প্রধান অতিথির বউ
লন্ডনের এক সেমিনার হল। বিশেষ সেমিনার চলছে। প্রধান অতিথি হয়ে এসেছেন এক বিখ্যাত বক্তা। শহরের গণ্যমান্য লোকেরা এসেছেন। সাধারণ শ্রোতাও কম নয়। আয়োজকরা খুব ব্যস্ত। স্বেচ্ছাসেবক তরুণরা সব তদারক করছে। হলের গেটে কেউ দাঁড়িয়ে অভ্যর্থনা জানাচ্ছে আগতদের। কেউ তাদের এগিয়ে দিয়ে বসাচ্ছেন আসনে। এরই মধ্যে মূল প্রবন্ধ পাঠ হয়ে গেছে। দুই-একজন বক্তৃতাও করে ফেলেছেন। এবার শুরু হয়েছে প্রধান অতিথির বক্তব্য।
এমন সময় হন্তদন্ত হয়ে ছুটে এলেন এক মহিলা। দরজার কাছে আসতেই এক তরুণ স্বেচ্ছাসেবক তাকে অভ্যর্থনা জানাল।
‘আসুন ম্যাডাম, আসুন। আমি আপনাকে বসিয়ে দিচ্ছি।’
‘অনেক ধন্যবাদ তোমাকে।’
‘কোথায় বসতে চান, ম্যাডাম?’
‘সামনের সারিতে।’
‘সামনে নয়, ম্যাডাম। আপনি পেছনের দিকেই বসুন।’
‘কেন, সামনে বসার জায়গা নেই নাকি?’
‘তা আছে। কিন্তু আপনি পেছনেই বসুন।’
‘কেন, বলো তো? সামনেই তো ভালো শোনা যাবে।’
‘তা যাবে। কিন্তু আপনার ভালো লাগবে না।’
‘ভালো লাগবে না কেন?’
‘প্রধান অতিথির বক্তব্য খুবই যাচ্ছেতাই ধরনের।’
‘তাই নাকি?’
‘কী যে মাথামুন্ডু বলেন, নিজেই বোঝেন না।’
‘কী বলছ এসব?’
‘সত্যি বলছি। তিনি শুরু করলে আর থামতে চান না। বকবক করেই চলেন।’
‘বকবক করেই চলেন?’
‘শুধু তা-ই নয়, তার বক্তব্য খুবই বিরক্তিকর। সবাই বিরক্ত হন। আপনিও হবেন।’
‘সবাই বিরক্ত হয়?’
‘হ্যাঁ। সেই কখন শুরু করেছেন এখনো চালিয়ে যাচ্ছেন।’
‘কখন শুরু করেছেন?’
‘আধঘণ্টা হবে। তাই বলছিলাম, পেছনে বসুন। বিরক্ত হলে কেটে পড়তে পারবেন।’
এবার মহিলা স্বেচ্ছাসেবক তরুণের দিকে বিরক্তির চোখে তাকালেন। জানতে চাইলেন, ‘তুমি জানো, আমি কে?’
তরুণ : না, ম্যাডাম।
মহিলা : আমি সেমিনারের প্রধান অতিথির বউ।
প্রমাদ গুণল তরুণ। এই রে, কাকে কী বলে ফেলেছে! না জানি কী হয় এবার। কিন্তু পরক্ষণেই জানতে চাইল, ‘ম্যাডাম, আপনি কি আমাকে চেনেন?
মহিলা বললেন, ‘না, তোমাকে তো চিনি না।’
‘না চিনলেই ভালো।’ বলে মহিলাকে সেমিনারে ঢুকিয়ে দিয়ে অন্য স্বেচ্ছাসেবকদের মাঝে মিশে গেল তরুণ।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
ভিনদেশি রসিকতা
প্রধান অতিথির বউ
লন্ডনের এক সেমিনার হল। বিশেষ সেমিনার চলছে। প্রধান অতিথি হয়ে এসেছেন এক বিখ্যাত বক্তা। শহরের গণ্যমান্য লোকেরা এসেছেন। সাধারণ শ্রোতাও কম নয়। আয়োজকরা খুব ব্যস্ত। স্বেচ্ছাসেবক তরুণরা সব তদারক করছে। হলের গেটে কেউ দাঁড়িয়ে অভ্যর্থনা জানাচ্ছে আগতদের। কেউ তাদের এগিয়ে দিয়ে বসাচ্ছেন আসনে। এরই মধ্যে মূল প্রবন্ধ পাঠ হয়ে গেছে। দুই-একজন বক্তৃতাও করে ফেলেছেন। এবার শুরু হয়েছে প্রধান অতিথির বক্তব্য।
এমন সময় হন্তদন্ত হয়ে ছুটে এলেন এক মহিলা। দরজার কাছে আসতেই এক তরুণ স্বেচ্ছাসেবক তাকে অভ্যর্থনা জানাল।
‘আসুন ম্যাডাম, আসুন। আমি আপনাকে বসিয়ে দিচ্ছি।’
‘অনেক ধন্যবাদ তোমাকে।’
‘কোথায় বসতে চান, ম্যাডাম?’
‘সামনের সারিতে।’
‘সামনে নয়, ম্যাডাম। আপনি পেছনের দিকেই বসুন।’
‘কেন, সামনে বসার জায়গা নেই নাকি?’
‘তা আছে। কিন্তু আপনি পেছনেই বসুন।’
‘কেন, বলো তো? সামনেই তো ভালো শোনা যাবে।’
‘তা যাবে। কিন্তু আপনার ভালো লাগবে না।’
‘ভালো লাগবে না কেন?’
‘প্রধান অতিথির বক্তব্য খুবই যাচ্ছেতাই ধরনের।’
‘তাই নাকি?’
‘কী যে মাথামুন্ডু বলেন, নিজেই বোঝেন না।’
‘কী বলছ এসব?’
‘সত্যি বলছি। তিনি শুরু করলে আর থামতে চান না। বকবক করেই চলেন।’
‘বকবক করেই চলেন?’
‘শুধু তা-ই নয়, তার বক্তব্য খুবই বিরক্তিকর। সবাই বিরক্ত হন। আপনিও হবেন।’
‘সবাই বিরক্ত হয়?’
‘হ্যাঁ। সেই কখন শুরু করেছেন এখনো চালিয়ে যাচ্ছেন।’
‘কখন শুরু করেছেন?’
‘আধঘণ্টা হবে। তাই বলছিলাম, পেছনে বসুন। বিরক্ত হলে কেটে পড়তে পারবেন।’
এবার মহিলা স্বেচ্ছাসেবক তরুণের দিকে বিরক্তির চোখে তাকালেন। জানতে চাইলেন, ‘তুমি জানো, আমি কে?’
তরুণ : না, ম্যাডাম।
মহিলা : আমি সেমিনারের প্রধান অতিথির বউ।
প্রমাদ গুণল তরুণ। এই রে, কাকে কী বলে ফেলেছে! না জানি কী হয় এবার। কিন্তু পরক্ষণেই জানতে চাইল, ‘ম্যাডাম, আপনি কি আমাকে চেনেন?
মহিলা বললেন, ‘না, তোমাকে তো চিনি না।’
‘না চিনলেই ভালো।’ বলে মহিলাকে সেমিনারে ঢুকিয়ে দিয়ে অন্য স্বেচ্ছাসেবকদের মাঝে মিশে গেল তরুণ।