প্রাইভেট প্র্যাকটিস শুরু বৃহস্পতিবার থেকে
jugantor
সরকারি হাসপাতালে বৈকালিক চিকিৎসা
প্রাইভেট প্র্যাকটিস শুরু বৃহস্পতিবার থেকে

  যুগান্তর প্রতিবেদন  

২৮ মার্চ ২০২৩, ০০:০০:০০  |  প্রিন্ট সংস্করণ

সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ৩০ মার্চ (বৃহস্পতিবার) থেকে সরকারি হাসপাতালে প্রাতিষ্ঠানিক প্রাইভেট প্র্যাকটিস শুরু করবেন চিকিৎসকরা। প্রাথমিকভাবে ১০টি জেলা ও ২০টি উপজেলায় পাইলটিংভাবে এ চিকিৎসাসেবা দেওয়া হবে। বিকাল ৩টা থেকে ৬টা পর্যন্ত বৈকালিক এ চিকিৎসাসেবায় অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, সিনিয়র কনসালটেন্টরাও রোগী দেখবেন। এজন্য ফি নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।
সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ‘সরকারি চিকিৎসকদের বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা’ সংক্রান্ত সভা শেষে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এ তথ্য জানান।
তবে কোন কোন জেলা উপজেলায় এই কার্যক্রম শুরু হবে গতকালের বৈঠকে তা জানানো হয়নি। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা মো. মাইদুল ইসলাম প্রধান যুগান্তরকে বলেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী আগামী দুদিনের মধ্যে সক্ষমতা অনুযায়ী হাসপাতালগুলোর তালিকা করার নির্দেশ দিয়েছেন। কাজ সেভাবেই চলমান আছে। দু-এক দিনের মধ্যে তা প্রকাশ করে জানিয়ে দেওয়া হবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, প্রথমে আমরা ১০টি জেলা ও ২০টি উপজেলায় এ প্রকল্প শুরু করতে যাচ্ছি। এ কার্যক্রমে কোনো ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকলে সেটি দূর করে পর্যায়ক্রমে আমরা ৫০০টি উপজেলায় এ কার্যক্রম শুরু করতে যাব। এছাড়া ৬৪টি জেলায় এ কার্যক্রম শুরু করব। এদিকে ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বিকাল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সরকারি চিকিৎসকরা নিজ প্রতিষ্ঠানে চেম্বার প্র্যাকটিস করতে পারবেন। এখানে চিকিৎসক, নার্স ও টেকনিশিয়ানরা পর্যায়ক্রমে দায়িত্ব পালন করবেন। প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসকরা সপ্তাহে দুদিন করে চেম্বার ডিউটি করতে পারবেন।
‘চেম্বার ডিউটিতে একজন অধ্যাপকের ফি হবে ৫০০ টাকা। এতে তিনি পাবেন ৪০০, চিকিৎসাসেবায় সহযোগিতাকারীকে ৫০ টাকা ও সার্ভিস চার্জ ৫০ টাকা ধরা হয়েছে। এভাবে সহযোগী অধ্যাপকের ফি ৪০০ হলে তিনি পাবেন ৩০০ টাকা, সহকারী অধ্যাপকের ফি ৩০০ টাকা হলে, তিনি পাবেন ২০০ এবং এমবিবিএস/বিডিএস ও সমমানের চিকিৎসকদের ফি ২০০ টাকা হলে তিনি পাবেন ১৫০। এ ক্ষেত্রে চিকিৎসাসেবায় সহযোগিতাকারীর জন্য ২৫ টাকা এবং সার্ভিস চার্জ ২৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।’- বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, বৈকালিক চিকিৎসাসেবায় ছোট অস্ত্রোপচার ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এক্সরে, আলট্রাসনোগ্রাফিসহ অন্য যে সেবাগুলো থাকে, সেগুলোও থাকবে। আর এসব সেবারও মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। তার একটি অংশ পাবেন চিকিৎসক ও সহযোগিতাকারীরা, আরেকটি অংশ পাবে হাসপাতাল।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, জেলা ও উপজেলার সরকারি হাসপাতালগুলোতে সকাল ৮টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত সরকারি চিকিৎসকরা দায়িত্ব পালন করেন। তারপর সিনিয়র চিকিৎসকরা থাকেন না। যে কারণে বিকালের দিকে চিকিৎসাসেবার প্রয়োজন হলে তখন তাদের পাওয়া যায় না। মানুষের এ কষ্ট লাঘব করতেই চিকিৎসকদের দ্বিতীয় শিফট সেবা চালু করতে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, আমরা স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নত করতে চেষ্টা করছি। আশা করছি, এখন থেকে বৈকালিক চিকিৎসাসেবাটাও মানুষ পাবে। জেলা-উপজেলার স্বাস্থ্যসেবার মান বেড়েছে। সরকারি চিকিৎসকদের চেম্বার প্র্যাকটিসের কারণে রোগীরা আরও ভালো সেবা পাবে।
তিনি আরও বলেন, একজন বিশেষ চিকিৎসক বেসরকারি হাসপাতালে অস্ত্রোপচার কিংবা কনসালটেশনে যে টাকা নেন, চেম্বার প্র্যাকটিসে তার চেয়ে অনেক কম টাকা নেবেন। অনেক দেশেই সরকারি চিকিৎসকরা প্রাইভেট প্র্যাকটিস করেন না। আমরা সরকারি চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিসের অনুমোদন দেই। এখন তারা যাতে সেই প্র্যাকটিসটা সরকারি প্রতিষ্ঠানে করেন কম মূল্যে, আমরা সেই চেষ্টা করছি। এতে মানুষ ভালো চিকিৎসাসেবা পাবে। এটিতে সফল হতে পারলে আমরা আরও এগিয়ে যেতে পারব। আমরা আরও ভালো করার চেষ্টা করব।
‘চেম্বার প্র্যাকটিসের কারণে সকালের সেবায় কোনো প্রভাব পড়বে কিনা- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, না, এরকম কিছু আমরা দেখছি না। বিকালের সেবার কারণে সকালের সেবায় কোনো প্রভাব পড়বে না। সরকারি হাসপাতালে প্রাতিষ্ঠানিক প্র্যাকটিস শুরু হলে মানুষ আরও ভালো সেবা পাবে। যে সেবাটা তারা দিনের বেলায় পেত, সেটি তারা সন্ধ্যা পর্যন্ত পাবে। জরুরি সেবাও তারা হাসপাতাল থেকে পাবে। সার্বিক স্বাস্থ্যসেবার একটি উন্নয়ন হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এ বিষয়ে আন্তরিক। এ সেবা তাড়াতাড়ি চালু করতে তিনি তাগিদ দিয়ে এসেছেন।’
মন্ত্রী বলেন, এ মেয়াদের শুরুতেই সরকারি চিকিৎসকদের প্রাতিষ্ঠানিক প্রাইভেট প্র্যাকটিস শুরু করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা ছিল। তাতে সাধারণ রোগীরা অনেক ভালো সেবা পাবেন। কিন্তু আমাদের গেল দু-তিন বছরে ডেঙ্গি ও করোনার কারণে আমরা এটি শুরু করতে পারিনি। এখন যেহেতু করোনা নিয়ন্ত্রণে আছে, এ বিষয়ে কাজ শুরু করে আমরা মোটামুটি শেষ পর্যায়ে চলে এসেছি। আমরা মার্চেই শুরু করব বলে আপনাদের বলেছিলাম। পাইলট প্রকল্প হিসাবে হলেও আমরা শুরু করব। এখন ৩০ মার্চ থেকে পাইলট প্রকল্প হিসাবে প্রাতিষ্ঠানিক প্র্যাকটিস শুরু করতে যাচ্ছি।

সরকারি হাসপাতালে বৈকালিক চিকিৎসা

প্রাইভেট প্র্যাকটিস শুরু বৃহস্পতিবার থেকে

 যুগান্তর প্রতিবেদন 
২৮ মার্চ ২০২৩, ১২:০০ এএম  |  প্রিন্ট সংস্করণ

সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ৩০ মার্চ (বৃহস্পতিবার) থেকে সরকারি হাসপাতালে প্রাতিষ্ঠানিক প্রাইভেট প্র্যাকটিস শুরু করবেন চিকিৎসকরা। প্রাথমিকভাবে ১০টি জেলা ও ২০টি উপজেলায় পাইলটিংভাবে এ চিকিৎসাসেবা দেওয়া হবে। বিকাল ৩টা থেকে ৬টা পর্যন্ত বৈকালিক এ চিকিৎসাসেবায় অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, সিনিয়র কনসালটেন্টরাও রোগী দেখবেন। এজন্য ফি নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।
সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ‘সরকারি চিকিৎসকদের বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা’ সংক্রান্ত সভা শেষে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এ তথ্য জানান।
তবে কোন কোন জেলা উপজেলায় এই কার্যক্রম শুরু হবে গতকালের বৈঠকে তা জানানো হয়নি। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা মো. মাইদুল ইসলাম প্রধান যুগান্তরকে বলেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী আগামী দুদিনের মধ্যে সক্ষমতা অনুযায়ী হাসপাতালগুলোর তালিকা করার নির্দেশ দিয়েছেন। কাজ সেভাবেই চলমান আছে। দু-এক দিনের মধ্যে তা প্রকাশ করে জানিয়ে দেওয়া হবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, প্রথমে আমরা ১০টি জেলা ও ২০টি উপজেলায় এ প্রকল্প শুরু করতে যাচ্ছি। এ কার্যক্রমে কোনো ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকলে সেটি দূর করে পর্যায়ক্রমে আমরা ৫০০টি উপজেলায় এ কার্যক্রম শুরু করতে যাব। এছাড়া ৬৪টি জেলায় এ কার্যক্রম শুরু করব। এদিকে ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বিকাল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সরকারি চিকিৎসকরা নিজ প্রতিষ্ঠানে চেম্বার প্র্যাকটিস করতে পারবেন। এখানে চিকিৎসক, নার্স ও টেকনিশিয়ানরা পর্যায়ক্রমে দায়িত্ব পালন করবেন। প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসকরা সপ্তাহে দুদিন করে চেম্বার ডিউটি করতে পারবেন।
‘চেম্বার ডিউটিতে একজন অধ্যাপকের ফি হবে ৫০০ টাকা। এতে তিনি পাবেন ৪০০, চিকিৎসাসেবায় সহযোগিতাকারীকে ৫০ টাকা ও সার্ভিস চার্জ ৫০ টাকা ধরা হয়েছে। এভাবে সহযোগী অধ্যাপকের ফি ৪০০ হলে তিনি পাবেন ৩০০ টাকা, সহকারী অধ্যাপকের ফি ৩০০ টাকা হলে, তিনি পাবেন ২০০ এবং এমবিবিএস/বিডিএস ও সমমানের চিকিৎসকদের ফি ২০০ টাকা হলে তিনি পাবেন ১৫০। এ ক্ষেত্রে চিকিৎসাসেবায় সহযোগিতাকারীর জন্য ২৫ টাকা এবং সার্ভিস চার্জ ২৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।’- বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, বৈকালিক চিকিৎসাসেবায় ছোট অস্ত্রোপচার ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এক্সরে, আলট্রাসনোগ্রাফিসহ অন্য যে সেবাগুলো থাকে, সেগুলোও থাকবে। আর এসব সেবারও মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। তার একটি অংশ পাবেন চিকিৎসক ও সহযোগিতাকারীরা, আরেকটি অংশ পাবে হাসপাতাল।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, জেলা ও উপজেলার সরকারি হাসপাতালগুলোতে সকাল ৮টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত সরকারি চিকিৎসকরা দায়িত্ব পালন করেন। তারপর সিনিয়র চিকিৎসকরা থাকেন না। যে কারণে বিকালের দিকে চিকিৎসাসেবার প্রয়োজন হলে তখন তাদের পাওয়া যায় না। মানুষের এ কষ্ট লাঘব করতেই চিকিৎসকদের দ্বিতীয় শিফট সেবা চালু করতে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, আমরা স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নত করতে চেষ্টা করছি। আশা করছি, এখন থেকে বৈকালিক চিকিৎসাসেবাটাও মানুষ পাবে। জেলা-উপজেলার স্বাস্থ্যসেবার মান বেড়েছে। সরকারি চিকিৎসকদের চেম্বার প্র্যাকটিসের কারণে রোগীরা আরও ভালো সেবা পাবে।
তিনি আরও বলেন, একজন বিশেষ চিকিৎসক বেসরকারি হাসপাতালে অস্ত্রোপচার কিংবা কনসালটেশনে যে টাকা নেন, চেম্বার প্র্যাকটিসে তার চেয়ে অনেক কম টাকা নেবেন। অনেক দেশেই সরকারি চিকিৎসকরা প্রাইভেট প্র্যাকটিস করেন না। আমরা সরকারি চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিসের অনুমোদন দেই। এখন তারা যাতে সেই প্র্যাকটিসটা সরকারি প্রতিষ্ঠানে করেন কম মূল্যে, আমরা সেই চেষ্টা করছি। এতে মানুষ ভালো চিকিৎসাসেবা পাবে। এটিতে সফল হতে পারলে আমরা আরও এগিয়ে যেতে পারব। আমরা আরও ভালো করার চেষ্টা করব।
‘চেম্বার প্র্যাকটিসের কারণে সকালের সেবায় কোনো প্রভাব পড়বে কিনা- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, না, এরকম কিছু আমরা দেখছি না। বিকালের সেবার কারণে সকালের সেবায় কোনো প্রভাব পড়বে না। সরকারি হাসপাতালে প্রাতিষ্ঠানিক প্র্যাকটিস শুরু হলে মানুষ আরও ভালো সেবা পাবে। যে সেবাটা তারা দিনের বেলায় পেত, সেটি তারা সন্ধ্যা পর্যন্ত পাবে। জরুরি সেবাও তারা হাসপাতাল থেকে পাবে। সার্বিক স্বাস্থ্যসেবার একটি উন্নয়ন হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এ বিষয়ে আন্তরিক। এ সেবা তাড়াতাড়ি চালু করতে তিনি তাগিদ দিয়ে এসেছেন।’
মন্ত্রী বলেন, এ মেয়াদের শুরুতেই সরকারি চিকিৎসকদের প্রাতিষ্ঠানিক প্রাইভেট প্র্যাকটিস শুরু করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা ছিল। তাতে সাধারণ রোগীরা অনেক ভালো সেবা পাবেন। কিন্তু আমাদের গেল দু-তিন বছরে ডেঙ্গি ও করোনার কারণে আমরা এটি শুরু করতে পারিনি। এখন যেহেতু করোনা নিয়ন্ত্রণে আছে, এ বিষয়ে কাজ শুরু করে আমরা মোটামুটি শেষ পর্যায়ে চলে এসেছি। আমরা মার্চেই শুরু করব বলে আপনাদের বলেছিলাম। পাইলট প্রকল্প হিসাবে হলেও আমরা শুরু করব। এখন ৩০ মার্চ থেকে পাইলট প্রকল্প হিসাবে প্রাতিষ্ঠানিক প্র্যাকটিস শুরু করতে যাচ্ছি।
 

যুগান্তর ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন