জামিন পেলেন ৪২ শিক্ষার্থী
jugantor
নিরাপদ সড়ক দাবিতে আন্দোলন
জামিন পেলেন ৪২ শিক্ষার্থী
কারাগার থেকে ৯ জনের মুক্তি * আদালত প্রাঙ্গণ ও জেল গেটে আবেগঘন পরিবেশ * কোটা সংস্কার আন্দোলনে কারাবন্দি ১৩ জনের জামিন শুনানি ২৭ আগস্ট

  যুগান্তর রিপোর্ট  

২০ আগস্ট ২০১৮, ০০:০০:০০  |  প্রিন্ট সংস্করণ

গ্রেফতারের পর থেকে মুখে হাসি ছিল না তাদের। হৃদয়ে রক্তক্ষরণ আর অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে দিন কাটছিল। সন্তান ও স্বজনের মুক্তি এবং খোঁজখবরে আদালত আর কারাগার ঘুরেই দিন কাটে। রোববার একের পর এক জামিনের খবরে বেদনাহত মুখে আসে হাসি। একেকটি জামিন আদেশের পর কেঁদে উঠছিলেন নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের মামলায় কারাগারে থাকা শিক্ষার্থীদের কারও ভাই-বোন, কারও মা অথবা বাবা। সেই আনন্দাশ্রু স্পর্শ করে অন্য মামলার কাজে আসা মানুষদেরও। ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত এবং সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেট আদালতগুলোয় রোববার এমন দৃশ্যের অবতারণা হয় অন্তত ৯ বার। বিভিন্ন মামলায় এ দিন মোট ৪২ শিক্ষার্থী জামিন পান।
শিক্ষার্থীদের মুক্তি নিয়ে স্বজনরা এতটাই অধীর ছিলেন যে, কারও কারও অভিভাবক দ্রুততার সঙ্গে জামিন আদেশ কারাগারে পৌঁছানোর সব চেষ্টাই করেন। রাত ৭টা ২০ মিনিট পর্যন্ত ৯ শিক্ষার্থীর মুক্তির খবর পাওয়া গেছে। শিক্ষার্থীরা যখন একে একে বেরিয়ে আসছিলেন, তখন জেল গেটে সৃষ্টি হয় আবেগঘন পরিবেশ। তারা স্বজনের বুকে মাথা রেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন। স্বজনদের প্রত্যাশা, বাকিরাও আজকের মধ্যে মুক্তি পাবেন। কারা কর্তৃপক্ষও একই কথা বলেছেন। ঈদের আগে শিক্ষার্থীদের জামিন মেলায় শুধু তাদের স্বজনরাই নন, তাদের শিক্ষক-সহপাঠী এবং পরিচিতজনের মধ্যেও স্বস্তি নেমে এসেছে। বাকিদেরও আজ জামিন হবে বলে প্রত্যাশা পরিবারের সদস্যদের।
বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ড. অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়কের আন্দোলন ছিল যৌক্তিক। ওটা কোনো রাজনৈতিক আন্দোলন ছিল না। তারা কোনো ভাংচুর বা অন্য অপরাধ করেনি। বরং হেলমেট পরা কিছু ব্যক্তি ওইসব শিক্ষার্থীর ওপর হামলা করেছে। পুলিশের উচিত ছিল, হামলাকারীদের গ্রেফতার করা। সেটা না করে নিরীহ শিক্ষার্থীদের গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারই আমাদের কাছে অগ্রহণযোগ্য ছিল। পরে দেখা গেল, ছাত্রছাত্রীদের কারাগারেও পাঠানো হল। আমি মনে করি, জামিন দেয়া হয়েছে ভালো, প্রত্যেককেই জামিন দিতে হবে। কাউকে আর হয়রানি করা যাবে না।
শিক্ষার্থীদের জামিনের সার্বিক বিষয় পর্যবেক্ষণে রোববার দুপুরে নিম্ন আদালতে ছুটে যান ড. কামাল হোসেন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ও ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেন। এ সময় তারা আদালতের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কোটা সংস্কার আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের মামলার ব্যাপারেও খোঁজখবর নেন। ওই আন্দোলনে পুলিশের চারটি মামলা আছে। তাতে ১৩ জন কারাগারে আছেন। তাদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ জন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ জন এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী। ওই আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. আতাউল্লাহ জানান, কয়েকদিন আগে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২৭ আগস্ট তাদের জামিন শুনানির দিন ধার্য আছে।
ছাত্রদের জামিন আদেশের পর ড. কামাল হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ওদের পাওয়াটা ছিল যৌক্তিক দাবি। তারা অপরাধের সঙ্গে জড়িত নয়। যাদের জামিন এখনও হয়নি, আশা করছি শিগগিরই তাদেরও জামিন হবে। ছাত্রদের জামিন পাওয়া আমরা খুশি। ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেন বলেন, এরা আমাদেরই সন্তান। তাদের আন্দোলন সরকারবিরোধী ছিল না। সরকারবিরোধী কোনো স্লোগানও দেয়নি। ছাত্রদের জামিন দেয়ায় সরকারের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে। একইভাবে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীও ছাত্রদের জামিনের বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
এদিকে কিছু শিক্ষার্থীর জামিনে মুক্তি এবং বাকিদের জামিনের আশা জাগলেও বিভিন্ন মামলার আসামি এমনকি আন্দোলনে যাওয়া শিক্ষার্থীদের পরিবারের সদস্যদের মনে শান্তি নেই। অনেকেই বলেছেন, নিরাপদ সড়ক চাই এবং কোটা সংস্কার দাবিতে গড়ে ওঠা দুটি আন্দোলন নিয়েই পুলিশের তদন্ত চলছে। জামিন হলেও মামলা ঝুলে আছে। মামলাগুলোর বেশিরভাগ আসামি অজ্ঞাত। এছাড়া গ্রেফতার প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে। যেভাবে গ্রামের বাড়ি থেকে বা হল গেট থেকে ছাত্রীদের পর্যন্ত গ্রেফতার করা হচ্ছে, তাই কবে কাকে পুলিশ তুলে নিয়ে যায়, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। তাই আন্দোলনে যাওয়া প্রায় প্রত্যেক শিক্ষার্থীর অভিভাবকই উদ্বেগে আছেন। ঘটনার ১৩ দিন পর খুলনায় মামলা দায়ের এবং গ্রেফতারের ঘটনায় উদ্বেগ বেশি ছড়িয়েছে। এ নিয়ে একধরনের আতঙ্ক কাজ করছে তাদের মনে। এমনকি আন্দোলন নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়া বা ছবি শেয়ার করা মানুষের মনেও উৎকণ্ঠার শেষ নেই।
তবে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের অতিরিক্ত উপকমিশনার নাজমুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের উদ্বেগের কারণ নেই। কেননা শিশুদের নিরাপদ সড়কের দাবির সঙ্গে সরকার একমত। দাবি বাস্তবায়নের কাজও শুরু হয়েছে। মানুষের মধ্যে ট্রাফিক নিয়ে সচেতনতাও বেড়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের ফেসবুক পুলিশ নজরদারি করছে না। এমনকি যারা আবেগের বশে না বুঝে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নিয়ে ফেসবুকে বিভিন্ন তথ্য শেয়ার করেছে, তাদের আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করে বুঝিয়ে ছেড়ে দিচ্ছি। তবে যারা সচেতনভাবে জেনে-বুঝে আন্দোলনকে সহিংস করার জন্য মিথ্যা তথ্য দিয়ে গুজব ছড়িয়েছে এবং উসকানি দিয়েছে, তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে।
যদিও পুলিশের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে যুগান্তরকে জানান, তদন্ত চলছে। আইনানুযায়ী বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে পুলিশ। যাদের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রমাণ মিলবে, তাদের গ্রেফতার করা হবে। কাউকে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন হলে তদন্ত কর্মকর্তা ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে।
২৯ জুলাই এয়ারপোর্ট সড়কে বাসচাপায় ২ শিক্ষার্থী নিহত ও কয়েকজন আহত হয়। পরে নিরাপদ সড়কের দাবিতে প্রথমে স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামে। ওই ঘটনায় ভাংচুর, উসকানি ও পুলিশের কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগে এ পর্যন্ত পুলিশের ৫১টি মামলা দায়েরের খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ৪৩টি মামলা হয়েছে পেনাল কোডে। বাকি ৮টি হয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে। ওইসব মামলায় ৯৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ৯৯ জনের মধ্যে ২১টি স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীই ৫২ জন। এদের মধ্যে রোববার জামিন পেলেন ৪২ জন। এসব মামলায় এজাহারে নাম থাকা ৬টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৭ শিক্ষার্থী পলাতক রয়েছেন।
৬ আগস্ট আটক ৮৮ জনকে পরের দিন রাজধানীর বিভিন্ন থানা থেকে পুলিশ ছেড়ে দেয়। তাদের অনেকেই স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী। উল্লিখিত ৫২ আসামির মধ্যে অন্তত ৪ জন শিশুসহ স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী। অথচ আন্দোলনের সময় স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের গ্রেফতার না করার নির্দেশনা ছিল। ৪ জনের মধ্যে উত্তরা পশ্চিম থানার একটি মামলায় গ্রেফতার হওয়া তিন শিক্ষার্থী আসামির দু’জনকে ‘শিশু’ হিসেবে গণ্য করে কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠিয়েছেন আদালত। এ দু’জন হল মাইলস্টোন স্কুল ও কলেজের দুই ছাত্র। যদিও মামলার এজাহারে তাদের বয়স ১৮ উল্লেখ করা হয়েছে। অপরজন আইইউবিএটির ছাত্র। তাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের আরেক ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা হয়। ওই ঘটনায় এক কলেজছাত্রসহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাদের মধ্যে একজন পুরান ঢাকার কেএল জুবিলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের উচ্চমাধ্যমিকের ছাত্র। তার তিন দিনের রিমান্ডও মঞ্জুর হয়ে আছে। রমনা থানার অপর এক মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয় তামিরুল মিল্লাত মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রকে। তার বয়স ১৮ দেখানো হলেও জন্মনিবন্ধন সনদ অনুযায়ী বয়স ১৩ বছর।
পুলিশের বিরুদ্ধে নির্বিচার গ্রেফতারের অভিযোগও পাওয়া গেছে। সালোয়ার-কামিজ দেখেই অন্য এক ছাত্রীকে (ভুল করে) গ্রেফতার করা হয়েছে। ইডেন কলেজের ওই ছাত্রী এখন পুলিশ রিমান্ডে। ফারিয়া মাহজাবিন নামে এক নারী উদ্যোক্তা এবং নওশাবা নামে একজন মডেলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রথমজন রাজধানীর হাজারীবাগ থানার মামলায় রিমান্ডে। আজ তাকে আদালতে হাজির করার কথা। দ্বিতীয়জন রিমান্ডে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
৪২ শিক্ষার্থীর জামিন : নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে ভাংচুর, উসকানি ও পুলিশের কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগে রাজধানীর বিভিন্ন থানার মামলায় বন্দি ৪২ শিক্ষার্থীর জামিন রোববার মঞ্জুর করেন আদালত। জামিন শুনানিতে তাদের আইনজীবীরা বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগে নেই। সন্দেহজনকভাবে এদের গ্রেফতার করা হয়েছে। এরা সবাই ছাত্র। জামিন না পেলে তাদের শিক্ষাজীবন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। শুনানি শেষে আদালত তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনপ্রাপ্তদের মধ্যে রাজধানীর বাড্ডা থানায় করা মামলায় ১২ জন, ভাটারা থানার ৫ জন, উত্তরা পশ্চিম থানার ৩ জন, নিউমার্কেট থানার ৩ জন, শাহবাগ থানার ১ জন, ধানমণ্ডি থানার তিন মামলায় ৯ জন, পল্টন থানার ১ জন, ভাটারা থানার ১ জন ও কোতোয়ালি থানার মামলায় ৩ জন।
এদিকে জামিন শুনানি উপলক্ষে সকাল থেকেই আদালত প্রাঙ্গণে ভিড় বাড়তে থাকে ছাত্রদের স্বজনের। তাদের সহপাঠীরাও আদালত প্রাঙ্গণে জড়ো হন। জামিন শুনানির সময় ও জামিনের পর অনেক স্বজনকে কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা যায়। বাড্ডা থানার মামলায় গ্রেফতার সাউথ ইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নূর মোহাম্মদের মা মমতাজ মহল ছেলের জামিনের সংবাদে আদালত প্রাঙ্গণেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। বলেন, ‘১০-১৫ দিন পুরো পরিবার কী যে অসহ্য যন্ত্রণার মধ্যে ছিলাম! দিনরাত কান্নাকাটি করেছি। অবশেষে ছেলে জামিন পেল। আলহামদুলিল্লাহ, মনে করেছিলাম ঈদটা মাটি হয়ে গেল।’
শুধু নূর মোহাম্মদের পরিবারেই নয়, জামিন পাওয়ায় ৪২ পরিবারেই নেমে এসেছে ‘ঈদের খুশি’। বাড্ডা থানার মামলায় গ্রেফতার জাহিদুল হকের জামিনের কথা শুনেই কেঁদে ফেলেন তার বোন জাফরিন হক। যুগান্তরকে তিনি বলেন, ভাইয়ের জামিন হয়েছে। এর চেয়ে আনন্দের আর কী থাকতে পারে। বাবাও অনেক খুশি। বলেন, এবার ঈদের আনন্দটা উপভোগ করা যাবে। শিক্ষার্থী মেহেদী হাসানের জামিনের সংবাদে কান্নায় ভেঙে পড়েন তার বাবা এমএ মাসুদ খান। যুগান্তরকে তিনি বলেন, ছেলের গ্রেফতারের পর থেকেই ভীষণ যন্ত্রণায় ছিলাম। আদালতের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
জামিন ও মুক্তি পেলেন যারা : বাড্ডা থানার মামলায় সীমান্ত সরকার, মুশফিকুর রহমান, ইফতেখার আহম্মেদ, রেজা রিফাত আখলাক, ইকতিদার হোসেন, হাসান এএইচএম খালিদ রেজা, ভাটারা থানার মামলায় সামাদ মরতুজা বিন আহাদ, ফরিদ হোসেন, মেহেদী হাসান রাতেই মুক্তি পেয়েছেন।
জামিনের পর মুক্তি পাননি যারা- ভাটারা থানার মামলায় ফয়েজ আহম্মেদ আদনান, শিহাব শাহরিয়ার, সাখাওয়াত হোসেন, আজিজুল করিম; বাড্ডা থানার মামলায় রাশেদুল ইসলাম, তারিকুল ইসলাম, নূর মোহাম্মাদ, জাহিদুল হক ও রেদোয়ান আহমেদ; উত্তরা পশ্চিম থানার মামলায় মাহবুব খান রবিন, তোয়ায়েল ও আসিক; নিউমার্কেট থানার মামলায় মো. আজিজুর, আমিন ও নূর আলম; শাহবাগ থানার মামলায় আবু বক্কর সিদ্দিকী, ধানমণ্ডির তিন মামলায় সোহাদ খান, মাশরিফুল আলম, তমাল সামাদ, মাহবুবুর নাঈম, মাহমুদুর রহমান, ওমর সিয়াম, মো. ইকবাল হাসান, নাইমুর রহমান ও সিনহানুল ইসলাম; পল্টন থানার মামলায় সাইফুল ওয়াদুদ এবং কোতোয়ালি থানার মামলায় মেহেদী, জাহিদুল ও দুলাল।

নিরাপদ সড়ক দাবিতে আন্দোলন

জামিন পেলেন ৪২ শিক্ষার্থী

কারাগার থেকে ৯ জনের মুক্তি * আদালত প্রাঙ্গণ ও জেল গেটে আবেগঘন পরিবেশ * কোটা সংস্কার আন্দোলনে কারাবন্দি ১৩ জনের জামিন শুনানি ২৭ আগস্ট
 যুগান্তর রিপোর্ট 
২০ আগস্ট ২০১৮, ১২:০০ এএম  |  প্রিন্ট সংস্করণ

গ্রেফতারের পর থেকে মুখে হাসি ছিল না তাদের। হৃদয়ে রক্তক্ষরণ আর অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে দিন কাটছিল। সন্তান ও স্বজনের মুক্তি এবং খোঁজখবরে আদালত আর কারাগার ঘুরেই দিন কাটে। রোববার একের পর এক জামিনের খবরে বেদনাহত মুখে আসে হাসি। একেকটি জামিন আদেশের পর কেঁদে উঠছিলেন নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের মামলায় কারাগারে থাকা শিক্ষার্থীদের কারও ভাই-বোন, কারও মা অথবা বাবা। সেই আনন্দাশ্রু স্পর্শ করে অন্য মামলার কাজে আসা মানুষদেরও। ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত এবং সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেট আদালতগুলোয় রোববার এমন দৃশ্যের অবতারণা হয় অন্তত ৯ বার। বিভিন্ন মামলায় এ দিন মোট ৪২ শিক্ষার্থী জামিন পান।
শিক্ষার্থীদের মুক্তি নিয়ে স্বজনরা এতটাই অধীর ছিলেন যে, কারও কারও অভিভাবক দ্রুততার সঙ্গে জামিন আদেশ কারাগারে পৌঁছানোর সব চেষ্টাই করেন। রাত ৭টা ২০ মিনিট পর্যন্ত ৯ শিক্ষার্থীর মুক্তির খবর পাওয়া গেছে। শিক্ষার্থীরা যখন একে একে বেরিয়ে আসছিলেন, তখন জেল গেটে সৃষ্টি হয় আবেগঘন পরিবেশ। তারা স্বজনের বুকে মাথা রেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন। স্বজনদের প্রত্যাশা, বাকিরাও আজকের মধ্যে মুক্তি পাবেন। কারা কর্তৃপক্ষও একই কথা বলেছেন। ঈদের আগে শিক্ষার্থীদের জামিন মেলায় শুধু তাদের স্বজনরাই নন, তাদের শিক্ষক-সহপাঠী এবং পরিচিতজনের মধ্যেও স্বস্তি নেমে এসেছে। বাকিদেরও আজ জামিন হবে বলে প্রত্যাশা পরিবারের সদস্যদের।
বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ড. অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়কের আন্দোলন ছিল যৌক্তিক। ওটা কোনো রাজনৈতিক আন্দোলন ছিল না। তারা কোনো ভাংচুর বা অন্য অপরাধ করেনি। বরং হেলমেট পরা কিছু ব্যক্তি ওইসব শিক্ষার্থীর ওপর হামলা করেছে। পুলিশের উচিত ছিল, হামলাকারীদের গ্রেফতার করা। সেটা না করে নিরীহ শিক্ষার্থীদের গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারই আমাদের কাছে অগ্রহণযোগ্য ছিল। পরে দেখা গেল, ছাত্রছাত্রীদের কারাগারেও পাঠানো হল। আমি মনে করি, জামিন দেয়া হয়েছে ভালো, প্রত্যেককেই জামিন দিতে হবে। কাউকে আর হয়রানি করা যাবে না।
শিক্ষার্থীদের জামিনের সার্বিক বিষয় পর্যবেক্ষণে রোববার দুপুরে নিম্ন আদালতে ছুটে যান ড. কামাল হোসেন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ও ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেন। এ সময় তারা আদালতের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কোটা সংস্কার আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের মামলার ব্যাপারেও খোঁজখবর নেন। ওই আন্দোলনে পুলিশের চারটি মামলা আছে। তাতে ১৩ জন কারাগারে আছেন। তাদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ জন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ জন এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী। ওই আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. আতাউল্লাহ জানান, কয়েকদিন আগে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২৭ আগস্ট তাদের জামিন শুনানির দিন ধার্য আছে।
ছাত্রদের জামিন আদেশের পর ড. কামাল হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ওদের পাওয়াটা ছিল যৌক্তিক দাবি। তারা অপরাধের সঙ্গে জড়িত নয়। যাদের জামিন এখনও হয়নি, আশা করছি শিগগিরই তাদেরও জামিন হবে। ছাত্রদের জামিন পাওয়া আমরা খুশি। ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেন বলেন, এরা আমাদেরই সন্তান। তাদের আন্দোলন সরকারবিরোধী ছিল না। সরকারবিরোধী কোনো স্লোগানও দেয়নি। ছাত্রদের জামিন দেয়ায় সরকারের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে। একইভাবে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীও ছাত্রদের জামিনের বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
এদিকে কিছু শিক্ষার্থীর জামিনে মুক্তি এবং বাকিদের জামিনের আশা জাগলেও বিভিন্ন মামলার আসামি এমনকি আন্দোলনে যাওয়া শিক্ষার্থীদের পরিবারের সদস্যদের মনে শান্তি নেই। অনেকেই বলেছেন, নিরাপদ সড়ক চাই এবং কোটা সংস্কার দাবিতে গড়ে ওঠা দুটি আন্দোলন নিয়েই পুলিশের তদন্ত চলছে। জামিন হলেও মামলা ঝুলে আছে। মামলাগুলোর বেশিরভাগ আসামি অজ্ঞাত। এছাড়া গ্রেফতার প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে। যেভাবে গ্রামের বাড়ি থেকে বা হল গেট থেকে ছাত্রীদের পর্যন্ত গ্রেফতার করা হচ্ছে, তাই কবে কাকে পুলিশ তুলে নিয়ে যায়, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। তাই আন্দোলনে যাওয়া প্রায় প্রত্যেক শিক্ষার্থীর অভিভাবকই উদ্বেগে আছেন। ঘটনার ১৩ দিন পর খুলনায় মামলা দায়ের এবং গ্রেফতারের ঘটনায় উদ্বেগ বেশি ছড়িয়েছে। এ নিয়ে একধরনের আতঙ্ক কাজ করছে তাদের মনে। এমনকি আন্দোলন নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়া বা ছবি শেয়ার করা মানুষের মনেও উৎকণ্ঠার শেষ নেই।
তবে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের অতিরিক্ত উপকমিশনার নাজমুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের উদ্বেগের কারণ নেই। কেননা শিশুদের নিরাপদ সড়কের দাবির সঙ্গে সরকার একমত। দাবি বাস্তবায়নের কাজও শুরু হয়েছে। মানুষের মধ্যে ট্রাফিক নিয়ে সচেতনতাও বেড়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের ফেসবুক পুলিশ নজরদারি করছে না। এমনকি যারা আবেগের বশে না বুঝে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নিয়ে ফেসবুকে বিভিন্ন তথ্য শেয়ার করেছে, তাদের আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করে বুঝিয়ে ছেড়ে দিচ্ছি। তবে যারা সচেতনভাবে জেনে-বুঝে আন্দোলনকে সহিংস করার জন্য মিথ্যা তথ্য দিয়ে গুজব ছড়িয়েছে এবং উসকানি দিয়েছে, তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে।
যদিও পুলিশের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে যুগান্তরকে জানান, তদন্ত চলছে। আইনানুযায়ী বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে পুলিশ। যাদের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রমাণ মিলবে, তাদের গ্রেফতার করা হবে। কাউকে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন হলে তদন্ত কর্মকর্তা ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে।
২৯ জুলাই এয়ারপোর্ট সড়কে বাসচাপায় ২ শিক্ষার্থী নিহত ও কয়েকজন আহত হয়। পরে নিরাপদ সড়কের দাবিতে প্রথমে স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামে। ওই ঘটনায় ভাংচুর, উসকানি ও পুলিশের কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগে এ পর্যন্ত পুলিশের ৫১টি মামলা দায়েরের খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ৪৩টি মামলা হয়েছে পেনাল কোডে। বাকি ৮টি হয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে। ওইসব মামলায় ৯৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ৯৯ জনের মধ্যে ২১টি স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীই ৫২ জন। এদের মধ্যে রোববার জামিন পেলেন ৪২ জন। এসব মামলায় এজাহারে নাম থাকা ৬টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৭ শিক্ষার্থী পলাতক রয়েছেন।
৬ আগস্ট আটক ৮৮ জনকে পরের দিন রাজধানীর বিভিন্ন থানা থেকে পুলিশ ছেড়ে দেয়। তাদের অনেকেই স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী। উল্লিখিত ৫২ আসামির মধ্যে অন্তত ৪ জন শিশুসহ স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী। অথচ আন্দোলনের সময় স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের গ্রেফতার না করার নির্দেশনা ছিল। ৪ জনের মধ্যে উত্তরা পশ্চিম থানার একটি মামলায় গ্রেফতার হওয়া তিন শিক্ষার্থী আসামির দু’জনকে ‘শিশু’ হিসেবে গণ্য করে কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠিয়েছেন আদালত। এ দু’জন হল মাইলস্টোন স্কুল ও কলেজের দুই ছাত্র। যদিও মামলার এজাহারে তাদের বয়স ১৮ উল্লেখ করা হয়েছে। অপরজন আইইউবিএটির ছাত্র। তাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের আরেক ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা হয়। ওই ঘটনায় এক কলেজছাত্রসহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাদের মধ্যে একজন পুরান ঢাকার কেএল জুবিলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের উচ্চমাধ্যমিকের ছাত্র। তার তিন দিনের রিমান্ডও মঞ্জুর হয়ে আছে। রমনা থানার অপর এক মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয় তামিরুল মিল্লাত মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রকে। তার বয়স ১৮ দেখানো হলেও জন্মনিবন্ধন সনদ অনুযায়ী বয়স ১৩ বছর।
পুলিশের বিরুদ্ধে নির্বিচার গ্রেফতারের অভিযোগও পাওয়া গেছে। সালোয়ার-কামিজ দেখেই অন্য এক ছাত্রীকে (ভুল করে) গ্রেফতার করা হয়েছে। ইডেন কলেজের ওই ছাত্রী এখন পুলিশ রিমান্ডে। ফারিয়া মাহজাবিন নামে এক নারী উদ্যোক্তা এবং নওশাবা নামে একজন মডেলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রথমজন রাজধানীর হাজারীবাগ থানার মামলায় রিমান্ডে। আজ তাকে আদালতে হাজির করার কথা। দ্বিতীয়জন রিমান্ডে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
৪২ শিক্ষার্থীর জামিন : নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে ভাংচুর, উসকানি ও পুলিশের কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগে রাজধানীর বিভিন্ন থানার মামলায় বন্দি ৪২ শিক্ষার্থীর জামিন রোববার মঞ্জুর করেন আদালত। জামিন শুনানিতে তাদের আইনজীবীরা বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগে নেই। সন্দেহজনকভাবে এদের গ্রেফতার করা হয়েছে। এরা সবাই ছাত্র। জামিন না পেলে তাদের শিক্ষাজীবন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। শুনানি শেষে আদালত তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনপ্রাপ্তদের মধ্যে রাজধানীর বাড্ডা থানায় করা মামলায় ১২ জন, ভাটারা থানার ৫ জন, উত্তরা পশ্চিম থানার ৩ জন, নিউমার্কেট থানার ৩ জন, শাহবাগ থানার ১ জন, ধানমণ্ডি থানার তিন মামলায় ৯ জন, পল্টন থানার ১ জন, ভাটারা থানার ১ জন ও কোতোয়ালি থানার মামলায় ৩ জন।
এদিকে জামিন শুনানি উপলক্ষে সকাল থেকেই আদালত প্রাঙ্গণে ভিড় বাড়তে থাকে ছাত্রদের স্বজনের। তাদের সহপাঠীরাও আদালত প্রাঙ্গণে জড়ো হন। জামিন শুনানির সময় ও জামিনের পর অনেক স্বজনকে কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা যায়। বাড্ডা থানার মামলায় গ্রেফতার সাউথ ইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নূর মোহাম্মদের মা মমতাজ মহল ছেলের জামিনের সংবাদে আদালত প্রাঙ্গণেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। বলেন, ‘১০-১৫ দিন পুরো পরিবার কী যে অসহ্য যন্ত্রণার মধ্যে ছিলাম! দিনরাত কান্নাকাটি করেছি। অবশেষে ছেলে জামিন পেল। আলহামদুলিল্লাহ, মনে করেছিলাম ঈদটা মাটি হয়ে গেল।’
শুধু নূর মোহাম্মদের পরিবারেই নয়, জামিন পাওয়ায় ৪২ পরিবারেই নেমে এসেছে ‘ঈদের খুশি’। বাড্ডা থানার মামলায় গ্রেফতার জাহিদুল হকের জামিনের কথা শুনেই কেঁদে ফেলেন তার বোন জাফরিন হক। যুগান্তরকে তিনি বলেন, ভাইয়ের জামিন হয়েছে। এর চেয়ে আনন্দের আর কী থাকতে পারে। বাবাও অনেক খুশি। বলেন, এবার ঈদের আনন্দটা উপভোগ করা যাবে। শিক্ষার্থী মেহেদী হাসানের জামিনের সংবাদে কান্নায় ভেঙে পড়েন তার বাবা এমএ মাসুদ খান। যুগান্তরকে তিনি বলেন, ছেলের গ্রেফতারের পর থেকেই ভীষণ যন্ত্রণায় ছিলাম। আদালতের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
জামিন ও মুক্তি পেলেন যারা : বাড্ডা থানার মামলায় সীমান্ত সরকার, মুশফিকুর রহমান, ইফতেখার আহম্মেদ, রেজা রিফাত আখলাক, ইকতিদার হোসেন, হাসান এএইচএম খালিদ রেজা, ভাটারা থানার মামলায় সামাদ মরতুজা বিন আহাদ, ফরিদ হোসেন, মেহেদী হাসান রাতেই মুক্তি পেয়েছেন।
জামিনের পর মুক্তি পাননি যারা- ভাটারা থানার মামলায় ফয়েজ আহম্মেদ আদনান, শিহাব শাহরিয়ার, সাখাওয়াত হোসেন, আজিজুল করিম; বাড্ডা থানার মামলায় রাশেদুল ইসলাম, তারিকুল ইসলাম, নূর মোহাম্মাদ, জাহিদুল হক ও রেদোয়ান আহমেদ; উত্তরা পশ্চিম থানার মামলায় মাহবুব খান রবিন, তোয়ায়েল ও আসিক; নিউমার্কেট থানার মামলায় মো. আজিজুর, আমিন ও নূর আলম; শাহবাগ থানার মামলায় আবু বক্কর সিদ্দিকী, ধানমণ্ডির তিন মামলায় সোহাদ খান, মাশরিফুল আলম, তমাল সামাদ, মাহবুবুর নাঈম, মাহমুদুর রহমান, ওমর সিয়াম, মো. ইকবাল হাসান, নাইমুর রহমান ও সিনহানুল ইসলাম; পল্টন থানার মামলায় সাইফুল ওয়াদুদ এবং কোতোয়ালি থানার মামলায় মেহেদী, জাহিদুল ও দুলাল।

 

যুগান্তর ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন