যুগান্তর সাংবাদিক লাবলুর বিরুদ্ধে ডিজিটাল আইনে মামলা
jugantor
অনুসন্ধানী প্রতিবেদন
যুগান্তর সাংবাদিক লাবলুর বিরুদ্ধে ডিজিটাল আইনে মামলা

  যুগান্তর প্রতিবেদন  

৩১ মার্চ ২০২৩, ০০:০০:০০  |  প্রিন্ট সংস্করণ

বাংলাদেশ রেলওয়ের দুর্নীতি, জায়গা দখল ও টেন্ডার বাণিজ্য নিয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশের জেরে যুগান্তরের বিশেষ প্রতিনিধি মাহবুব আলম লাবলুর বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে।

বুধবার চট্টগ্রামের সাইবার ট্রাইব্যুনালে এই মামলা করেন যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা ও সিআরবিতে সংঘটিত আলোচিত জোড়া খুন মামলার আসামি হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর।

এদিকে লাবলুর বিরুদ্ধে করা মামলাকে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক উল্লেখ করে তা প্রত্যাহারের দাবিতে সোচ্চার সাংবাদিক সমাজ। বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা মামলাটি দ্রুত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন। তারা বলেছেন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, হয়রানিমূলক এ ধরনের মামলা সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যমের ওপর ভয়াবহ হুমকি।

জানা যায়, চট্টগ্রামের সাইবার ট্রাইব্যুনালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলাটি তদন্তের জন্য পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটকে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, ১৩ মার্চ সিআরবি নিয়ে যুগান্তরে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। যেখানে হেলাল আকবর চৌধুরীকে জড়িয়ে তাকে দখলবাজ, টেন্ডারবাজ, চাঁদাবাজ এবং সন্ত্রাসীদের গডফাদার হিসাবে উল্লেখ করা হয়।

পরে সাংবাদিক মাহবুব আলম তার ফেসবুকে সংবাদটি শেয়ার করেন। এদিকে এই মামলা দায়েরের খবর জানাজানি হলে ঢাকা ও চট্টগ্রামের গণমাধ্যমকর্মীরা প্রতিবাদে সোচ্চার হয়ে ওঠেন। তারা সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমে প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে মামলাটি দ্রুত প্রত্যাহারের দাবি জানান।

একই দাবিতে সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা বিবৃতি দিয়েছেন। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) কার্যনির্বাহী কমিটির পক্ষে সভাপতি মুরসালীন নোমানী ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল এক বিবৃতিতে বলেন, ডিআরইউ-এর স্থায়ী সদস্য ও যুগান্তরের বিশেষ প্রতিনিধি মাহবুব আলম লাবলুর বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।

আরও বিবৃতি দিয়েছেন বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র‌্যাব) সভাপতি মির্জা মেহেদী তমাল ও সাধারণ সম্পাদক মামুনূর রশীদ, বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) সভাপতি তপন বিশ্বাস ও সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হক, রিপোর্টার্স অ্যাগেইনস্ট করাপশন (র‌্যাক) সভাপতি আহম্মদ ফয়েজ ও সাধারণ সম্পাদক জেমসন মাহবুব, রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসি (আরএফইডি) সভাপতি সাইদুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক মুকিমুল আহসান হিমেল, এডুকেশন রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের (ইরাব) সভাপতি মীর মোহাম্মদ জমিস ও সাধারণ সম্পাদক ফারুক হোসাইন, এডুকেশন রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ইরাব) সভাপতি অভিজিৎ ভট্টাচার্য ও সাধারণ সম্পাদক আকতারুজ্জামান, শিশুবিষয়ক সাংবাদিকদের নেটওয়ার্কের সভাপতি মাহফুজা জেসমিন ও সাধারণ সম্পাদক শিপন হাবীব।

মামলার বাদী হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তার অপকর্ম নিয়ে আগেও গণমাধ্যমে অনেক সংবাদ প্রচার ও প্রকাশিত হয়েছে। তার অবৈধ সম্পদের খোঁজে দুর্নীতি দমন কমিশনের অনুসন্ধানও চলমান আছে। ব্যাংককে পলাতক থাকা অবস্থায় তিনি সেখানে গ্রেফতারও হয়েছিলেন।

দেশে ফিরে যুবলীগের কমিটিতে পদ বাগিয়ে নিলেও সিআরবির জোড়া খুনের মামলায় জড়িয়ে তিনি দল থেকে বহিষ্কার হন। এর আগে তার বাহিনীর সদস্যদের দিয়ে একাধিক সাংবাদিকের নামে মামলা করিয়েছেন বলে অভিযোগ আছে। ক্ষমতাসীন দলের পরিচয়ে তিনি অপকর্মে জড়িত থাকলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিলেন।

অনুসন্ধানী প্রতিবেদন

যুগান্তর সাংবাদিক লাবলুর বিরুদ্ধে ডিজিটাল আইনে মামলা

 যুগান্তর প্রতিবেদন 
৩১ মার্চ ২০২৩, ১২:০০ এএম  |  প্রিন্ট সংস্করণ

বাংলাদেশ রেলওয়ের দুর্নীতি, জায়গা দখল ও টেন্ডার বাণিজ্য নিয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশের জেরে যুগান্তরের বিশেষ প্রতিনিধি মাহবুব আলম লাবলুর বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে।

বুধবার চট্টগ্রামের সাইবার ট্রাইব্যুনালে এই মামলা করেন যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা ও সিআরবিতে সংঘটিত আলোচিত জোড়া খুন মামলার আসামি হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর।

এদিকে লাবলুর বিরুদ্ধে করা মামলাকে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক উল্লেখ করে তা প্রত্যাহারের দাবিতে সোচ্চার সাংবাদিক সমাজ। বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা মামলাটি দ্রুত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন। তারা বলেছেন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, হয়রানিমূলক এ ধরনের মামলা সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যমের ওপর ভয়াবহ হুমকি।

জানা যায়, চট্টগ্রামের সাইবার ট্রাইব্যুনালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলাটি তদন্তের জন্য পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটকে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, ১৩ মার্চ সিআরবি নিয়ে যুগান্তরে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। যেখানে হেলাল আকবর চৌধুরীকে জড়িয়ে তাকে দখলবাজ, টেন্ডারবাজ, চাঁদাবাজ এবং সন্ত্রাসীদের গডফাদার হিসাবে উল্লেখ করা হয়।

পরে সাংবাদিক মাহবুব আলম তার ফেসবুকে সংবাদটি শেয়ার করেন। এদিকে এই মামলা দায়েরের খবর জানাজানি হলে ঢাকা ও চট্টগ্রামের গণমাধ্যমকর্মীরা প্রতিবাদে সোচ্চার হয়ে ওঠেন। তারা সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমে প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে মামলাটি দ্রুত প্রত্যাহারের দাবি জানান।

একই দাবিতে সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা বিবৃতি দিয়েছেন। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) কার্যনির্বাহী কমিটির পক্ষে সভাপতি মুরসালীন নোমানী ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল এক বিবৃতিতে বলেন, ডিআরইউ-এর স্থায়ী সদস্য ও যুগান্তরের বিশেষ প্রতিনিধি মাহবুব আলম লাবলুর বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।

আরও বিবৃতি দিয়েছেন বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র‌্যাব) সভাপতি মির্জা মেহেদী তমাল ও সাধারণ সম্পাদক মামুনূর রশীদ, বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) সভাপতি তপন বিশ্বাস ও সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হক, রিপোর্টার্স অ্যাগেইনস্ট করাপশন (র‌্যাক) সভাপতি আহম্মদ ফয়েজ ও সাধারণ সম্পাদক জেমসন মাহবুব, রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসি (আরএফইডি) সভাপতি সাইদুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক মুকিমুল আহসান হিমেল, এডুকেশন রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের (ইরাব) সভাপতি মীর মোহাম্মদ জমিস ও সাধারণ সম্পাদক ফারুক হোসাইন, এডুকেশন রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ইরাব) সভাপতি অভিজিৎ ভট্টাচার্য ও সাধারণ সম্পাদক আকতারুজ্জামান, শিশুবিষয়ক সাংবাদিকদের নেটওয়ার্কের সভাপতি মাহফুজা জেসমিন ও সাধারণ সম্পাদক শিপন হাবীব।

মামলার বাদী হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তার অপকর্ম নিয়ে আগেও গণমাধ্যমে অনেক সংবাদ প্রচার ও প্রকাশিত হয়েছে। তার অবৈধ সম্পদের খোঁজে দুর্নীতি দমন কমিশনের অনুসন্ধানও চলমান আছে। ব্যাংককে পলাতক থাকা অবস্থায় তিনি সেখানে গ্রেফতারও হয়েছিলেন।

দেশে ফিরে যুবলীগের কমিটিতে পদ বাগিয়ে নিলেও সিআরবির জোড়া খুনের মামলায় জড়িয়ে তিনি দল থেকে বহিষ্কার হন। এর আগে তার বাহিনীর সদস্যদের দিয়ে একাধিক সাংবাদিকের নামে মামলা করিয়েছেন বলে অভিযোগ আছে। ক্ষমতাসীন দলের পরিচয়ে তিনি অপকর্মে জড়িত থাকলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিলেন।

যুগান্তর ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন