বাজেট ২০২৩-২৪

খাতসংশ্লিষ্টদের প্রতিক্রিয়া

  
০৩ জুন ২০২৩, ১২:০০ এএম  |  প্রিন্ট সংস্করণ

বেসিস-রাসেল টি আহমেদ

বাজেটে অপারেটিং সিস্টেম, ডেটাবেজ, ডেভেলপমেন্ট টুলস ও সিকিউরিটি সফটওয়্যারের আমদানি শুল্ক ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করা হয়েছে। এসব সফটওয়্যার/টুলস দেশে তৈরি হয় না। অপারেটিং সিস্টেম ও সিকিউরিটি সফটওয়্যার সব পর্যায়ে ব্যবহৃত হয়। অন্যদিকে ডেটাবেজ এবং ডেভেলপমেন্ট টুলস ব্যবহার করে সব ধরনের সফওয়্যার অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করা হয়। তদুপরি, সফটওয়্যারের উৎপাদন ও কাস্টমাইজেশন পর্যায়ে ৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। এ হারে শুল্ক এবং কর বৃদ্ধি পেলে সঙ্গত কারণেই দেশীয় সফটওয়্যার উৎপাদনসহ সব পর্যায়ের তথ্যপ্রযুক্তি পণ্য ও সেবা ব্যবহারকারীদের ব্যয় বৃদ্ধি পাবে। এতে দেশীয় সফটওয়্যার শিল্পের বিকাশ বাধাগ্রস্ত হবে।

বিসিএস-সুব্রত সরকার

‘বাজেটে হার্ডওয়্যার খাতের জন্য কোনো সুখবর নেই। আমরা আশা করেছিলাম কম্পিউটার, ল্যাপটপের ওপর থেকে ভ্যাট (১৫ শতাংশ) প্রত্যাহার করা হবে; কিন্তু করা হয়নি। আর যেসব পণ্যে রেয়াত সুবিধার কথা বলা হয়েছে তা আগেও ছিল। বাজেট পাশ হলে তা হয়তো আরও কিছু দিন বাড়তে পারে। অপারেটিং সিস্টেম (ওএস) এবং ডাটাবেজ সফটওয়্যার আমদানির ওপর শুল্ক ২০ শতাংশ বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ এবং ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। ওএস যদি আরও বেশি দামে কিনতে হয়, তাহলে ল্যাপটপ ও কম্পিউটারের দাম আরও বাড়বে। এ ছাড়াও ২২ ইঞ্চির নিচে যত ধরনের মনিটর ছিল, তার ওপরে এতদিন ৫ শতাংশ কাস্টমস ডিউটি ছিল। অর্থমন্ত্রী বাজেট প্রস্তাবনায় তা বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করার ঘোষণা দিয়েছেন। এ ঘোষণায় মনিটরের দাম অনেক বাড়বে, যা সাধারণের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাবে।’

ই-ক্যাব-শমী কায়সার

‘এবার বাজেটে মার্কেট প্লেসের যে ডেফিনেশন দেওয়া হয়েছে এটি গত তিন-চার বছরের ই-ক্যাবের চেষ্টা। শুধু ই-ক্যাব এককভাবে এ ডেফিনেশনের জন্য গত কয়েক বছর ধরে এনবিআরের সঙ্গে মিটিং করছিল। যখন ভ্যাটের এ ইস্যুটা ই-কমার্সের ওপর আসে তখন এনবিআরও জানত না আসলে মার্কেট প্লেসের ডেফিনেশন কী। সেই ডেভিনেশন ঠিক করতে গিয়ে আমাদের তিন-চার বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে। এ সঙ্গায়নের ফলে ডিজিটাল ব্যবসায় ভ্যাটের সুবিধা পাবে। লজিস্টিক কোম্পানিগুলো সুবিধা পাবে। সবাই একটা ক্লারিটির জায়গা থেকে দাঁড়াতে পারবে। এ খাত আরও গুছিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে।’

আইএসপিএবি- ইমদাদুল হক

‘আমরা যা যা চেয়েছিলাম তার কিছুই পাইনি। ভ্যাট-ট্যাক্স কমানো হয়নি। আইটিইএস সেবাতেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। বরং একসেসরিজে (কানেক্টর, ইউটিপি ক্যাবল ইত্যদি) অতিরিক্ত আমদানি শুল্কারোপ করা হয়েছে। দেশে ক্যাবল উৎপাদনে যে সুবিধা দিয়েছে কার্যত তা কোনো কাজে আসবে না। ফলে আমাদের গ্রাহককে সেবাদানে খরচ আরও বাড়বে।’

মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন-মহিউদ্দিন আহমেদ

প্রস্তাবিত বাজেট ২০২৩-২৪ কে বলা হচ্ছে স্মার্ট বাজেট। আর স্মার্ট বাজেটের চারটি মূল স্তম্ভ হলো, স্মার্ট সোসাইটি, স্মার্ট কানেক্টিভিটি ও স্মার্ট অর্থনীতি পরিশেষে স্মার্ট জনগণ। এ চারটি খাতে উন্নয়ন করতে হলে একজন নাগরিকের চাই সাশ্রয়ী মূল্যে ইন্টারনেট সেবা এবং ইন্টারনেট ব্যবহার করার জন্য চাই স্মার্ট ডিভাইস। কিন্তু স্মার্ট বাজেট এর কথা বললেও স্মার্ট কানেক্টিভিটির অন্তরায় তৈরি করে প্রস্তাবিত বাজেটে হ্যান্ডসেট ডিভাইসের ওপর তিন থেকে পাঁচ শতাংশ কর নতুন করে আরোপ করা হয়েছে। তাছাড়া আমদানির ওপর আগের ৫৮ শতাংশের সঙ্গে নতুন করে কর যুক্ত করা হয়েছে। ফলে দেশের যেখানে এখনো ৪৪ শতাংশ নাগরিক ইন্টারনেট কানেক্টিভিটিতে যুক্ত হতে পারেনি তাদের ক্ষেত্রে বড় প্রতিবন্ধকতা তৈরি হবে। আমরা আশা করেছিলাম গ্রাহকসেবার ক্ষেত্রে হয়তো কিছুটা কর কমানো হতে পারে। ব্রডব্যান্ড সেবার ক্ষেত্রেও ১৫ শতাংশ কর অব্যাহত আছে। আমরা মনে করি এখনো সময় আছে স্মার্ট বাজেটকে স্মার্ট বাজেট তৈরির সহায়ক সব শক্তিতে সরকার কর কমিয়ে আনবে।

দারাজ- এএইচএম হাসিনুল কুদ্দুস রুশো

মার্কেটপ্লেসের স্বীকৃতি দিয়ে সরকার ভ্যাট আইনের কার্যক্রম সুস্পষ্ট করেছে; এতে করে এ ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাই যেমন-মার্কেটপ্লেস, খুচরা বিক্রেতা, পরিবহণকারী, তাদের নিজ নিজ ভ্যাট প্রদান ও দায়িত্ব সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা পাবেন বলে জানিয়েছেন দারাজের চিফ করপোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার হাসিনুল কুদ্দুস রুশো। তিনি বলেন, সরকারের এ সময় উপযোগী উদ্যোগ ব্যবসা সহজসাধ্য করতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এর ফলে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা এ খাতে বিনিয়োগে আকৃষ্ট হবে। এর পাশাপাশি এ ব্যাখ্যা প্রদান করায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সহজে ভ্যাট প্রদানকরীকে শনাক্ত করতে পারবে, যা ভ্যাট আদায় প্রক্রিয়াকে আরও জোরালো করবে।

 

যুগান্তর ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন