এলসির দেনা পরিশোধ
সপ্তাহে রিজার্ভ কমেছে ৯ কোটি ৭০ লাখ ডলার
দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ অব্যাহত গতিতে কমছে। বড় অঙ্কের বৈদেশিক ঋণ পেলে সামান্য বাড়লেও তা ধরে রাখা সম্ভব হচ্ছে না। বৈদেশিক ঋণ ও এলসির দেনা পরিশোধ করতে গেলেই রিজার্ভ কমে যাচ্ছে।
চলতি জুনের এক সপ্তাহে রিজার্ভ কমেছে ৯ কোটি ৭০ লাখ ডলার। বৃহস্পতিবার দিনের শুরুতে রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ৯৭৭ কোটি ৬৯ লাখ ডলার। জুনের শুরুতে রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ৯৮৭ কোটি ৩৯ লাখ ডলার। গত ৩০ এপ্রিল রিজার্ভ ছিল ৩ হাজার ৯৬ কোটি ৫২ লাখ ডলার। এক মাস এক সপ্তাহের ব্যবধানে কমেছে ১১৮ কোটি ডলার।
সূত্র জানায়, সাম্প্রতিক সময়ে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে গেছে। রপ্তানি সামান্য বাড়লেও লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় কম। ফলে দেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয় কমে গেছে। অন্যদিকে বৈদেশিক মুদ্রার খরচ বেড়ে গেছে। এসব কারণে রিজার্ভ কমছে।
আগে রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স দিয়ে আমদানি ব্যয় মিটিয়ে কিছু ডলার উদ্বৃত্ত থাকত। কিছুদিন আগে এতে ঘাটতি হয়েছে। এখন সমান হলেও বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ ও অন্যান্য খাতে বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করতে গিয়ে ঘাটতি হচ্ছে। রিজার্ভ ধরে রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক আমদানিতে কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে। এখন ডলার ছাড়া এলসি খোলা যাচ্ছে না।
ব্যাংকগুলোও চাহিদা অনুযায়ী ডলারের জোগান দিতে পারছে না। ফলে ডলারের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে হাত পাতছে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো। কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ ধরে রাখতে ডলার বিক্রি কমিয়ে দিয়েছে। এতে ব্যাংকগুলো আরও বিপাকে পড়েছে। তারা আমদানির দায় ও বৈদেশিক ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে পারছে না।
এদিকে এলসি খোলাও কমিয়ে দিয়েছে। ডলার সংকটের কারণে জ্বালানি তেল, গ্যাস আমদানি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এতে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে যাওয়ায় লোডশেডিংয়ের মাত্রা মারাত্মকভাবে বেড়ে গেছে। ফলে শিল্প খাতে নেতিবাচক প্রভাব দীর্ঘায়িত হচ্ছে।
গত এক বছর আগে রিজার্ভ ছিল ৪ হাজার ১৭৫ কোটি ডলার। এক বছরের হিসাবে রিজার্ভ কমেছে ১ হাজার ১৯৭ কোটি ডলার। বাংলাদেশের ইতিহাসে ২০২১ সালের আগস্টে রিজার্ভ সর্বোচ্চ ৪ হাজার ৮০৬ কোটি ডলারে উঠেছিল। এরপর থেকে তা কমছে। এখনও কমার গতি অব্যাহত রয়েছে।
আগামী জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) দেনা বাবদ ১১৮ কোটি ডলারের বেশি পরিশোধ করতে হবে। তখন রিজার্ভ আরও কমে যাবে।
এদিকে জুলাইয়ে আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী নিট রিজার্ভের হিসাব প্রকাশ করতে হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওই সময়ে রিজার্ভের গ্রস হিসাবের পাশাপাশি নিট হিসাবও প্রকাশ করবে। তখন নিট রিজার্ভ আরও কমে যাবে।
কেননা গ্রস রিজার্ভ থেকে বিভিন্ন তহবিলে বরাদ্দ অর্থ বাদ দিতে হবে। এর মধ্যে রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলের আকার ৭০০ কোটি ডলার থেকে কমিয়ে ৪৬০ কোটি ডলারে নামিয়ে এনেছে। ফলে বর্তমানে নিট রিজার্ভ হচ্ছে ২ হাজার ৫১৮ কোটি ডলার। আকুর দেনা শোধ করলে নিট রিজার্ভ ২ হাজার ৪০০ কোটি ডলারে নেমে আসতে পারে। ওই পর্যায়ে রিজার্ভ ধরে রাখতে চাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
সপ্তাহে রিজার্ভ কমেছে ৯ কোটি ৭০ লাখ ডলার
এলসির দেনা পরিশোধ
যুগান্তর প্রতিবেদন
০৯ জুন ২০২৩, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ অব্যাহত গতিতে কমছে। বড় অঙ্কের বৈদেশিক ঋণ পেলে সামান্য বাড়লেও তা ধরে রাখা সম্ভব হচ্ছে না। বৈদেশিক ঋণ ও এলসির দেনা পরিশোধ করতে গেলেই রিজার্ভ কমে যাচ্ছে।
চলতি জুনের এক সপ্তাহে রিজার্ভ কমেছে ৯ কোটি ৭০ লাখ ডলার। বৃহস্পতিবার দিনের শুরুতে রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ৯৭৭ কোটি ৬৯ লাখ ডলার। জুনের শুরুতে রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ৯৮৭ কোটি ৩৯ লাখ ডলার। গত ৩০ এপ্রিল রিজার্ভ ছিল ৩ হাজার ৯৬ কোটি ৫২ লাখ ডলার। এক মাস এক সপ্তাহের ব্যবধানে কমেছে ১১৮ কোটি ডলার।
সূত্র জানায়, সাম্প্রতিক সময়ে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে গেছে। রপ্তানি সামান্য বাড়লেও লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় কম। ফলে দেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয় কমে গেছে। অন্যদিকে বৈদেশিক মুদ্রার খরচ বেড়ে গেছে। এসব কারণে রিজার্ভ কমছে।
আগে রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স দিয়ে আমদানি ব্যয় মিটিয়ে কিছু ডলার উদ্বৃত্ত থাকত। কিছুদিন আগে এতে ঘাটতি হয়েছে। এখন সমান হলেও বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ ও অন্যান্য খাতে বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করতে গিয়ে ঘাটতি হচ্ছে। রিজার্ভ ধরে রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক আমদানিতে কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে। এখন ডলার ছাড়া এলসি খোলা যাচ্ছে না।
ব্যাংকগুলোও চাহিদা অনুযায়ী ডলারের জোগান দিতে পারছে না। ফলে ডলারের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে হাত পাতছে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো। কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ ধরে রাখতে ডলার বিক্রি কমিয়ে দিয়েছে। এতে ব্যাংকগুলো আরও বিপাকে পড়েছে। তারা আমদানির দায় ও বৈদেশিক ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে পারছে না।
এদিকে এলসি খোলাও কমিয়ে দিয়েছে। ডলার সংকটের কারণে জ্বালানি তেল, গ্যাস আমদানি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এতে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে যাওয়ায় লোডশেডিংয়ের মাত্রা মারাত্মকভাবে বেড়ে গেছে। ফলে শিল্প খাতে নেতিবাচক প্রভাব দীর্ঘায়িত হচ্ছে।
গত এক বছর আগে রিজার্ভ ছিল ৪ হাজার ১৭৫ কোটি ডলার। এক বছরের হিসাবে রিজার্ভ কমেছে ১ হাজার ১৯৭ কোটি ডলার। বাংলাদেশের ইতিহাসে ২০২১ সালের আগস্টে রিজার্ভ সর্বোচ্চ ৪ হাজার ৮০৬ কোটি ডলারে উঠেছিল। এরপর থেকে তা কমছে। এখনও কমার গতি অব্যাহত রয়েছে।
আগামী জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) দেনা বাবদ ১১৮ কোটি ডলারের বেশি পরিশোধ করতে হবে। তখন রিজার্ভ আরও কমে যাবে।
এদিকে জুলাইয়ে আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী নিট রিজার্ভের হিসাব প্রকাশ করতে হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওই সময়ে রিজার্ভের গ্রস হিসাবের পাশাপাশি নিট হিসাবও প্রকাশ করবে। তখন নিট রিজার্ভ আরও কমে যাবে।
কেননা গ্রস রিজার্ভ থেকে বিভিন্ন তহবিলে বরাদ্দ অর্থ বাদ দিতে হবে। এর মধ্যে রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলের আকার ৭০০ কোটি ডলার থেকে কমিয়ে ৪৬০ কোটি ডলারে নামিয়ে এনেছে। ফলে বর্তমানে নিট রিজার্ভ হচ্ছে ২ হাজার ৫১৮ কোটি ডলার। আকুর দেনা শোধ করলে নিট রিজার্ভ ২ হাজার ৪০০ কোটি ডলারে নেমে আসতে পারে। ওই পর্যায়ে রিজার্ভ ধরে রাখতে চাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by The Daily Jugantor © 2023