জলবায়ু কর্মী গ্রেটা থুনবার্গের ক্ষোভ
সুইডিশ জলবায়ু কর্মী গ্রেটা থুনবার্গ। গ্লাসগোতে জাতিসংঘ আয়োজিত কপ-২৬ জলবায়ু সম্মেলনে বিশ্বনেতাদের উদ্দেশে এবারও তিনি পরিবেশ সুরক্ষায় সঠিক পদক্ষেপ না নেওয়ায় রাজপথে বিক্ষোভ, সমাবেশ করেছেন। লিখেছেন-
সুইডিশ জলবায়ু কর্মী গ্রেটা থুনবার্গ স্কটল্যান্ডের শহরের রাজপথে এক বিক্ষোভ সমাবেশে বলেছেন, গ্লাসগোতে জাতিসংঘ আয়োজিত কপ-২৬ জলবায়ু সম্মেলন ব্যর্থ। তা আর অজানা কিছু নয়। এটিকে এখন আর জলবায়ু সম্মেলন বলা যায় না; বরং এটি পরিবেশ রক্ষার নামে লোক দেখানো উৎসব ছাড়া কিছুই নয়। এটি সবুজ মুছে ফেলার উৎসব। এটি দুই সপ্তাহের একটি ব্যবসায়িক উদ্যাপন মাত্র। কারণ এ সম্মেলনে বিশ্বনেতারা যতটা না কার্বন নিঃসরণ কমানোর ব্যাপারে জোর দিয়েছেন, তার চেয়ে বেশি ব্যবসায়িক স্বার্থ রক্ষায় মনোযোগ দিয়েছেন। ব্যাংকগুলোর উচিত পরিবেশ বিধ্বংসী কাজে অর্থায়ন বন্ধ করা।
জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিশ্বনেতাদের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তাকে সমর্থন করে গ্লাসগোতে বিক্ষোভ করেছেন হাজারো মানুষ।
গ্রেটা থুনবার্গ। পুরো নাম গ্রেটা টিনটিন ইলেওনোরা এর্নম্যান থুনবার্গ। ১৯ বছর বয়সি গ্রেটা থুনবার্গ সারা বিশ্বের মানুষের কাছে জলবায়ু কর্মী হিসাবে একটি আশার আলো। গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিত কপ-২৬ জলবায়ু সম্মেলনে প্রায় ২০০ দেশের প্রতিনিধিদের উদ্দেশে গ্রেটা থুনবার্গ আক্ষেপ করে বলেছেন, বিশ্বনেতারা বৈজ্ঞানিক হিসাব-নিকাশ উপেক্ষা করতে পারবেন না। আমাদেরও এড়িয়ে যেতে পারবেন না। অথচ তারা এভাবেই নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন।
মাত্র আট বছর বয়সে গ্রেটা থুনবার্গ প্রথম জলবায়ু পরিবর্তনের কথা জানতে পারেন। কিন্তু বুঝতে পারেন না কেন এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। ২০১৮ সাল। এ বছরের মে মাসে গ্রেটা থুনবার্গ স্থানীয় এক পত্রিকায় জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক রচনা প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে পুরস্কার পান। আগস্টে গ্রেটা থুনবার্গ ব্যক্তিগতভাবে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় প্রথম প্রতিবাদ শুরু করেন। যা মিডিয়াতে প্রচুর সাড়া ফেলে। নভেম্বরে তিনি জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ‘স্কুল স্ট্রাইক ফর ক্লাইমেট’ শিরোনামে একটি ব্যানার হাতে পার্লামেন্টের সামনে দাঁড়িয়ে স্কুলগুলোতে অবরোধের ডাক দেন। ডিসেম্বরে জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলনের পর এই আন্দোলন আরও বেগবান হয়। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ট্রেনে ভ্রমণ করে তিনি বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নেন।
স্কুল পালানো শিক্ষার্থী গ্রেটা থুনবার্গ ১৫ বছর বয়সে জলবায়ু কর্মী হিসাবে পরিচিতি পান। তিনি কোনো রাখঢাক না রেখে সোজাসোজি কথা বলতে পছন্দ করেন। জনগণ, রাজনৈতিক নেতা এবং বিভিন্ন সমাবেশেও তিনি ভূমণ্ডলীয় উষ্ণতা বৃদ্ধি, তা নিরসনে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি তার বাবা-মাকেও পরিবেশবান্ধব যানবাহন ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করেন। ১১ বছর বয়সে পরিবেশ সুরক্ষার কথা ভাবতে গিয়ে তিনি হতাশায় ডুবে যান। কথা বলা, খাওয়া বন্ধ করে দেন। কিছুদিন চিকিৎসা পর ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমার মনে হচ্ছিল, আমি যদি এটা সম্পর্কে প্রতিবাদ না করি তাহলে ভেতরে ভেতরে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। বাবা আমার বিদ্যালয়ে না যাওয়াকে মেনে নিতে পারলেন না। কার্বনের প্রভাব কমাতে পরিবারের সব সদস্য আমার কথা ভেবে বিমানে ভ্রমণ বাদ দেন।
গ্রেটা থুনবার্গের জন্ম ২০০৩ সালের ৩ জানুয়ারি। তার বেড়ে ওঠা সুইডেনের স্টকহোমে। মা ম্যালেনা আর্নম্যান একজন অপেরা শিল্পী। বাবা সভান্তে থুনবার্গ একজন অভিনেতা।
২০১৯ সালের ১৫ মার্চ ১১২টি দেশের আনুমানিক ১.৪ মিলিয়ন শিক্ষার্থী তার ডাকে সাড়া দিয়ে জলবায়ু প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নেয়। গ্রেটা থুনবার্গ তার এ কার্যক্রমের জন্য অনেক পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন। ২০১৯ সালের মার্চে নরওয়ের তিন সংসদ সদস্য তাকে শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনীত করেন।
জলবায়ু কর্মী গ্রেটা থুনবার্গের ক্ষোভ
সুইডিশ জলবায়ু কর্মী গ্রেটা থুনবার্গ। গ্লাসগোতে জাতিসংঘ আয়োজিত কপ-২৬ জলবায়ু সম্মেলনে বিশ্বনেতাদের উদ্দেশে এবারও তিনি পরিবেশ সুরক্ষায় সঠিক পদক্ষেপ না নেওয়ায় রাজপথে বিক্ষোভ, সমাবেশ করেছেন। লিখেছেন-
আবুল বাশার ফিরোজ
১৫ নভেম্বর ২০২১, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
সুইডিশ জলবায়ু কর্মী গ্রেটা থুনবার্গ স্কটল্যান্ডের শহরের রাজপথে এক বিক্ষোভ সমাবেশে বলেছেন, গ্লাসগোতে জাতিসংঘ আয়োজিত কপ-২৬ জলবায়ু সম্মেলন ব্যর্থ। তা আর অজানা কিছু নয়। এটিকে এখন আর জলবায়ু সম্মেলন বলা যায় না; বরং এটি পরিবেশ রক্ষার নামে লোক দেখানো উৎসব ছাড়া কিছুই নয়। এটি সবুজ মুছে ফেলার উৎসব। এটি দুই সপ্তাহের একটি ব্যবসায়িক উদ্যাপন মাত্র। কারণ এ সম্মেলনে বিশ্বনেতারা যতটা না কার্বন নিঃসরণ কমানোর ব্যাপারে জোর দিয়েছেন, তার চেয়ে বেশি ব্যবসায়িক স্বার্থ রক্ষায় মনোযোগ দিয়েছেন। ব্যাংকগুলোর উচিত পরিবেশ বিধ্বংসী কাজে অর্থায়ন বন্ধ করা।
জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিশ্বনেতাদের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তাকে সমর্থন করে গ্লাসগোতে বিক্ষোভ করেছেন হাজারো মানুষ।
গ্রেটা থুনবার্গ। পুরো নাম গ্রেটা টিনটিন ইলেওনোরা এর্নম্যান থুনবার্গ। ১৯ বছর বয়সি গ্রেটা থুনবার্গ সারা বিশ্বের মানুষের কাছে জলবায়ু কর্মী হিসাবে একটি আশার আলো। গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিত কপ-২৬ জলবায়ু সম্মেলনে প্রায় ২০০ দেশের প্রতিনিধিদের উদ্দেশে গ্রেটা থুনবার্গ আক্ষেপ করে বলেছেন, বিশ্বনেতারা বৈজ্ঞানিক হিসাব-নিকাশ উপেক্ষা করতে পারবেন না। আমাদেরও এড়িয়ে যেতে পারবেন না। অথচ তারা এভাবেই নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন।
মাত্র আট বছর বয়সে গ্রেটা থুনবার্গ প্রথম জলবায়ু পরিবর্তনের কথা জানতে পারেন। কিন্তু বুঝতে পারেন না কেন এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। ২০১৮ সাল। এ বছরের মে মাসে গ্রেটা থুনবার্গ স্থানীয় এক পত্রিকায় জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক রচনা প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে পুরস্কার পান। আগস্টে গ্রেটা থুনবার্গ ব্যক্তিগতভাবে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় প্রথম প্রতিবাদ শুরু করেন। যা মিডিয়াতে প্রচুর সাড়া ফেলে। নভেম্বরে তিনি জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ‘স্কুল স্ট্রাইক ফর ক্লাইমেট’ শিরোনামে একটি ব্যানার হাতে পার্লামেন্টের সামনে দাঁড়িয়ে স্কুলগুলোতে অবরোধের ডাক দেন। ডিসেম্বরে জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলনের পর এই আন্দোলন আরও বেগবান হয়। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ট্রেনে ভ্রমণ করে তিনি বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নেন।
স্কুল পালানো শিক্ষার্থী গ্রেটা থুনবার্গ ১৫ বছর বয়সে জলবায়ু কর্মী হিসাবে পরিচিতি পান। তিনি কোনো রাখঢাক না রেখে সোজাসোজি কথা বলতে পছন্দ করেন। জনগণ, রাজনৈতিক নেতা এবং বিভিন্ন সমাবেশেও তিনি ভূমণ্ডলীয় উষ্ণতা বৃদ্ধি, তা নিরসনে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি তার বাবা-মাকেও পরিবেশবান্ধব যানবাহন ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করেন। ১১ বছর বয়সে পরিবেশ সুরক্ষার কথা ভাবতে গিয়ে তিনি হতাশায় ডুবে যান। কথা বলা, খাওয়া বন্ধ করে দেন। কিছুদিন চিকিৎসা পর ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমার মনে হচ্ছিল, আমি যদি এটা সম্পর্কে প্রতিবাদ না করি তাহলে ভেতরে ভেতরে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। বাবা আমার বিদ্যালয়ে না যাওয়াকে মেনে নিতে পারলেন না। কার্বনের প্রভাব কমাতে পরিবারের সব সদস্য আমার কথা ভেবে বিমানে ভ্রমণ বাদ দেন।
গ্রেটা থুনবার্গের জন্ম ২০০৩ সালের ৩ জানুয়ারি। তার বেড়ে ওঠা সুইডেনের স্টকহোমে। মা ম্যালেনা আর্নম্যান একজন অপেরা শিল্পী। বাবা সভান্তে থুনবার্গ একজন অভিনেতা।
২০১৯ সালের ১৫ মার্চ ১১২টি দেশের আনুমানিক ১.৪ মিলিয়ন শিক্ষার্থী তার ডাকে সাড়া দিয়ে জলবায়ু প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নেয়। গ্রেটা থুনবার্গ তার এ কার্যক্রমের জন্য অনেক পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন। ২০১৯ সালের মার্চে নরওয়ের তিন সংসদ সদস্য তাকে শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনীত করেন।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by The Daily Jugantor © 2023