনে রাজধানীর নামি কয়েকটি স্কুলে ভর্তিকালে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ‘গলাকাটা’ ফি আদায়ের তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, মতিঝিলের একটি স্কুলে ভর্তিকালে ইংরেজি ভার্সনের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রথমে ২৪ খাতে ১০ হাজার টাকা করে আদায় করা হয়।
এরপর একই ধরনের কয়েকটি খাতে আবারও অর্থ জমা দেওয়ার জন্য অভিভাবকদের কাছে এসএমএস পাঠিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। শুধু ভর্তি ফি নয়, বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে টিউশন ফিও। একই ধরনের অভিযোগ এসেছে কাকরাইল এলাকার একটি স্কুলের বিরুদ্ধে। খোঁজ নিলে এমন আরও অনেক স্কুলে আড়ালে-আবডালে এ ধরনের ভর্তি বাণিজ্য চলার তথ্য মিলতে পারে।
বস্তুত এটি এক ধরনের দুর্নীতি। স্কুলগুলোর জন্য যে ভর্তি ফি নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার, বিভিন্ন অজুহাতে এর অতিরিক্ত ফি আদায় করা অনৈতিক। যেসব স্কুল সরকারি নির্দেশনা না মেনে এ চর্চা করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক যুগান্তরকে বলেছেন, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যত গণ্ডগোল হচ্ছে, তার মূলে আছে এই অর্থ। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তছরুপের অভিযোগও আছে। অভিভাবক ঐক্য ফোরামের চেয়ারম্যান বলেছেন, রাজধানীর কোনো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটিতে একশ্রেণির দুর্বৃত্ত বসে আছে। তারা নিজেদের অবৈধ আয়ের উৎস হিসাবে প্রতিষ্ঠানগুলোকে বেছে নিয়েছে। বস্তুত এসব বক্তব্য থেকেই বোঝা যায় বেসরকারি স্কুলগুলোতে ভর্তির নামে আসলে কী ঘটছে।
আমরা মনে করি, শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের কাছ থেকে ‘গলাকাটা’ ফি আদায় বন্ধে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আরও তৎপর হওয়া উচিত। স্কুলগুলোতে সরকারি তদারকি আরও জোরদার করা প্রয়োজন। যেসব স্কুল সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে ইতোমধ্যেই বাড়তি ফি আদায় করেছে, তাদের সেই বাড়তি টাকা অভিভাবকদের ফেরত দিতে স্কুলগুলোকে বাধ্য করতে হবে। অভিভাবকদেরও উচিত একজোট হয়ে বাড়তি ফি প্রদানে অস্বীকৃতি জানানো।
নিত্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতিতে অভিভাবকরা সংকটে আছেন। তাদের কাছ থেকে অন্যায়ভাবে বাড়তি ভর্তি ও বাড়তি টিউশন ফি আদায় রোধ করতে হবে কঠোরভাবে।