হলুদের সাজে বর-কনে
বিয়ের আয়োজন শুরু হলুদের ব্যস্ততা দিয়ে। কনের হলুদের ডালায় পদের বাহারে যাতে কোনো অপূর্ণতা না থাকে, তাই চলতে থাকে দীর্ঘ প্রস্তুতি। শাড়ি কিংবা লেহেঙ্গার সঙ্গে মিলিয়ে ফুলের গহনা কখনো আবার পুঁতি কিংবা রতনচুরে সাজিয়ে তোলা হয় হবু কনেকে।
বিয়ে বাড়ির আমেজে তাই হলুদের আয়োজন ছড়ায় এক ভিন্ন আমেজ। একটা সময় হলুদের কথা শুনলেই বাটা হলুদ আর মেহেদিরাঙা কনের ছবি ফুটে উঠত চোখের সামনে। গোল বৃত্ত করে হাতের তালুতে বাটা মেহেদি আর আঙুলের মাথাভরা লাল টুকটুকে রং নতুন বউয়ের হাত রাঙিয়ে তুলত। এছাড়া আলতারাঙা পায়ে এক জোড়া নূপুরে বউকে তার পূর্ণতায় ভরিয়ে তুলত। সময় পাল্টেছে, তার সঙ্গে সাজের ডালায় পাল্টেছে সরঞ্জাম কিন্তু হাতের মেহেদি আর সাজের ডালায় আলতা নূপুর তাদের জায়গা ঠিক আগের মতোই দখল করে রেখেছে।
হলুদের আয়োজনে অনেকেই হাত ভরে এঁকে নেন পছন্দের মেহেদি আলপনা। হলুদের ডালায়ও নানা পদের দেখা মিলে। কোনো হলুদের ডালায় থাকে পান-সুপারি, ধান ও দূর্বা আবার কোনো ডালায় বাটা হলুদ, মেহেদি, আলতা আর কোনোটায় কনের পোশাক। সাধারণত হলুদের আয়োজনে ১০ থেকে ১২ ধরনের ডালা থাকে। এসব ডালার সাজেও থাকে ভিন্নতা। কোনোটি দেখতে ঘরের মতো আবার কোনোটি নৌকা কিংবা মাছের মতো। গোল কিংবা চারকোনা ডালায়ও হলুদের নানা পদের সরঞ্জাম থাকে। এর তিনটি ডালায় কনের শাড়ি, লেহেঙ্গা ও জুতা আরেকটি ডালায় হলুদ, মেহেদি, উপটান ও আলতা। আরেকটিতে পান-সুপারি; অন্যটিতে মিষ্টি আর বাকিগুলোয় সাজের সরঞ্জাম। অন্যদিকে হলুদের সাজের ক্ষেত্রে যুগে যুগে ফুলের সাজের বৈচিত্র্য চোখে পড়ে। অনেকেই পছন্দ করেন কাঁচা হলুদ বিশেষ করে গাঁদাফুলের সাজে নিজেকে সাজাতে। কেউ আবার শুকনো ফুলের সঙ্গে পুঁতি ও পাথর মিলিয়ে অর্ডার দিয়ে গহনা তৈরি করে থাকেন। কেউ কেউ খোলা চুলে সিঁথি করে তাতে ফুলের টায়রা আর গলায় চোকার কিংবা পাথর ও পুঁতির গয়না পরে থাকেন। অনেকেই আবার ধাতব গহনায়ও হলুদের সাজে ভিন্নতা আঁকেন নিজের মাঝে। তবে আপনি কেমন গহনা পরবেন, তা সম্পূর্ণ নির্ভর করে আপনার পোশাকের ওপরে। আপনি হলুদে শাড়ি পরলে তার সঙ্গে ফুলের আর পুঁতির মালা মিলিয়ে গহনা তৈরি করে নিতে পারেন। আর লেহেঙ্গা পরলে তার রঙের কথা মাথায় রেখে ধাতব গহনা পরতে পারেন।
অনেকেই হলুদে একেবারেই ঘরোয়া আমেজে লং কামিজ পরতে পছন্দ করেন। তাদের ক্ষেত্রে সিম্পল কাজের গহনা হতে পারে হলুদের সাজে মানানসই গহনা। হলুদের পোশাকের ক্ষেত্রে অনেকেই আবার শাড়িই কেবল বেছে নেন। এক্ষেত্রে জামদানি, সিল্ক ও কোটা শাড়ি এই শীতে হলুদের সাজে আপনি খুব সহজেই বেছে নিতে পারেন। শাড়ি পরার ক্ষেত্রেও আনতে পারেন ভিন্নতার ছোঁয়া। বাঙালিয়ানা কিংবা ব্লাউজের ওপর কটির মতো করেও একপাশে লম্বা আঁচল টেনে শাড়ি লেহেঙ্গার মতো পরতে পারেন। তবে খেয়াল রাখবেন, যাতে এসব শাড়ির আঁচলে পাথর-পুঁতির কাজ যেন থাকে। আর হলুদের ফুলের ক্ষেত্রে শাড়ির সঙ্গে মিলিয়ে গোলাপ, বেলি কিংবা গাঁদাফুল বেছে নিতে পারেন। তবে খেয়াল রাখবেন, যাতে ফুল খুব বড় না হয়। ছোট ফুলের বানানো মালা খোঁপায়, গলার গহনায় কিংবা হাতে চুড়ির সঙ্গে যেমন খুব সহজে মানিয়ে যায়, তেমনি হলুদের সাজকেও পূর্ণতায় ভরিয়ে দেয়।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৪০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
হলুদের সাজে বর-কনে
বিয়ের আয়োজন শুরু হলুদের ব্যস্ততা দিয়ে। কনের হলুদের ডালায় পদের বাহারে যাতে কোনো অপূর্ণতা না থাকে, তাই চলতে থাকে দীর্ঘ প্রস্তুতি। শাড়ি কিংবা লেহেঙ্গার সঙ্গে মিলিয়ে ফুলের গহনা কখনো আবার পুঁতি কিংবা রতনচুরে সাজিয়ে তোলা হয় হবু কনেকে।
বিয়ে বাড়ির আমেজে তাই হলুদের আয়োজন ছড়ায় এক ভিন্ন আমেজ। একটা সময় হলুদের কথা শুনলেই বাটা হলুদ আর মেহেদিরাঙা কনের ছবি ফুটে উঠত চোখের সামনে। গোল বৃত্ত করে হাতের তালুতে বাটা মেহেদি আর আঙুলের মাথাভরা লাল টুকটুকে রং নতুন বউয়ের হাত রাঙিয়ে তুলত। এছাড়া আলতারাঙা পায়ে এক জোড়া নূপুরে বউকে তার পূর্ণতায় ভরিয়ে তুলত। সময় পাল্টেছে, তার সঙ্গে সাজের ডালায় পাল্টেছে সরঞ্জাম কিন্তু হাতের মেহেদি আর সাজের ডালায় আলতা নূপুর তাদের জায়গা ঠিক আগের মতোই দখল করে রেখেছে।
হলুদের আয়োজনে অনেকেই হাত ভরে এঁকে নেন পছন্দের মেহেদি আলপনা। হলুদের ডালায়ও নানা পদের দেখা মিলে। কোনো হলুদের ডালায় থাকে পান-সুপারি, ধান ও দূর্বা আবার কোনো ডালায় বাটা হলুদ, মেহেদি, আলতা আর কোনোটায় কনের পোশাক। সাধারণত হলুদের আয়োজনে ১০ থেকে ১২ ধরনের ডালা থাকে। এসব ডালার সাজেও থাকে ভিন্নতা। কোনোটি দেখতে ঘরের মতো আবার কোনোটি নৌকা কিংবা মাছের মতো। গোল কিংবা চারকোনা ডালায়ও হলুদের নানা পদের সরঞ্জাম থাকে। এর তিনটি ডালায় কনের শাড়ি, লেহেঙ্গা ও জুতা আরেকটি ডালায় হলুদ, মেহেদি, উপটান ও আলতা। আরেকটিতে পান-সুপারি; অন্যটিতে মিষ্টি আর বাকিগুলোয় সাজের সরঞ্জাম। অন্যদিকে হলুদের সাজের ক্ষেত্রে যুগে যুগে ফুলের সাজের বৈচিত্র্য চোখে পড়ে। অনেকেই পছন্দ করেন কাঁচা হলুদ বিশেষ করে গাঁদাফুলের সাজে নিজেকে সাজাতে। কেউ আবার শুকনো ফুলের সঙ্গে পুঁতি ও পাথর মিলিয়ে অর্ডার দিয়ে গহনা তৈরি করে থাকেন। কেউ কেউ খোলা চুলে সিঁথি করে তাতে ফুলের টায়রা আর গলায় চোকার কিংবা পাথর ও পুঁতির গয়না পরে থাকেন। অনেকেই আবার ধাতব গহনায়ও হলুদের সাজে ভিন্নতা আঁকেন নিজের মাঝে। তবে আপনি কেমন গহনা পরবেন, তা সম্পূর্ণ নির্ভর করে আপনার পোশাকের ওপরে। আপনি হলুদে শাড়ি পরলে তার সঙ্গে ফুলের আর পুঁতির মালা মিলিয়ে গহনা তৈরি করে নিতে পারেন। আর লেহেঙ্গা পরলে তার রঙের কথা মাথায় রেখে ধাতব গহনা পরতে পারেন।
অনেকেই হলুদে একেবারেই ঘরোয়া আমেজে লং কামিজ পরতে পছন্দ করেন। তাদের ক্ষেত্রে সিম্পল কাজের গহনা হতে পারে হলুদের সাজে মানানসই গহনা। হলুদের পোশাকের ক্ষেত্রে অনেকেই আবার শাড়িই কেবল বেছে নেন। এক্ষেত্রে জামদানি, সিল্ক ও কোটা শাড়ি এই শীতে হলুদের সাজে আপনি খুব সহজেই বেছে নিতে পারেন। শাড়ি পরার ক্ষেত্রেও আনতে পারেন ভিন্নতার ছোঁয়া। বাঙালিয়ানা কিংবা ব্লাউজের ওপর কটির মতো করেও একপাশে লম্বা আঁচল টেনে শাড়ি লেহেঙ্গার মতো পরতে পারেন। তবে খেয়াল রাখবেন, যাতে এসব শাড়ির আঁচলে পাথর-পুঁতির কাজ যেন থাকে। আর হলুদের ফুলের ক্ষেত্রে শাড়ির সঙ্গে মিলিয়ে গোলাপ, বেলি কিংবা গাঁদাফুল বেছে নিতে পারেন। তবে খেয়াল রাখবেন, যাতে ফুল খুব বড় না হয়। ছোট ফুলের বানানো মালা খোঁপায়, গলার গহনায় কিংবা হাতে চুড়ির সঙ্গে যেমন খুব সহজে মানিয়ে যায়, তেমনি হলুদের সাজকেও পূর্ণতায় ভরিয়ে দেয়।