উপাসনালয় শপিংমল বাজারে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক
করোনা রোধে ৬ দফা নির্দেশনা
কেউ উপেক্ষা করলে আইনানুগ শাস্তি * নো মাস্ক নো সার্ভিস নীতি প্রয়োগ * গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত ২০৮৭
যুগান্তর প্রতিবেদন
২৯ জুন ২০২২, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
দেশে করোনার ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ রোধে দোকান, শপিংমল, বাজার, হোটেল রেস্টুরেন্টে সবার জন্য মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করেছে সরকার। মসজিদ, মন্দির, গির্জায় মাস্ক পরা ও সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করতে বলা হয়।
এছাড়া জনসমাগম এড়িয়ে চলা, কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণসহ ৬ দফা নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। কেউ এসব নির্দেশনা উপেক্ষা করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এগুলো বাস্তবায়নের জন্য মঙ্গলবার সব মন্ত্রণালয়র সচিব ও বিভাগীয় কমিশনারের কাছে চিঠি দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এদিকে মঙ্গলবার নতুন করে ২০৮৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, সাম্প্রতিককালে সারা দেশে কোভিড-১৯ আক্রান্তের হার দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। জনগণের মধ্যে মাস্ক পরিধান এবং স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণে যথেষ্ট শিথিলতা দেখা যাচ্ছে। যা নিয়ে সরকারের উচ্চমহলে আলোচনা হচ্ছে।
এ অবস্থায় কোভিড-১৯ জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির ১৪ জুনের সভায় গৃহীত সুপারিশ প্রতিপালনের ওপর জোর দেওয়া হয়। একই সঙ্গে ছয়টি নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য সচিব ও বিভাগীয় কমিশনারদের অনুরোধ জানানো হয় এ চিঠিতে।
ছয়টি নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে-১. স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়ে জনসাধারণকে উদ্বুদ্ধ করতে সব ধরনের গণমাধ্যমকে অনুরোধ জানাতে হবে। ২. সব জায়গায় মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা, এ জন্য ‘নো মাস্ক নো সার্ভিস’ নীতি প্রয়োগ করা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, জনসমাগম যথাসম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে।
৩. ধর্মীয় প্রার্থনার স্থানগুলো যেমন-মসজিদ, মন্দির, গির্জা ইত্যাদি জায়গায় মাস্ক পরা ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। ৪. জ্বর, সর্দি, কাশি বা কোডিড-১৯-এর উপসর্গ দেখা দিলে নমুনা পরীক্ষার জন্য উদ্বুদ্ধ করতে হবে।
৫. দোকান, শপিংমল, বাজার, ক্রেতা-বিক্রেতা, হোটেল-রেস্টুরেন্ট সবাইকে বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরিধান করতে হবে। অন্যথায় তাকে আইনানুগ শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে। ৬. স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন এবং মাস্ক পরিধানের বিষয়ে সব মসজিদে জুমার নামাজের খুতবায় ইমামরা সংশ্লিষ্টদের সচেতন করবেন।
দ্বিতীয় দিনেও দুই হাজারের বেশি করোনা রোগী শনাক্ত : এদিকে দেশে করোনাভাইরাস ফের ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণের মধ্যে টানা দ্বিতীয় দিন দুই হাজারের বেশি করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় ২ হাজার ৮৭ জন রোগী শনাক্ত হয়েছেন। আগের দিন এই সংখ্যা ছিল ২১০১। নতুন রোগীদের নিয়ে দেশে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে ১৯ লাখ ৬৯ হাজার ২৬১ জন হয়েছে।
এছাড়া গত একদিনে ৩ জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। আগের ২৪ ঘণ্টায় দুজনের মৃত্যুর তথ্য জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তাদের নিয়ে ভাইরাসটিতে মৃতের সংখ্যা ২৯ হাজার ১৪৫ জনে দাঁড়িয়েছে। মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশের ৮৮০টি ল্যাবরেটরিতে ১৩ হাজার ১৮৪টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এরমধ্যে ১৩ হাজার ৪৮৯টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ১৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ। এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ।
মহামারি শুরুর পর থেকে দেশে এ পর্যন্ত এক কোটি ৪৩ লাখ ১৯ হাজার ৩৬৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এরমধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৯৪ লাখ ২১ হাজার ৮৯০টি এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৪৮ লাখ ৯৭ হাজার ৪৭৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে।
এক দিনে শনাক্ত ২ হাজার ৮৭ জন রোগীর মধ্যে এক হাজার ৭৯৫ জনই ঢাকা মহানগর ও জেলার বাসিন্দা। নারায়ণগঞ্জে ৪৭ জন, গাজীপুরে ১৫ জন, নরসিংদীতে ১৪ জন, ফরিদপুরে ছয়জন, কিশোরগঞ্জে চারজন, মানিকগঞ্জে পাঁচজন, রাজবাড়ীতে দুজন, শরীয়তপুরে তিনজন, টাঙ্গাইলে দুজন শনাক্ত হয়েছেন।
এছাড়া ময়মনসিংহ বিভাগে ১৫ জন, চট্টগ্রামে ১১২ জন, রাজশাহীতে ১১ জন, রংপুরে ৮ জন, খুলনায় ২১ জন, বরিশালে ২১ জন ও সিলেটে ৬ জন রোগী শনাক্ত হয়েছেন। তবে একদিনে সেরে উঠেছেন ২০০ জন।
এ নিয়ে দেশে করোনা থেকে সুস্থ হলেন ১৯ লাখ ৭ হাজার ৬৭ জন। করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের দাপট শিথিল হয়ে আসায় ফেব্রুয়ারির পর থেকে দেশে সংক্রমণের হারও কমতে থাকে।
এরই ধারাবাহিকায় ২৬ মার্চ দৈনিক শনাক্ত একশর নিচে এবং ৫ মে তা আরও কমে ৪ জনে নামে। তবে ২২ মের পর থেকে সংক্রমণ আবারও ঊর্ধ্বমুখী রূপ নেয়।
১২ জুন দৈনিক শনাক্ত ১০০ ছাড়ানোর মাত্র এক সপ্তাহের মাথায় তা আরও বেড়ে ৮০০ ছাড়িয়ে যায়। বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল ২০২০ সালের ৮ মার্চ।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
করোনা রোধে ৬ দফা নির্দেশনা
উপাসনালয় শপিংমল বাজারে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক
কেউ উপেক্ষা করলে আইনানুগ শাস্তি * নো মাস্ক নো সার্ভিস নীতি প্রয়োগ * গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত ২০৮৭
দেশে করোনার ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ রোধে দোকান, শপিংমল, বাজার, হোটেল রেস্টুরেন্টে সবার জন্য মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করেছে সরকার। মসজিদ, মন্দির, গির্জায় মাস্ক পরা ও সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করতে বলা হয়।
এছাড়া জনসমাগম এড়িয়ে চলা, কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণসহ ৬ দফা নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। কেউ এসব নির্দেশনা উপেক্ষা করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এগুলো বাস্তবায়নের জন্য মঙ্গলবার সব মন্ত্রণালয়র সচিব ও বিভাগীয় কমিশনারের কাছে চিঠি দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এদিকে মঙ্গলবার নতুন করে ২০৮৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, সাম্প্রতিককালে সারা দেশে কোভিড-১৯ আক্রান্তের হার দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। জনগণের মধ্যে মাস্ক পরিধান এবং স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণে যথেষ্ট শিথিলতা দেখা যাচ্ছে। যা নিয়ে সরকারের উচ্চমহলে আলোচনা হচ্ছে।
এ অবস্থায় কোভিড-১৯ জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির ১৪ জুনের সভায় গৃহীত সুপারিশ প্রতিপালনের ওপর জোর দেওয়া হয়। একই সঙ্গে ছয়টি নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য সচিব ও বিভাগীয় কমিশনারদের অনুরোধ জানানো হয় এ চিঠিতে।
ছয়টি নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে-১. স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়ে জনসাধারণকে উদ্বুদ্ধ করতে সব ধরনের গণমাধ্যমকে অনুরোধ জানাতে হবে। ২. সব জায়গায় মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা, এ জন্য ‘নো মাস্ক নো সার্ভিস’ নীতি প্রয়োগ করা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, জনসমাগম যথাসম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে।
৩. ধর্মীয় প্রার্থনার স্থানগুলো যেমন-মসজিদ, মন্দির, গির্জা ইত্যাদি জায়গায় মাস্ক পরা ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। ৪. জ্বর, সর্দি, কাশি বা কোডিড-১৯-এর উপসর্গ দেখা দিলে নমুনা পরীক্ষার জন্য উদ্বুদ্ধ করতে হবে।
৫. দোকান, শপিংমল, বাজার, ক্রেতা-বিক্রেতা, হোটেল-রেস্টুরেন্ট সবাইকে বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরিধান করতে হবে। অন্যথায় তাকে আইনানুগ শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে। ৬. স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন এবং মাস্ক পরিধানের বিষয়ে সব মসজিদে জুমার নামাজের খুতবায় ইমামরা সংশ্লিষ্টদের সচেতন করবেন।
দ্বিতীয় দিনেও দুই হাজারের বেশি করোনা রোগী শনাক্ত : এদিকে দেশে করোনাভাইরাস ফের ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণের মধ্যে টানা দ্বিতীয় দিন দুই হাজারের বেশি করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় ২ হাজার ৮৭ জন রোগী শনাক্ত হয়েছেন। আগের দিন এই সংখ্যা ছিল ২১০১। নতুন রোগীদের নিয়ে দেশে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে ১৯ লাখ ৬৯ হাজার ২৬১ জন হয়েছে।
এছাড়া গত একদিনে ৩ জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। আগের ২৪ ঘণ্টায় দুজনের মৃত্যুর তথ্য জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তাদের নিয়ে ভাইরাসটিতে মৃতের সংখ্যা ২৯ হাজার ১৪৫ জনে দাঁড়িয়েছে। মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশের ৮৮০টি ল্যাবরেটরিতে ১৩ হাজার ১৮৪টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এরমধ্যে ১৩ হাজার ৪৮৯টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ১৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ। এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ।
মহামারি শুরুর পর থেকে দেশে এ পর্যন্ত এক কোটি ৪৩ লাখ ১৯ হাজার ৩৬৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এরমধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৯৪ লাখ ২১ হাজার ৮৯০টি এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৪৮ লাখ ৯৭ হাজার ৪৭৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে।
এক দিনে শনাক্ত ২ হাজার ৮৭ জন রোগীর মধ্যে এক হাজার ৭৯৫ জনই ঢাকা মহানগর ও জেলার বাসিন্দা। নারায়ণগঞ্জে ৪৭ জন, গাজীপুরে ১৫ জন, নরসিংদীতে ১৪ জন, ফরিদপুরে ছয়জন, কিশোরগঞ্জে চারজন, মানিকগঞ্জে পাঁচজন, রাজবাড়ীতে দুজন, শরীয়তপুরে তিনজন, টাঙ্গাইলে দুজন শনাক্ত হয়েছেন।
এছাড়া ময়মনসিংহ বিভাগে ১৫ জন, চট্টগ্রামে ১১২ জন, রাজশাহীতে ১১ জন, রংপুরে ৮ জন, খুলনায় ২১ জন, বরিশালে ২১ জন ও সিলেটে ৬ জন রোগী শনাক্ত হয়েছেন। তবে একদিনে সেরে উঠেছেন ২০০ জন।
এ নিয়ে দেশে করোনা থেকে সুস্থ হলেন ১৯ লাখ ৭ হাজার ৬৭ জন। করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের দাপট শিথিল হয়ে আসায় ফেব্রুয়ারির পর থেকে দেশে সংক্রমণের হারও কমতে থাকে।
এরই ধারাবাহিকায় ২৬ মার্চ দৈনিক শনাক্ত একশর নিচে এবং ৫ মে তা আরও কমে ৪ জনে নামে। তবে ২২ মের পর থেকে সংক্রমণ আবারও ঊর্ধ্বমুখী রূপ নেয়।
১২ জুন দৈনিক শনাক্ত ১০০ ছাড়ানোর মাত্র এক সপ্তাহের মাথায় তা আরও বেড়ে ৮০০ ছাড়িয়ে যায়। বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল ২০২০ সালের ৮ মার্চ।