ঝুঁকিপূর্ণ গাছ, মরা ডাল দেখার কেউ নেই
রাজধানীর ব্যস্ততম রমনা-কাকরাইল রোডের ফুটপাত-সড়ক ঘিরে বিশাল গাছটি হেলে আছে। ৪-৫ ফুট গোলাকার গাছটির নিচের অংশ একবারেই নড়বড়ে। গর্ত হয়ে আছে বেশ কয়েকটি।
গর্ত ভেদ করে এপাশ-ওপাশ দেখা যাচ্ছে। যে কোনো সময় গাছটি ভেঙে কিংবা উপড়ে পড়তে পারে। গাছটি পড়া মানেই মানুষ হতাহত হবে-এমনটা বলছেন সাধারণ পথচারীরাও।
রাজধানীজুড়ে এরকম অসংখ্য ছোট-বড় গাছ, গাছের শুকনো ডাল বিপজ্জনকভাবে ঝুলে আছে। দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকা সত্ত্বেও গাছ বা ডাল কাটার কোনো বন্দোবস্ত করতে পারেনি প্রশাসন। এমনটা সারা বাংলাদেশেই চলছে। প্রতিবছর অনেক মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন। ঝড়-তুফান, বৃষ্টি-বাদল বৃদ্ধির সঙ্গে এমন দুর্ঘটনা, হতাহতের সংখ্যা বাড়ছে।
এমন তথ্যের পাশাপাশি গবেষণায় উঠে এসেছে, রাজধানীতে ৯০ প্রজাতির গাছের মধ্যে ৫৬ শতাংশ বিদেশি। বিদেশি বড় গাছ এবং এর অংশবিশেষ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে।
রাজধানীতে বিপজ্জনকভাবে দাঁড়িয়ে থাকা মরা, পুরোনো, নড়বড়ে গাছ চিহ্নিত করা হচ্ছে না। অপসারণের যথাযথ উদ্যোগও নেই। হেলে পড়া, উপড়ে পড়া, নড়বড়ে কিংবা মরা গাছ কাটার দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের। কিন্তু দায়িত্বটি পালনে এদের আলাদা কোনো ব্যবস্থা নেই। জনবলও নেই।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সিটি করপোরেশন, বিদ্যুৎ ও পল্লী বিদ্যুৎ, পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষসহ (ওয়াসা) বিভিন্ন সেবামূলক সংস্থা নানা সময় মাসের পর মাস সড়ক খোঁড়াখুঁড়ি করে। তাছাড়া ফুটপাতজুড়ে যেসব গাছ থাকে সেখানেও মাটি কেটে পথ বাড়ানো হয়।
এসব খোঁড়াখুঁড়িতে অধিকাংশ সড়ক-ফুটপাতের পাশে লাগানো বড় হওয়া গাছের শিকড় কাটা পড়ছে। শিকড় কোনো অবস্থাতেই বিস্তৃত হতে না পারায় গাছগুলো মাটির ওপর কোনোমতে দাঁড়িয়ে থাকে। ফলে বড় কোনো ঝড়-তুফান ছাড়াও অল্প বৃষ্টি হলেই গাছের মরা ডাল কিংবা পুরো গাছটাই রাস্তায় হেলে পড়ছে।
তথ্য বলছে, প্রায়ই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ (ঢাবি) রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে গাছের ডাল পড়ে বা গাছ উপড়ে পড়ে মানুষের প্রাণ যাচ্ছে। অনেকে গুরুতর আহত হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করছে। আর যানবাহনের ক্ষয়ক্ষতি তো হচ্ছেই। ৭ সেপ্টেম্বর ঢাবির টিএসসি চত্বরে গাছের ডাল ভেঙে শফিকুল ইসলাম (৪৫) নামের এক রিকশাচালক নিহত হন।
এর আগে ২০১৮ সালের ৮ জুন বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ডাল পড়ে ফারুক হোসেন (৫০) নামের এক ব্যক্তি প্রাণ হারান। ২০১৯ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি বাংলা একাডেমির সামনে গাছ হেলে পড়ে মিতু ঘোষ নামের এক নারী নিহত হন।
ওই দুর্ঘটনায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরদিন শাহেরা খাতুন স্বপ্না নামের আরও একজন নারীর মৃত্যু হয়। দুর্ঘটনায় আহত হন ৩ জন। ডাল পড়ে ২০২১ সালে নজরুল মোল্লা (৫৬) এবং ২০২২ সালে সানি (২৫) নামের ব্যক্তি মারা যান। ২০১৬ সালের ৭ মার্চ রাজধানীর ধানমন্ডিতে গাছ চাপা পড়ে নিহত হন চিত্রশিল্পী ও চলচ্চিত্রকার খালিদ মাহমুদ মিঠু (৫৬)।
রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা গেছে, রাস্তার দুপাশে বিশাল আকারের বিদেশি গাছ দাঁড়িয়ে রয়েছে। রমনা, শাহবাগ, শাহজাহানপুর, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, জসীমউদ্দীন রোড, ওয়ারী, বুয়েট, পলাশি, আজিমপুর, ধানমন্ডিসহ বিভিন্ন এলাকায় সড়কের দুপাশে বিশাল আকৃতির গাছ রয়েছে। কিছু গাছ রাস্তার দুপাশ পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।
ঢাবির শিক্ষার্থী জান্নাত ফারিয়া মম এ প্রতিবেদককে বলেন, আমার ওপরও ডাল পড়েছে। আহত হয়েছি-তবে বেশি নয়। এখন স্বাভাবিক সময়েও বড় ডালওয়ালা গাছের নিচ দিয়ে হাঁটতে ভয় হয়। এমন কোনো বড় গাছ নেই, যেটায় মরা ডাল ঝুলে নেই।
ঢাবির উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক, গবেষক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন জানান, ঢাবি, রাজধানীর সড়কসহ বিভিন্ন এলাকায় থাকা গাছ নিয়ে ২০২০-২০২১ সালে ‘ঢাকা শহরের সড়কদ্বীপের উদ্ভিদ প্রজাতির বৈচিত্র্য মূল্যায়ন’ নামে একটি গবেষণা জরিপ করা হয়।
তিনি ওই গবেষণা জরিপের প্রধান ছিলেন। গবেষণায় ৯০ প্রজাতির গাছ পাওয়া যায়। এসব গাছের মধ্যে ৫৬ শতাংশ বিদেশি এবং ৪৪ শতাংশ দেশীয় গাছ রয়েছে।
ড. জসীম উদ্দিন আরও বলেন, দেশীয় গাছগুলো নামেমাত্র রয়েছে। বিদেশি গাছগুলো এতই বড় যে, এগুলো শহরে থাকা মানেই ঝুঁকির। কাঠ কিংবা জ্বালানি কাঠের জন্য এসব গাছ ব্যবহৃত হয়। তিনি বলেন, গবেষণায় উঠে আসে তথ্যগুলো খুবই দুঃখজনক। কারণ গাছ লাগানো হচ্ছে কিন্তু পরিচর্যা করা হচ্ছে না। ঝুঁকির গাছগুলো চিহ্নিত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া খুবই জরুরি। না হলে দুর্ঘটনা বাড়বে। ঢাবি এলাকায় গাছগুলো বহু পুরোনো। এসব গাছের সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ খুবই জরুরি। শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা ভাবতে হবে। একই সঙ্গে সমগ্র বাংলাদেশেও গাছের রক্ষণাবেক্ষণে দায়িত্বশীল হতে হবে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও নগরবিদ ইকবাল হাবিব যুগান্তরকে বলেন, সিটি করপোরেশন কিংবা দায়িত্বশীল সংস্থাগুলো সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে ভাবছে না। ১৫-১৬ বছর আগ পর্যন্ত ঢাকা শহরের গাছগুলো পিডব্লিউডির অধীনে ছিল। কিন্তু ১৫ বছর আগে এ দায়িত্ব সিটি করপোরেশনকে দেওয়া হয়। এখনও সিটি করপোরেশন বাস্তবসম্মত এবং মাঠপর্যায়ে কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেয়নি।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ সিরাজুল ইসলাম বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ গাছ কাটতে বা ছাঁটতে গেলেই পরিবেশবিদদের আন্দোলন শুরু হয়। রাস্তার মাঝখানে বড় গাছ লাগানো হচ্ছে। রাস্তার দুপাশে বড় বড় গাছ। নানা কারণে এগুলো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। সড়কদ্বীপ বা সড়কের দুপাশে দেশীয় ছোট ফলফুলের গাছ লাগানো উচিত। কাঠজাতীয় কিংবা বিশাল আকৃতির গাছ লাগালে একসময় তা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে।
দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (পরিবেশ ও জলবায়ু ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সার্কেল) খায়রুল বাকের বলেন, মরা গাছ কিংবা ঝুঁকিপূর্ণ গাছ কাটার এখতিয়ার দুটি সিটি করপোরেশনেরই নেই। কোনো গাছ হেলে আছে, কোনোটার ডাল ঝুলে আছে-সেগুলো শনাক্ত করার কোনো কার্যকর ব্যবস্থাও নেই। তবে চলতি বছরের শুরুর দিকে এমন বিষয়গুলোকে চিহ্নিত করতে একটি দপ্তর করা হয়েছে। আশা করি আমরা কাজ করতে পারব।
ঝুঁকিপূর্ণ গাছ, মরা ডাল দেখার কেউ নেই
শিপন হাবীব
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
রাজধানীর ব্যস্ততম রমনা-কাকরাইল রোডের ফুটপাত-সড়ক ঘিরে বিশাল গাছটি হেলে আছে। ৪-৫ ফুট গোলাকার গাছটির নিচের অংশ একবারেই নড়বড়ে। গর্ত হয়ে আছে বেশ কয়েকটি।
গর্ত ভেদ করে এপাশ-ওপাশ দেখা যাচ্ছে। যে কোনো সময় গাছটি ভেঙে কিংবা উপড়ে পড়তে পারে। গাছটি পড়া মানেই মানুষ হতাহত হবে-এমনটা বলছেন সাধারণ পথচারীরাও।
রাজধানীজুড়ে এরকম অসংখ্য ছোট-বড় গাছ, গাছের শুকনো ডাল বিপজ্জনকভাবে ঝুলে আছে। দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকা সত্ত্বেও গাছ বা ডাল কাটার কোনো বন্দোবস্ত করতে পারেনি প্রশাসন। এমনটা সারা বাংলাদেশেই চলছে। প্রতিবছর অনেক মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন। ঝড়-তুফান, বৃষ্টি-বাদল বৃদ্ধির সঙ্গে এমন দুর্ঘটনা, হতাহতের সংখ্যা বাড়ছে।
এমন তথ্যের পাশাপাশি গবেষণায় উঠে এসেছে, রাজধানীতে ৯০ প্রজাতির গাছের মধ্যে ৫৬ শতাংশ বিদেশি। বিদেশি বড় গাছ এবং এর অংশবিশেষ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে।
রাজধানীতে বিপজ্জনকভাবে দাঁড়িয়ে থাকা মরা, পুরোনো, নড়বড়ে গাছ চিহ্নিত করা হচ্ছে না। অপসারণের যথাযথ উদ্যোগও নেই। হেলে পড়া, উপড়ে পড়া, নড়বড়ে কিংবা মরা গাছ কাটার দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের। কিন্তু দায়িত্বটি পালনে এদের আলাদা কোনো ব্যবস্থা নেই। জনবলও নেই।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সিটি করপোরেশন, বিদ্যুৎ ও পল্লী বিদ্যুৎ, পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষসহ (ওয়াসা) বিভিন্ন সেবামূলক সংস্থা নানা সময় মাসের পর মাস সড়ক খোঁড়াখুঁড়ি করে। তাছাড়া ফুটপাতজুড়ে যেসব গাছ থাকে সেখানেও মাটি কেটে পথ বাড়ানো হয়।
এসব খোঁড়াখুঁড়িতে অধিকাংশ সড়ক-ফুটপাতের পাশে লাগানো বড় হওয়া গাছের শিকড় কাটা পড়ছে। শিকড় কোনো অবস্থাতেই বিস্তৃত হতে না পারায় গাছগুলো মাটির ওপর কোনোমতে দাঁড়িয়ে থাকে। ফলে বড় কোনো ঝড়-তুফান ছাড়াও অল্প বৃষ্টি হলেই গাছের মরা ডাল কিংবা পুরো গাছটাই রাস্তায় হেলে পড়ছে।
তথ্য বলছে, প্রায়ই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ (ঢাবি) রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে গাছের ডাল পড়ে বা গাছ উপড়ে পড়ে মানুষের প্রাণ যাচ্ছে। অনেকে গুরুতর আহত হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করছে। আর যানবাহনের ক্ষয়ক্ষতি তো হচ্ছেই। ৭ সেপ্টেম্বর ঢাবির টিএসসি চত্বরে গাছের ডাল ভেঙে শফিকুল ইসলাম (৪৫) নামের এক রিকশাচালক নিহত হন।
এর আগে ২০১৮ সালের ৮ জুন বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ডাল পড়ে ফারুক হোসেন (৫০) নামের এক ব্যক্তি প্রাণ হারান। ২০১৯ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি বাংলা একাডেমির সামনে গাছ হেলে পড়ে মিতু ঘোষ নামের এক নারী নিহত হন।
ওই দুর্ঘটনায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরদিন শাহেরা খাতুন স্বপ্না নামের আরও একজন নারীর মৃত্যু হয়। দুর্ঘটনায় আহত হন ৩ জন। ডাল পড়ে ২০২১ সালে নজরুল মোল্লা (৫৬) এবং ২০২২ সালে সানি (২৫) নামের ব্যক্তি মারা যান। ২০১৬ সালের ৭ মার্চ রাজধানীর ধানমন্ডিতে গাছ চাপা পড়ে নিহত হন চিত্রশিল্পী ও চলচ্চিত্রকার খালিদ মাহমুদ মিঠু (৫৬)।
রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা গেছে, রাস্তার দুপাশে বিশাল আকারের বিদেশি গাছ দাঁড়িয়ে রয়েছে। রমনা, শাহবাগ, শাহজাহানপুর, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, জসীমউদ্দীন রোড, ওয়ারী, বুয়েট, পলাশি, আজিমপুর, ধানমন্ডিসহ বিভিন্ন এলাকায় সড়কের দুপাশে বিশাল আকৃতির গাছ রয়েছে। কিছু গাছ রাস্তার দুপাশ পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।
ঢাবির শিক্ষার্থী জান্নাত ফারিয়া মম এ প্রতিবেদককে বলেন, আমার ওপরও ডাল পড়েছে। আহত হয়েছি-তবে বেশি নয়। এখন স্বাভাবিক সময়েও বড় ডালওয়ালা গাছের নিচ দিয়ে হাঁটতে ভয় হয়। এমন কোনো বড় গাছ নেই, যেটায় মরা ডাল ঝুলে নেই।
ঢাবির উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক, গবেষক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন জানান, ঢাবি, রাজধানীর সড়কসহ বিভিন্ন এলাকায় থাকা গাছ নিয়ে ২০২০-২০২১ সালে ‘ঢাকা শহরের সড়কদ্বীপের উদ্ভিদ প্রজাতির বৈচিত্র্য মূল্যায়ন’ নামে একটি গবেষণা জরিপ করা হয়।
তিনি ওই গবেষণা জরিপের প্রধান ছিলেন। গবেষণায় ৯০ প্রজাতির গাছ পাওয়া যায়। এসব গাছের মধ্যে ৫৬ শতাংশ বিদেশি এবং ৪৪ শতাংশ দেশীয় গাছ রয়েছে।
ড. জসীম উদ্দিন আরও বলেন, দেশীয় গাছগুলো নামেমাত্র রয়েছে। বিদেশি গাছগুলো এতই বড় যে, এগুলো শহরে থাকা মানেই ঝুঁকির। কাঠ কিংবা জ্বালানি কাঠের জন্য এসব গাছ ব্যবহৃত হয়। তিনি বলেন, গবেষণায় উঠে আসে তথ্যগুলো খুবই দুঃখজনক। কারণ গাছ লাগানো হচ্ছে কিন্তু পরিচর্যা করা হচ্ছে না। ঝুঁকির গাছগুলো চিহ্নিত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া খুবই জরুরি। না হলে দুর্ঘটনা বাড়বে। ঢাবি এলাকায় গাছগুলো বহু পুরোনো। এসব গাছের সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ খুবই জরুরি। শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা ভাবতে হবে। একই সঙ্গে সমগ্র বাংলাদেশেও গাছের রক্ষণাবেক্ষণে দায়িত্বশীল হতে হবে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও নগরবিদ ইকবাল হাবিব যুগান্তরকে বলেন, সিটি করপোরেশন কিংবা দায়িত্বশীল সংস্থাগুলো সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে ভাবছে না। ১৫-১৬ বছর আগ পর্যন্ত ঢাকা শহরের গাছগুলো পিডব্লিউডির অধীনে ছিল। কিন্তু ১৫ বছর আগে এ দায়িত্ব সিটি করপোরেশনকে দেওয়া হয়। এখনও সিটি করপোরেশন বাস্তবসম্মত এবং মাঠপর্যায়ে কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেয়নি।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ সিরাজুল ইসলাম বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ গাছ কাটতে বা ছাঁটতে গেলেই পরিবেশবিদদের আন্দোলন শুরু হয়। রাস্তার মাঝখানে বড় গাছ লাগানো হচ্ছে। রাস্তার দুপাশে বড় বড় গাছ। নানা কারণে এগুলো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। সড়কদ্বীপ বা সড়কের দুপাশে দেশীয় ছোট ফলফুলের গাছ লাগানো উচিত। কাঠজাতীয় কিংবা বিশাল আকৃতির গাছ লাগালে একসময় তা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে।
দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (পরিবেশ ও জলবায়ু ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সার্কেল) খায়রুল বাকের বলেন, মরা গাছ কিংবা ঝুঁকিপূর্ণ গাছ কাটার এখতিয়ার দুটি সিটি করপোরেশনেরই নেই। কোনো গাছ হেলে আছে, কোনোটার ডাল ঝুলে আছে-সেগুলো শনাক্ত করার কোনো কার্যকর ব্যবস্থাও নেই। তবে চলতি বছরের শুরুর দিকে এমন বিষয়গুলোকে চিহ্নিত করতে একটি দপ্তর করা হয়েছে। আশা করি আমরা কাজ করতে পারব।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by The Daily Jugantor © 2023