অনন্য উদ্যোক্তা শাহেলীর আহরণ
চট্টগ্রামের মেয়ে শাহেলী। পুরো নাম মেহেরুন নেছা শাহেলী। সাহস করে নেমেছেন মাঠে। খাবারে কীভাবে ভেজাল মেশানো হয় তা সামাজিক মাধ্যমে তুলে ধরছেন। বিশেষ করে দেশের ফলমূলে কীভাবে ক্ষতিকর রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়, সে বিষয়ে মানুষকে সচেতন করছেন। আর এই প্রচার কাজটি করছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেই।
আমের সিজনে কেমিক্যালমিশ্রিত আম নিয়ে সচেতন করেন। আম পরিপক্ব হওয়ার আগে কেউ যাতে আম না কেনেন সেটা মনে করিয়ে দেন ক্রেতাকে।
নির্ভেজাল খাবার সংগ্রহ করে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করে যাচ্ছেন। হয়েছেন উদ্যোক্তা। এখন সফলতার দ্বারপ্রান্তে অবস্থান করছেন। বাংলার খাঁটি পণ্য মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার প্রত্যয় নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন শাহেলী। চাক থেকে নিজে সরাসরি মধু সংগ্রহ করে তা গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন। কেউ চাইলে চাকসহ কিনে নিতে পারেন। ফেসবুকে তার ‘আহরণ’ পেজ এবং নিজের ফেসবুক আইডি থেকে এসব কার্যক্রম চালাচ্ছেন তিনি। মধুর পাশাপাশি দেশের নানা ফলও অর্ডার করা যায়। আর এসব ফল শাহেলী নিজ দায়িত্বে তত্ত্বাবধান করে থাকেন। দেশের প্রান্তিক শ্রমিকদের সাহায্যে সব পণ্য সরাসরি নিজে উপস্থিত থেকে সংগ্রহ করে সরাবরাহ করেন। সারা দেশে কুরিয়ারের মাধ্যমে পণ্য সরবরাহ করে মোবাইলের মাধ্যমে পেমেন্ট নিয়ে থাকেন।
শাহেলী নিজের উপস্থিতি ছাড়া কোনো পণ্যের প্রতি বিশ্বাস রাখতে পারেন না। তিনি বলেন, ‘আমের সিজনে রাজশাহীর এক আমের বাগানে দেখেছি, গাছ থেকে আম পেড়ে গাছের নিচেই কেমিক্যাল মেশানো স্প্রে ছিটিয়ে দিল! বাংলাদেশে বোধহয় সবচেয়ে বেশি ভেজাল হয় মধুতে। কিছু মৌয়াল শ্রেণি হাঁড়িতে আগে থেকে কেমিক্যাল আর চিনির সিরা মিশিয়ে তার ওপর সুন্দর করে মধুর চাক বসিয়ে রাখে। ‘আহরণ’ কাজ করছে বাংলার প্রকৃতি নিয়ে। আমাদের উদ্যোগ পুনরুদ্ধারের উদ্যোগ।
শাহেলীর সঙ্গে কথা বলে আরও জানতে পারি, শত ভাগ প্রাকৃতিক মধু কোনো নির্দিষ্ট মেয়াদে নষ্ট হয় না বরং মধুর যত বয়স বাড়বে তত গুণাগুণ বৃদ্ধি পায়। আর প্রোসেসিং করা মধু নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষে নষ্ট হয়। এজন্য বড় বড় কোম্পানির মধুতে মেয়াদ দেওয়া থাকে।
অনেক অঞ্চলের খেজুরের রস ঘোলা নিম্ন মানের হয়, আবার আবহাওয়ার জন্যও ঘোলা হয়, তখন ফিটকিরি মেশানো হয় রস পরিষ্কারের জন্য! কিন্তু যশোরের খেজুরের রস প্রকৃতিগত কারণেই স্বচ্ছ আর পরিষ্কার হয়ে থাকে। যদি তা প্রথম বা দ্বিতীয় কাটের রস হয়ে থাকে। আবার রসের স্বচ্ছতা অনেক সময় রসের ভাড়ের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং রস কাটার সময়ের ওপরও নির্ভর করে। আর দোকাট তেকাট রস তো আছেই! তাছাড়া দেখা গেল ১০ জন গাছি গাছ কাটল তার মধ্যে ৫ জনের কাটা গাছের রস অস্বচ্ছ হতে পারে। সঠিক সুন্দর কালার আনতে দরকার দক্ষ হাত। দক্ষ গাছিরা বিশেষ পদ্ধতিতে গুড় বীজ বানান। এ বীজের জন্য গুড় জমাটবাঁধে এবং রং সুন্দর হয়!
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
অনন্য উদ্যোক্তা শাহেলীর আহরণ
চট্টগ্রামের মেয়ে শাহেলী। পুরো নাম মেহেরুন নেছা শাহেলী। সাহস করে নেমেছেন মাঠে। খাবারে কীভাবে ভেজাল মেশানো হয় তা সামাজিক মাধ্যমে তুলে ধরছেন। বিশেষ করে দেশের ফলমূলে কীভাবে ক্ষতিকর রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়, সে বিষয়ে মানুষকে সচেতন করছেন। আর এই প্রচার কাজটি করছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেই।
আমের সিজনে কেমিক্যালমিশ্রিত আম নিয়ে সচেতন করেন। আম পরিপক্ব হওয়ার আগে কেউ যাতে আম না কেনেন সেটা মনে করিয়ে দেন ক্রেতাকে।
নির্ভেজাল খাবার সংগ্রহ করে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করে যাচ্ছেন। হয়েছেন উদ্যোক্তা। এখন সফলতার দ্বারপ্রান্তে অবস্থান করছেন। বাংলার খাঁটি পণ্য মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার প্রত্যয় নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন শাহেলী। চাক থেকে নিজে সরাসরি মধু সংগ্রহ করে তা গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন। কেউ চাইলে চাকসহ কিনে নিতে পারেন। ফেসবুকে তার ‘আহরণ’ পেজ এবং নিজের ফেসবুক আইডি থেকে এসব কার্যক্রম চালাচ্ছেন তিনি। মধুর পাশাপাশি দেশের নানা ফলও অর্ডার করা যায়। আর এসব ফল শাহেলী নিজ দায়িত্বে তত্ত্বাবধান করে থাকেন। দেশের প্রান্তিক শ্রমিকদের সাহায্যে সব পণ্য সরাসরি নিজে উপস্থিত থেকে সংগ্রহ করে সরাবরাহ করেন। সারা দেশে কুরিয়ারের মাধ্যমে পণ্য সরবরাহ করে মোবাইলের মাধ্যমে পেমেন্ট নিয়ে থাকেন।
শাহেলী নিজের উপস্থিতি ছাড়া কোনো পণ্যের প্রতি বিশ্বাস রাখতে পারেন না। তিনি বলেন, ‘আমের সিজনে রাজশাহীর এক আমের বাগানে দেখেছি, গাছ থেকে আম পেড়ে গাছের নিচেই কেমিক্যাল মেশানো স্প্রে ছিটিয়ে দিল! বাংলাদেশে বোধহয় সবচেয়ে বেশি ভেজাল হয় মধুতে। কিছু মৌয়াল শ্রেণি হাঁড়িতে আগে থেকে কেমিক্যাল আর চিনির সিরা মিশিয়ে তার ওপর সুন্দর করে মধুর চাক বসিয়ে রাখে। ‘আহরণ’ কাজ করছে বাংলার প্রকৃতি নিয়ে। আমাদের উদ্যোগ পুনরুদ্ধারের উদ্যোগ।
শাহেলীর সঙ্গে কথা বলে আরও জানতে পারি, শত ভাগ প্রাকৃতিক মধু কোনো নির্দিষ্ট মেয়াদে নষ্ট হয় না বরং মধুর যত বয়স বাড়বে তত গুণাগুণ বৃদ্ধি পায়। আর প্রোসেসিং করা মধু নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষে নষ্ট হয়। এজন্য বড় বড় কোম্পানির মধুতে মেয়াদ দেওয়া থাকে।
অনেক অঞ্চলের খেজুরের রস ঘোলা নিম্ন মানের হয়, আবার আবহাওয়ার জন্যও ঘোলা হয়, তখন ফিটকিরি মেশানো হয় রস পরিষ্কারের জন্য! কিন্তু যশোরের খেজুরের রস প্রকৃতিগত কারণেই স্বচ্ছ আর পরিষ্কার হয়ে থাকে। যদি তা প্রথম বা দ্বিতীয় কাটের রস হয়ে থাকে। আবার রসের স্বচ্ছতা অনেক সময় রসের ভাড়ের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং রস কাটার সময়ের ওপরও নির্ভর করে। আর দোকাট তেকাট রস তো আছেই! তাছাড়া দেখা গেল ১০ জন গাছি গাছ কাটল তার মধ্যে ৫ জনের কাটা গাছের রস অস্বচ্ছ হতে পারে। সঠিক সুন্দর কালার আনতে দরকার দক্ষ হাত। দক্ষ গাছিরা বিশেষ পদ্ধতিতে গুড় বীজ বানান। এ বীজের জন্য গুড় জমাটবাঁধে এবং রং সুন্দর হয়!