ব্যাংক হিসাবের জাকাত বাধ্যতামূলক
ইসলাম বিষয়ক প্রশ্নোত্তর
মুফতি তানজিল আমির
২১ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
উত্তর দিয়েছেন
মুফতি তানজিল আমির
আলেম ও গণমাধ্যমকর্মী
শাহেদ কারীম ইমরুল, মুরাদনগর, কুমিল্লা
প্রশ্ন: ব্যাংকের ব্যক্তি মালিকানাধীন অ্যাকাউন্টের জাকাত দিতে হবে?
উত্তর : ব্যাংকের ব্যক্তি মালিকানাধীন সব ধরনের অ্যাকাউন্ট জাকাতযোগ্য। অ্যাকাউন্ট হোল্ডার নেসাবের মালিক হলেই তাকে ব্যাংকে গচ্ছিত টাকাগুলোর জাকাত প্রদান করতে হবে।
চলতি হিসাব, সঞ্চয়ী হিসাব, দীর্ঘ মেয়াদি ও ডিপিএস হিসাবসহ সব অ্যাকাউন্ট এ হুকুমের আওতাভুক্ত হবে। ব্যাংক হিসাবের স্টেটমেন্ট দেখে জাকাত প্রদান করা যেতে পারে। জাকাতদাতার হিসাব বর্ষের শেষে স্টেটমেন্টে যত টাকা পাওয়া যাবে তার জাকাত সে প্রদান করবে।
কোনো এক অ্যাকাউন্ট থেকে সরাসরি ট্যাক্স বা সার্ভিস চার্জ কাটা গেলে জাকাতের হিসাবে এ টাকা অন্তর্ভুক্ত হবে না।
অ্যাকাউন্ট হোল্ডারের জমাকৃত টাকা ছাড়া ব্যাংক থেকে অতিরিক্ত যদি সুদ (বা মুনাফা নামের সুদ) জমা হয় তবে তা জাকাতযোগ্য নয়; বরং সুদ ও হারামের মাল হস্তগত হলে তা পুরোটাই সদকা করে দিতে হবে।
অবশ্য জাকাত দেওয়ার সঙ্গে পুরো টাকার হিসাব করে নিলে এ নিয়ত করে নেবে যে সুদের অংশের ২.৫ শতাংশ জাকাত হিসাবে দিচ্ছে না; বরং ওই অংশের ২.৫ শতাংশ দায়িত্ব মুক্তির জন্য আদায় করছে। এরপর যখন সে হারাম টাকা সওয়াবের নিয়ত ছাড়া দান করবে তখন জাকাতের সঙ্গে প্রদানকৃত ২.৫ শতাংশ বাদ দিয়ে বাকিটা সদকা করতে হবে।
সাইফুল হক তুষার, খিলগাঁও, ঢাকা
প্রশ্ন: আমি কাঁটাবন থেকে একটি পাখি কিনে এনেছি। অনেকে বলেন, পাখি খাঁচায় আটকে পালন করা বৈধ নয়। কথাটি কি ঠিক?
উত্তর : যেসব পাখি খাঁচাতেই জন্মায় এবং এখানেই জীবনযাপন করে অর্থাৎ (উড়া পাখি নিয়ে এসে বন্দি করা হয়েছে এমন নয়) এসব পালিত পাখিকে নিয়মিত খাবার পানি ও চিকিৎসা দিয়ে সুন্দরভাবে পরিচর্যা করতে পারলে খাঁচায় রেখে লালন-পালন করা জায়েজ হবে।
কিছু সাহাবি থেকে খাঁচায় পাখি লালন-পালন করা প্রমাণিত রয়েছে। হজরত হিশাম ইবনে উরওয়া (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আবদুল্লাহ ইবনে যুবায়ের (রা.) মক্কায় ছিলেন। তখন সাহাবিরা খাঁচায় পাখি রাখতেন। (আল আদাবুল মুফরাদ, হাদিস ৩৮৩)।
কিন্তু এ ক্ষেত্রে যথাযথ পরিচর্যা করতে হবে। পরিচর্যা করতে না পারলে অথবা বন্দি করে রাখার কারণে কষ্ট পেলে খাঁচায় আটকে রাখা জায়েজ হবে না। বরং ছেড়ে দিতে হবে।
খাবার-পানির সঠিক ব্যবস্থা করে ও কোনো ধরনের কষ্ট না দিলে খাঁচায় বন্দি করে পাখি পোষা জায়েজ। (আপকে মাসায়েল আওর উনকা হল : ৪/৪৫৪)।
প্রকাশ থাকে যে, বাইরে উড়ে বেড়ায় এমন পাখিকে খাঁচায় বন্দি করলে তাদের কষ্ট হতে পারে। তাই এ ধরনের পাখি খাঁচায় বন্দি না করাই উচিত। কেননা এতে তাদের স্বাধীন জীবনযাপন ব্যাহত হয়।
তথ্যসূত্র : সহিহ বুখারি, হাদিস ৬২০৩; ফাতহুল বারী ১০/৬০১; রদ্দুল মুহতার ৬/৪০১
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
ইসলাম বিষয়ক প্রশ্নোত্তর
ব্যাংক হিসাবের জাকাত বাধ্যতামূলক
উত্তর দিয়েছেন
মুফতি তানজিল আমির
আলেম ও গণমাধ্যমকর্মী
শাহেদ কারীম ইমরুল, মুরাদনগর, কুমিল্লা
প্রশ্ন: ব্যাংকের ব্যক্তি মালিকানাধীন অ্যাকাউন্টের জাকাত দিতে হবে?
উত্তর : ব্যাংকের ব্যক্তি মালিকানাধীন সব ধরনের অ্যাকাউন্ট জাকাতযোগ্য। অ্যাকাউন্ট হোল্ডার নেসাবের মালিক হলেই তাকে ব্যাংকে গচ্ছিত টাকাগুলোর জাকাত প্রদান করতে হবে।
চলতি হিসাব, সঞ্চয়ী হিসাব, দীর্ঘ মেয়াদি ও ডিপিএস হিসাবসহ সব অ্যাকাউন্ট এ হুকুমের আওতাভুক্ত হবে। ব্যাংক হিসাবের স্টেটমেন্ট দেখে জাকাত প্রদান করা যেতে পারে। জাকাতদাতার হিসাব বর্ষের শেষে স্টেটমেন্টে যত টাকা পাওয়া যাবে তার জাকাত সে প্রদান করবে।
কোনো এক অ্যাকাউন্ট থেকে সরাসরি ট্যাক্স বা সার্ভিস চার্জ কাটা গেলে জাকাতের হিসাবে এ টাকা অন্তর্ভুক্ত হবে না।
অ্যাকাউন্ট হোল্ডারের জমাকৃত টাকা ছাড়া ব্যাংক থেকে অতিরিক্ত যদি সুদ (বা মুনাফা নামের সুদ) জমা হয় তবে তা জাকাতযোগ্য নয়; বরং সুদ ও হারামের মাল হস্তগত হলে তা পুরোটাই সদকা করে দিতে হবে।
অবশ্য জাকাত দেওয়ার সঙ্গে পুরো টাকার হিসাব করে নিলে এ নিয়ত করে নেবে যে সুদের অংশের ২.৫ শতাংশ জাকাত হিসাবে দিচ্ছে না; বরং ওই অংশের ২.৫ শতাংশ দায়িত্ব মুক্তির জন্য আদায় করছে। এরপর যখন সে হারাম টাকা সওয়াবের নিয়ত ছাড়া দান করবে তখন জাকাতের সঙ্গে প্রদানকৃত ২.৫ শতাংশ বাদ দিয়ে বাকিটা সদকা করতে হবে।
সাইফুল হক তুষার, খিলগাঁও, ঢাকা
প্রশ্ন: আমি কাঁটাবন থেকে একটি পাখি কিনে এনেছি। অনেকে বলেন, পাখি খাঁচায় আটকে পালন করা বৈধ নয়। কথাটি কি ঠিক?
উত্তর : যেসব পাখি খাঁচাতেই জন্মায় এবং এখানেই জীবনযাপন করে অর্থাৎ (উড়া পাখি নিয়ে এসে বন্দি করা হয়েছে এমন নয়) এসব পালিত পাখিকে নিয়মিত খাবার পানি ও চিকিৎসা দিয়ে সুন্দরভাবে পরিচর্যা করতে পারলে খাঁচায় রেখে লালন-পালন করা জায়েজ হবে।
কিছু সাহাবি থেকে খাঁচায় পাখি লালন-পালন করা প্রমাণিত রয়েছে। হজরত হিশাম ইবনে উরওয়া (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আবদুল্লাহ ইবনে যুবায়ের (রা.) মক্কায় ছিলেন। তখন সাহাবিরা খাঁচায় পাখি রাখতেন। (আল আদাবুল মুফরাদ, হাদিস ৩৮৩)।
কিন্তু এ ক্ষেত্রে যথাযথ পরিচর্যা করতে হবে। পরিচর্যা করতে না পারলে অথবা বন্দি করে রাখার কারণে কষ্ট পেলে খাঁচায় আটকে রাখা জায়েজ হবে না। বরং ছেড়ে দিতে হবে।
খাবার-পানির সঠিক ব্যবস্থা করে ও কোনো ধরনের কষ্ট না দিলে খাঁচায় বন্দি করে পাখি পোষা জায়েজ। (আপকে মাসায়েল আওর উনকা হল : ৪/৪৫৪)।
প্রকাশ থাকে যে, বাইরে উড়ে বেড়ায় এমন পাখিকে খাঁচায় বন্দি করলে তাদের কষ্ট হতে পারে। তাই এ ধরনের পাখি খাঁচায় বন্দি না করাই উচিত। কেননা এতে তাদের স্বাধীন জীবনযাপন ব্যাহত হয়।
তথ্যসূত্র : সহিহ বুখারি, হাদিস ৬২০৩; ফাতহুল বারী ১০/৬০১; রদ্দুল মুহতার ৬/৪০১