নতুন আয়কর আইন
প্রয়োগের পাশাপাশি দরকার সচেতনতা বৃদ্ধি
আমাদের দেশে নানা স্তরে আয়কর ফাঁকি দেওয়ার প্রবণতা লক্ষ করা যায়। কেউ কেউ অভিযোগ করেন, বিভিন্ন খাতে যেভাবে শুল্ক আর কর দিতে জনগণ বাধ্য হয়, এরপর আয়কর দেওয়াটা অতিরিক্ত বোঝার শামিল। কেউ কেউ আবার কর প্রদানের বিনিময়ে সরকারের কাছ থেকে তেমন সুবিধা-সহযোগিতা পান না বলেও অভিযোগ করেন। অভিযোগ-অনুযোগ যাই থাকুক, কোনো দেশের সরকার পরিচালনার জন্য আয়ের একটি বড় উৎস হচ্ছে জনগণের দেওয়া এই কর। দুঃখজনক হলেও সত্য, আদায়কারীর অনাগ্রহ আর করদাতার ফাঁকির প্রবণতার কারণে আশানুরূপ কর আদায় থেকে সরকার বঞ্চিত হয়।
এ প্রেক্ষাপটে সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে আদায় কার্যক্রম বেগবান করতে আয়কর আইন কঠোর করতে চলেছে সরকার। নতুন এ আইনে ইচ্ছাকৃতভাবে আয়কর ফাঁকি দিলে বা এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হলে সর্বোচ্চ ৫ বছর করাদণ্ডের বিধান রাখা হচ্ছে। নতুন আইনে জরিমানার পরিধিও ব্যাপকভাবে বাড়ানো হয়েছে। বছরে ৫ লাখ টাকার বেশি আয় থাকলে জীবনযাত্রার ব্যয়বিবরণী এবং ৪০ লাখ টাকার বেশি আয় থাকলে বা বিদেশ (চিকিৎসা, ধর্মীয় উদ্দেশ্য ব্যতীত) ভ্রমণ করলে জীবনযাত্রার ব্যয়সহ সম্পদবিবরণী জমা দিতে হবে। আর সরকারি কর্মচারীদের ক্ষেত্রে তা আবশ্যিক করা হয়েছে।
নতুন আইনে দেরিতে রিটার্ন দেওয়ার জরিমানা বাড়ানো হচ্ছে। বিদেশে সম্পদের খোঁজ পেলে রয়েছে শতভাগ জরিমানার বিধান। কোনো ব্যক্তি যদি মারাও যান, তবুও তার আইনগত প্রতিনিধিকে আয়কর দিতে হবে। নতুন আইনে বলা হয়েছে, কর কর্মকর্তারা টিআইএন বাতিলসহ প্রয়োজনে ভবন, যানবাহন-বিমানসহ যে কোনো স্থানে প্রবেশ করে তল্লাশি চালাতে পারবেন। দরজা, আলমারি, লকার বা অন্য কোনো আধার তালাবদ্ধ থাকলে ভাঙতে এবং জব্দ করতে পারবেন। এজন্য কর কর্মকর্তাদের দায়মুক্তিসহ বিশেষ প্রণোদনা ও পুরস্কারের বিধান রাখা হয়েছে। সরকার বলছে, দেশের উন্নয়নের স্বার্থেই কর ফাঁকি ঠেকাতে এবং আদায়ের লক্ষ্য শতভাগ অর্জনে নতুন আইনে এসব উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। জানুয়ারিতে মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদিত বিলটি শিগগিরই জাতীয় সংসদে উত্থাপন করা হবে। প্রশ্ন হচ্ছে, কোনো কারণে যদি কেউ অহেতুক ভোগান্তির শিকার হন, তাহলে এর দায় কে নেবে? তাই আইনটি অনুমোদনের আগে করদাতাদের মতামত মূল্যায়ন করা জরুরি। পাশাপাশি সচেতনতা বৃদ্ধিসহ ভোগান্তি এড়াতে আয়কর প্রদানের নিয়মও সহজ করতে হবে। নয়তো এ আইন খারাপ উদাহরণ সৃষ্টি করতে পারে।
নতুন আয়কর আইন
প্রয়োগের পাশাপাশি দরকার সচেতনতা বৃদ্ধি
সম্পাদকীয়
০৮ জুন ২০২৩, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
আমাদের দেশে নানা স্তরে আয়কর ফাঁকি দেওয়ার প্রবণতা লক্ষ করা যায়। কেউ কেউ অভিযোগ করেন, বিভিন্ন খাতে যেভাবে শুল্ক আর কর দিতে জনগণ বাধ্য হয়, এরপর আয়কর দেওয়াটা অতিরিক্ত বোঝার শামিল। কেউ কেউ আবার কর প্রদানের বিনিময়ে সরকারের কাছ থেকে তেমন সুবিধা-সহযোগিতা পান না বলেও অভিযোগ করেন। অভিযোগ-অনুযোগ যাই থাকুক, কোনো দেশের সরকার পরিচালনার জন্য আয়ের একটি বড় উৎস হচ্ছে জনগণের দেওয়া এই কর। দুঃখজনক হলেও সত্য, আদায়কারীর অনাগ্রহ আর করদাতার ফাঁকির প্রবণতার কারণে আশানুরূপ কর আদায় থেকে সরকার বঞ্চিত হয়।
এ প্রেক্ষাপটে সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে আদায় কার্যক্রম বেগবান করতে আয়কর আইন কঠোর করতে চলেছে সরকার। নতুন এ আইনে ইচ্ছাকৃতভাবে আয়কর ফাঁকি দিলে বা এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হলে সর্বোচ্চ ৫ বছর করাদণ্ডের বিধান রাখা হচ্ছে। নতুন আইনে জরিমানার পরিধিও ব্যাপকভাবে বাড়ানো হয়েছে। বছরে ৫ লাখ টাকার বেশি আয় থাকলে জীবনযাত্রার ব্যয়বিবরণী এবং ৪০ লাখ টাকার বেশি আয় থাকলে বা বিদেশ (চিকিৎসা, ধর্মীয় উদ্দেশ্য ব্যতীত) ভ্রমণ করলে জীবনযাত্রার ব্যয়সহ সম্পদবিবরণী জমা দিতে হবে। আর সরকারি কর্মচারীদের ক্ষেত্রে তা আবশ্যিক করা হয়েছে।
নতুন আইনে দেরিতে রিটার্ন দেওয়ার জরিমানা বাড়ানো হচ্ছে। বিদেশে সম্পদের খোঁজ পেলে রয়েছে শতভাগ জরিমানার বিধান। কোনো ব্যক্তি যদি মারাও যান, তবুও তার আইনগত প্রতিনিধিকে আয়কর দিতে হবে। নতুন আইনে বলা হয়েছে, কর কর্মকর্তারা টিআইএন বাতিলসহ প্রয়োজনে ভবন, যানবাহন-বিমানসহ যে কোনো স্থানে প্রবেশ করে তল্লাশি চালাতে পারবেন। দরজা, আলমারি, লকার বা অন্য কোনো আধার তালাবদ্ধ থাকলে ভাঙতে এবং জব্দ করতে পারবেন। এজন্য কর কর্মকর্তাদের দায়মুক্তিসহ বিশেষ প্রণোদনা ও পুরস্কারের বিধান রাখা হয়েছে। সরকার বলছে, দেশের উন্নয়নের স্বার্থেই কর ফাঁকি ঠেকাতে এবং আদায়ের লক্ষ্য শতভাগ অর্জনে নতুন আইনে এসব উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। জানুয়ারিতে মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদিত বিলটি শিগগিরই জাতীয় সংসদে উত্থাপন করা হবে। প্রশ্ন হচ্ছে, কোনো কারণে যদি কেউ অহেতুক ভোগান্তির শিকার হন, তাহলে এর দায় কে নেবে? তাই আইনটি অনুমোদনের আগে করদাতাদের মতামত মূল্যায়ন করা জরুরি। পাশাপাশি সচেতনতা বৃদ্ধিসহ ভোগান্তি এড়াতে আয়কর প্রদানের নিয়মও সহজ করতে হবে। নয়তো এ আইন খারাপ উদাহরণ সৃষ্টি করতে পারে।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by The Daily Jugantor © 2023