অর্ধশতাধিক সন্ত্রাসীর খোঁজে পুলিশ-র্যাব
সন্ত্রাসের জনপদ বেগমগঞ্জের ৮ ইউনিয়ন
শুরু হচ্ছে র্যাবের সাঁড়াশি ও লক্ষ্মীপুর সীমান্তে যৌথ অভিযান
মাহমুদুল হাসান নয়ন, নোয়াখালী থেকে
১৯ অক্টোবর ২০২০, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে ‘সন্ত্রাসী বাহিনী’র অর্ধশতাধিক সদস্যের ওপর বিশেষ নজরদারি শুরু করেছে পুলিশ ও র্যাব। উপজেলার ৮ ইউনিয়নের ১৯টি বাহিনীর প্রধানসহ মোস্ট ডেঞ্জারাস (অতি ভয়ংকর) সন্ত্রাসীদের নামের তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে।
সেখানে খুন, ধর্ষণ, অস্ত্র, মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধের একাধিক মামলার আসামি আছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এমন তৎপরতা আঁচ করতে পেরে সন্ত্রাসীদের অনেকেই গা ঢাকা দিয়েছে।
তবে যেখানেই পালিয়ে যাক সন্ত্রাসীদের খুঁজে বের করা হবে- এমন হুশিয়ারি পুলিশের। আর র্যাব প্রস্তুতি নিচ্ছে সাঁড়াশি অভিযানের।
সম্প্রতি বেগমগঞ্জের সন্ত্রাসী বাহিনী ও এদের প্রশ্রয়দাতাদের ওপর যুগান্তরে দুটি আলাদা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এ প্রতিবেদন প্রকাশের পর বেগমগঞ্জ ও আশপাশের এলাকাজুড়ে সাঁড়াশি অভিযানের জন্য তারা ‘গ্রাউন্ড ওয়ার্ক’ শুরু করেছে।
উপজেলার সবচেয়ে বেশি সন্ত্রাসপ্রবণ অঞ্চলগুলোকে আলাদাভাবে চিহ্নিত করা হচ্ছে। বাহিনীগুলোর সার্বিক কার্যক্রম ও অস্ত্রের জোগানদাতাদের বিষয়েও নেয়া হচ্ছে যাবতীয় তথ্য-উপাত্ত।
মাদক সেবনকারীদের মাধ্যমে মাদক সরবরাহের রুট এবং এর সঙ্গে জড়িতদের খোঁজা হচ্ছে। কারণ অধিকাংশ বাহিনীর অর্থের বড় জোগান আসে এ মাদক থেকে।
উপজেলার পশ্চিমাঞ্চলের দুর্গম এলাকাগুলোতে তাদের ত্রাসের রাজত্ব ভেঙে দিতেও গ্রহণ করা হচ্ছে পরিকল্পনা।
বেগমগঞ্জের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঢেলে সাজাতে পশ্চিমাঞ্চলের ছয় ইউনিয়ন নিয়ে বাংলাবাজার নামে আরেকটি পৃথক থানা ও উপজেলায় র্যাবের ক্যাম্প করারও প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, বেগমগঞ্জ উপজেলার বড় একটি অংশ রয়েছে লক্ষীপুর জেলা সীমান্তর সঙ্গে। অপরাধীদের অনেকেই বিভিন্ন অপকর্ম করে পার্শ্ববর্তী অঞ্চলগুলোতে আশ্রয় নেয়।
সেখান থেকেই বাহিনীর সদস্যদের বিভিন্ন নির্দেশনা দেন তারা। এর ফলে জেলা ও থানা পুলিশকে অভিযান পরিচালনায় অনেক সময় বেগ পেতে হয়। দুর্গম এলাকা হওয়াতে এসব এলাকায় অভিযান পরিচালনাও কঠিন হয়ে পড়ে।
আবার থানার এক শ্রেণির অসাধু পুলিশ সদস্যের সঙ্গে সন্ত্রাসী বাহিনীর যোগাযোগ রক্ষা করে চলার অভিযোগও রয়েছে। যদিও এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ।
তবে এখলাসপুরে নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনার পর থানার তৎকালীন ওসিকে বদলি করা হয়েছে। অন্য পুলিশ সদস্যরাও বদলি আতঙ্কে রয়েছেন।
এ বিষয়ে পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন যুগান্তরকে বলেন, কোনো সন্ত্রাসী বাহিনীকে ছাড় দেয়া হবে না। আমরা ভিন্ন ভিন্ন সোর্স থেকে প্রত্যেকের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করছি।
যুগান্তরের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জেলা পুলিশকে এ বিষয়ে কাজ করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তারা এ রিপোর্ট ধরে কাজ করছে। সব সন্ত্রাসী বাহিনীর মূলোৎপাটন করা হবে।
পুলিশের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে যোগাযোগের অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, এখলাসপুরের ঘটনার পর বেগমগঞ্জের ওসিকে বদলি করা হয়েছে। যদি এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
যুগান্তরের অনুসন্ধান বলছে, বেগমগঞ্জের বাহিনীগুলো নির্দিষ্ট এলাকা ভাগ করে নেয়। যেই এলাকায় যার নিয়ন্ত্রণ সেই এলাকায় অন্য কেউ ঢুকলেই সংঘর্ষ হয়। অতীতে এমন বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে।
এলাকা নিয়ন্ত্রণের পেছনে থাকে ওই এলাকায় মাদক সরবরাহ, চাঁদাবাজিসহ নিজের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে নেতাদের নজরে থাকা। ২ সেপ্টেম্বর একলাশপুরে বিবস্ত্র করে নারী নির্যাতনের ঘটনার পেছনেও মাদক সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে।
নিজেদের বিভিন্ন অপকর্মে অস্ত্রের ব্যবহারের পাশাপাশি তারা অস্ত্র বিক্রি করে এবং ভাড়াও দেয় বলে জানা গেছে।
শুধু আমান উল্যাপুর, আলাইয়ারপুর ও ছয়ানি এ তিন ইউনিয়নে ২০০’র বেশি দেশি-বিদেশি অবৈধ অস্ত্র রয়েছে বলে যুগান্তরকে জানায় সন্ত্রাসী বাহিনীর এক সদস্য।
একেকটা গ্রুপের কাছে ১০-১৫টি অস্ত্র আছে বলেও জানায় বিভিন্ন সন্ত্রাসী বাহিনীর একাধিক সদস্য। বিভিন্ন সময়ে এসব বাহিনীর সদস্যদের গ্রেফতারকালে তাদের কাছ থেকে অত্যাধুনিক অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে র্যাব-১১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল খন্দকার সাইফুল আলম যুগান্তরকে বলেন, আমরা এসব বাহিনীর বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযানে যাব।
ইতোমধ্যে ‘গ্রাউন্ড ওয়ার্ক’ শুরু হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে চলছে সন্ত্রাসীদের শনাক্তের কার্যক্রম। তিনি আরও জানান, বেগমগঞ্জে র্যাবের ক্যাম্প করারও একটি প্রস্তাব করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা সন্ত্রাসী বাহিনীগুলো রয়েছে বলে স্বীকার করেছেন। এরপরেও তাদের নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না তারা।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, অনেক ঘটনায় তাদের কাছে অভিযোগই আসছে না, তাই ঘটনা সম্পর্কেও জানতে পারছেন না। এছাড়া অনেক বড় উপজেলা হওয়ায় বর্তমান জনবল দিয়ে পুরো এলাকা তদারকি কঠিন হয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নোয়াখালী জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) আলমগীর হোসেন যুগান্তরকে বলেন, সব সন্ত্রাসীদের খুঁজে বের করা হবে। তাদের ওপর নজরদারি চলছে।
লক্ষ্মীপুর সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে যাওয়া রোধে চলবে যৌথ অভিযান। সন্ত্রাসীদের সমূলে উৎপাটন করা হবে। এতে সেখানে যে পর্যায়ের যেই থাকুক না কেন- কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।
কাজ চলছে। এর ফলাফল শিগগিরই পাবেন। এসপি জানান, বড় উপজেলা হওয়ায় তদারকি বাড়াতে আরেকটি থানা করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
এদিকে অবৈধ সন্ত্রাসী বাহিনীগুলোর এমন তৎপরতার পেছনে তাদের বিরুদ্ধে শক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে না পারাকেই দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্বশীল একটি সূত্র বলছে, কক্সবাজারে মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যার ঘটনার পর থেকে তারা অভিযান পরিচালনায় অনেক বেশি সতর্ক থাকছেন।
যাতে কোনো অভিযানে কারও মৃত্যু না হয় সেদিকে খেয়াল রাখছেন। এ সুযোগটি কাজে লাগিয়ে বাহিনীগুলো আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
ধরা পড়লেও জামিনে বের হয়ে বীরদর্পে ঘুরে বেড়াচ্ছে। অন্যদিকে অনেক সময় অপরাধীদের ধরলে থানায় প্রভাব বিস্তার করে ছাড়িয়ে আনার ঘটনাও রয়েছে।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সন্ত্রাসের জনপদ বেগমগঞ্জের ৮ ইউনিয়ন
অর্ধশতাধিক সন্ত্রাসীর খোঁজে পুলিশ-র্যাব
শুরু হচ্ছে র্যাবের সাঁড়াশি ও লক্ষ্মীপুর সীমান্তে যৌথ অভিযান
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে ‘সন্ত্রাসী বাহিনী’র অর্ধশতাধিক সদস্যের ওপর বিশেষ নজরদারি শুরু করেছে পুলিশ ও র্যাব। উপজেলার ৮ ইউনিয়নের ১৯টি বাহিনীর প্রধানসহ মোস্ট ডেঞ্জারাস (অতি ভয়ংকর) সন্ত্রাসীদের নামের তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে।
সেখানে খুন, ধর্ষণ, অস্ত্র, মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধের একাধিক মামলার আসামি আছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এমন তৎপরতা আঁচ করতে পেরে সন্ত্রাসীদের অনেকেই গা ঢাকা দিয়েছে।
তবে যেখানেই পালিয়ে যাক সন্ত্রাসীদের খুঁজে বের করা হবে- এমন হুশিয়ারি পুলিশের। আর র্যাব প্রস্তুতি নিচ্ছে সাঁড়াশি অভিযানের।
সম্প্রতি বেগমগঞ্জের সন্ত্রাসী বাহিনী ও এদের প্রশ্রয়দাতাদের ওপর যুগান্তরে দুটি আলাদা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এ প্রতিবেদন প্রকাশের পর বেগমগঞ্জ ও আশপাশের এলাকাজুড়ে সাঁড়াশি অভিযানের জন্য তারা ‘গ্রাউন্ড ওয়ার্ক’ শুরু করেছে।
উপজেলার সবচেয়ে বেশি সন্ত্রাসপ্রবণ অঞ্চলগুলোকে আলাদাভাবে চিহ্নিত করা হচ্ছে। বাহিনীগুলোর সার্বিক কার্যক্রম ও অস্ত্রের জোগানদাতাদের বিষয়েও নেয়া হচ্ছে যাবতীয় তথ্য-উপাত্ত।
মাদক সেবনকারীদের মাধ্যমে মাদক সরবরাহের রুট এবং এর সঙ্গে জড়িতদের খোঁজা হচ্ছে। কারণ অধিকাংশ বাহিনীর অর্থের বড় জোগান আসে এ মাদক থেকে।
উপজেলার পশ্চিমাঞ্চলের দুর্গম এলাকাগুলোতে তাদের ত্রাসের রাজত্ব ভেঙে দিতেও গ্রহণ করা হচ্ছে পরিকল্পনা।
বেগমগঞ্জের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঢেলে সাজাতে পশ্চিমাঞ্চলের ছয় ইউনিয়ন নিয়ে বাংলাবাজার নামে আরেকটি পৃথক থানা ও উপজেলায় র্যাবের ক্যাম্প করারও প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, বেগমগঞ্জ উপজেলার বড় একটি অংশ রয়েছে লক্ষীপুর জেলা সীমান্তর সঙ্গে। অপরাধীদের অনেকেই বিভিন্ন অপকর্ম করে পার্শ্ববর্তী অঞ্চলগুলোতে আশ্রয় নেয়।
সেখান থেকেই বাহিনীর সদস্যদের বিভিন্ন নির্দেশনা দেন তারা। এর ফলে জেলা ও থানা পুলিশকে অভিযান পরিচালনায় অনেক সময় বেগ পেতে হয়। দুর্গম এলাকা হওয়াতে এসব এলাকায় অভিযান পরিচালনাও কঠিন হয়ে পড়ে।
আবার থানার এক শ্রেণির অসাধু পুলিশ সদস্যের সঙ্গে সন্ত্রাসী বাহিনীর যোগাযোগ রক্ষা করে চলার অভিযোগও রয়েছে। যদিও এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ।
তবে এখলাসপুরে নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনার পর থানার তৎকালীন ওসিকে বদলি করা হয়েছে। অন্য পুলিশ সদস্যরাও বদলি আতঙ্কে রয়েছেন।
এ বিষয়ে পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন যুগান্তরকে বলেন, কোনো সন্ত্রাসী বাহিনীকে ছাড় দেয়া হবে না। আমরা ভিন্ন ভিন্ন সোর্স থেকে প্রত্যেকের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করছি।
যুগান্তরের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জেলা পুলিশকে এ বিষয়ে কাজ করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তারা এ রিপোর্ট ধরে কাজ করছে। সব সন্ত্রাসী বাহিনীর মূলোৎপাটন করা হবে।
পুলিশের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে যোগাযোগের অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, এখলাসপুরের ঘটনার পর বেগমগঞ্জের ওসিকে বদলি করা হয়েছে। যদি এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
যুগান্তরের অনুসন্ধান বলছে, বেগমগঞ্জের বাহিনীগুলো নির্দিষ্ট এলাকা ভাগ করে নেয়। যেই এলাকায় যার নিয়ন্ত্রণ সেই এলাকায় অন্য কেউ ঢুকলেই সংঘর্ষ হয়। অতীতে এমন বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে।
এলাকা নিয়ন্ত্রণের পেছনে থাকে ওই এলাকায় মাদক সরবরাহ, চাঁদাবাজিসহ নিজের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে নেতাদের নজরে থাকা। ২ সেপ্টেম্বর একলাশপুরে বিবস্ত্র করে নারী নির্যাতনের ঘটনার পেছনেও মাদক সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে।
নিজেদের বিভিন্ন অপকর্মে অস্ত্রের ব্যবহারের পাশাপাশি তারা অস্ত্র বিক্রি করে এবং ভাড়াও দেয় বলে জানা গেছে।
শুধু আমান উল্যাপুর, আলাইয়ারপুর ও ছয়ানি এ তিন ইউনিয়নে ২০০’র বেশি দেশি-বিদেশি অবৈধ অস্ত্র রয়েছে বলে যুগান্তরকে জানায় সন্ত্রাসী বাহিনীর এক সদস্য।
একেকটা গ্রুপের কাছে ১০-১৫টি অস্ত্র আছে বলেও জানায় বিভিন্ন সন্ত্রাসী বাহিনীর একাধিক সদস্য। বিভিন্ন সময়ে এসব বাহিনীর সদস্যদের গ্রেফতারকালে তাদের কাছ থেকে অত্যাধুনিক অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে র্যাব-১১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল খন্দকার সাইফুল আলম যুগান্তরকে বলেন, আমরা এসব বাহিনীর বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযানে যাব।
ইতোমধ্যে ‘গ্রাউন্ড ওয়ার্ক’ শুরু হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে চলছে সন্ত্রাসীদের শনাক্তের কার্যক্রম। তিনি আরও জানান, বেগমগঞ্জে র্যাবের ক্যাম্প করারও একটি প্রস্তাব করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা সন্ত্রাসী বাহিনীগুলো রয়েছে বলে স্বীকার করেছেন। এরপরেও তাদের নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না তারা।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, অনেক ঘটনায় তাদের কাছে অভিযোগই আসছে না, তাই ঘটনা সম্পর্কেও জানতে পারছেন না। এছাড়া অনেক বড় উপজেলা হওয়ায় বর্তমান জনবল দিয়ে পুরো এলাকা তদারকি কঠিন হয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নোয়াখালী জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) আলমগীর হোসেন যুগান্তরকে বলেন, সব সন্ত্রাসীদের খুঁজে বের করা হবে। তাদের ওপর নজরদারি চলছে।
লক্ষ্মীপুর সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে যাওয়া রোধে চলবে যৌথ অভিযান। সন্ত্রাসীদের সমূলে উৎপাটন করা হবে। এতে সেখানে যে পর্যায়ের যেই থাকুক না কেন- কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।
কাজ চলছে। এর ফলাফল শিগগিরই পাবেন। এসপি জানান, বড় উপজেলা হওয়ায় তদারকি বাড়াতে আরেকটি থানা করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
এদিকে অবৈধ সন্ত্রাসী বাহিনীগুলোর এমন তৎপরতার পেছনে তাদের বিরুদ্ধে শক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে না পারাকেই দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্বশীল একটি সূত্র বলছে, কক্সবাজারে মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যার ঘটনার পর থেকে তারা অভিযান পরিচালনায় অনেক বেশি সতর্ক থাকছেন।
যাতে কোনো অভিযানে কারও মৃত্যু না হয় সেদিকে খেয়াল রাখছেন। এ সুযোগটি কাজে লাগিয়ে বাহিনীগুলো আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
ধরা পড়লেও জামিনে বের হয়ে বীরদর্পে ঘুরে বেড়াচ্ছে। অন্যদিকে অনেক সময় অপরাধীদের ধরলে থানায় প্রভাব বিস্তার করে ছাড়িয়ে আনার ঘটনাও রয়েছে।