টার্মিনেটরের জন্য প্রথম পছন্দ ছিলেন না শোয়ার্জনেগার
সাফল্যের গল্প
সেলিম কামাল
১৯ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
পেশি দর্শনেই বোঝা যায় অ্যাথলেটিকের অলিগলি মাড়িয়েছেন। তিনি হলিউডের কিংবদন্তি অভিনেতা আর্নল্ড শোয়ার্জনেগারের কথা। মাত্র ১৫ বছর বয়স থেকেই শুরু করেছিলেন ভারোত্তলন। আর ২০ বছর বয়সে নির্বাচিত হয়েছিলেন মিস্টার ইউনিভার্স (সবচেয়ে কম বয়সে)। মিস্টার অলিম্পিয়া প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন সাতবার। হলিউড চলচ্চিত্রের অলিগলি মাড়ানো শেষ করলেও এখনো বডিবিল্ডিং জগতে এক অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে আছেন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের ৩৮তম সাবেক গভর্নর শোয়ার্জনেগার। শরীর গঠন কৌশল নিয়ে তিনি লিখেছেন একাধিক বই ও প্রবন্ধ।
একাধারে বডিবিল্ডার, অভিনেতা, মডেল, ব্যবসায়ী এবং রাজনীতিবিদ পরিচয়ে সমৃদ্ধ এ অস্ট্রিয়ান-আমেরিকান। ১৯৪৭ সালের ১৩ জুলাই তার জন্ম হয়েছিল অস্ট্রিয়ার থাল নামের ছোট একটি গ্রামে। তার বাবা ওস্তাভ শোয়ার্জনেগার ছিলেন স্থানীয় পুলিশের প্রধান। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মান সেনাবাহিনীর হয়ে যুদ্ধ করা ওস্তাভ ছিলেন প্রচণ্ড বদমেজাজি। পারিবারিক সূত্রে রোমান ক্যাথলিক ধর্মের অনুসারী আর্নল্ডের সঙ্গে এ কারণেই বনিবনা ছিল না তার বাবার। ছোটবেলা থেকেই বাবাকে এড়িয়ে দারিদ্র্যের মধ্যে মায়ের সঙ্গে থেকে বড় হয়েছেন আর্নল্ড শোয়ার্জনেগার। তাদের অবস্থা এতই খারাপ ছিল যে, আর্নল্ডের যুবক বয়সে একটি রেফ্রিজারেটর কেনার সৌভাগ্য হয়েছিল তাদের। কিন্তু তখন থেকেই স্বপ্ন দেখতেন, অভিনেতা হয়ে একদিন আমেরিকায় যাবেন।
ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় ১৯৬৫ সালে আর্নল্ড যোগ দেন অস্ট্রীয় সেনাবাহিনীতে। এ চাকরিতে থাকা অবস্থায়ই তিনি যাবতীয় প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন। এ সময়ই তিনি বডিবিল্ডিংয়ে জনপ্রিয় হতে শুরু করেন। ১৯৬৯ সালে মিস্টার ইউনিভার্স প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সুবাদে আমেরিকায় যাওয়ার সুযোগ পান। পরের ইতিহাস আরও চমকপ্রদ। আর্নল্ড শোয়ার্জনেগার হয়ে ওঠেন বিশ্বের বিখ্যাত অভিনেতাদের একজন। ৮০-৯০ দশকে হলিউড বক্স-অফিসের পাওয়ার হাউস ছিলেন তিনি। একের পর এক অ্যাকশন-হিট উপহার দিতে থাকেন তিনি। জীবনের প্রথম অভিনীত চরিত্রের জন্যই তিনি জিতেছিলেন গোল্ডেন গ্লোব অ্যাওয়ার্ড।
১৯৭০ সালে হারিকিউলিস ইন নিউইয়র্ক ছবির মাধ্যমে যখন অভিষিক্ত হন, তখন তার নাম রাখা হয়েছিল আর্নল্ড স্ট্রং। কারণ, পরিচালক আর্থার অ্যালানের ধারণা ছিল-শোয়ার্জনেগার নামটি মনে রাখা ও উচ্চারণ করা দর্শকের জন্য কঠিন হবে। কিন্তু পরে, স্ট্রং বাদ দিয়ে শোয়ার্জনেগারই ব্যবহার করেন এ অভিনেতা। টারজান চরিত্রের মাধ্যমে জনপ্রিয়তা পাওয়া অভিনেতা জনি ওয়েইসমুলারকে অনুসরণ করেন শোয়ার্জনেগার। তা সত্ত্বেও নিজস্ব স্টাইলে জনপ্রিয় করে তুলেছেন হারকিউলিস কিংবা টার্মিনেটরের মতো মারদাঙ্গা চরিত্রগুলোকে। মজার ব্যাপার হচ্ছে, টার্মিনেটরে অভিনয়ের জন্য তিনি জেমস ক্যামেরনের প্রথম পছন্দ ছিলেন না। তিনি চেয়েছিলেন এলিয়েনখ্যাত ল্যান্স হেনরিকসনকে। কিন্তু শোয়ার্জনেগারকে সামনাসামনি দেখার পর ধারণাই পাল্টে গিয়েছিল ক্যামেরনের। বুঝতে পেরেছিলেন, একটি দুর্দান্ত অপ্রতিরোধ্য ঘাতক রোবট চরিত্রের জন্য শোয়ার্জনেগারের বিকল্প নেই।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাফল্যের গল্প
টার্মিনেটরের জন্য প্রথম পছন্দ ছিলেন না শোয়ার্জনেগার
পেশি দর্শনেই বোঝা যায় অ্যাথলেটিকের অলিগলি মাড়িয়েছেন। তিনি হলিউডের কিংবদন্তি অভিনেতা আর্নল্ড শোয়ার্জনেগারের কথা। মাত্র ১৫ বছর বয়স থেকেই শুরু করেছিলেন ভারোত্তলন। আর ২০ বছর বয়সে নির্বাচিত হয়েছিলেন মিস্টার ইউনিভার্স (সবচেয়ে কম বয়সে)। মিস্টার অলিম্পিয়া প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন সাতবার। হলিউড চলচ্চিত্রের অলিগলি মাড়ানো শেষ করলেও এখনো বডিবিল্ডিং জগতে এক অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে আছেন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের ৩৮তম সাবেক গভর্নর শোয়ার্জনেগার। শরীর গঠন কৌশল নিয়ে তিনি লিখেছেন একাধিক বই ও প্রবন্ধ।
একাধারে বডিবিল্ডার, অভিনেতা, মডেল, ব্যবসায়ী এবং রাজনীতিবিদ পরিচয়ে সমৃদ্ধ এ অস্ট্রিয়ান-আমেরিকান। ১৯৪৭ সালের ১৩ জুলাই তার জন্ম হয়েছিল অস্ট্রিয়ার থাল নামের ছোট একটি গ্রামে। তার বাবা ওস্তাভ শোয়ার্জনেগার ছিলেন স্থানীয় পুলিশের প্রধান। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মান সেনাবাহিনীর হয়ে যুদ্ধ করা ওস্তাভ ছিলেন প্রচণ্ড বদমেজাজি। পারিবারিক সূত্রে রোমান ক্যাথলিক ধর্মের অনুসারী আর্নল্ডের সঙ্গে এ কারণেই বনিবনা ছিল না তার বাবার। ছোটবেলা থেকেই বাবাকে এড়িয়ে দারিদ্র্যের মধ্যে মায়ের সঙ্গে থেকে বড় হয়েছেন আর্নল্ড শোয়ার্জনেগার। তাদের অবস্থা এতই খারাপ ছিল যে, আর্নল্ডের যুবক বয়সে একটি রেফ্রিজারেটর কেনার সৌভাগ্য হয়েছিল তাদের। কিন্তু তখন থেকেই স্বপ্ন দেখতেন, অভিনেতা হয়ে একদিন আমেরিকায় যাবেন।
ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় ১৯৬৫ সালে আর্নল্ড যোগ দেন অস্ট্রীয় সেনাবাহিনীতে। এ চাকরিতে থাকা অবস্থায়ই তিনি যাবতীয় প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন। এ সময়ই তিনি বডিবিল্ডিংয়ে জনপ্রিয় হতে শুরু করেন। ১৯৬৯ সালে মিস্টার ইউনিভার্স প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সুবাদে আমেরিকায় যাওয়ার সুযোগ পান। পরের ইতিহাস আরও চমকপ্রদ। আর্নল্ড শোয়ার্জনেগার হয়ে ওঠেন বিশ্বের বিখ্যাত অভিনেতাদের একজন। ৮০-৯০ দশকে হলিউড বক্স-অফিসের পাওয়ার হাউস ছিলেন তিনি। একের পর এক অ্যাকশন-হিট উপহার দিতে থাকেন তিনি। জীবনের প্রথম অভিনীত চরিত্রের জন্যই তিনি জিতেছিলেন গোল্ডেন গ্লোব অ্যাওয়ার্ড।
১৯৭০ সালে হারিকিউলিস ইন নিউইয়র্ক ছবির মাধ্যমে যখন অভিষিক্ত হন, তখন তার নাম রাখা হয়েছিল আর্নল্ড স্ট্রং। কারণ, পরিচালক আর্থার অ্যালানের ধারণা ছিল-শোয়ার্জনেগার নামটি মনে রাখা ও উচ্চারণ করা দর্শকের জন্য কঠিন হবে। কিন্তু পরে, স্ট্রং বাদ দিয়ে শোয়ার্জনেগারই ব্যবহার করেন এ অভিনেতা। টারজান চরিত্রের মাধ্যমে জনপ্রিয়তা পাওয়া অভিনেতা জনি ওয়েইসমুলারকে অনুসরণ করেন শোয়ার্জনেগার। তা সত্ত্বেও নিজস্ব স্টাইলে জনপ্রিয় করে তুলেছেন হারকিউলিস কিংবা টার্মিনেটরের মতো মারদাঙ্গা চরিত্রগুলোকে। মজার ব্যাপার হচ্ছে, টার্মিনেটরে অভিনয়ের জন্য তিনি জেমস ক্যামেরনের প্রথম পছন্দ ছিলেন না। তিনি চেয়েছিলেন এলিয়েনখ্যাত ল্যান্স হেনরিকসনকে। কিন্তু শোয়ার্জনেগারকে সামনাসামনি দেখার পর ধারণাই পাল্টে গিয়েছিল ক্যামেরনের। বুঝতে পেরেছিলেন, একটি দুর্দান্ত অপ্রতিরোধ্য ঘাতক রোবট চরিত্রের জন্য শোয়ার্জনেগারের বিকল্প নেই।