সাইনোসাইটিসের সমস্যা ও মাথাব্যথা
মাথাব্যথা আমাদের জীবনের যেন নিত্যসঙ্গী। এ রোগের তিনশ’র বেশি কারণ থাকলেও সাধারণ কারণগুলোকে প্রধানত তিন শ্রেণিতে ভাগ করা হয়-
* মস্তিষ্কের স্নায়ু ও শিরা সংক্রান্ত (নিউরোভাসকুলার) মাথাব্যথা : এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি যেটা দেখা যায় তা হলো মাইগ্রেন এবং দুশ্চিন্তাজনিত মাথাব্যথা।
* চোখ সংক্রান্ত মাথাব্যথা।
* সাইনাসজনিত মাথাব্যথা।
উপসর্গ
মাথাব্যথা, মাথা ভার ভার লাগা ও মাথা বদ্ধভাব, নাক বন্ধ, নাক ভারী হয়ে থাকা, নাক দিয়ে অবিরাম বা ঘনঘন পানি পড়া, নাকে গন্ধ না পাওয়া, মাঝে মাঝে জ্বর ওঠা বা সব সময় হালকা-হালকা জ্বর ভাব থাকা, সব সময় শারীরিক দুর্বলতা, নাক ডাকা ও ঘুমের মধ্যে শ্বাসকষ্ট বা দম বন্ধ হয়ে আসা, স্নোরিং ও স্লিপ এপনিয়া সিনড্রোম-এগুলো সাধারণ উপসর্গগুলোর মধ্যে অন্যতম।
কারণ
ভাইরাসজনিত সংক্রমণই প্রধান কারণ। এ ছাড়া অ্যালার্জি এবং নাকের কাঠামোগত কারণে নাক বন্ধ হয়ে থাকা যেমন নাকের হাড় বাঁকা (ডিএনএস), নাকের পলিপ, নাকের টিউমার ইত্যাদি অন্যতম। অন্যান্য কারণগুলোর মধ্যে ক্রনিক ইনফেকশন যেমন-টিবি, সিফিলিস ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
সাধারণ প্রতিরোধ
* ধুলা, ধোঁয়া, ঠান্ডা থেকে দূরে থাকা যা ক্রনিক সাইনোসাইটিসের প্রাথমিক কারণ।
* বাড়িতে কার্পেট ব্যবহার না করা।
* ফোম দিয়ে তৈরি আসবাবপত্র ব্যবহার না করা।
* কুসুম গরম লবণ পানি দিয়ে দিনে কয়েকবার নাক পরিষ্কার করা (এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে এক চিমটি লবণ), অথবা গরম ভাপ নেওয়া।
* নাকের ভেতর কোনো কেমিক্যাল যেমন-বেনজিন, মেন্থলজাতীয় পদার্থ ব্যবহার না করা।
ই-এন-টি পরীক্ষা
নাক, কান এবং গলার পরীক্ষা করানো এ জন্য অত্যাবশ্যক।
ল্যাবরেটরি পরীক্ষা (ইনভেস্টিগেশন)
* সাইনাসের এক্স-রে : পাশ্চাত্যের দেশগুলোয় এ এক্স-রে আজকাল সাধারণত করা হয় না।
* সাইনাসের সিটিস্ক্যান : আধুনিক বিশ্বে ক্রনিক সাইনাস সমস্যায় অত্যাবশ্যকীয় পরীক্ষা।
* অন্যান্য ল্যাবরেটরি পরীক্ষা সাধারণ প্রয়োজন অনুযায়ী করা হয়ে থাকে।
চিকিৎসা
* টপিক্যাল নেসাল স্টেরয়েড-নাকের ঝিল্লির প্রদাহের স্থিতিশীলতার জন্য এটি অত্যাবশ্যক।
* নাকের ডিকনজেস্টেন্ট (নাকের সস্তা ড্রপ) খুব স্বল্প সময়ের জন্য ব্যবহার করা উচিত। দীর্ঘ সময় ব্যবহার করলে নাকের সমস্যার জটিলতা সৃষ্টি হয়। এ ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন।
* নাসারন্ধ্র পরিষ্কার খাবার ওষুধ সিউডোএপ্রিড্রিন দীর্ঘ সময় ব্যবহার করা যেতে পারে।
* নিদ্রাকারক নয় এমন এন্টিহিস্টামিন উপসর্গ নিরাময়ের জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
* এন্টিবায়োটিক-এরোবিক এবং এনেরোবিক উভয় ব্যাকটেরিয়ার ওপর কাজ করে। এমন এন্টিবায়োটিকের স্বল্পমেয়াদি কোর্স মাঝে মাঝে প্রয়োজন হতে পারে।
অন্যান্য চিকিৎসা পদ্ধতি শুধু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী মেনে চলা উচিত।
সার্জিক্যাল চিকিৎসা
ওষুধ দিয়ে সম্পূর্ণ নিরাময় না হলে অথবা আশানুরূপ নিরাময় না হলে কিংবা ঘনঘন ওষুধের প্রয়োজন হলে বা এ এলাকায় কাঠামোগত কোনো ত্রুটি থাকলে অপারেশনের প্রয়োজন হয়ে পড়ে।
লেখক : নাক কান ও গলা রোগ বিশেষজ্ঞ ও সার্জন, চিফ কনসালটেন্ট, ইমপালস হাসপাতাল, ঢাকা
সাইনোসাইটিসের সমস্যা ও মাথাব্যথা
ডা. জাহির আল-আমিন
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
মাথাব্যথা আমাদের জীবনের যেন নিত্যসঙ্গী। এ রোগের তিনশ’র বেশি কারণ থাকলেও সাধারণ কারণগুলোকে প্রধানত তিন শ্রেণিতে ভাগ করা হয়-
* মস্তিষ্কের স্নায়ু ও শিরা সংক্রান্ত (নিউরোভাসকুলার) মাথাব্যথা : এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি যেটা দেখা যায় তা হলো মাইগ্রেন এবং দুশ্চিন্তাজনিত মাথাব্যথা।
* চোখ সংক্রান্ত মাথাব্যথা।
* সাইনাসজনিত মাথাব্যথা।
উপসর্গ
মাথাব্যথা, মাথা ভার ভার লাগা ও মাথা বদ্ধভাব, নাক বন্ধ, নাক ভারী হয়ে থাকা, নাক দিয়ে অবিরাম বা ঘনঘন পানি পড়া, নাকে গন্ধ না পাওয়া, মাঝে মাঝে জ্বর ওঠা বা সব সময় হালকা-হালকা জ্বর ভাব থাকা, সব সময় শারীরিক দুর্বলতা, নাক ডাকা ও ঘুমের মধ্যে শ্বাসকষ্ট বা দম বন্ধ হয়ে আসা, স্নোরিং ও স্লিপ এপনিয়া সিনড্রোম-এগুলো সাধারণ উপসর্গগুলোর মধ্যে অন্যতম।
কারণ
ভাইরাসজনিত সংক্রমণই প্রধান কারণ। এ ছাড়া অ্যালার্জি এবং নাকের কাঠামোগত কারণে নাক বন্ধ হয়ে থাকা যেমন নাকের হাড় বাঁকা (ডিএনএস), নাকের পলিপ, নাকের টিউমার ইত্যাদি অন্যতম। অন্যান্য কারণগুলোর মধ্যে ক্রনিক ইনফেকশন যেমন-টিবি, সিফিলিস ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
সাধারণ প্রতিরোধ
* ধুলা, ধোঁয়া, ঠান্ডা থেকে দূরে থাকা যা ক্রনিক সাইনোসাইটিসের প্রাথমিক কারণ।
* বাড়িতে কার্পেট ব্যবহার না করা।
* ফোম দিয়ে তৈরি আসবাবপত্র ব্যবহার না করা।
* কুসুম গরম লবণ পানি দিয়ে দিনে কয়েকবার নাক পরিষ্কার করা (এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে এক চিমটি লবণ), অথবা গরম ভাপ নেওয়া।
* নাকের ভেতর কোনো কেমিক্যাল যেমন-বেনজিন, মেন্থলজাতীয় পদার্থ ব্যবহার না করা।
ই-এন-টি পরীক্ষা
নাক, কান এবং গলার পরীক্ষা করানো এ জন্য অত্যাবশ্যক।
ল্যাবরেটরি পরীক্ষা (ইনভেস্টিগেশন)
* সাইনাসের এক্স-রে : পাশ্চাত্যের দেশগুলোয় এ এক্স-রে আজকাল সাধারণত করা হয় না।
* সাইনাসের সিটিস্ক্যান : আধুনিক বিশ্বে ক্রনিক সাইনাস সমস্যায় অত্যাবশ্যকীয় পরীক্ষা।
* অন্যান্য ল্যাবরেটরি পরীক্ষা সাধারণ প্রয়োজন অনুযায়ী করা হয়ে থাকে।
চিকিৎসা
* টপিক্যাল নেসাল স্টেরয়েড-নাকের ঝিল্লির প্রদাহের স্থিতিশীলতার জন্য এটি অত্যাবশ্যক।
* নাকের ডিকনজেস্টেন্ট (নাকের সস্তা ড্রপ) খুব স্বল্প সময়ের জন্য ব্যবহার করা উচিত। দীর্ঘ সময় ব্যবহার করলে নাকের সমস্যার জটিলতা সৃষ্টি হয়। এ ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন।
* নাসারন্ধ্র পরিষ্কার খাবার ওষুধ সিউডোএপ্রিড্রিন দীর্ঘ সময় ব্যবহার করা যেতে পারে।
* নিদ্রাকারক নয় এমন এন্টিহিস্টামিন উপসর্গ নিরাময়ের জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
* এন্টিবায়োটিক-এরোবিক এবং এনেরোবিক উভয় ব্যাকটেরিয়ার ওপর কাজ করে। এমন এন্টিবায়োটিকের স্বল্পমেয়াদি কোর্স মাঝে মাঝে প্রয়োজন হতে পারে।
অন্যান্য চিকিৎসা পদ্ধতি শুধু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী মেনে চলা উচিত।
সার্জিক্যাল চিকিৎসা
ওষুধ দিয়ে সম্পূর্ণ নিরাময় না হলে অথবা আশানুরূপ নিরাময় না হলে কিংবা ঘনঘন ওষুধের প্রয়োজন হলে বা এ এলাকায় কাঠামোগত কোনো ত্রুটি থাকলে অপারেশনের প্রয়োজন হয়ে পড়ে।
লেখক : নাক কান ও গলা রোগ বিশেষজ্ঞ ও সার্জন, চিফ কনসালটেন্ট, ইমপালস হাসপাতাল, ঢাকা
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by The Daily Jugantor © 2023