ঝুঁকিতে আর্থিক খাত

খেলাপি ঋণের লাগাম টেনে ধরা জরুরি
 সংবাদ বিজ্ঞপ্তি 
০৯ জুন ২০২৩, ১২:০০ এএম  |  প্রিন্ট সংস্করণ

খেলাপি ঋণের পরিমাণ ক্রমাগত বৃদ্ধির ফলে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অবস্থা খুবই নাজুক হয়ে পড়ছে।

এ অবস্থায় ব্যাংক খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি খেলাপি ঋণের লাগাম টেনে ধরতে সময়োপযোগী পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। বিশ্বব্যাংক বলেছে, মাত্রাতিরিক্ত খেলাপি ঋণ, মূলধন সংকট ও সুশাসনের অভাবে বাংলাদেশের আর্থিক খাতে ঝুঁকির মাত্রা বেড়েছে।

একই সঙ্গে সরকারের অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক ঋণ গ্রহণ, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়ায় বাড়ছে আর্থিক সংকট। ডলার সংকটে গত কয়েক মাস ধরে আমদানি নিয়ন্ত্রণের কারণে শিল্পের কাঁচামাল আমদানি কমেছে। জ্বালানি সংকটও প্রকট আকার ধারণ করেছে। এতে শিল্প উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

মঙ্গলবার প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের ‘গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্ট’ জুন ২০২৩ ইস্যুতে সংস্থাটি এসব কথা বলেছে। খেলাপি ঋণ আদায়ে কর্তৃপক্ষ নানারকম পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ঘোষণা করলেও বাস্তবতা হলো দেশে খেলাপি ঋণ বেড়েছে জ্যামিতিক হারে।

অভিযোগ রয়েছে, কিছু অসাধু ব্যাংকারের সঙ্গে প্রভাবশালী ঋণখেলাপিদের যোগসাজশ রয়েছে। প্রশ্ন হলো, কর্তৃপক্ষের নজরদারি থাকা সত্ত্বেও সংশ্লিষ্টরা কারসাজি করার সুযোগ পায় কী করে? কেন্দ্রীয় ব্যাংকের যে ক্ষমতা আছে, তা সঠিকভাবে প্রয়োগ করা হচ্ছে কি না, এটাও এক প্রশ্ন।

দেশে ব্যাংক খাতের বড় এক সমস্যা দুর্নীতি। তাই এ খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি ব্যাংকের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় সততা ও দক্ষতা নিশ্চিত করা দরকার। যারা ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি, তাদের বিরুদ্ধে যদি যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হয়, তাহলে ব্যাংক খাতে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা কঠিন হয়ে পড়তে পারে। ঋণখেলাপিদের বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের বিকল্প নেই।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রণীত প্রস্তাবিত ডিজিটাল ব্যাংকিংবিষয়ক খসড়া নীতিমালা অনুযায়ী, কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণখেলাপিরা প্রস্তাবিত ডিজিটাল ব্যাংকের উদ্যোক্তা হতে পারবেন না। এছাড়া ডিজিটাল ব্যাংক স্থাপনের বিষয়ে কোনো আবেদন করার যোগ্য হবেন না। বিভিন্ন নামে বহুসংখ্যক ডিজিটাল ব্যাংক স্থাপনের অনুমোদন দেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

এ জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যৌথভাবেও আবেদন করতে পারবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, খেলাপি ঋণ আদায়ে কর্তৃপক্ষের আরও কঠোর হওয়া প্রয়োজন। খেলাপি ঋণের লাগাম টেনে ধরতে প্রয়োজনে আইন আরও কঠোর করতে হবে এবং এর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে।

পাশাপাশি সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছা এবং ব্যাংকগুলোয় সুশাসন প্রতিষ্ঠার বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ। সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঋণখেলাপিদের বিষয়ে কঠোর হবে, এটাই প্রত্যাশা।

যুগান্তর ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন