রম্যগল্প
জটিল প্রেমের সমীকরণ
ক্লাসের সবচেয়ে সুন্দর ছেলে সুমন। তবে সবকিছু ছাপিয়ে জোকার হিসাবেই সে পরিচিত। কোনো বন্ধু প্রেমে পড়লে তাকে নিয়ে ট্রল করাই তার প্রধান কাজ। এইতো কিছুদিন আগের কথা। ইমন হঠাৎ করে প্রেমে পড়ল। মিনা নামের ক্লাসের এক মেয়ের সঙ্গে চোখাচোখি হয়। এরপর লাইব্রেরিতে বসে পড়ার নাম দিয়ে দুজন হৃদয় আদান প্রদান করছে। দৃশ্যটা সুমনের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। সুমন মনে হয় মনের মতো একটা টপিক পেয়েই গেছে। ক্লাসে বসে ইমন আর মিনা চোখে চোখে কথা বলছে। সুমন গিয়ে ঠিক তার মাঝখানেই বসল। ইমন একটু বিরক্ত হলো। সুমন ইমনকে জিজ্ঞেস করল, ‘কী রে, তোর চোখে কী হয়েছে?’
‘কই কিছুইতো হয় নাই।’
‘কী কস হয় নাই? আমি তো দেখলাম কিছু একটা হয়েছে।’
ইমন ভালো করে চোখ কচলাতে লাগল।
‘সুমন, ফালতু আলাপ বাদ দে। আমার চোখে কিছুই হয় নাই।’
‘কিছু না হইলে মিনার দিকে তাকাইয়া এরকম চোখ মারস ক্যান?’
ইমনতো লজ্জায় লাল হয়ে গেল। এ কী বলছে?
লাইব্রেরিতে বসে আছে ইমন আর মিনা। সুমন গিয়ে সেখানে উপস্থিত।
‘কী রে, তোরা কী করস?’
‘এই যে পড়তেছি।’
‘কে কাকে পড়তাছে?’
‘কী যা তা বলিস?’
‘ভালো করে পড়। না হয় আবার কে কারে ছেড়ে চলে যাস টেরই পাবি না।’
ক্লাসের সব মেয়ের নাম্বার সুমনের মুখস্থ। রাত নামলেই সে মেয়েদের ডিস্টার্ব করা শুরু করে। তার সহযোগী হিসাবে থাকে আরেক বন্ধু রিয়াজ। সুমন নানা কণ্ঠে মেয়েদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করে। পরের দিন ক্লাসের মেয়েরা বিষয়টা শেয়ার করলে সুমন খুব আফসোস করে। কে বা কারা এই কাজ করছে তা বের করা দরকার।
এদিকে হঠাৎ করে ক্লাসের বান্ধবী হিমির সঙ্গে সুমনের খুব ভালো বন্ধুত্ব হলো। দুজন এখানে-সেখানে আড্ডা দেয়। তাদের এলোমেলো ঘোরাঘুরি সবার চোখে পড়ে।
‘সুমন, তুইও কি প্রেমে পড়লি নাকি?’
সুমন বিদ্রুপের হাসি হেসে বলে, ‘আরে ছাগল, এটা প্রেম না, এটা বন্ধুত্ব।’
কয়েকদিন পর দেখা গেলো তারা দুজন হাত-ধরাধরি করে হাঁটছে। শহরের অলিতেগলিতে আড্ডা দিতে লাগল। কখনো বন্ধুদের মুখোমুখি হলে সে পাশ কাটিয়ে চলে যায়। দূর থেকে দেখলে সে রাস্তা পরিবর্তন করে চলে যায়। মোটামুটি সবাই তাদের চিনে ফেলেছিল। কেউ তাদের দেখলেই বলত, এই তো রোমিও জুলিয়েট যাচ্ছে।
কিছুদিন যাওয়ার পর সুমন স্বীকার করল সে হিমির প্রেমে পড়েছে। এইবার সবাই নড়েচড়ে বসে। এতদিন সবাইকে নিয়ে সে ট্রল করত। ইমন চিন্তা করল এইবার তাকে শায়েস্তা করার সময় এসেছে।
সুমন আর হিমি রেস্টুরেন্টে বসে আছে। ইমন এসে হিমিকে বলল, ‘কী রে, টাকা-পয়সা কিছু আছে?’
‘কেন? তোর লাগবে নাকি?’
‘আমার লাগবে না। আমার বন্ধু সুমনের লাগবে।’
‘কেন?’
‘না মানে নাস্তা করতে গেলে তো ওর পকেটে টাকা থাকে না। যতবার ওরে নিয়ে রেস্টুরেন্টে গেছি ততবার বিল দেওয়ার সময় ওর কী যেন জরুরি কল আসে। আসলে টাকা না দেওয়ার ধান্দা।’
সুমন লজ্জায় পড়ে গেল, ‘ইমন, তুই কি আমাকে ইনসাল্ট করছিস?’
‘ইনসাল্টের কী আছে? তোর মানিব্যাগটা একটু দেখাতো।’
সুমন আর কথা আগায় না।
রাতে সুমনের রুমে এসে ইমন বলল, ‘তুই যে হিমির সঙ্গে প্রেম করিস। টিকবে তো?’
‘আরে বেকুব, টিকবে না কেন? সে তো বলছে আমাকে ছাড়া বিয়েই করবে না। আমরা দুজন দুজনকে ছাড়া বাঁচব না।’
‘দেখা যাবে বন্ধু।’
‘তুইও লিখে রাখ, আমরা দুজন দুজনকে ছাড়া কখনোই আলাদা হবো না।’
পড়াশোনা শেষ হয়ে গেল। সবার মধ্যে একটা বিচ্ছেদও ঘটে গেল। একেকজন একেক জায়গায় চলে গেল। সুমন, ইমনসহ আরও অনেকেই চাকরির খোঁজে ঢাকায় চলে এলো। মাঝে মধ্যে সুমনের মন খুব খারাপ থাকে। হিমি যেন কেমন হয়ে যাচ্ছে। সহজে কল ধরে না। ইমন এসে খোঁচা দিয়ে বলে, ‘কী রে, তোকে ছাড়া নাকি সে বাঁচবে না। এখন কল ধরে না কেন? অন্য কোথাও অক্সিজেন পাইছে নাকি?’
‘ইমন, বাজে কথা বলবি না।’
সুমনের মন খারাপ হয়ে গেল। এতদিন সবাইকে নিয়ে ট্রল করত। এখন সে নিজেই ট্রলের শিকার। কিছুদিন পর খবর এল হিমির বিয়ে হয়ে গেছে। সুমন খবর শোনামাত্রই ঢাকা ছেড়ে চলে এল এলাকায়। হিমির নাম্বারে কল ঢুকে না। বিয়ের পর অনেক মেয়েই সিম পরিবর্তন করে শুধু নিজেকে ভালো হিসাবে উপস্থাপনের জন্য। সুমন হিমিদের বাড়িতে গিয়ে উপস্থিত। হিমি সাফ জানিয়ে দিল, ‘বেকার ছেলের সঙ্গে কিসের প্রেম?’
‘এতদিন কেন প্রেম করলে?’
হিমি এই প্রশ্নের উত্তর দিতে চায় না। মুখের ওপর ফটাস করে দরজা বন্ধ করে দিল। সুমন মনের দুঃখে মায়ের কাছে বিয়ে করার বায়না ধরে। মা ছেলের অবস্থা দেখে বিয়ে করিয়ে দেয়।
চার বছর পরের ঘটনা। শিশুপার্কে হিমির সঙ্গে সুমনের দেখা। দুজনই এখন দুই সন্তানের জনক-জননী। হিমি সুমনকে জিজ্ঞেস করে, ‘কেমন আছো?’
‘তোরে ছাড়াই ভালো আছি।’
‘এই, তুই তুকারি করে কথা বলো কেন?’
‘তোরে তুই কমুনা কি আপনি কমু? তুই আমার ক্লাসমেট। তোর জন্য তুই শব্দটাই পারফেক্ট।’
এই ঝামেলার মধ্যে কোথায় থেকে যেন ইমন চলে এল।
‘কী রে, তোরা নাকি একজন আরেকজনকে ছাড়া বাঁচবি না। এই চার বছর কি তোরা বেঁচে ছিলি?’
সুমন রাগে গদগদ হয়ে বলল, ‘আমার কপাল ভালো ওর মতো মেয়েকে বিয়ে করি নাই। না হয় লাইফটাই তছনছ হয়ে যেত।’
হিমিও রেগে গিয়ে বলে, ‘আমি আগেই বুঝছি ওর সাথে আমার যায় না। তাই ভালো জায়গায় বিয়ে করে ফেলি।’
ইমন হাসতে হাসতে বলল, ‘এতো দেখি জটিল প্রেমের সমীকরণ।’
জটিল প্রেমের সমীকরণ
রম্যগল্প
তারেকুর রহমান
১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
ক্লাসের সবচেয়ে সুন্দর ছেলে সুমন। তবে সবকিছু ছাপিয়ে জোকার হিসাবেই সে পরিচিত। কোনো বন্ধু প্রেমে পড়লে তাকে নিয়ে ট্রল করাই তার প্রধান কাজ। এইতো কিছুদিন আগের কথা। ইমন হঠাৎ করে প্রেমে পড়ল। মিনা নামের ক্লাসের এক মেয়ের সঙ্গে চোখাচোখি হয়। এরপর লাইব্রেরিতে বসে পড়ার নাম দিয়ে দুজন হৃদয় আদান প্রদান করছে। দৃশ্যটা সুমনের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। সুমন মনে হয় মনের মতো একটা টপিক পেয়েই গেছে। ক্লাসে বসে ইমন আর মিনা চোখে চোখে কথা বলছে। সুমন গিয়ে ঠিক তার মাঝখানেই বসল। ইমন একটু বিরক্ত হলো। সুমন ইমনকে জিজ্ঞেস করল, ‘কী রে, তোর চোখে কী হয়েছে?’
‘কই কিছুইতো হয় নাই।’
‘কী কস হয় নাই? আমি তো দেখলাম কিছু একটা হয়েছে।’
ইমন ভালো করে চোখ কচলাতে লাগল।
‘সুমন, ফালতু আলাপ বাদ দে। আমার চোখে কিছুই হয় নাই।’
‘কিছু না হইলে মিনার দিকে তাকাইয়া এরকম চোখ মারস ক্যান?’
ইমনতো লজ্জায় লাল হয়ে গেল। এ কী বলছে?
লাইব্রেরিতে বসে আছে ইমন আর মিনা। সুমন গিয়ে সেখানে উপস্থিত।
‘কী রে, তোরা কী করস?’
‘এই যে পড়তেছি।’
‘কে কাকে পড়তাছে?’
‘কী যা তা বলিস?’
‘ভালো করে পড়। না হয় আবার কে কারে ছেড়ে চলে যাস টেরই পাবি না।’
ক্লাসের সব মেয়ের নাম্বার সুমনের মুখস্থ। রাত নামলেই সে মেয়েদের ডিস্টার্ব করা শুরু করে। তার সহযোগী হিসাবে থাকে আরেক বন্ধু রিয়াজ। সুমন নানা কণ্ঠে মেয়েদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করে। পরের দিন ক্লাসের মেয়েরা বিষয়টা শেয়ার করলে সুমন খুব আফসোস করে। কে বা কারা এই কাজ করছে তা বের করা দরকার।
এদিকে হঠাৎ করে ক্লাসের বান্ধবী হিমির সঙ্গে সুমনের খুব ভালো বন্ধুত্ব হলো। দুজন এখানে-সেখানে আড্ডা দেয়। তাদের এলোমেলো ঘোরাঘুরি সবার চোখে পড়ে।
‘সুমন, তুইও কি প্রেমে পড়লি নাকি?’
সুমন বিদ্রুপের হাসি হেসে বলে, ‘আরে ছাগল, এটা প্রেম না, এটা বন্ধুত্ব।’
কয়েকদিন পর দেখা গেলো তারা দুজন হাত-ধরাধরি করে হাঁটছে। শহরের অলিতেগলিতে আড্ডা দিতে লাগল। কখনো বন্ধুদের মুখোমুখি হলে সে পাশ কাটিয়ে চলে যায়। দূর থেকে দেখলে সে রাস্তা পরিবর্তন করে চলে যায়। মোটামুটি সবাই তাদের চিনে ফেলেছিল। কেউ তাদের দেখলেই বলত, এই তো রোমিও জুলিয়েট যাচ্ছে।
কিছুদিন যাওয়ার পর সুমন স্বীকার করল সে হিমির প্রেমে পড়েছে। এইবার সবাই নড়েচড়ে বসে। এতদিন সবাইকে নিয়ে সে ট্রল করত। ইমন চিন্তা করল এইবার তাকে শায়েস্তা করার সময় এসেছে।
সুমন আর হিমি রেস্টুরেন্টে বসে আছে। ইমন এসে হিমিকে বলল, ‘কী রে, টাকা-পয়সা কিছু আছে?’
‘কেন? তোর লাগবে নাকি?’
‘আমার লাগবে না। আমার বন্ধু সুমনের লাগবে।’
‘কেন?’
‘না মানে নাস্তা করতে গেলে তো ওর পকেটে টাকা থাকে না। যতবার ওরে নিয়ে রেস্টুরেন্টে গেছি ততবার বিল দেওয়ার সময় ওর কী যেন জরুরি কল আসে। আসলে টাকা না দেওয়ার ধান্দা।’
সুমন লজ্জায় পড়ে গেল, ‘ইমন, তুই কি আমাকে ইনসাল্ট করছিস?’
‘ইনসাল্টের কী আছে? তোর মানিব্যাগটা একটু দেখাতো।’
সুমন আর কথা আগায় না।
রাতে সুমনের রুমে এসে ইমন বলল, ‘তুই যে হিমির সঙ্গে প্রেম করিস। টিকবে তো?’
‘আরে বেকুব, টিকবে না কেন? সে তো বলছে আমাকে ছাড়া বিয়েই করবে না। আমরা দুজন দুজনকে ছাড়া বাঁচব না।’
‘দেখা যাবে বন্ধু।’
‘তুইও লিখে রাখ, আমরা দুজন দুজনকে ছাড়া কখনোই আলাদা হবো না।’
পড়াশোনা শেষ হয়ে গেল। সবার মধ্যে একটা বিচ্ছেদও ঘটে গেল। একেকজন একেক জায়গায় চলে গেল। সুমন, ইমনসহ আরও অনেকেই চাকরির খোঁজে ঢাকায় চলে এলো। মাঝে মধ্যে সুমনের মন খুব খারাপ থাকে। হিমি যেন কেমন হয়ে যাচ্ছে। সহজে কল ধরে না। ইমন এসে খোঁচা দিয়ে বলে, ‘কী রে, তোকে ছাড়া নাকি সে বাঁচবে না। এখন কল ধরে না কেন? অন্য কোথাও অক্সিজেন পাইছে নাকি?’
‘ইমন, বাজে কথা বলবি না।’
সুমনের মন খারাপ হয়ে গেল। এতদিন সবাইকে নিয়ে ট্রল করত। এখন সে নিজেই ট্রলের শিকার। কিছুদিন পর খবর এল হিমির বিয়ে হয়ে গেছে। সুমন খবর শোনামাত্রই ঢাকা ছেড়ে চলে এল এলাকায়। হিমির নাম্বারে কল ঢুকে না। বিয়ের পর অনেক মেয়েই সিম পরিবর্তন করে শুধু নিজেকে ভালো হিসাবে উপস্থাপনের জন্য। সুমন হিমিদের বাড়িতে গিয়ে উপস্থিত। হিমি সাফ জানিয়ে দিল, ‘বেকার ছেলের সঙ্গে কিসের প্রেম?’
‘এতদিন কেন প্রেম করলে?’
হিমি এই প্রশ্নের উত্তর দিতে চায় না। মুখের ওপর ফটাস করে দরজা বন্ধ করে দিল। সুমন মনের দুঃখে মায়ের কাছে বিয়ে করার বায়না ধরে। মা ছেলের অবস্থা দেখে বিয়ে করিয়ে দেয়।
চার বছর পরের ঘটনা। শিশুপার্কে হিমির সঙ্গে সুমনের দেখা। দুজনই এখন দুই সন্তানের জনক-জননী। হিমি সুমনকে জিজ্ঞেস করে, ‘কেমন আছো?’
‘তোরে ছাড়াই ভালো আছি।’
‘এই, তুই তুকারি করে কথা বলো কেন?’
‘তোরে তুই কমুনা কি আপনি কমু? তুই আমার ক্লাসমেট। তোর জন্য তুই শব্দটাই পারফেক্ট।’
এই ঝামেলার মধ্যে কোথায় থেকে যেন ইমন চলে এল।
‘কী রে, তোরা নাকি একজন আরেকজনকে ছাড়া বাঁচবি না। এই চার বছর কি তোরা বেঁচে ছিলি?’
সুমন রাগে গদগদ হয়ে বলল, ‘আমার কপাল ভালো ওর মতো মেয়েকে বিয়ে করি নাই। না হয় লাইফটাই তছনছ হয়ে যেত।’
হিমিও রেগে গিয়ে বলে, ‘আমি আগেই বুঝছি ওর সাথে আমার যায় না। তাই ভালো জায়গায় বিয়ে করে ফেলি।’
ইমন হাসতে হাসতে বলল, ‘এতো দেখি জটিল প্রেমের সমীকরণ।’
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by The Daily Jugantor © 2023