বাদশার চিঠি
নাসিরুদ্দিনের পাড়ার একজন তাকে সুনজরে দেখতেন না। হোজ্জা সকলের কাছেই খুব প্রিয় শুধুমাত্র এই একটি কারণেই হোজ্জাকে হিংসা করতেন তিনি। তো সেই লোকটির মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়েছে। পাড়ার সবাইকে তিনি নিমন্ত্রণ করলেন কেবল হোজ্জা ছাড়া।
এদিকে হোজ্জারও জেদ চেপে গেল, যেমন করে হোক নেমন্তন্ন খেতেই হবে। হোজ্জার মাথা থেকে বুদ্ধি বের হতেও দেরি হলো না। একটা খামের উপর লোকটির নাম লিখে তার ভেতরে এক টুকরো সাদা কাগজ ভরে খামখানার মুখ বন্ধ করে বিয়েবাড়িতে গিয়ে উপস্থিত হলেন হোজ্জা।
সবাই খেতে বসবে ঠিক সে সময় উপস্থিত হয়ে বাড়ির মালিকের হাতে খামখানা দিয়ে বললেন, ‘বাদশা এই চিঠিখানা পাঠিয়েছেন।’
শুনে লোকটি তো বেজায় খুশি। স্বয়ং বাদশা নিশ্চয়ই তার মেয়েকে আশীর্বাদ জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন। মনের আনন্দে তিনি হোজ্জাকে খুব খাতির-যত্ন করে বসিয়ে খাওয়ালেন।
বেশ পেট ভরে খাওয়ার পর হোজ্জা লোকটির কাছে বিদায় নিতে গেলে হঠাৎ চিঠির কথা মনে পড়ল লোকটির। এতক্ষণ কাজের ব্যস্ততায় চিঠির খাম খোলার সময় হয়নি।
খাম খুলে তিনি থ মেরে গেলেন। হোজ্জাকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘এ কী! বাদশা তো কিছুই লেখেননি! এ তো শুধুই একখানা সাদা কাগজ!’
হোজ্জা নির্বিকার চিত্তে বললেন, ‘এর জবাব তো আমি দিতে পারব না। আমাকে চিঠিখানা হাতে দিয়ে পৌঁছে দিতে বললেন। আমি পৌঁছে দিয়েছি। আমার কাজ এখানেই শেষ। আমি যাই বাপু!’ বলেই বাড়ির দিকে হাঁটতে শরু করলেন হোজ্জা।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
চিরায়ত রস
বাদশার চিঠি
নাসিরুদ্দিনের পাড়ার একজন তাকে সুনজরে দেখতেন না। হোজ্জা সকলের কাছেই খুব প্রিয় শুধুমাত্র এই একটি কারণেই হোজ্জাকে হিংসা করতেন তিনি। তো সেই লোকটির মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়েছে। পাড়ার সবাইকে তিনি নিমন্ত্রণ করলেন কেবল হোজ্জা ছাড়া।
এদিকে হোজ্জারও জেদ চেপে গেল, যেমন করে হোক নেমন্তন্ন খেতেই হবে। হোজ্জার মাথা থেকে বুদ্ধি বের হতেও দেরি হলো না। একটা খামের উপর লোকটির নাম লিখে তার ভেতরে এক টুকরো সাদা কাগজ ভরে খামখানার মুখ বন্ধ করে বিয়েবাড়িতে গিয়ে উপস্থিত হলেন হোজ্জা।
সবাই খেতে বসবে ঠিক সে সময় উপস্থিত হয়ে বাড়ির মালিকের হাতে খামখানা দিয়ে বললেন, ‘বাদশা এই চিঠিখানা পাঠিয়েছেন।’
শুনে লোকটি তো বেজায় খুশি। স্বয়ং বাদশা নিশ্চয়ই তার মেয়েকে আশীর্বাদ জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন। মনের আনন্দে তিনি হোজ্জাকে খুব খাতির-যত্ন করে বসিয়ে খাওয়ালেন।
বেশ পেট ভরে খাওয়ার পর হোজ্জা লোকটির কাছে বিদায় নিতে গেলে হঠাৎ চিঠির কথা মনে পড়ল লোকটির। এতক্ষণ কাজের ব্যস্ততায় চিঠির খাম খোলার সময় হয়নি।
খাম খুলে তিনি থ মেরে গেলেন। হোজ্জাকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘এ কী! বাদশা তো কিছুই লেখেননি! এ তো শুধুই একখানা সাদা কাগজ!’
হোজ্জা নির্বিকার চিত্তে বললেন, ‘এর জবাব তো আমি দিতে পারব না। আমাকে চিঠিখানা হাতে দিয়ে পৌঁছে দিতে বললেন। আমি পৌঁছে দিয়েছি। আমার কাজ এখানেই শেষ। আমি যাই বাপু!’ বলেই বাড়ির দিকে হাঁটতে শরু করলেন হোজ্জা।