অর্থ পাচারকারীদের আইনের আওতায় আনতে হবে
পিকে হালদারের মামলার শুনানিতে হাইকোর্ট
যুগান্তর রিপোর্ট
০৩ ডিসেম্বর ২০২০, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
দুর্নীতিবাজ, অর্থ পাচারকারীরা যত বড় রুই-কাতলা হোক না কেন, তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। তাদের ছাড় দিলে চলবে না। প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা পাচার করার অভিযোগ নিয়ে বিদেশে পালিয়ে থাকা প্রশান্ত কুমার হালদারকে ফিরিয়ে আনা সংক্রান্ত এক শুনানিতে এমন মন্তব্য করেন হাইকোর্ট।
বুধবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানি হয়। আদালত পরবর্তী আদেশের জন্য ৯ ডিসেম্বর সময় রেখেছেন। এই সময়ের মধ্যে বিচারিক আদালতে পিকে হালদারের গ্রেফতারি পরোয়ানার বিষয়ে প্রতিবেদন, মামলার এফআইআর ও সম্পত্তি-অর্থ জব্দের আদেশ আদালতে দাখিল করতে দুদককে বলা হয়েছে।
আদালতে দুদকের পক্ষে ছিলেন মো. খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। উল্লেখ্য, এর আগে পিকে হালদারকে দেশে ফিরিয়ে আনতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ইন্টারপোলের সহায়তার আবেদন করে দুদক। এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদার (পিকে হালদার) পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিস লিমিটেডের (আইএলএফএসএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে ‘পিকে হালদারকে ধরতে ইন্টারপোলের সহায়তা চাইবে দুদক সংক্রান্ত প্রতিবেদন নজরে নিয়ে গত ১৯ নভেম্বর তাকে বিদেশ থেকে ফেরাতে এবং গ্রেফতার করতে কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তা জানতে চেয়ে স্বপ্রণোদিত আদেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।
এ আদেশ অনুসারে দুদক বুধবার একটি প্রতিবেদন দাখিল করে। সেখানে ইন্টারপোলের সঙ্গে যোগাযোগের কথা তুলে ধরা হয়েছে। এবং তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করতে আবেদন করা হয়েছে বিচারিক আদালতে। শুনানিতে আদালত বলেন, যারা দুর্নীতিবাজ, যারা অর্থ পাচার করে তাদের ছাড় দিলে চলবে না। এ সময় খুরশীদ আলম খান বলেন, অবশ্যই।
তখন আদালত বলেন, তারা যত বড় রুই-কাতলা হোক না কেন তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। আমাদের সবার উচিত হল দেশের প্রোপার্টি রক্ষা করা। এটা তো আমাদের সাংবিধানিক অধিকার। ২১ অনুচ্ছেদ অনুসারে। কাজেই শুধু কোর্ট করবে অন্যরা করবে তা তো না, সবাইকে করতে হবে।
আদালত দুর্নীতিবাজদের বিষয়ে আরও বলেন, তারা যাতে আইনের জালে ধরা পড়ে সে দায়িত্ব গ্রহণ করতে হবে। আমাদের সোনার বাংলা গড়ে তুলতে হবে। জাতির পিতা স্বপ্ন দেখেছিলেন এ দেশকে সোনার বাংলা গড়ার। কাজেই ওনার যে স্বপ্ন সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ করতে হবে। এ
ক পর্যায়ে আদালত বলেন, খুব আনফরচুনেট (অপ্রত্যাশিত) আড়াই মাস হয়ে গেল একটা অর্ডার হল না ওয়ারেন্ট অব অ্যারেস্টের। তখন খুরশীদ আলম খান বলেন, আমি যোগাযোগ করেছি, জানিয়েছি। আদালত বলেন, আপনি বলবেন, এটা নিয়ে উচ্চ আদালত কনসার্ন। জবাবে খুরশীদ আলম খান বলেন, জি এটা করব (এটা জানিয়ে দেব)।
প্রশান্ত কুমার হালদার বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে থেকে অন্তত সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা লোপাট করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। পরে দুই বিনিয়োগকারীর করা আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ১৯ জানুয়ারি এক আদেশে প্রশান্ত কুমার হালদারসহ সংশ্লিষ্ট ২০ জনের ব্যাংক হিসাব ও পাসপোর্ট জব্দের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৪০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
পিকে হালদারের মামলার শুনানিতে হাইকোর্ট
অর্থ পাচারকারীদের আইনের আওতায় আনতে হবে
দুর্নীতিবাজ, অর্থ পাচারকারীরা যত বড় রুই-কাতলা হোক না কেন, তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। তাদের ছাড় দিলে চলবে না। প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা পাচার করার অভিযোগ নিয়ে বিদেশে পালিয়ে থাকা প্রশান্ত কুমার হালদারকে ফিরিয়ে আনা সংক্রান্ত এক শুনানিতে এমন মন্তব্য করেন হাইকোর্ট।
বুধবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানি হয়। আদালত পরবর্তী আদেশের জন্য ৯ ডিসেম্বর সময় রেখেছেন। এই সময়ের মধ্যে বিচারিক আদালতে পিকে হালদারের গ্রেফতারি পরোয়ানার বিষয়ে প্রতিবেদন, মামলার এফআইআর ও সম্পত্তি-অর্থ জব্দের আদেশ আদালতে দাখিল করতে দুদককে বলা হয়েছে।
আদালতে দুদকের পক্ষে ছিলেন মো. খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। উল্লেখ্য, এর আগে পিকে হালদারকে দেশে ফিরিয়ে আনতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ইন্টারপোলের সহায়তার আবেদন করে দুদক। এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদার (পিকে হালদার) পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিস লিমিটেডের (আইএলএফএসএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে ‘পিকে হালদারকে ধরতে ইন্টারপোলের সহায়তা চাইবে দুদক সংক্রান্ত প্রতিবেদন নজরে নিয়ে গত ১৯ নভেম্বর তাকে বিদেশ থেকে ফেরাতে এবং গ্রেফতার করতে কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তা জানতে চেয়ে স্বপ্রণোদিত আদেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।
এ আদেশ অনুসারে দুদক বুধবার একটি প্রতিবেদন দাখিল করে। সেখানে ইন্টারপোলের সঙ্গে যোগাযোগের কথা তুলে ধরা হয়েছে। এবং তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করতে আবেদন করা হয়েছে বিচারিক আদালতে। শুনানিতে আদালত বলেন, যারা দুর্নীতিবাজ, যারা অর্থ পাচার করে তাদের ছাড় দিলে চলবে না। এ সময় খুরশীদ আলম খান বলেন, অবশ্যই।
তখন আদালত বলেন, তারা যত বড় রুই-কাতলা হোক না কেন তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। আমাদের সবার উচিত হল দেশের প্রোপার্টি রক্ষা করা। এটা তো আমাদের সাংবিধানিক অধিকার। ২১ অনুচ্ছেদ অনুসারে। কাজেই শুধু কোর্ট করবে অন্যরা করবে তা তো না, সবাইকে করতে হবে।
আদালত দুর্নীতিবাজদের বিষয়ে আরও বলেন, তারা যাতে আইনের জালে ধরা পড়ে সে দায়িত্ব গ্রহণ করতে হবে। আমাদের সোনার বাংলা গড়ে তুলতে হবে। জাতির পিতা স্বপ্ন দেখেছিলেন এ দেশকে সোনার বাংলা গড়ার। কাজেই ওনার যে স্বপ্ন সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ করতে হবে। এ
ক পর্যায়ে আদালত বলেন, খুব আনফরচুনেট (অপ্রত্যাশিত) আড়াই মাস হয়ে গেল একটা অর্ডার হল না ওয়ারেন্ট অব অ্যারেস্টের। তখন খুরশীদ আলম খান বলেন, আমি যোগাযোগ করেছি, জানিয়েছি। আদালত বলেন, আপনি বলবেন, এটা নিয়ে উচ্চ আদালত কনসার্ন। জবাবে খুরশীদ আলম খান বলেন, জি এটা করব (এটা জানিয়ে দেব)।
প্রশান্ত কুমার হালদার বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে থেকে অন্তত সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা লোপাট করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। পরে দুই বিনিয়োগকারীর করা আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ১৯ জানুয়ারি এক আদেশে প্রশান্ত কুমার হালদারসহ সংশ্লিষ্ট ২০ জনের ব্যাংক হিসাব ও পাসপোর্ট জব্দের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।