মুখরক্ষার জয়ে হোয়াইটওয়াশ এড়াল বাংলাদেশ

৮৩ রানে নয় উইকেট হারানোর পর আর বাকি ছিল কী। জিম্বাবুয়ে তখন পা রেখেছে শোচনীয় হারের চৌকাঠে। সেই হার প্রলম্বিত হলো ১০ ও ১১ নম্বর ব্যাটারের কল্যাণে।
এনগারাভা ও নিয়াউচি দশম উইকেট জুটিতে সর্বোচ্চ রান তুললেন জিম্বাবুয়ের হয়ে। জিম্বাবুয়ে কখনোই ম্যাচে ছিল না। দুই ‘এন’ পরাজয়টা বিলম্বিত করেছেন শুধু। দশম উইকেটে তাদের ৬৮ রানের জুটি।
এনগারাভা ২৭ বলে ৩৪ রানে অপরাজিত রয়ে যান। ২৬ রানে নিয়াউচির বোল্ড হওয়ার মধ্যদিয়ে জিম্বাবুয়ে থামে ১৫১ রানে। বাংলাদেশ প্রথম ও দ্বিতীয় ওডিআইতে যথাক্রমে ৩০৩ ও ২৯০ রান করেও হেরেছিল একই ব্যবধান পাঁচ উইকেটে।
হারারেতে বুধবার তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে চিত্রনাট্যে বদল এনে ২৫৬ (সিরিজে সবচেয়ে কম রান) করে বাংলাদেশ জিতল ১০৫ রানে। আক্ষরিক অর্থেই বিশাল জয়। যে জয়ে আত্মবিশ্বাসের দেওয়াল থেকে খসে পড়া সুরকিতে পলেস্তারা দেওয়া সম্ভব হয়েছে।
তার চেয়েও বড় কথা, হোয়াইটওয়াশ এড়ানো গেছে। ২১ বছরে প্রথমবারের মতো আইসিসির পূর্ণ সদস্যের বিপক্ষে জিম্বাবুয়েকে ওয়ানডে সিরিজে প্রথম হোয়াইটওয়াশ করার গরিমা থেকে বঞ্চিত করেছে বাংলাদেশ।
নিজেদের ৪০০তম ওয়ানডে বিষাদে পরিণত হতে দেয়নি বাংলাদেশ। ৪০০ ম্যাচে বাংলাদেশের এটি ১৪৪তম জয়। সফরের শেষ ম্যাচ জিতলেও টি ২০-র মতো ওয়ানডে সিরিজও বাংলাদেশ হারল ২-১ এ।
‘বারে বারে ঘুঘু তুমি খেয়ে যাও ধান, এবার ঘুঘু তোমার ...’ দু-দুবার বড় রান তাড়া করে ম্যাচ জেতা জিম্বাবুয়ে এবার ৩৩ ওভারের মধ্যে অলআউট। বাংলাদেশের সান্ত্বনার জয়ের বড় কারিগর তিনজন।
প্রথমে ব্যাট হাতে এনামুল হক (৭১ বলে ৭৬) ও ম্যাচসেরা আফিফ হোসেন (৮১ বলে ৮৫*) দাপট দেখান। এরপর বল হাতে ছয় ওভারেরও কমে ১৭ রান দিয়ে চার উইকেট নেন নিজেকে ফিরে পাওয়া মোস্তাফিজুর রহমান।
ওডিআইতে অভিষিক্ত আরেক পেসার ইবাদত হোসেন এবং স্পিনার তাইজুল ইসলাম দুটি করে উইকেট পান। সিরিজসেরা হন প্রথম দুই ম্যাচে সেঞ্চুরি হাঁকানো জিম্বাবুয়ের অলরাউন্ডার সিকান্দার রাজা। যিনি এই ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন স্বাগতিকদের।
বাংলাদেশ সর্বশেষ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল ২০০১ সালে। তখন জিম্বাবুয়ে দলে ছিলেন অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার, গ্রান্ট ফ্লাওয়ার, হিথ স্ট্রিক, অ্যালিস্টার ক্যাম্পবেলরা। জিম্বাবুয়ের সোনালি সময় ছিল তখন।
তাদের বিদায়ের পর বাংলাদেশ ছয়বার জিম্বাবুয়েকে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা দিয়েছে। ওয়ানডেতে নয় বছর পর বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচ ও সিরিজ জিতল জিম্বাবুয়ে। দেরিতে হলেও বাংলাদেশের বোলাররা জ্বলে উঠলেন।
আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি করা চাকাভা খেলেননি কাল। সিকান্দার রাজা ইবাদতের প্রথম বলে আউট হয়ে যান। ৮৩ রানে নয় উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। সব ম্যাচেই টস হেরেছে বাংলাদেশ।
কালও টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামতে হয়। দুদলই দুটি করে পরিবর্তন নিয়ে একাদশ সাজায়। তাসকিন আহমেদ ও শরীফুল ইসলামের পরিবর্তে একাদশে ফেরেন মোস্তাফিজ, অভিষেক হয় ইবাদতের।
ব্যাটিংয়ে তামিম ইকবালের শুরুটা ছিল আগ্রাসনের ইঙ্গিত। ম্যাচের দ্বিতীয় বলে বাউন্ডারি হাঁকান তিনি কাট করে। চতুর্থ ওভারে বাউন্ডারি আদায় করেন নিয়াউচির পরপর দুই বলে।
ছন্দপতন ঘটে তামিমের (১৯) রানআউটে। এক বল পর ছক্কায় পালটা জবাব দেওয়ার চেষ্টা করেন এনামুল। তবে আরেক প্রান্তে জোড়া ধাক্কায় চুপসে যায় দল।
বিদায় নেন নাজমুল হোসেন ও মুশফিকুর রহিম। দুজনই ফেরেন শূন্যতে। পরের ওভারে এনগারাভাকে আবার ছক্কায় উড়িয়ে চাপ কমানোর চেষ্টা করেন এনামুল।
অন্য প্রান্তে মাহমুদউল্লাহ ছিলেন ঘুমিয়ে। এনামুল যখন ছুটছেন ১২০ স্ট্রাইক রেটে, মাহমুদউল্লাহর রান তখন ৩৯ বলে ১৪! সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়েও এনামুল থামেন।
আফিফ ব্যাটিংয়ে নেমেই দ্রুত রান তোলায় মনোযোগী হন। কিন্তু খোলস ছেড়ে বের হতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ। দৃষ্টিকটু ব্যাটিংয়ে ৬৯ বলে ৩৯ রান করে ফেরেন তিনি।
আফিফ অবশ্য দুই রানেই ফিরতে পারতেন। কিন্তু ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যাওয়ার পর শেষ পর্যন্ত তিনি অপরাজিত থাকেন ৮১ বলে ৮৫ রানে। (স্কোর কার্ড খেলার পাতায়)
মুখরক্ষার জয়ে হোয়াইটওয়াশ এড়াল বাংলাদেশ
ক্রীড়া প্রতিবেদক
১১ আগস্ট ২০২২, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
৮৩ রানে নয় উইকেট হারানোর পর আর বাকি ছিল কী। জিম্বাবুয়ে তখন পা রেখেছে শোচনীয় হারের চৌকাঠে। সেই হার প্রলম্বিত হলো ১০ ও ১১ নম্বর ব্যাটারের কল্যাণে।
এনগারাভা ও নিয়াউচি দশম উইকেট জুটিতে সর্বোচ্চ রান তুললেন জিম্বাবুয়ের হয়ে। জিম্বাবুয়ে কখনোই ম্যাচে ছিল না। দুই ‘এন’ পরাজয়টা বিলম্বিত করেছেন শুধু। দশম উইকেটে তাদের ৬৮ রানের জুটি।
এনগারাভা ২৭ বলে ৩৪ রানে অপরাজিত রয়ে যান। ২৬ রানে নিয়াউচির বোল্ড হওয়ার মধ্যদিয়ে জিম্বাবুয়ে থামে ১৫১ রানে। বাংলাদেশ প্রথম ও দ্বিতীয় ওডিআইতে যথাক্রমে ৩০৩ ও ২৯০ রান করেও হেরেছিল একই ব্যবধান পাঁচ উইকেটে।
হারারেতে বুধবার তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে চিত্রনাট্যে বদল এনে ২৫৬ (সিরিজে সবচেয়ে কম রান) করে বাংলাদেশ জিতল ১০৫ রানে। আক্ষরিক অর্থেই বিশাল জয়। যে জয়ে আত্মবিশ্বাসের দেওয়াল থেকে খসে পড়া সুরকিতে পলেস্তারা দেওয়া সম্ভব হয়েছে।
তার চেয়েও বড় কথা, হোয়াইটওয়াশ এড়ানো গেছে। ২১ বছরে প্রথমবারের মতো আইসিসির পূর্ণ সদস্যের বিপক্ষে জিম্বাবুয়েকে ওয়ানডে সিরিজে প্রথম হোয়াইটওয়াশ করার গরিমা থেকে বঞ্চিত করেছে বাংলাদেশ।
নিজেদের ৪০০তম ওয়ানডে বিষাদে পরিণত হতে দেয়নি বাংলাদেশ। ৪০০ ম্যাচে বাংলাদেশের এটি ১৪৪তম জয়। সফরের শেষ ম্যাচ জিতলেও টি ২০-র মতো ওয়ানডে সিরিজও বাংলাদেশ হারল ২-১ এ।
‘বারে বারে ঘুঘু তুমি খেয়ে যাও ধান, এবার ঘুঘু তোমার ...’ দু-দুবার বড় রান তাড়া করে ম্যাচ জেতা জিম্বাবুয়ে এবার ৩৩ ওভারের মধ্যে অলআউট। বাংলাদেশের সান্ত্বনার জয়ের বড় কারিগর তিনজন।
প্রথমে ব্যাট হাতে এনামুল হক (৭১ বলে ৭৬) ও ম্যাচসেরা আফিফ হোসেন (৮১ বলে ৮৫*) দাপট দেখান। এরপর বল হাতে ছয় ওভারেরও কমে ১৭ রান দিয়ে চার উইকেট নেন নিজেকে ফিরে পাওয়া মোস্তাফিজুর রহমান।
ওডিআইতে অভিষিক্ত আরেক পেসার ইবাদত হোসেন এবং স্পিনার তাইজুল ইসলাম দুটি করে উইকেট পান। সিরিজসেরা হন প্রথম দুই ম্যাচে সেঞ্চুরি হাঁকানো জিম্বাবুয়ের অলরাউন্ডার সিকান্দার রাজা। যিনি এই ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন স্বাগতিকদের।
বাংলাদেশ সর্বশেষ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল ২০০১ সালে। তখন জিম্বাবুয়ে দলে ছিলেন অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার, গ্রান্ট ফ্লাওয়ার, হিথ স্ট্রিক, অ্যালিস্টার ক্যাম্পবেলরা। জিম্বাবুয়ের সোনালি সময় ছিল তখন।
তাদের বিদায়ের পর বাংলাদেশ ছয়বার জিম্বাবুয়েকে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা দিয়েছে। ওয়ানডেতে নয় বছর পর বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচ ও সিরিজ জিতল জিম্বাবুয়ে। দেরিতে হলেও বাংলাদেশের বোলাররা জ্বলে উঠলেন।
আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি করা চাকাভা খেলেননি কাল। সিকান্দার রাজা ইবাদতের প্রথম বলে আউট হয়ে যান। ৮৩ রানে নয় উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। সব ম্যাচেই টস হেরেছে বাংলাদেশ।
কালও টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামতে হয়। দুদলই দুটি করে পরিবর্তন নিয়ে একাদশ সাজায়। তাসকিন আহমেদ ও শরীফুল ইসলামের পরিবর্তে একাদশে ফেরেন মোস্তাফিজ, অভিষেক হয় ইবাদতের।
ব্যাটিংয়ে তামিম ইকবালের শুরুটা ছিল আগ্রাসনের ইঙ্গিত। ম্যাচের দ্বিতীয় বলে বাউন্ডারি হাঁকান তিনি কাট করে। চতুর্থ ওভারে বাউন্ডারি আদায় করেন নিয়াউচির পরপর দুই বলে।
ছন্দপতন ঘটে তামিমের (১৯) রানআউটে। এক বল পর ছক্কায় পালটা জবাব দেওয়ার চেষ্টা করেন এনামুল। তবে আরেক প্রান্তে জোড়া ধাক্কায় চুপসে যায় দল।
বিদায় নেন নাজমুল হোসেন ও মুশফিকুর রহিম। দুজনই ফেরেন শূন্যতে। পরের ওভারে এনগারাভাকে আবার ছক্কায় উড়িয়ে চাপ কমানোর চেষ্টা করেন এনামুল।
অন্য প্রান্তে মাহমুদউল্লাহ ছিলেন ঘুমিয়ে। এনামুল যখন ছুটছেন ১২০ স্ট্রাইক রেটে, মাহমুদউল্লাহর রান তখন ৩৯ বলে ১৪! সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়েও এনামুল থামেন।
আফিফ ব্যাটিংয়ে নেমেই দ্রুত রান তোলায় মনোযোগী হন। কিন্তু খোলস ছেড়ে বের হতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ। দৃষ্টিকটু ব্যাটিংয়ে ৬৯ বলে ৩৯ রান করে ফেরেন তিনি।
আফিফ অবশ্য দুই রানেই ফিরতে পারতেন। কিন্তু ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যাওয়ার পর শেষ পর্যন্ত তিনি অপরাজিত থাকেন ৮১ বলে ৮৫ রানে। (স্কোর কার্ড খেলার পাতায়)
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by The Daily Jugantor © 2023