লেখক গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদ আর নেই
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শোক
সাংস্কৃতিক প্রতিবেদক
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
বিশিষ্ট লেখক, গবেষক ও সাংবাদিক সৈয়দ আবুল মকসুদ আর নেই। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন (ইন্নালিল্লাহি ... রাজিউন)। সৈয়দ আবুল মকসুদের ছেলে সৈয়দ নাসিফ মকসুদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বাবা ৩-৪ দিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে শ্বাসকষ্ট শুরু হলে তাকে স্কয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, হাসপাতালে আনার আগেই বাবা মারা গেছেন।
পারিবারিক সূত্র জানায়, বিদেশে অবস্থানরত মেয়ে দেশে ফেরার পর সৈয়দ আবুল মকসুদের দাফন হবে। সৈয়দ আবুল মকসুদের ছেলে সৈয়দ নাসিফ মকসুদ জানান, তার বোন এ মুহূর্তে ভারতে অবস্থান করছেন। তার ফেরার পর দাফনসহ অন্যসব ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সৈয়দ আবুল মকসুদের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ওয়ার্কার্স পাটির সভাপতি রাশেদ খান মেনন ও সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা, জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আক্তার, নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা ইলিয়াস কাঞ্চনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের নেতারা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। বাংলাদেশের রাজনীতি, সমাজ, সাহিত্য ও সংস্কৃতি নিয়ে নানা বই ও প্রবন্ধ লিখেছেন সৈয়দ আবুল মকসুদ। বিখ্যাত সাহিত্যিক ও রাজনীতিবিদদের জীবন ও কর্ম নিয়ে গবেষণামূলক প্রবন্ধ লিখেছেন। পাশাপাশি কাব্যচর্চাও করেছেন। তার রচিত বইয়ের সংখ্যা চল্লিশের ওপর। বাংলা সাহিত্যে সামগ্রিক অবদানের জন্য ১৯৯৫ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন সৈয়দ আবুল মকসুদ। ১৯৪৬ সালের ২৩ অক্টোবর মানিকগঞ্জ জেলার শিবালয় উপজেলার এলাচিপুর গ্রামে তার জন্ম । তার বাবা সৈয়দ আবুল মাহমুদ ও মা সালেহা বেগম। আবুল মকসুদের কর্মজীবন শুরু হয় ১৯৬৪ সালে এম আনিসুজ্জামান সম্পাদিত সাপ্তাহিক নবযুগ পত্রিকায় সাংবাদিকতার মাধ্যমে। এটি ছিল পাকিস্তান সোশ্যালিস্ট পার্টির মুখপত্র। পরে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি সমর্থিত সাপ্তাহিক ‘জনতা’য় কাজ করেন কিছুদিন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থায় যোগ দেন। ২০০৮ সালের ২ মার্চ বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার সম্পাদকীয় বিভাগের চাকরি ছেড়ে দেন।
সৈয়দ আবুল মকসুদ সাহিত্যিক হিসাবেও খ্যাতিমান ছিলেন। ১৯৮১ সালে তার কবিতার বই বিকেলবেলা প্রকাশিত হয়। ১৯৮৭ সালে তার দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ দারা শিকোহ ও অন্যান্য কবিতা প্রকাশিত হয়। মানবাধিকার, পরিবেশ, সমাজ ও প্রেম নিয়ে তিনি কবিতা লিখেছেন। তিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বুদ্ধদেব বসু, সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ, মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী, মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী প্রমুখ প্রখ্যাত সাহিত্যিক ও রাজনীতিবিদদের জীবন এবং কর্ম নিয়ে গবেষণা করেছেন।
আব্দুল হামিদ খান ভাসানীকে নিয়ে তিনি লিখেছেন মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর জীবন, কর্মকাণ্ড, রাজনীতি ও দর্শন (১৯৮৬) ও ভাসানী কাহিনী (২০১৩)। সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহকে নিয়ে লিখেছেন সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর জীবন ও সাহিত্য (২০১১) ও স্মৃতিতে ওয়ালীউল্লাহ (২০১৪)।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৪০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
লেখক গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদ আর নেই
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শোক
বিশিষ্ট লেখক, গবেষক ও সাংবাদিক সৈয়দ আবুল মকসুদ আর নেই। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন (ইন্নালিল্লাহি ... রাজিউন)। সৈয়দ আবুল মকসুদের ছেলে সৈয়দ নাসিফ মকসুদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বাবা ৩-৪ দিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে শ্বাসকষ্ট শুরু হলে তাকে স্কয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, হাসপাতালে আনার আগেই বাবা মারা গেছেন।
পারিবারিক সূত্র জানায়, বিদেশে অবস্থানরত মেয়ে দেশে ফেরার পর সৈয়দ আবুল মকসুদের দাফন হবে। সৈয়দ আবুল মকসুদের ছেলে সৈয়দ নাসিফ মকসুদ জানান, তার বোন এ মুহূর্তে ভারতে অবস্থান করছেন। তার ফেরার পর দাফনসহ অন্যসব ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সৈয়দ আবুল মকসুদের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ওয়ার্কার্স পাটির সভাপতি রাশেদ খান মেনন ও সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা, জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আক্তার, নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা ইলিয়াস কাঞ্চনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের নেতারা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। বাংলাদেশের রাজনীতি, সমাজ, সাহিত্য ও সংস্কৃতি নিয়ে নানা বই ও প্রবন্ধ লিখেছেন সৈয়দ আবুল মকসুদ। বিখ্যাত সাহিত্যিক ও রাজনীতিবিদদের জীবন ও কর্ম নিয়ে গবেষণামূলক প্রবন্ধ লিখেছেন। পাশাপাশি কাব্যচর্চাও করেছেন। তার রচিত বইয়ের সংখ্যা চল্লিশের ওপর। বাংলা সাহিত্যে সামগ্রিক অবদানের জন্য ১৯৯৫ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন সৈয়দ আবুল মকসুদ। ১৯৪৬ সালের ২৩ অক্টোবর মানিকগঞ্জ জেলার শিবালয় উপজেলার এলাচিপুর গ্রামে তার জন্ম । তার বাবা সৈয়দ আবুল মাহমুদ ও মা সালেহা বেগম। আবুল মকসুদের কর্মজীবন শুরু হয় ১৯৬৪ সালে এম আনিসুজ্জামান সম্পাদিত সাপ্তাহিক নবযুগ পত্রিকায় সাংবাদিকতার মাধ্যমে। এটি ছিল পাকিস্তান সোশ্যালিস্ট পার্টির মুখপত্র। পরে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি সমর্থিত সাপ্তাহিক ‘জনতা’য় কাজ করেন কিছুদিন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থায় যোগ দেন। ২০০৮ সালের ২ মার্চ বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার সম্পাদকীয় বিভাগের চাকরি ছেড়ে দেন।
সৈয়দ আবুল মকসুদ সাহিত্যিক হিসাবেও খ্যাতিমান ছিলেন। ১৯৮১ সালে তার কবিতার বই বিকেলবেলা প্রকাশিত হয়। ১৯৮৭ সালে তার দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ দারা শিকোহ ও অন্যান্য কবিতা প্রকাশিত হয়। মানবাধিকার, পরিবেশ, সমাজ ও প্রেম নিয়ে তিনি কবিতা লিখেছেন। তিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বুদ্ধদেব বসু, সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ, মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী, মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী প্রমুখ প্রখ্যাত সাহিত্যিক ও রাজনীতিবিদদের জীবন এবং কর্ম নিয়ে গবেষণা করেছেন।
আব্দুল হামিদ খান ভাসানীকে নিয়ে তিনি লিখেছেন মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর জীবন, কর্মকাণ্ড, রাজনীতি ও দর্শন (১৯৮৬) ও ভাসানী কাহিনী (২০১৩)। সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহকে নিয়ে লিখেছেন সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর জীবন ও সাহিত্য (২০১১) ও স্মৃতিতে ওয়ালীউল্লাহ (২০১৪)।