যমুনার ফ্রিজ উচ্চ প্রযুক্তির সাশ্রয়ী গুণগত মানসম্পন্ন
যুগান্তর প্রতিবেদন
০৬ জুলাই ২০২২, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
রেফ্রিজারেটর বা ফ্রিজের বাজারে যমুনা একটি অনন্য নাম। যমুনার ফ্রিজ উচ্চ প্রযুক্তির, সাশ্রয়ী ও গুণগত মানসম্পন্ন। দীর্ঘস্থায়িত্ব, আকর্ষণীয় ডিজাইন, উন্নত কম্প্রেসার, ওয়ারেন্টি, বিক্রয়োত্তর সেবা সব দিক থেকে যমুনা ফ্রিজ সেরা।
যমুনা সংখ্যায় নয়, গুণে ও মানে অতুলনীয়। ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে যমুনা রেফ্রিজারেটর ও ফ্রিজারে চলছে মিলিওনিয়ার অফার। অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন করে একজন ক্রেতা জিতে নিতে পারেন ফ্রিজ, টিভি, এসিসহ ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত নিশ্চিত ক্যাশব্যাক।
এছাড়া সর্বনিম্ন ডাউন পেমেন্টে এক হাজার ৩৬ টাকা মাসিক কিস্তি, ৪০ শতাংশ পর্যন্ত এক্সচেঞ্জ অফারে ফ্রিজ কেনা ও ৩৬টি ব্যাংকে শূন্য শতাংশ ইন্টারেস্টে ইএমআই সুবিধা ছাড়াও একটি ফ্রিজ কিনলে তিনটি পণ্য ফ্রি পাওয়ার সুযোগ থাকছে। যমুনা ফ্রিজ নিয়ে নানা উদ্যোগ সম্পর্কে যুগান্তরের সঙ্গে কথা বলেছেন যমুনা গ্রুপের পরিচালক মনিকা নাজনীন ইসলাম
যুগান্তর : রেফ্রিজারেটর বা ফ্রিজশিল্প খাতে যমুনা ইলেকট্রনিক্সের যাত্রার প্রেক্ষাপট যদি বলেন? দেশীয় শিল্প হিসাবে রেফ্রিজারেটরের সম্ভাবনা কতটুকু?
মনিকা ইসলাম : জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে ভালো মানের পণ্য সবার দুয়ারে পৌঁছে দেওয়ায় আমরা বদ্ধপরিকর। এই অঙ্গীকার পূরণে মানুষের ক্রমবর্ধমান চাহিদার কথা বিবেচনা করে সাশ্রয়ী মূল্য ও গুণগত মান বজায় রেখে ২০১৪ সাল থেকে বৃহৎ পরিসরে ইলেকট্রনিক্স হোম অ্যাপ্লায়েন্স উৎপাদন শুরু করে যমুনা গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান যমুনা ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড অটোমোবাইলস লিমিটেড।
আধুনিক প্রযুক্তি, যন্ত্রপাতি, দক্ষ জনবল, উন্নত কাঁচামাল ও প্রতিনিয়ত উৎকর্ষ সাধনের মাধ্যমে উৎপাদন শুরুর মাত্র আট বছরেই দেশের ফ্রিজশিল্প খাতের শীর্ষ অবস্থানে পৌঁছেছে যমুনা ব্র্যান্ড। আমাদের বিশাল এ কর্মযজ্ঞে দেশের কয়েক হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে।
রেফ্রিজারেটর বা ফ্রিজ বর্তমান সময়ে আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়েছে। বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ধারণা, আগামী দু-তিন বছরের মধ্যে দেশে এই খাতের বাজার শতকোটি ডলার (সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকা) ছাড়িয়ে যাবে।
অত্যন্ত আশার কথা হচ্ছে, ২০১০ সালে বাংলাদেশে যেখানে ৮০ শতাংশ মার্কেট শেয়ার ছিল বিদেশি ব্র্যান্ডগুলোর দখলে, সেখানে ২০২২ সালে চিত্রটা পুরোপুরি পালটে গেছে। এখন বাজারের মাত্র ২০ শতাংশ শেয়ার বিদেশি ব্র্যান্ডগুলোর দখলে।
সাশ্রয়ী মূল্য, গুণগত মান, দেশের মানুষের চাহিদা ও আবহাওয়া উপযোগী হওয়ার কারণে গ্রাহকরা দেশীয় ব্র্যান্ডগুলোর ফ্রিজ কিনতে বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছেন। শহরের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মফস্বল ও গ্রামপর্যায়ে প্রতিনিয়ত ফ্রিজের ব্যবহার বাড়ছে।
যুগান্তর : ঈদ উপলক্ষ্যে আপনারা ক্রেতাদের কী ধরনের সুবিধা দিচ্ছেন?
মনিকা ইসলাম : রেফ্রিজারেটর বিক্রির একটা বড় অংশ দুই ঈদকে কেন্দ্র করেই হয়ে থাকে। অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর মতো আমরাও তাই ঈদে ক্রেতাদের জন্য নানা সুবিধা নিয়ে এসেছি। তার মধ্যে একটা সুবিধার নাম ‘কে হতে চান মিলিওনিয়ার।’
এই সুবিধার আওতায় কেউ যদি প্লাজা ইন্ড বা ডিলারদের কাছ থেকে পণ্য কেনেন, তখন নির্ধারিত অ্যাপ ব্যবহার করে নিবন্ধন করবেন। পরে লটারির মাধ্যমে টেলিভিশন, ফ্রিজ, এসির পাশাপাশি ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ক্যাশব্যাকের সুবিধা রয়েছে।
যুগান্তর : আপনাদের পণ্যে কী ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে?
মনিকা ইসলাম : আমাদের নিবেদিতপ্রাণ আর এন্ড ডি টিম দিনরাত কাজ করছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী পণ্যটি সাশ্রয়ী মূল্যে ক্রেতাসাধারণের কাছে পৌঁছে দিতে। ইউনিফর্ম ডিজাইন ইভাপোরেটর যা রেফ্রিজারেন্ট গ্যাস ফ্লো করে স্মুথ ও কুইক কুলিং।
৮৫ মিলি. পুরুত্ব ফোমিং বডি, যা ঠান্ডা ধরে রাখে দীর্ঘ সময়। লোডশেডিং বা বিদ্যুৎ না থাকলেও যমুনা রেফ্রিজারেটরে ৭২ ঘণ্টা এবং যমুনা ফ্রিজারে ১২০ ঘণ্টা খাবার থাকবে ফ্রেশ এবং সতেজ। যমুনা রেফ্রিজারেটর উৎপাদন প্রক্রিয়ার কোথাও সিলিকন জেল ব্যবহার করে না।
আমাদের সব মডেল রেফ্রিজারেটরে আর৬০০এ গ্যাস ব্যবহৃত হয়, যা পরিবেশবান্ধব ও মানবদেহেরও কোনো ক্ষতি করে না। অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে রেফ্রিজারেটরে খাবারের মান ঠিক থাকে। বিদ্যুৎ খরচ ৭০ শতাংশ কম হয়।
এতে সব সুবিধা থাকা সত্ত্বেও যে কোনো রেফ্রিজারেটর ও ফ্রিজার থেকে আমরা কম মূল্যে ক্রেতাদের কাছে পণ্য পৌঁছে দিচ্ছি। গুণগত মান ঠিক রাখতে উৎপাদন ব্যয়ও তাই বেশি হয়। বাংলাদেশে যে গ্লাস ডোর ফ্রিজ দেখা যায়, সেগুলোর প্রথম উদ্যোক্তা যমুনা।
যুগান্তর : গ্রামগঞ্জে ক্রেতাদের দোরগোড়ায় কীভাবে পণ্যটি পৌঁছান?
মনিকা ইসলাম : সাধারণত আমাদের পণ্যগুলো তিনটি নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ভোক্তার হাতে পৌঁছায়। দেশজুড়ে আমাদের নিজস্ব ফ্ল্যাগশিপ শোরুম আছে। আমাদের লক্ষ্য, ২০২২ সালের শেষে অন্তত আরও ১০০টি ফ্ল্যাগশিপ শোরুম তৈরি করা। যাতে শহর থেকে গ্রাম-সবখানেই ভোক্তার কাছে দ্রুত পণ্য পৌঁছে দিতে পারি। এছাড়া সারা দেশে আমাদের ১০০০-এরও অধিক ডিলার শোরুম আছে।
যুগান্তর : গ্রাহকরা কেন যমুনা পণ্য কিনবেন?
মনিকা ইসলাম : কোটি মানুষের আস্থায় ধন্য যমুনা রেফ্রিজারেটর। ক্রেতা নিশ্চয়ই বেস্ট প্রডাক্টটিই কিনতে চাইবে, গুণে-মানে দেশসেরা যমুনা রেফ্রিজারেটর। দেশের সব জনগোষ্ঠীর ক্রয়ক্ষমতা বিবেচনায় রেখে যমুনা বিভিন্ন দামে রেফ্রিজারেটর তৈরি করে।
নিয়মিত রেফ্রিজারেটরের পাশাপাশি রয়েছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ইন্টেলিজেন্ট ইনভার্টার টেকনোলজির স্মার্ট ডাবল ডোর, টি ডোর ও ক্রস ডোর রেফ্রিজারেটর। এসব রেফ্রিজারেটর এরই মধ্যে বাজারে বেশ সাড়া ফেলেছে। সহজ কিস্তি ও বিনা সুদে ইএমআই সুবিধায় এসব রেফ্রিজারেটর কেনার সুবিধা রয়েছে।
গ্রাহক চাহিদার সঙ্গে সঙ্গে বাজার বড় হচ্ছে দেশি রেফ্রিজারেটর বা ফ্রিজ কোম্পানিগুলোর। বিভাগীয়, জেলা ও মফস্বল শহর ছাড়িয়ে এখন গ্রাম পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে তাদের বাজার।
যুগান্তর : সাম্প্রতিক বৈশ্বিক পরিস্থিতি এই শিল্পে কেমন প্রভাব ফেলেছে?
মনিকা ইসলাম : করোনা সংক্রমণ ও সাম্প্রতিক রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বজুড়েই রেফ্রিজারেটর তৈরির কাঁচামাল এবং যন্ত্রাংশ সরবরাহে কিছুটা বিঘ্ন ঘটেছে। তা সত্ত্বেও দেশের চাহিদা বিবেচনায় আমরা ফ্রিজ উৎপাদন প্রক্রিয়া সচল রেখেছি। শুধু তা-ই নয়, পরিবর্তিত এই পরিস্থিতিতেও পণ্যের দাম না বাড়িয়ে ক্রেতাদের কাছে সাশ্রয়ী মূল্যে তা সরবরাহ করছি।
যুগান্তর : সরকারের কাছ থেকে কী ধরনের সহায়তা প্রত্যাশা করেন?
মনিকা ইসলাম : ফ্রিজ এখন নিত্যব্যবহার্য পণ্যে পরিণত হয়েছে। তাই আমরা আশা করছি, এই খাতে সরকার শিল্পবান্ধব নীতিসহায়তা ও কাঁচামাল আমদানি সহজ করবে। ফলে ফ্রিজশিল্প খাত আরও এগিয়ে যাবে এবং দেশের উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানে ব্যাপক অবদান রাখবে।
যুগান্তর : ভালো ফ্রিজ বাছাইয়ে গ্রাহকদের জন্য কী পরামর্শ দেবেন?
মনিকা ইসলাম : শুধু ব্র্যান্ডের নাম দেখে পণ্য কিনলেই হবে না, বরং ফ্রিজের স্থায়িত্ব, ডিজাইন, পাওয়ার সেভিং সিস্টেম, কম্প্রেসার, প্রযুক্তি, ওয়ারেন্টি ও বিক্রয়োত্তর সেবা প্রভৃতি বিষয় বিবেচনায় রাখতে হবে।
এখানে সিলিকন জেল নিয়ে আরেকটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যুক্ত করতে চাই, আমাদের অধিকাংশ ক্রেতা সেই দিকটাতে নজর দেন না। সিলিকন জেল মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর। এটি খাদ্যমান নষ্ট করে। অথচ আমাদের দেশের অনেক কোম্পানির রেফ্রিজারেটর তৈরিতে ক্ষতিকর এই উপাদান ব্যবহার করা হয়।
যমুনা রেফ্রিজারেটর উৎপাদন প্রক্রিয়ার কোথাও এটি ব্যবহার করে না। অনেক ফ্রিজে মানবদেহ ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর আর১৩৪এ গ্যাস ব্যবহৃত হয়। আমাদের সব মডেল ফ্রিজগুলোতে ব্যবহার হয় আর৬০০এ, যা ক্ষতিকর নয়। অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল গ্যাস্কেট ব্যবহারের ফলে খাবারের মান ঠিক থাকে, বিদ্যুৎ খরচও ৭০ শতাংশ কম হয়।
যুগান্তর : ক্রেতাদের কী সুবিধা দিচ্ছেন?
মনিকা ইসলাম : গ্রাহকের চাহিদা ও সন্তুষ্টির কথা মাথায় রেখে আমরা প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছি। শুধু সংখ্যাতেই নয়, গুণে-মানেও আমরা সেরা প্রতিষ্ঠান হতে চাই। কাঁচামালের মূল্যবৃদ্ধিসহ বিভিন্ন অসুবিধা থাকা সত্ত্বেও আমরা তুলনামূলক কম দামে ক্রেতাদের কাছে পণ্য পৌঁছে দিচ্ছি।
আপনি দেখবেন আমাদের রেফ্রিজারেটরগুলোর বিক্রয়োত্তর সেবা নেওয়ার হার একদমই কম (০.০১ শতাংশ)। উৎপাদন প্রক্রিয়ার ত্রুটিও বিভিন্ন ব্র্যান্ডের তুলনায় অনেক কম।
দেশের মানুষ সহজে যাতে যে কোনো প্রান্তে যমুনার পণ্যটি পেতে পারে সে লক্ষ্যে আমাদের বৃহৎ টিম ইউনিয়ন পর্যায়েও কাজ করছে। আমাদের পণ্য সহজে মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে আমরা বদ্ধপরিকর।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
যমুনার ফ্রিজ উচ্চ প্রযুক্তির সাশ্রয়ী গুণগত মানসম্পন্ন
রেফ্রিজারেটর বা ফ্রিজের বাজারে যমুনা একটি অনন্য নাম। যমুনার ফ্রিজ উচ্চ প্রযুক্তির, সাশ্রয়ী ও গুণগত মানসম্পন্ন। দীর্ঘস্থায়িত্ব, আকর্ষণীয় ডিজাইন, উন্নত কম্প্রেসার, ওয়ারেন্টি, বিক্রয়োত্তর সেবা সব দিক থেকে যমুনা ফ্রিজ সেরা।
যমুনা সংখ্যায় নয়, গুণে ও মানে অতুলনীয়। ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে যমুনা রেফ্রিজারেটর ও ফ্রিজারে চলছে মিলিওনিয়ার অফার। অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন করে একজন ক্রেতা জিতে নিতে পারেন ফ্রিজ, টিভি, এসিসহ ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত নিশ্চিত ক্যাশব্যাক।
এছাড়া সর্বনিম্ন ডাউন পেমেন্টে এক হাজার ৩৬ টাকা মাসিক কিস্তি, ৪০ শতাংশ পর্যন্ত এক্সচেঞ্জ অফারে ফ্রিজ কেনা ও ৩৬টি ব্যাংকে শূন্য শতাংশ ইন্টারেস্টে ইএমআই সুবিধা ছাড়াও একটি ফ্রিজ কিনলে তিনটি পণ্য ফ্রি পাওয়ার সুযোগ থাকছে। যমুনা ফ্রিজ নিয়ে নানা উদ্যোগ সম্পর্কে যুগান্তরের সঙ্গে কথা বলেছেন যমুনা গ্রুপের পরিচালক মনিকা নাজনীন ইসলাম
যুগান্তর : রেফ্রিজারেটর বা ফ্রিজশিল্প খাতে যমুনা ইলেকট্রনিক্সের যাত্রার প্রেক্ষাপট যদি বলেন? দেশীয় শিল্প হিসাবে রেফ্রিজারেটরের সম্ভাবনা কতটুকু?
মনিকা ইসলাম : জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে ভালো মানের পণ্য সবার দুয়ারে পৌঁছে দেওয়ায় আমরা বদ্ধপরিকর। এই অঙ্গীকার পূরণে মানুষের ক্রমবর্ধমান চাহিদার কথা বিবেচনা করে সাশ্রয়ী মূল্য ও গুণগত মান বজায় রেখে ২০১৪ সাল থেকে বৃহৎ পরিসরে ইলেকট্রনিক্স হোম অ্যাপ্লায়েন্স উৎপাদন শুরু করে যমুনা গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান যমুনা ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড অটোমোবাইলস লিমিটেড।
আধুনিক প্রযুক্তি, যন্ত্রপাতি, দক্ষ জনবল, উন্নত কাঁচামাল ও প্রতিনিয়ত উৎকর্ষ সাধনের মাধ্যমে উৎপাদন শুরুর মাত্র আট বছরেই দেশের ফ্রিজশিল্প খাতের শীর্ষ অবস্থানে পৌঁছেছে যমুনা ব্র্যান্ড। আমাদের বিশাল এ কর্মযজ্ঞে দেশের কয়েক হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে।
রেফ্রিজারেটর বা ফ্রিজ বর্তমান সময়ে আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়েছে। বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ধারণা, আগামী দু-তিন বছরের মধ্যে দেশে এই খাতের বাজার শতকোটি ডলার (সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকা) ছাড়িয়ে যাবে।
অত্যন্ত আশার কথা হচ্ছে, ২০১০ সালে বাংলাদেশে যেখানে ৮০ শতাংশ মার্কেট শেয়ার ছিল বিদেশি ব্র্যান্ডগুলোর দখলে, সেখানে ২০২২ সালে চিত্রটা পুরোপুরি পালটে গেছে। এখন বাজারের মাত্র ২০ শতাংশ শেয়ার বিদেশি ব্র্যান্ডগুলোর দখলে।
সাশ্রয়ী মূল্য, গুণগত মান, দেশের মানুষের চাহিদা ও আবহাওয়া উপযোগী হওয়ার কারণে গ্রাহকরা দেশীয় ব্র্যান্ডগুলোর ফ্রিজ কিনতে বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছেন। শহরের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মফস্বল ও গ্রামপর্যায়ে প্রতিনিয়ত ফ্রিজের ব্যবহার বাড়ছে।
যুগান্তর : ঈদ উপলক্ষ্যে আপনারা ক্রেতাদের কী ধরনের সুবিধা দিচ্ছেন?
মনিকা ইসলাম : রেফ্রিজারেটর বিক্রির একটা বড় অংশ দুই ঈদকে কেন্দ্র করেই হয়ে থাকে। অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর মতো আমরাও তাই ঈদে ক্রেতাদের জন্য নানা সুবিধা নিয়ে এসেছি। তার মধ্যে একটা সুবিধার নাম ‘কে হতে চান মিলিওনিয়ার।’
এই সুবিধার আওতায় কেউ যদি প্লাজা ইন্ড বা ডিলারদের কাছ থেকে পণ্য কেনেন, তখন নির্ধারিত অ্যাপ ব্যবহার করে নিবন্ধন করবেন। পরে লটারির মাধ্যমে টেলিভিশন, ফ্রিজ, এসির পাশাপাশি ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ক্যাশব্যাকের সুবিধা রয়েছে।
যুগান্তর : আপনাদের পণ্যে কী ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে?
মনিকা ইসলাম : আমাদের নিবেদিতপ্রাণ আর এন্ড ডি টিম দিনরাত কাজ করছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী পণ্যটি সাশ্রয়ী মূল্যে ক্রেতাসাধারণের কাছে পৌঁছে দিতে। ইউনিফর্ম ডিজাইন ইভাপোরেটর যা রেফ্রিজারেন্ট গ্যাস ফ্লো করে স্মুথ ও কুইক কুলিং।
৮৫ মিলি. পুরুত্ব ফোমিং বডি, যা ঠান্ডা ধরে রাখে দীর্ঘ সময়। লোডশেডিং বা বিদ্যুৎ না থাকলেও যমুনা রেফ্রিজারেটরে ৭২ ঘণ্টা এবং যমুনা ফ্রিজারে ১২০ ঘণ্টা খাবার থাকবে ফ্রেশ এবং সতেজ। যমুনা রেফ্রিজারেটর উৎপাদন প্রক্রিয়ার কোথাও সিলিকন জেল ব্যবহার করে না।
আমাদের সব মডেল রেফ্রিজারেটরে আর৬০০এ গ্যাস ব্যবহৃত হয়, যা পরিবেশবান্ধব ও মানবদেহেরও কোনো ক্ষতি করে না। অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে রেফ্রিজারেটরে খাবারের মান ঠিক থাকে। বিদ্যুৎ খরচ ৭০ শতাংশ কম হয়।
এতে সব সুবিধা থাকা সত্ত্বেও যে কোনো রেফ্রিজারেটর ও ফ্রিজার থেকে আমরা কম মূল্যে ক্রেতাদের কাছে পণ্য পৌঁছে দিচ্ছি। গুণগত মান ঠিক রাখতে উৎপাদন ব্যয়ও তাই বেশি হয়। বাংলাদেশে যে গ্লাস ডোর ফ্রিজ দেখা যায়, সেগুলোর প্রথম উদ্যোক্তা যমুনা।
যুগান্তর : গ্রামগঞ্জে ক্রেতাদের দোরগোড়ায় কীভাবে পণ্যটি পৌঁছান?
মনিকা ইসলাম : সাধারণত আমাদের পণ্যগুলো তিনটি নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ভোক্তার হাতে পৌঁছায়। দেশজুড়ে আমাদের নিজস্ব ফ্ল্যাগশিপ শোরুম আছে। আমাদের লক্ষ্য, ২০২২ সালের শেষে অন্তত আরও ১০০টি ফ্ল্যাগশিপ শোরুম তৈরি করা। যাতে শহর থেকে গ্রাম-সবখানেই ভোক্তার কাছে দ্রুত পণ্য পৌঁছে দিতে পারি। এছাড়া সারা দেশে আমাদের ১০০০-এরও অধিক ডিলার শোরুম আছে।
যুগান্তর : গ্রাহকরা কেন যমুনা পণ্য কিনবেন?
মনিকা ইসলাম : কোটি মানুষের আস্থায় ধন্য যমুনা রেফ্রিজারেটর। ক্রেতা নিশ্চয়ই বেস্ট প্রডাক্টটিই কিনতে চাইবে, গুণে-মানে দেশসেরা যমুনা রেফ্রিজারেটর। দেশের সব জনগোষ্ঠীর ক্রয়ক্ষমতা বিবেচনায় রেখে যমুনা বিভিন্ন দামে রেফ্রিজারেটর তৈরি করে।
নিয়মিত রেফ্রিজারেটরের পাশাপাশি রয়েছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ইন্টেলিজেন্ট ইনভার্টার টেকনোলজির স্মার্ট ডাবল ডোর, টি ডোর ও ক্রস ডোর রেফ্রিজারেটর। এসব রেফ্রিজারেটর এরই মধ্যে বাজারে বেশ সাড়া ফেলেছে। সহজ কিস্তি ও বিনা সুদে ইএমআই সুবিধায় এসব রেফ্রিজারেটর কেনার সুবিধা রয়েছে।
গ্রাহক চাহিদার সঙ্গে সঙ্গে বাজার বড় হচ্ছে দেশি রেফ্রিজারেটর বা ফ্রিজ কোম্পানিগুলোর। বিভাগীয়, জেলা ও মফস্বল শহর ছাড়িয়ে এখন গ্রাম পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে তাদের বাজার।
যুগান্তর : সাম্প্রতিক বৈশ্বিক পরিস্থিতি এই শিল্পে কেমন প্রভাব ফেলেছে?
মনিকা ইসলাম : করোনা সংক্রমণ ও সাম্প্রতিক রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বজুড়েই রেফ্রিজারেটর তৈরির কাঁচামাল এবং যন্ত্রাংশ সরবরাহে কিছুটা বিঘ্ন ঘটেছে। তা সত্ত্বেও দেশের চাহিদা বিবেচনায় আমরা ফ্রিজ উৎপাদন প্রক্রিয়া সচল রেখেছি। শুধু তা-ই নয়, পরিবর্তিত এই পরিস্থিতিতেও পণ্যের দাম না বাড়িয়ে ক্রেতাদের কাছে সাশ্রয়ী মূল্যে তা সরবরাহ করছি।
যুগান্তর : সরকারের কাছ থেকে কী ধরনের সহায়তা প্রত্যাশা করেন?
মনিকা ইসলাম : ফ্রিজ এখন নিত্যব্যবহার্য পণ্যে পরিণত হয়েছে। তাই আমরা আশা করছি, এই খাতে সরকার শিল্পবান্ধব নীতিসহায়তা ও কাঁচামাল আমদানি সহজ করবে। ফলে ফ্রিজশিল্প খাত আরও এগিয়ে যাবে এবং দেশের উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানে ব্যাপক অবদান রাখবে।
যুগান্তর : ভালো ফ্রিজ বাছাইয়ে গ্রাহকদের জন্য কী পরামর্শ দেবেন?
মনিকা ইসলাম : শুধু ব্র্যান্ডের নাম দেখে পণ্য কিনলেই হবে না, বরং ফ্রিজের স্থায়িত্ব, ডিজাইন, পাওয়ার সেভিং সিস্টেম, কম্প্রেসার, প্রযুক্তি, ওয়ারেন্টি ও বিক্রয়োত্তর সেবা প্রভৃতি বিষয় বিবেচনায় রাখতে হবে।
এখানে সিলিকন জেল নিয়ে আরেকটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যুক্ত করতে চাই, আমাদের অধিকাংশ ক্রেতা সেই দিকটাতে নজর দেন না। সিলিকন জেল মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর। এটি খাদ্যমান নষ্ট করে। অথচ আমাদের দেশের অনেক কোম্পানির রেফ্রিজারেটর তৈরিতে ক্ষতিকর এই উপাদান ব্যবহার করা হয়।
যমুনা রেফ্রিজারেটর উৎপাদন প্রক্রিয়ার কোথাও এটি ব্যবহার করে না। অনেক ফ্রিজে মানবদেহ ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর আর১৩৪এ গ্যাস ব্যবহৃত হয়। আমাদের সব মডেল ফ্রিজগুলোতে ব্যবহার হয় আর৬০০এ, যা ক্ষতিকর নয়। অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল গ্যাস্কেট ব্যবহারের ফলে খাবারের মান ঠিক থাকে, বিদ্যুৎ খরচও ৭০ শতাংশ কম হয়।
যুগান্তর : ক্রেতাদের কী সুবিধা দিচ্ছেন?
মনিকা ইসলাম : গ্রাহকের চাহিদা ও সন্তুষ্টির কথা মাথায় রেখে আমরা প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছি। শুধু সংখ্যাতেই নয়, গুণে-মানেও আমরা সেরা প্রতিষ্ঠান হতে চাই। কাঁচামালের মূল্যবৃদ্ধিসহ বিভিন্ন অসুবিধা থাকা সত্ত্বেও আমরা তুলনামূলক কম দামে ক্রেতাদের কাছে পণ্য পৌঁছে দিচ্ছি।
আপনি দেখবেন আমাদের রেফ্রিজারেটরগুলোর বিক্রয়োত্তর সেবা নেওয়ার হার একদমই কম (০.০১ শতাংশ)। উৎপাদন প্রক্রিয়ার ত্রুটিও বিভিন্ন ব্র্যান্ডের তুলনায় অনেক কম।
দেশের মানুষ সহজে যাতে যে কোনো প্রান্তে যমুনার পণ্যটি পেতে পারে সে লক্ষ্যে আমাদের বৃহৎ টিম ইউনিয়ন পর্যায়েও কাজ করছে। আমাদের পণ্য সহজে মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে আমরা বদ্ধপরিকর।