ডিজিটাল মিডিয়ার ওপর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ
প্যানেল আলোচনায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত
কূটনৈতিক প্রতিবেদক
০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেছেন, বাংলাদেশে ডিজিটাল, সোশ্যাল মিডিয়া এবং ডাটা প্রটেকশন অ্যাক্ট নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ রয়েছে। আমরা বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে অংশীদারত্বে বিশ্বাসী বলে সরকারকে সরাসরি উদ্বেগের কথা জানিয়ে দিয়েছি। আমাদের উদ্বেগ থাকলেও এটা স্পষ্ট করতে চাই যে, বাংলাদেশের জন্য পছন্দ বাংলাদেশই করবে।
তিনি রোববার ঢাকায় ইএমকে সেন্টারে ‘অনলাইন স্বাধীনতা এবং বাংলাদেশে ব্যবসার পরিবেশ’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনায় তিনি এমন মন্তব্য করেন।
পিটার হাস আরও বলেন, আমাদের কয়েকটি উদ্বেগ রয়েছে। ডাটা প্রটেকশন অ্যাক্ট নিয়ে আমরা খুবই দুশ্চিন্তার মধ্যে আছি। ডাটাকে যদি কঠোরভাবে স্থানীয়করণ করা হয়; তবে বাংলাদেশে কর্মরত যুক্তরাষ্ট্রের কতিপয় কোম্পানি এ দেশের বাজার ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হবে। অনলাইন প্ল্যাটফরমের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে কনটেন্টের জন্য অপরাধী সাব্যস্ত করলে অনেক কোম্পানিকে এদেশে বিনিয়োগ করতে নিরুৎসাহিত করবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের ওপর এসবের পরিণাম খুবই নেতিবাচক হবে। দুই হাজারের বেশি স্টার্টআপ কোম্পানি ব্যবসা ও সেবা দেওয়ার বাইরে চলে যাবে। তিনি বলেন, ব্যবহারকারী ও খারাপ অবস্থায় থাকা জনগোষ্ঠীর সুরক্ষার জন্যে অনলাইন কনটেন্ট শাসন করার প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্র স্বীকার করে। এটা সহজ কাজ নয়। তবে আমরা যখন অনলাইন নিয়ন্ত্রণ আইনের খসড়া দেখি; তখন কোন ধরনের অনলাইন কনটেন্ট অপরাধ হিসাবে গণ্য তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ি।
সম্প্রতি ১৯১টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল ব্লক করে দেওয়ার ঘোষণায়ও আমরা উদ্বিগ্ন। শক্তিশালী গণতন্ত্রের নমুনা হলো সমালোচনাকে গ্রহণ করে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা-এমনকি তা যদি অস্বস্তিকরও হয়।
পিটার হাস বলেন, মার্কিন দূতাবাস অনেক সুশীল সমাজের সংস্থা এবং সাংবাদিকদের কাছে এসব বিষয়ে শুনেছে। তারা আশঙ্কা করেন, এসব মৌলিক মানবাধিকার ও স্বাধীনতাকে নিয়ন্ত্রণ করবে। ডাটা প্রটেকশন অ্যাক্টে স্বাধীন ডাটা পর্যবেক্ষণ কর্তৃপক্ষ দেওয়া হয়নি এবং এটার অধীনে শাস্তিমূলক অপরাধের বিধান রাখা হয়েছে। প্রতিটি দেশ স্থানীয় প্রেক্ষিতে আইন প্রণয়ন করবে; তবে আমরা বাংলাদেশসহ সব দেশকে আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলার আহ্বান জানাই।
তিনি বলেন, অনলাইন বক্তৃতা ও ডাটা সুরক্ষা সহজ কাজ নয়। এটা একটা জটিল কাজ। এ কারণে আমরা আলোচনা করছি। যুক্তরাষ্ট্রে আমরা এটা অনুধাবন করি, বিভ্রান্তিকর তথ্য দমন করা, খারাপ অবস্থায় পতিত হওয়া মানুষকে সুরক্ষা দেওয়া এবং বাণিজ্য প্রবৃদ্ধি উৎসাহিত করা কতটা কঠিন। ওয়াশিংটন থেকে সিলিকন ভ্যালি পর্যন্ত আমরা অনেক শিক্ষা পেয়েছি। আমরা এখনও শিখছি এবং এই জটিল ইস্যু নিয়ে খোলামেলা বিতর্ক করছি। মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, উন্নয়ন ও নিরাপত্তা অবশ্যই গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের সঙ্গে ভারসাম্যপূর্ণ হতে হবে। এটা একটার সঙ্গে অন্যটার যোগসূত্র রয়েছে।
মানবাধিকার সুরক্ষা ও গণতন্ত্রকে এগিয়ে নেওয়া দেশের অর্থনীতি, টেকসই এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক সমৃদ্ধিকে জোরদার করে। আমরা বাংলাদেশ সরকারকে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, সুশীল সমাজ এবং আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে অব্যাহতভাবে আলাপ-আলোচনার আহ্বান জানাই।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্যানেল আলোচনায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত
ডিজিটাল মিডিয়ার ওপর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ
মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেছেন, বাংলাদেশে ডিজিটাল, সোশ্যাল মিডিয়া এবং ডাটা প্রটেকশন অ্যাক্ট নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ রয়েছে। আমরা বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে অংশীদারত্বে বিশ্বাসী বলে সরকারকে সরাসরি উদ্বেগের কথা জানিয়ে দিয়েছি। আমাদের উদ্বেগ থাকলেও এটা স্পষ্ট করতে চাই যে, বাংলাদেশের জন্য পছন্দ বাংলাদেশই করবে।
তিনি রোববার ঢাকায় ইএমকে সেন্টারে ‘অনলাইন স্বাধীনতা এবং বাংলাদেশে ব্যবসার পরিবেশ’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনায় তিনি এমন মন্তব্য করেন।
পিটার হাস আরও বলেন, আমাদের কয়েকটি উদ্বেগ রয়েছে। ডাটা প্রটেকশন অ্যাক্ট নিয়ে আমরা খুবই দুশ্চিন্তার মধ্যে আছি। ডাটাকে যদি কঠোরভাবে স্থানীয়করণ করা হয়; তবে বাংলাদেশে কর্মরত যুক্তরাষ্ট্রের কতিপয় কোম্পানি এ দেশের বাজার ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হবে। অনলাইন প্ল্যাটফরমের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে কনটেন্টের জন্য অপরাধী সাব্যস্ত করলে অনেক কোম্পানিকে এদেশে বিনিয়োগ করতে নিরুৎসাহিত করবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের ওপর এসবের পরিণাম খুবই নেতিবাচক হবে। দুই হাজারের বেশি স্টার্টআপ কোম্পানি ব্যবসা ও সেবা দেওয়ার বাইরে চলে যাবে। তিনি বলেন, ব্যবহারকারী ও খারাপ অবস্থায় থাকা জনগোষ্ঠীর সুরক্ষার জন্যে অনলাইন কনটেন্ট শাসন করার প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্র স্বীকার করে। এটা সহজ কাজ নয়। তবে আমরা যখন অনলাইন নিয়ন্ত্রণ আইনের খসড়া দেখি; তখন কোন ধরনের অনলাইন কনটেন্ট অপরাধ হিসাবে গণ্য তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ি।
সম্প্রতি ১৯১টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল ব্লক করে দেওয়ার ঘোষণায়ও আমরা উদ্বিগ্ন। শক্তিশালী গণতন্ত্রের নমুনা হলো সমালোচনাকে গ্রহণ করে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা-এমনকি তা যদি অস্বস্তিকরও হয়।
পিটার হাস বলেন, মার্কিন দূতাবাস অনেক সুশীল সমাজের সংস্থা এবং সাংবাদিকদের কাছে এসব বিষয়ে শুনেছে। তারা আশঙ্কা করেন, এসব মৌলিক মানবাধিকার ও স্বাধীনতাকে নিয়ন্ত্রণ করবে। ডাটা প্রটেকশন অ্যাক্টে স্বাধীন ডাটা পর্যবেক্ষণ কর্তৃপক্ষ দেওয়া হয়নি এবং এটার অধীনে শাস্তিমূলক অপরাধের বিধান রাখা হয়েছে। প্রতিটি দেশ স্থানীয় প্রেক্ষিতে আইন প্রণয়ন করবে; তবে আমরা বাংলাদেশসহ সব দেশকে আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলার আহ্বান জানাই।
তিনি বলেন, অনলাইন বক্তৃতা ও ডাটা সুরক্ষা সহজ কাজ নয়। এটা একটা জটিল কাজ। এ কারণে আমরা আলোচনা করছি। যুক্তরাষ্ট্রে আমরা এটা অনুধাবন করি, বিভ্রান্তিকর তথ্য দমন করা, খারাপ অবস্থায় পতিত হওয়া মানুষকে সুরক্ষা দেওয়া এবং বাণিজ্য প্রবৃদ্ধি উৎসাহিত করা কতটা কঠিন। ওয়াশিংটন থেকে সিলিকন ভ্যালি পর্যন্ত আমরা অনেক শিক্ষা পেয়েছি। আমরা এখনও শিখছি এবং এই জটিল ইস্যু নিয়ে খোলামেলা বিতর্ক করছি। মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, উন্নয়ন ও নিরাপত্তা অবশ্যই গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের সঙ্গে ভারসাম্যপূর্ণ হতে হবে। এটা একটার সঙ্গে অন্যটার যোগসূত্র রয়েছে।
মানবাধিকার সুরক্ষা ও গণতন্ত্রকে এগিয়ে নেওয়া দেশের অর্থনীতি, টেকসই এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক সমৃদ্ধিকে জোরদার করে। আমরা বাংলাদেশ সরকারকে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, সুশীল সমাজ এবং আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে অব্যাহতভাবে আলাপ-আলোচনার আহ্বান জানাই।