রাজনৈতিক সহিংসতা, ইতিবাচক রাজনীতি ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ কাম্য

 সম্পাদকীয় 
২৮ মে ২০২৩, ১২:০০ এএম  |  প্রিন্ট সংস্করণ

কয়েক সপ্তাহ ধরে দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিএনপির কর্মসূচিতে হামলার ঘটনা ঘটতে দেখা যাচ্ছে। বিএনপি নেতারা বলছেন, হামলা-মামলা করে সরকার এভাবেই টিকে থাকতে চায়। অপরদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতাদের দাবি, ব্যক্তিগত শত্রুতার কারণে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা হচ্ছে।

তবে মামলা, হামলা আর সংঘর্ষের মধ্যেই সরকারবিরোধী আন্দোলন আরও তীব্র করতে চাচ্ছে বিএনপি। ফলে নানা স্থানে ঘটছে সংঘর্ষ এবং হতাহতের ঘটনা। রাজনৈতিক নেতারা হয়তো মনে করছেন, এই সাংঘর্ষিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই সাধারণ মানুষকে সরকারের বিরুদ্ধে মাঠে নামানো যাবে। কিন্তু এর ফলে হতাহতের ঘটনা যেমন ঘটে, তেমনই জনমনে আতঙ্ক বৃদ্ধিসহ সামাজিক কর্মকাণ্ড বাধাগ্রস্ত হয়, যা কোনোমতেই কাম্য নয়।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর সম্প্রতি বাংলাদেশের নাগরিকদের ব্যাপারে যে নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করেছে, সেখানে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত বাংলাদেশিদের যুক্তরাষ্ট্র ভিসা দেবে না। অর্থাৎ ক্ষমতাসীন বা বিরোধী, যে দলের নেতাকর্মীই গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করবে, তাদের এবং তাদের পরিবারের ওপর এ নীতি কার্যকর হবে। এমনকি এই নীতির মধ্যে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, বিচার বিভাগ ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরাও অন্তর্ভুক্ত বলা হয়েছে। কিন্তু সেটা তো গেল নির্বাচন প্রক্রিয়া। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাত্র কয়েক মাস আগে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন যেভাবে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে, তা নিয়ে দেশে এবং আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ বাড়ছে।

প্রায় প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন স্থানে বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশে সহিংস ঘটনার খবর সংবাদমাধ্যমে উঠে আসছে। সবশেষ শুক্রবার কেরানীগঞ্জের জিনজিরা এলাকায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে বিএনপির ঢাকা জেলা সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায় চৌধুরীসহ দুপক্ষের অন্তত ৩০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এছাড়া এদিন খাগড়াছড়িতে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী আব্দুল্লাহ আল নোমানের গাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। আবার একই রাতে গাজীপুর সিটি নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতায় টঙ্গীতে দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে ১৫ জন আহত হওয়ার খবর প্রকাশ পেয়েছে।

আমরা দেখছি, জাতীয় নির্বাচনের ক্ষণ যত ঘনিয়ে আসছে, ক্ষমতাসীন ও বিরোধীদলীয় রাজনীতিকদের মধ্যে আক্রমণাত্মক বক্তব্য তত বাড়ছে, যা জনমনে উৎকণ্ঠার জন্ম দিচ্ছে। আমরা আশা করব, রাজনৈতিক দলগুলো নেতিবাচক ধারা থেকে বেরিয়ে এসে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনি পরিবেশ সৃষ্টিতে সচেষ্ট হবে।

 

যুগান্তর ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন