বিপাকে রপ্তানিকারকরা
দেশে ডলার প্রবেশের পথ রুদ্ধ করা উচিত নয়
ঋণপত্র বা এলসির দেনা পরিশোধে রপ্তানি আয়ের ডলার এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকে স্থানান্তরের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় বড় রপ্তানিকারকরা মহাবিপাকে পড়েছেন। গত ৪ আগস্ট এক সার্কুলারে বলা হয়, ওইদিন থেকে কোনো ব্যাংক রপ্তানিকারকের নামে আসা ডলার দিয়ে ব্যাক টু ব্যাক এলসির দায় শোধের পর অবশিষ্ট যে ডলার থাকবে সেগুলো এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকে স্থানান্তর করা যাবে না। একইসঙ্গে রপ্তানিকারকরা ডলার ৩০ দিনের মধ্যে ব্যবহার না করলে ব্যাংক নিজ দায়িত্বে তা নগদায়ন করে অন্য কাজে ব্যবহার করতে পারবে। ফলে এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকে ডলার স্থানান্তর করতে না পারায় রপ্তানিকারকদের এলসির দেনা পরিশোধ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এতে একদিকে ব্যাংকের দুর্নাম হচ্ছে, অন্যদিকে গ্রাহকেরও দুর্নাম হচ্ছে। উল্লেখ্য, আগে রপ্তানিকারকের অর্জিত ডলার থেকে ভ্যালু এডেড বা মূল্য সংযোজিত অংশ অর্থাৎ ব্যাক টু ব্যাক এলসির দায় শোধ করে যে ডলার রপ্তানিকারকের অ্যাকাউন্টে থাকত, তা অন্য ব্যাংকে স্থানান্তর করা যেত। এখন সেটি করা যাবে না।
রপ্তানিকারকরা বলছেন, নতুন নিয়মের ফলে বড় রপ্তানিকারকদের সমস্যা বেশি হচ্ছে। কারণ ব্যাক টু ব্যাক এলসির দেনা শোধের পর ছোট রপ্তানিকারকদের কাছে তেমন ডলার না থাকলেও বড় রপ্তানিকারকদের কাছে যে ডলার থাকে তা পরে বিভিন্ন খাতে ব্যবহার করা হয়। রপ্তানিকারকের বহুমুখী ব্যবসা থাকে বিধায় রপ্তানির পাশাপাশি শিল্পের যন্ত্রপাতি, বাণিজ্যিক শিল্পের কাঁচামালসহ অনেক কিছুই আমদানি করতে হয়। ঝুঁকি এড়াতে একই ব্যবসায়ী বিভিন্ন ব্যাংকে হিসাব খুলে ব্যবসা করেন। এ কারণে এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকে ডলার স্থানান্তর করে ব্যবহার করতে হয়। কিন্তু নতুন নিয়মের ফলে এখন সেটিও বন্ধ হয়ে গেল। অবশ্য বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র বলছে, ডলারের অপব্যবহার থামাতে ওই বিধিনিষেধ দেওয়া হয়েছে। এতে ডলার ধরে রাখার প্রবণতা কমবে। ফলে বাজারে ডলারের প্রবাহ বাড়বে। সব মিলে এই বিধিনিষেধ ডলারের অপব্যবহার রোধ করতে যদি সক্ষমও হয়, ব্যবসায়ীরা রপ্তানিবিমুখ হলে দেশে ডলার আয়ের উৎসে ভাটা পড়তে বাধ্য। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে যে নেতিবাচকতা বিদ্যমান রয়েছে, তা ভয়াবহ রূপ ধারণ করবে। তাই কর্তৃপক্ষের উচিত হবে দেশে বৈদেশিক মুদ্রা, বিশেষ করে রপ্তানির মাধ্যমে অর্জিত ডলার প্রবেশের পথ রুদ্ধ না করে বরং তা প্রসারিত করতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া।
বিপাকে রপ্তানিকারকরা
দেশে ডলার প্রবেশের পথ রুদ্ধ করা উচিত নয়
সম্পাদকীয়
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
ঋণপত্র বা এলসির দেনা পরিশোধে রপ্তানি আয়ের ডলার এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকে স্থানান্তরের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় বড় রপ্তানিকারকরা মহাবিপাকে পড়েছেন। গত ৪ আগস্ট এক সার্কুলারে বলা হয়, ওইদিন থেকে কোনো ব্যাংক রপ্তানিকারকের নামে আসা ডলার দিয়ে ব্যাক টু ব্যাক এলসির দায় শোধের পর অবশিষ্ট যে ডলার থাকবে সেগুলো এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকে স্থানান্তর করা যাবে না। একইসঙ্গে রপ্তানিকারকরা ডলার ৩০ দিনের মধ্যে ব্যবহার না করলে ব্যাংক নিজ দায়িত্বে তা নগদায়ন করে অন্য কাজে ব্যবহার করতে পারবে। ফলে এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকে ডলার স্থানান্তর করতে না পারায় রপ্তানিকারকদের এলসির দেনা পরিশোধ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এতে একদিকে ব্যাংকের দুর্নাম হচ্ছে, অন্যদিকে গ্রাহকেরও দুর্নাম হচ্ছে। উল্লেখ্য, আগে রপ্তানিকারকের অর্জিত ডলার থেকে ভ্যালু এডেড বা মূল্য সংযোজিত অংশ অর্থাৎ ব্যাক টু ব্যাক এলসির দায় শোধ করে যে ডলার রপ্তানিকারকের অ্যাকাউন্টে থাকত, তা অন্য ব্যাংকে স্থানান্তর করা যেত। এখন সেটি করা যাবে না।
রপ্তানিকারকরা বলছেন, নতুন নিয়মের ফলে বড় রপ্তানিকারকদের সমস্যা বেশি হচ্ছে। কারণ ব্যাক টু ব্যাক এলসির দেনা শোধের পর ছোট রপ্তানিকারকদের কাছে তেমন ডলার না থাকলেও বড় রপ্তানিকারকদের কাছে যে ডলার থাকে তা পরে বিভিন্ন খাতে ব্যবহার করা হয়। রপ্তানিকারকের বহুমুখী ব্যবসা থাকে বিধায় রপ্তানির পাশাপাশি শিল্পের যন্ত্রপাতি, বাণিজ্যিক শিল্পের কাঁচামালসহ অনেক কিছুই আমদানি করতে হয়। ঝুঁকি এড়াতে একই ব্যবসায়ী বিভিন্ন ব্যাংকে হিসাব খুলে ব্যবসা করেন। এ কারণে এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকে ডলার স্থানান্তর করে ব্যবহার করতে হয়। কিন্তু নতুন নিয়মের ফলে এখন সেটিও বন্ধ হয়ে গেল। অবশ্য বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র বলছে, ডলারের অপব্যবহার থামাতে ওই বিধিনিষেধ দেওয়া হয়েছে। এতে ডলার ধরে রাখার প্রবণতা কমবে। ফলে বাজারে ডলারের প্রবাহ বাড়বে। সব মিলে এই বিধিনিষেধ ডলারের অপব্যবহার রোধ করতে যদি সক্ষমও হয়, ব্যবসায়ীরা রপ্তানিবিমুখ হলে দেশে ডলার আয়ের উৎসে ভাটা পড়তে বাধ্য। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে যে নেতিবাচকতা বিদ্যমান রয়েছে, তা ভয়াবহ রূপ ধারণ করবে। তাই কর্তৃপক্ষের উচিত হবে দেশে বৈদেশিক মুদ্রা, বিশেষ করে রপ্তানির মাধ্যমে অর্জিত ডলার প্রবেশের পথ রুদ্ধ না করে বরং তা প্রসারিত করতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by The Daily Jugantor © 2023