উত্তপ্ত আবহাওয়া: বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিকে বেগবান করুন
গত কয়েকদিন ধরে প্রচণ্ড দাবদাহে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। কোথাও বয়ে যাচ্ছে মৃদু তাপপ্রবাহ, আবার কোথাও চলছে মাঝারি থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ। তবে এর চেয়েও কষ্টদায়ক হলো ‘অনুভব তাপমাত্রা’। ব্যারোমিটারে যে গরম ধরা পড়ছে, বাস্তবে গরম অনুভূত হচ্ছে তার চেয়ে গড়ে ২ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। এই গরমে সব বয়সের মানুষেরই দুরবস্থা। তবে সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছে বৃদ্ধ ও শিশুরা। কৃষক-মজুর থেকে শুরু করে খেটে খাওয়া মানুষেরও ত্রাহিদশা।
আবহাওয়াবিদদের মতে, বিদ্যমান এ তাপপ্রবাহের প্রধান কারণ হচ্ছে বৃষ্টিহীনতা। এই শুষ্ক পরিস্থিতির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আরও পাঁচটি বৈশিষ্ট্য। এগুলো হচ্ছে-পশ্চিমা লঘুচাপের প্রভাব, মেঘমুক্ত আকাশ এবং সূর্যের ৮-১০ ঘণ্টাব্যাপী কিরণকাল, বাতাসের মৃদু গতিবেগ, সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পার্থক্য কমে আসা এবং জলীয় বাষ্পের আধিক্য।
এমন পরিস্থিতিতে আবহাওয়া দপ্তর থেকেও মেলেনি কোনো স্বস্তির খবর। তারা জানিয়েছেন, গরম থেকে আপাতত নিস্তার মিলছে না। ৮ বা ৯ জুনের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে বিচ্ছিন্নভাবে বৃষ্টি হতে পারে। অর্থাৎ ৭ জুন পর্যন্ত দেশে দাবদাহ অব্যাহত থাকার আশঙ্কা রয়েছে। দেখা যাচ্ছে, গরমে হাঁসফাঁস পরিস্থিতির মধ্যে একটু প্রশান্তির আশায় ভিড় বেড়েছে শরবত ও জুসের দোকানে। তবে এ সময়ে ভাইরাসজনিত রোগেরও প্রাদুর্ভাব বেড়েছে।
চিকিৎসকরা বলছেন, এমন আবহাওয়ায় জ্বর, সর্দি-কাশির পাশাপাশি হিটস্ট্রোক, চর্মরোগসহ শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়া হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। তাই বাইরের ভ্রাম্যমাণ শরবত ও জুসের দোকানে যারা ভিড় করছেন, তাদের বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন জরুরি।
এদিকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরিবেশহানি ও জলবায়ুর নেতিবাচক পরিবর্তনের কারণে ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে বিশ্ব। অধিক জ্বালানি পোড়ানো, অঢেল রাসায়নিক বর্জ্য নির্গতকরণ, সীমাহীন যান্ত্রিক ও ধাতব ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অদৃশ্যমান কণিকা বাতাসে ছড়িয়ে পড়ায় তাপমাত্রা যতটা বাড়ছে, অনুভূত হচ্ছে তার চেয়ে বেশি। পরিবেশ দূষণ রোধে আর জলবায়ুর ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো আমাদেরও কিছু দায়িত্ব আছে।
রাজধানীতে উন্নয়ন আর শোভাবর্ধনের নামে যে হারে গাছ কাটা হয়, তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। কর্তৃপক্ষের উচিত যে কোনো উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে গাছ কাটার প্রবণতা বন্ধ করা। সেই সঙ্গে রাজধানীসহ দেশের প্রতিটি স্থানে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিকে বেগবান করা। প্রকৃতির সঙ্গে আমরা যে আচরণ করব, তার ফল আমাদেরই ভোগ করতে হবে। এ বিষয়টি মাথায় রেখেই ভবিষ্যতে সব কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে হবে।
উত্তপ্ত আবহাওয়া: বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিকে বেগবান করুন
সম্পাদকীয়
০৩ জুন ২০২৩, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
গত কয়েকদিন ধরে প্রচণ্ড দাবদাহে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। কোথাও বয়ে যাচ্ছে মৃদু তাপপ্রবাহ, আবার কোথাও চলছে মাঝারি থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ। তবে এর চেয়েও কষ্টদায়ক হলো ‘অনুভব তাপমাত্রা’। ব্যারোমিটারে যে গরম ধরা পড়ছে, বাস্তবে গরম অনুভূত হচ্ছে তার চেয়ে গড়ে ২ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। এই গরমে সব বয়সের মানুষেরই দুরবস্থা। তবে সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছে বৃদ্ধ ও শিশুরা। কৃষক-মজুর থেকে শুরু করে খেটে খাওয়া মানুষেরও ত্রাহিদশা।
আবহাওয়াবিদদের মতে, বিদ্যমান এ তাপপ্রবাহের প্রধান কারণ হচ্ছে বৃষ্টিহীনতা। এই শুষ্ক পরিস্থিতির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আরও পাঁচটি বৈশিষ্ট্য। এগুলো হচ্ছে-পশ্চিমা লঘুচাপের প্রভাব, মেঘমুক্ত আকাশ এবং সূর্যের ৮-১০ ঘণ্টাব্যাপী কিরণকাল, বাতাসের মৃদু গতিবেগ, সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পার্থক্য কমে আসা এবং জলীয় বাষ্পের আধিক্য।
এমন পরিস্থিতিতে আবহাওয়া দপ্তর থেকেও মেলেনি কোনো স্বস্তির খবর। তারা জানিয়েছেন, গরম থেকে আপাতত নিস্তার মিলছে না। ৮ বা ৯ জুনের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে বিচ্ছিন্নভাবে বৃষ্টি হতে পারে। অর্থাৎ ৭ জুন পর্যন্ত দেশে দাবদাহ অব্যাহত থাকার আশঙ্কা রয়েছে। দেখা যাচ্ছে, গরমে হাঁসফাঁস পরিস্থিতির মধ্যে একটু প্রশান্তির আশায় ভিড় বেড়েছে শরবত ও জুসের দোকানে। তবে এ সময়ে ভাইরাসজনিত রোগেরও প্রাদুর্ভাব বেড়েছে।
চিকিৎসকরা বলছেন, এমন আবহাওয়ায় জ্বর, সর্দি-কাশির পাশাপাশি হিটস্ট্রোক, চর্মরোগসহ শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়া হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। তাই বাইরের ভ্রাম্যমাণ শরবত ও জুসের দোকানে যারা ভিড় করছেন, তাদের বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন জরুরি।
এদিকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরিবেশহানি ও জলবায়ুর নেতিবাচক পরিবর্তনের কারণে ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে বিশ্ব। অধিক জ্বালানি পোড়ানো, অঢেল রাসায়নিক বর্জ্য নির্গতকরণ, সীমাহীন যান্ত্রিক ও ধাতব ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অদৃশ্যমান কণিকা বাতাসে ছড়িয়ে পড়ায় তাপমাত্রা যতটা বাড়ছে, অনুভূত হচ্ছে তার চেয়ে বেশি। পরিবেশ দূষণ রোধে আর জলবায়ুর ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো আমাদেরও কিছু দায়িত্ব আছে।
রাজধানীতে উন্নয়ন আর শোভাবর্ধনের নামে যে হারে গাছ কাটা হয়, তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। কর্তৃপক্ষের উচিত যে কোনো উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে গাছ কাটার প্রবণতা বন্ধ করা। সেই সঙ্গে রাজধানীসহ দেশের প্রতিটি স্থানে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিকে বেগবান করা। প্রকৃতির সঙ্গে আমরা যে আচরণ করব, তার ফল আমাদেরই ভোগ করতে হবে। এ বিষয়টি মাথায় রেখেই ভবিষ্যতে সব কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে হবে।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by The Daily Jugantor © 2023