উৎসবের আমেজে
শারদ এলে আসে দুর্গোৎসব। বৃষ্টিভেজা সবুজ মাড়িয়ে প্রকৃতি সাজে এক অনন্য রূপে। মেঘের ভেলা ভিড় জমায় কাশবনে। চারপাশে থই থই করা জলে শাপলা-কমল করে জলকেলি। ষষ্টি থেকে দশমী পর্যন্ত উৎসবের আমেজ থাকে বেশ কয়েকদিন। ভিন্ন ভিন্ন আমেজের পোশাক পরা আর নানা লুকে নিজেকে সাজানোর সুযোগটাও বেশি। তাই এই পাঁচদিন একইভাবে না সেজে আধুনিক, ঐতিহ্যবাহী, ক্ল্যাসিক্যাল-নানা ঢঙে সাজতে পছন্দ করেন অনেকে।
ষষ্টিতে সাজটা হালকা হয়ে দশমীতে রঙিন হয়ে ওঠে। পূজার ঐতিহ্যবাহী পোশাক সাদা জমিনে লাল পাড় শাড়ি, ধুতি, পাঞ্জাবির পাশাপাশি সালোয়ার-কামিজ, দেশি ঢঙে পাশ্চাত্য পোশাক, শার্টসহ সব ধরনের পোশাকই এখন দুর্গাপূজার উৎসবে প্রাধান্য পাচ্ছে। কয়েকদিনের এ উৎসবে এখন অনেকেই ভিন্ন ভিন্ন দিনের জন্য ভিন্ন ভিন্ন পোশাকও বেছে নিচ্ছেন। এক্ষেত্রে সপ্তমী, অষ্টমী, নবমীতে পরতে পারেন সালোয়ার-কামিজ, গাউন, লং স্কার্ট প্রভৃতি। ছেলেরা বেছে নিতে পারেন ক্যাজুয়াল শার্ট, টি-শার্ট কিংবা ফতুয়া। টেন্ডি পোশাকের সঙ্গে টাইমলেস পোশাকও এবার ফ্যাশনে ইন। টি-শার্টের ক্ষেত্রে এখন ট্রেন্ড ক্যাপশন লেখা ডিজাইন। কালো বা সাদা পোলো টি-শার্ট, এক রঙের ফর্মাল শার্ট, সাদা বা কালো এক রঙের টি-শার্ট এবার বেশ চলছে। দশমীর পোশাকে তুলে আনতে পারেন ঐতিহ্য। সে ক্ষেত্রে বেছে নিতে পারেন শাড়ি, ধুতি, পাঞ্জাবি প্রভৃতি। আর ছোটরা মানিয়ে যাবে বর্ণিল যে কোনো পোশাকেই।
শাড়িতে ফুটে ওঠে ঐতিহ্যের ছোঁয়া। ঐতিহ্যবাহী গরদের সাদা জমিনে লাল পাড়ের শাড়ির পাশাপাশি ভিন্নতা আনতে পূজার শাড়িতে এখন ডিজাইনাররা শরতের নীল, সবুজ, লাল, কমলাসহ বিভিন্ন রং ব্যবহার করছেন। পাঞ্জাবি ছাড়া পূজা যেন ভাবাই যায় না। প্রতিবারের মতো এবার পূজাতেও পাঞ্জাবির কাটছাঁট, ডিজাইন আর কলারে এসেছে পরিবর্তন। আবার অনেকেই এখন শাড়ি বা সালোয়ার-কামিজ না পরে পূজার দু-একদিন ফিউশন পোশাক পরেন।
কথা হয় ফ্যাশন ডিজাইনার ও বিশ্বরঙের কর্ণধার বিপ্লব সাহার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘করোনার কারণে খুব বেশি বড় পরিসরে পুজোৎসব পালন করা না হলেও বা পূজামণ্ডপে নিয়মনীতি মেনে চলতে হলেও সবাই নিজেদের মতো আনন্দ করবে। গরমের কারণে এবার পূজার পোশাকে কটনের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। প্রতিবারের মতো এবারও আমরা থিমভিত্তিক পোশাক তৈরি করেছি। পূজায় সবাই চায় দুই-এক সেট গর্জিয়াস পোশাক কিনতে, যেটা পূজার পরও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে পরা যায়। আবার পূজার রাতেও পরা যায়। সে হিসাবে গর্জিয়াস জমকালো পোশাকের ওপরও কিছুটা জোর দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন ব্রাইট রং ছাড়াও সাদা-নীল, হলুদ-সোনালি এরকম কম্বিনেশনের কিছু চমৎকার কালেকশনও রাখা হয়েছে।’
বিভিন্ন ফ্যাশন হাউজ নিয়ে এসেছে অসাধারণ সব কালেকশন। বিশ্ব রঙ, রঙ বাংলাদেশ, অঞ্জন’স, কে-ক্রাফট, আড়ং, লা রিভ, সাদাকালোসহ বিভিন্ন ফ্যাশন হাউজে রয়েছে পুজোর বৈচিত্র্যময় পোশাকের সমারোহ। এ ছাড়া বিভিন্ন শপিংমল, মার্কেট তো রয়েছেই।
অঞ্জন’স পূজা উৎসবকে বর্ণিল করে তুলতে বিভিন্ন ধরনের নকশা ও প্যাটার্নের জমকালো কাজের শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, পাঞ্জাবি, কুর্তা, টপস নিয়ে হাজির হয়েছে। আরামের কথা চিন্তা করে বেছে নেওয়া হয়েছে কটন, লিনেন কটন, সিল্ক, এন্ডি সিল্ক, এন্ডি কটনসহ নতুন ধরনের উইভিং ডিজাইনের কাপড়।
রঙ বাংলাদেশ প্রতিকূল এ সময়েও পূজার আনন্দ সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিতে তৈরি করেছে থিমভিত্তিক পূজার পোশাক। থিম হিসাবে বেছে নেওয়া হয়েছে মন্দির ও প্রতীক, দেবীর অলঙ্কার ও শতরঞ্জি। মূলত কটন, হাফসিল্ক, সেমি পিউর ও লিনেন কাপড়ে তৈরি হয়েছে অধিকাংশ পোশাক। পোশাকের নকশা ফুটিয়ে তুলতে রয়েছে নানারকম ভ্যালু অ্যাডেড মিডিয়ার ব্যবহার।
ফ্যাশন হাউজ লা রিভে রয়েছে বর্ণিল শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, টিউনিক, গাউন, টপস, পাঞ্জাবি, পোলো, শার্ট প্রভৃতি। সিল্ক, রেয়ন, সাটিন, লিনেন, শিফন, কটন ও ভয়েলের আরামদায়ক কাপড়ে ফ্লোরাল মোটিফ, মিরর ওয়ার্ক, অ্যাম্ব্রয়ডারি ও রুচিশীল সিলোটির নকশা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
উৎসবের আমেজে
আঞ্জুমান আরা
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
শারদ এলে আসে দুর্গোৎসব। বৃষ্টিভেজা সবুজ মাড়িয়ে প্রকৃতি সাজে এক অনন্য রূপে। মেঘের ভেলা ভিড় জমায় কাশবনে। চারপাশে থই থই করা জলে শাপলা-কমল করে জলকেলি। ষষ্টি থেকে দশমী পর্যন্ত উৎসবের আমেজ থাকে বেশ কয়েকদিন। ভিন্ন ভিন্ন আমেজের পোশাক পরা আর নানা লুকে নিজেকে সাজানোর সুযোগটাও বেশি। তাই এই পাঁচদিন একইভাবে না সেজে আধুনিক, ঐতিহ্যবাহী, ক্ল্যাসিক্যাল-নানা ঢঙে সাজতে পছন্দ করেন অনেকে।
ষষ্টিতে সাজটা হালকা হয়ে দশমীতে রঙিন হয়ে ওঠে। পূজার ঐতিহ্যবাহী পোশাক সাদা জমিনে লাল পাড় শাড়ি, ধুতি, পাঞ্জাবির পাশাপাশি সালোয়ার-কামিজ, দেশি ঢঙে পাশ্চাত্য পোশাক, শার্টসহ সব ধরনের পোশাকই এখন দুর্গাপূজার উৎসবে প্রাধান্য পাচ্ছে। কয়েকদিনের এ উৎসবে এখন অনেকেই ভিন্ন ভিন্ন দিনের জন্য ভিন্ন ভিন্ন পোশাকও বেছে নিচ্ছেন। এক্ষেত্রে সপ্তমী, অষ্টমী, নবমীতে পরতে পারেন সালোয়ার-কামিজ, গাউন, লং স্কার্ট প্রভৃতি। ছেলেরা বেছে নিতে পারেন ক্যাজুয়াল শার্ট, টি-শার্ট কিংবা ফতুয়া। টেন্ডি পোশাকের সঙ্গে টাইমলেস পোশাকও এবার ফ্যাশনে ইন। টি-শার্টের ক্ষেত্রে এখন ট্রেন্ড ক্যাপশন লেখা ডিজাইন। কালো বা সাদা পোলো টি-শার্ট, এক রঙের ফর্মাল শার্ট, সাদা বা কালো এক রঙের টি-শার্ট এবার বেশ চলছে। দশমীর পোশাকে তুলে আনতে পারেন ঐতিহ্য। সে ক্ষেত্রে বেছে নিতে পারেন শাড়ি, ধুতি, পাঞ্জাবি প্রভৃতি। আর ছোটরা মানিয়ে যাবে বর্ণিল যে কোনো পোশাকেই।
শাড়িতে ফুটে ওঠে ঐতিহ্যের ছোঁয়া। ঐতিহ্যবাহী গরদের সাদা জমিনে লাল পাড়ের শাড়ির পাশাপাশি ভিন্নতা আনতে পূজার শাড়িতে এখন ডিজাইনাররা শরতের নীল, সবুজ, লাল, কমলাসহ বিভিন্ন রং ব্যবহার করছেন। পাঞ্জাবি ছাড়া পূজা যেন ভাবাই যায় না। প্রতিবারের মতো এবার পূজাতেও পাঞ্জাবির কাটছাঁট, ডিজাইন আর কলারে এসেছে পরিবর্তন। আবার অনেকেই এখন শাড়ি বা সালোয়ার-কামিজ না পরে পূজার দু-একদিন ফিউশন পোশাক পরেন।
কথা হয় ফ্যাশন ডিজাইনার ও বিশ্বরঙের কর্ণধার বিপ্লব সাহার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘করোনার কারণে খুব বেশি বড় পরিসরে পুজোৎসব পালন করা না হলেও বা পূজামণ্ডপে নিয়মনীতি মেনে চলতে হলেও সবাই নিজেদের মতো আনন্দ করবে। গরমের কারণে এবার পূজার পোশাকে কটনের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। প্রতিবারের মতো এবারও আমরা থিমভিত্তিক পোশাক তৈরি করেছি। পূজায় সবাই চায় দুই-এক সেট গর্জিয়াস পোশাক কিনতে, যেটা পূজার পরও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে পরা যায়। আবার পূজার রাতেও পরা যায়। সে হিসাবে গর্জিয়াস জমকালো পোশাকের ওপরও কিছুটা জোর দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন ব্রাইট রং ছাড়াও সাদা-নীল, হলুদ-সোনালি এরকম কম্বিনেশনের কিছু চমৎকার কালেকশনও রাখা হয়েছে।’
বিভিন্ন ফ্যাশন হাউজ নিয়ে এসেছে অসাধারণ সব কালেকশন। বিশ্ব রঙ, রঙ বাংলাদেশ, অঞ্জন’স, কে-ক্রাফট, আড়ং, লা রিভ, সাদাকালোসহ বিভিন্ন ফ্যাশন হাউজে রয়েছে পুজোর বৈচিত্র্যময় পোশাকের সমারোহ। এ ছাড়া বিভিন্ন শপিংমল, মার্কেট তো রয়েছেই।
অঞ্জন’স পূজা উৎসবকে বর্ণিল করে তুলতে বিভিন্ন ধরনের নকশা ও প্যাটার্নের জমকালো কাজের শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, পাঞ্জাবি, কুর্তা, টপস নিয়ে হাজির হয়েছে। আরামের কথা চিন্তা করে বেছে নেওয়া হয়েছে কটন, লিনেন কটন, সিল্ক, এন্ডি সিল্ক, এন্ডি কটনসহ নতুন ধরনের উইভিং ডিজাইনের কাপড়।
রঙ বাংলাদেশ প্রতিকূল এ সময়েও পূজার আনন্দ সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিতে তৈরি করেছে থিমভিত্তিক পূজার পোশাক। থিম হিসাবে বেছে নেওয়া হয়েছে মন্দির ও প্রতীক, দেবীর অলঙ্কার ও শতরঞ্জি। মূলত কটন, হাফসিল্ক, সেমি পিউর ও লিনেন কাপড়ে তৈরি হয়েছে অধিকাংশ পোশাক। পোশাকের নকশা ফুটিয়ে তুলতে রয়েছে নানারকম ভ্যালু অ্যাডেড মিডিয়ার ব্যবহার।
ফ্যাশন হাউজ লা রিভে রয়েছে বর্ণিল শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, টিউনিক, গাউন, টপস, পাঞ্জাবি, পোলো, শার্ট প্রভৃতি। সিল্ক, রেয়ন, সাটিন, লিনেন, শিফন, কটন ও ভয়েলের আরামদায়ক কাপড়ে ফ্লোরাল মোটিফ, মিরর ওয়ার্ক, অ্যাম্ব্রয়ডারি ও রুচিশীল সিলোটির নকশা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by The Daily Jugantor © 2023