ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে উদ্বেগ কূটনীতিকদের
চারটি ধারা সংশোধনে দৃষ্টি আকর্ষণ
যুগান্তর রিপোর্ট
২৬ মার্চ ২০১৮, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের চারটি ধারা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত কূটনীতিকরা। রোববার সচিবালয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে বৈঠককালে তারা ধারাগুলো সংশোধনের বিষয়ে তার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। ঢাকায় নিযুক্ত ১০টি দেশের রাষ্ট্রদূত ও তাদের প্রতিনিধিরা তাকে এ উদ্বেগের কথা জানান।
বৈঠকে জার্মান রাষ্ট্রদূত ড. থমাস প্রিন্স ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত রেন্সজে টিরিংক ছাড়াও যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, কানাডা, সুইডেন, ডেনমার্ক, স্পেন, নরওয়ে ও সুইজারল্যান্ডের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন জার্মান রাষ্ট্রদূত ড. থমাস প্রিন্স।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ড. থমাস প্রিন্স বলেন, আইনমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে তারা ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের ২১, ২৫, ২৮ ও ৩২ ধারা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, এই ধারাগুলো জনগণের মুক্ত বাকস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করবে। এই আইনে শাস্তি, জামিন অযোগ্য ধারা এবং এই আইনের অপব্যবহার নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। তাই আমাদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছি।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২১, ২৫, ২৮ ও ৩২ ধারা নিয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তাদের বক্তব্য শুনেছি। আমাদের পক্ষ থেকেও বক্তব্য দেয়া হয়েছে। এগুলো তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। তিনি আরও বলেন, আলোচনার পর যদি আইনের পরিবর্তন কিংবা কোনো বিষয় আরও পরিষ্কার করার প্রয়োজন হয় আমরা তা করব। তবে যুক্তিযুক্ত সময়ের মধ্যে আমরা আবারও আলোচনায় বসব।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিদেশি আইনজীবী নিয়োগ নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, তিনি (খালেদা জিয়া) তো আইনজীবী নিয়োগ করতেই পারেন। এ ক্ষেত্রে তো সরকারের কিছু করার নেই। তবে যে আইনজীবীকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে, সেই লর্ড কারলাইল যুদ্ধাপরাধীদের মামলায় পক্ষ নিয়েছিলেন। যে দল যুদ্ধাপরাধীদের জন্য দোয়া করতে পারে সেই দল কারলাইলের মতো আইনজীবী নিয়োগ দেবে এটাই তো স্বাভাবিক। এতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। তবে বিষয়টি দুঃখজনক। বিএনপি বাংলাদেশকে বিশ্বাস করে না- এটাই তার প্রমাণ। ২৯ জানুয়ারি মন্ত্রিসভা ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮’ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়। এ আইন মতপ্রকাশের ক্ষেত্রে ‘স্বাধীনতা হরণ’ করবে বলে ইতিমধ্যে দেশে এর সমালোচনা উঠেছে।
খসড়া আইনের ২১ ধারা অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি ইলেকট্রনিক মাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বা জাতির পিতার বিরুদ্ধে প্রচার-প্রপাগান্ডা বা তাতে মদদ দিলে সর্বোচ্চ ১৪ বছরের কারাদণ্ড বা এক কোটি টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
২৮ ধারায় বলা হয়েছে- কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী ইচ্ছাকৃতভাবে ওয়েবসাইট বা ইলেকট্রনিক মাধ্যমে এমন কিছু প্রকাশ বা প্রচার করলে সেটা যদি ধর্মীয় মূল্যবাধে বা অনুভূতিকে আঘাত করে তাহলে ১০ বছরের জেল বা ২০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড পেতে হবে।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে উদ্বেগ কূটনীতিকদের
চারটি ধারা সংশোধনে দৃষ্টি আকর্ষণ
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের চারটি ধারা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত কূটনীতিকরা। রোববার সচিবালয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে বৈঠককালে তারা ধারাগুলো সংশোধনের বিষয়ে তার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। ঢাকায় নিযুক্ত ১০টি দেশের রাষ্ট্রদূত ও তাদের প্রতিনিধিরা তাকে এ উদ্বেগের কথা জানান।
বৈঠকে জার্মান রাষ্ট্রদূত ড. থমাস প্রিন্স ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত রেন্সজে টিরিংক ছাড়াও যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, কানাডা, সুইডেন, ডেনমার্ক, স্পেন, নরওয়ে ও সুইজারল্যান্ডের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন জার্মান রাষ্ট্রদূত ড. থমাস প্রিন্স।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ড. থমাস প্রিন্স বলেন, আইনমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে তারা ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের ২১, ২৫, ২৮ ও ৩২ ধারা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, এই ধারাগুলো জনগণের মুক্ত বাকস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করবে। এই আইনে শাস্তি, জামিন অযোগ্য ধারা এবং এই আইনের অপব্যবহার নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। তাই আমাদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছি।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২১, ২৫, ২৮ ও ৩২ ধারা নিয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তাদের বক্তব্য শুনেছি। আমাদের পক্ষ থেকেও বক্তব্য দেয়া হয়েছে। এগুলো তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। তিনি আরও বলেন, আলোচনার পর যদি আইনের পরিবর্তন কিংবা কোনো বিষয় আরও পরিষ্কার করার প্রয়োজন হয় আমরা তা করব। তবে যুক্তিযুক্ত সময়ের মধ্যে আমরা আবারও আলোচনায় বসব।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিদেশি আইনজীবী নিয়োগ নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, তিনি (খালেদা জিয়া) তো আইনজীবী নিয়োগ করতেই পারেন। এ ক্ষেত্রে তো সরকারের কিছু করার নেই। তবে যে আইনজীবীকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে, সেই লর্ড কারলাইল যুদ্ধাপরাধীদের মামলায় পক্ষ নিয়েছিলেন। যে দল যুদ্ধাপরাধীদের জন্য দোয়া করতে পারে সেই দল কারলাইলের মতো আইনজীবী নিয়োগ দেবে এটাই তো স্বাভাবিক। এতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। তবে বিষয়টি দুঃখজনক। বিএনপি বাংলাদেশকে বিশ্বাস করে না- এটাই তার প্রমাণ। ২৯ জানুয়ারি মন্ত্রিসভা ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮’ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়। এ আইন মতপ্রকাশের ক্ষেত্রে ‘স্বাধীনতা হরণ’ করবে বলে ইতিমধ্যে দেশে এর সমালোচনা উঠেছে।
খসড়া আইনের ২১ ধারা অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি ইলেকট্রনিক মাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বা জাতির পিতার বিরুদ্ধে প্রচার-প্রপাগান্ডা বা তাতে মদদ দিলে সর্বোচ্চ ১৪ বছরের কারাদণ্ড বা এক কোটি টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
২৮ ধারায় বলা হয়েছে- কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী ইচ্ছাকৃতভাবে ওয়েবসাইট বা ইলেকট্রনিক মাধ্যমে এমন কিছু প্রকাশ বা প্রচার করলে সেটা যদি ধর্মীয় মূল্যবাধে বা অনুভূতিকে আঘাত করে তাহলে ১০ বছরের জেল বা ২০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড পেতে হবে।